কবি দেবী রায়-এর কবিতা
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই তা আপনার সামনে চলে আসবে।  www.milansagar.com
*
আমি চুপ করে থাকলে       
দেবী রায়
(হাংরিয়ালিস্ট আন্দোলনের কবিতা)

নখ কাটতে গিয়ে আমার আঙুলে ব্লেড গেঁথে যায়
অনেক দূর ডিপ হয়ে
আমি অপেক্ষা করি --- রক্তের দেখা নেই
দারুন ভয় আমাকে চিৎ করে ফ্যালে, আমি ঢোঁক গিলি
এই ভয় --- বিষম অন্তরঙ্গ কোনো মৃত্যুরই সমান অবিশ্বাস্য
বাস ট্রাম আমার বহু সময় গিলে নেয় কোনো কোনো
বন্ধুর ফ্ল্যাটে যেতে
এক পায়ে খাড়া হয়ে কড়া নাড়ি দরজায় বহুক্ষণ এক
নাগাড়ে
হাত ভেরে যায় "বাড়ি নেই" অপিরিচিত --- বিদেশী স্বরে
বলে ওঠে কেউ কেউ
অথবা সরব হুক খোলার শব্দে দাড়ি কামানোর পর প্রথম
আয়নায় নিজের মুখ দেখার সমানই আমি
হুড খোলা-কার---
ছুটি, রেড রোড ধরে ফাঁকা রাস্তায়
বন্ধু স্ত্রী বাঁ ঠেসে পরিচিত হতে চায় ফ্যাপাসে হেসে
দারুণ ক্ষিদেয় আমি অস্থির হয়ে উঠি --- দারুণ ক্ষিদেয়
আমি
এখন বাস ট্রাম অব্দি খেয়ে ফেলতে পারি --- বেথানিয়া
থেকে --- আসার সময় যীশু অব্দি এম্নি ক্ষুধার্ত্ত হয়ে
পড়েছিলো
আমি চুপ করে থাকলে রাস্তার পাথর অব্দি চিত্কার করে
ওঠে
মানুষের মুখের দিকে চেয়ে আমি বুঝি নপুংসক হয়ে
জন্মায়
কেউ --- মানুষের হাতে --- রাজনৈতিক নপুংসক হয়েছে --- কেউ
কবিতাকে ধর্মের সমান দেখতে চেয়ে
নিজেকে নপুংসক করেছে


.                *************************         

.      
                                                                              উপরে  
.       হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.        
         হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
এক টুকরো মেঘ       
দেবী রায়

লিখতে লিখতে কি ভাসমান এক টুকরো মেঘ
দেখে আসা যায় ?
উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে যে হাওয়া,  যে আবেগ
তা কিসের তাড়ায় !

ভাবো, অন্ধকার গুহায় যারা ছবি এঁকে রাখ্ তো-----
সেখানে না কোনো জানালা
না তেমন আলোর কোনো সুবন্দোবস্ত
মিডিয়ার লালসায় নয়, খোলামেলা-----

আলোছায়ার বিস্ময়কর এই খেলা !

তোমার নিজস্ব একটা ঘর আছে, ঐখানে আসে আলো !
যেন সূর্য, ঘুমন্ত একটি বড়োসড়ো ফুল------কে ফোটালো  !
ঝোড়ো-হাওয়া বারবার দিক বদলায়,
হাজার-হাজার বছর কি তারো আগে যারা আঁকতো----

কোনো দেয়ালও
মাথা তুলে দাঁড়ায়নি |  চিত্রীরা ও অশরীরী,
ছবি আজো দৃশ্যমান, সায়
দেয় নিষ্ঠার !  সর্বাঙ্গে বিদ্যুতের ঝিলিক |

এদিক-সেদিক
দিক বদলায়------ঝোড়ো হাওয়া--- !

.         *************************         

.         
                                                                            উপরে  
.       হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.         
        হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
তর্পণ       
দেবী রায়

লোকান্তরিত পিতৃদেবের সঙ্গে
বেশ খানিকটা ঠাকুর রামকৃষ্ণের
মুখের
আদল খুঁজে পাওয়া যায় |

এত বেশি এত সহজ সরল
আজকের
পৃথিবীতে---এরকম একজন মানুষকে
খুঁজে পাওয়া যাবে কি না---- সন্দেহ !

১৯৭৫, ৬ই ফ্রেব্রুয়ারি সব ছেড়েছুড়ে
চলে গেলেন ! এ বছর স্নান সেরে
জপ-ধ্যানের আসনে বসে
তাঁর মুখ----মন্ত্রের শ্লোকে
হৃদয়ের জাল বোনা-----

------ শিকড় খোঁজা ?

যে চ ইহ পিতরো যে চ নেহা
জাংশ্চ বিদ্যুৎ যা ঊ চণন প্রবিস্তু
স্বর্গত পিতা, পূর্বপুরুষরা----
যাঁদের আমি চিনি না
সকলকে ঠিকঠাক জানিও না

প্রণাম------
প্রণাম, আপনারা আসুন----- !

.         *************************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
যে জীবন অস্তায়মান গোধূলির, যে জীবন রাতের       
দেবী রায়



যে কোনও দিন নিজের গ্রামের ----- চৌহদ্দির বাহিরে যায়নি-----
সেও পৌঁছে যায়, মন কাড়া হাইটেক বিজ্ঞাপন-নিয়ন শোভন-শহরে
---- অপ্রাপ্ত বালিকা, কৌতূহলভরে তুমি কার হাত ধরে
.           বায়ুযানে চড়েছিলে  ?

জন্ম, এ দেশের অখ্যাত কোনও গাঁয়ে ! তুমি তো সেই
গত নয়, আমার এ জন্মেরই নিরুদ্দিষ্ট-বোন ;
গ্রামেরও ঝুপড়ি থাকে, সেখানে কর্মহীন, অক্ষম অভিভাবক

দিন গোনে | কখন যে আসবে পরিচিত ডাক পিয়ন !

আমি কি দেখিনি, তোমাদের চকোলেট হাসির আড়ালে
কি নিদারুণ নির্যাতন,
.          শরীরী-কষ্ট, কান্না
.                          কাকে বলে যৌননিপীড়ন |

তোমার দখল নেয়,  তারা কারা ?  ওগো জীবন, জীবন
কি ঠিক এরকম ?  বান্ডিল-বান্ডিল নোট, সে সকলকে
টিকি ধরে তরে সম্বোধন |
ওগো, বিদেশি মালিকানা,  পুঁজিপতি-পর্যটক, মেঘ না চাইতে
এই জল !

তৃতীয় বিশ্বে, তোমরা নিশ্চয়ই সু-স্বাগতম |  এ দেসে কলরোলময়
ব্রেন আছে, আচে সবুজ, আচে সস্তার শ্রম ---- শুধু আমাদের
গরীবগুর্বো বোনগুলোকে যথেচ্ছ ব্যবহার করো না হে !
আকাশের নিচে তারা নষ্ট হয়ে যায় ! সোডিয়াম-ভেপার ল্যাম্পের
আলোর সাধ্য কী তাদের ছোঁয় !  ঐ বালিকাটি কি একদিন
ভাবেনি, শক্ত-সমর্থ বৃক্ষের মতো হবে তার বর-----
পরিবর্তে,  এক শহর ছেড়ে আর এক শহর
থরথর ভাসমান, ছিন্নমূল তার ঘর !

.         *************************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
যুবক-যুবতী      
দেবী রায়

পথের ঐ ধার ঘেঁষে ----
ঐ তো সেই যুবতীটি হেঁটে যায়
তার মাথার আচ্ছাদন  নেমে এসেছে মাথার ‘পরে

আর এই সেন্ট্রাল পার্ক ঘেঁষে হেঁটে যায় একটি যুবক
যেতে যেতে নিরুত্তাপ, ভাবলেশহীন চোখে তাকায় ;

বেড়ানোর পক্ষে এই সেই উপযুক্ত রমণীয় বিকেল
আর পথও বেস সুনশান, কোন ব্যস্ততা নেই----

কারুর! ওদের দুটি-কে দ্যাখায় এরকমি----
এ এক অদ্ভুত পরিস্থিতি, যা নাটকেই মানায়.

হাত ধরাধরি! কেন যে হেঁটে যায না দুটিতে |

.         *************************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
কোপাইয়ের জলে      
দেবী রায়

ধীরে ধীরে তখন নামছে সন্ধ্যা
কোপাইয়ের জলে
ঐ নদীর ওপারে----
অ-দূরে
ধানক্ষেতের গাঢ়-অন্ধকারে
টিমটিমে নক্ষত্রের আলো----

মাঝে মাঝে হাইওয়ের বুক চিরে
অটোমোবাইলের যান্ত্রিক আওয়াজ
ভয়াল নিস্তব্ধতাকে ছিন্ন করে
গুটিকয় সারমেয়র করুণ ডাক
বুকে ভয়ার্ত ঢেউ তোলে

রাত্রি আরও সুতীব্র গভীর হলে
হয়ে ওঠে মায়াময় !

.         *************************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
ঝর্ণার কাছে মৃতদেহ      
দেবী রায়

ঝর্ণার কাছে মৃতদেহ !

খরস্রোতা রামতি নদীর ওপর
ভেসে যায় কতো না মৃতদেহ |

সন্দেহ নয় রে বাপু, সন্দেহ
খালি ব্যাকুলতায়
যদি প্রকৃতি মাথা ঝাঁকায় ?

------ঐ ধ্বস্ত এলাকায় !

একদা বসতি ছিল যেখানে
ইতঃস্তত বড় বড়
বেওয়ারিশ পাথর

আজ ওপড়ানো বৃক্ষের অস্তিত্ব সেখানে |

নির্ভরযোগ্য ত্রাণ কোথায় ?
ধ্বস নেমেছে পুরো ইয়েবলং এলাকায়

এদিকে ধূ ধূ শ্মশানপ্রায়-------
কাঁধে ত্রিপল চালের বস্তা মাথায়
ক্কচিৎ এরকম দু’একজনকে দেখা যায়

ঝর্ণার কাছে মৃতদেহ
নাকি, ঐ কিশোর সেও
ঝর্ণার কোলে, পরম নিশ্চিন্তে ঘুমায়-----


.         *************************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
ভুবনগ্রাম      
দেবী রায়

এই রাজনীতি
যেদিন প্রথম পেয়েছিল মানুষেরা---- হাতের মুঠোয় !
প্রকৃত অর্থে, সেদিন কি তারা বুঝেছিলো
.          মনোবাসনা ক্ষমতার
.                    ওই সাপলুডো খেলা  ?
চিরদিন এইখানে এক অপার
.          ব্যাপ্তির অনুভবে. দিন গুটিয়ে বেলা
যে করুণ অসহায়
পদ্মপাতায়
উড়ু উড়ু সেই  মন,আটকে রাখা দায়

--- ওদিকে কারও কি পড়েছিল চোখে
.                   ভাঙা কারখানার
.                শেড, ছাউনি-----
গজিয়ে ওঠা ঘাস পায়ের নীচে
.                 মরচে-পড়া চিমনি !
-----গেটের ওপাশে ম্রিয়মাম মুখে,
.                 ওরা কারা ?
দেওয়ালময় বিবর্ণ রঙিন পোষ্টার !
ভূতগ্রস্তের মতো কথা বলে------ফ্যাসফেসে
স্বরে শীর্ণ ঘাড় নেড়ে হেসে হেসে !
নিজেদের দুর্বলতাকে
বেআব্রু করে রাখে !
তাদের কথায় যুক্তি আচে হয়তো-----
.                কিন্তু বিনয় নেই !
অচলায়তনের দেওয়ালে  ধাক্কা-দেওয়া, অবশ্যই
কঠিন-শক্ত কাজ, খুবই !

প্রতিযোগিতা, সর্বত্র ইঁদুর-দৌড়, অধুনা বীজমন্ত্র-----
কে কাকে ল্যাং-মেরে
এগিয়ে যাবে | মনে হয়, ছিল দ্বেষ সৃষ্টির ভিতরে-----
.                                        প্রথমত

------এতকাল কোথায় যে রয়েছিলাম ?

ধরা যাক, এই পৃথিবীর আরেক নাম
.                ভুবনগ্রাম !

.         *************************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
অস্থির ভিতরে ভিতরে      
দেবী রায়

সারা গলফ গ্রীনে-ই রাধাচূড়া আর কৃষ্ণচূড়া !
যৌবন গরবে ডগমগ করে !
নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে, ঐরকম অন্য কাউকে
দেখিনি তেমন !

শালিখের ঝাঁক, কোকিলের ডাকও শোনা
যায় ! কে জানে, কোন সবুজ প্রবীণ বৃক্ষের
আড়ালে অমন আকুলভাবে সে ডাক দিয়ে ফেরে !
মাঝে মাঝে দলবদ্ধ টিয়াদেরও উড়ে যেতে----

দেখেছি ! দুতিনটে চড়ুই একেবারে অন্দরে সেঁধিয়ে
দারুণ হুজ্জত বাধাতে চায় ! কলকাতার পাখিও
কম যায় না |  জানালার শার্সি খুলতে সামান্য বিলম্ব
হলে ঠুকঠুক করে জানান দিতে চায়, ‘এবার উঠে পড়ো’-----

উঠে পড়ি, হাঁটি চক্রাকারে | সেন্ট্রাল পার্ক কেন্দ্র করে !
লক্ষ করি :
রাধাচূড়া দাঁড়িয়ে রয়েছে, অস্থির ভিতরে ভিতরে,
কৃষ্ণচূড়া দাঁড়িয়ে রয়েছে, অস্থির ভিতরে ভিতরে------

.         *************************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
সুন্দরের অপেক্ষায়      
দেবী রায়

লাখো গুজব, মুন্ডু রাবণের বহুধা বিস্তৃত হয়ে
বিপরীত বাতাসের দিকে তীব্র বেগে ধায়,
একে মহিলা, তদোপরি নিয়মিতব সাঙ্গপাঙ্গসমেত-----
চালাতেন শিধুপান ও শেয়ারব্যবসা
--------ভাবা যায় ?

জীবন নয় হে, অতোই সোজা বা মসৃণ পথে
নিছক এক খাসা |
পুরুষরাজ, পুরুষ জমানায়,
যারা নানান ছলছুতোয় ছোঁক ছোঁক করে |
নেই নিস্তার,
যদি একবার
হড়কায় পা, বিশেষত যদি হন তিনি মহিলাসুন্দরী  |

থাকে ধান্দা, প্রায় সকলেরই সুযোগমাত্র, এসো ছিন্ন করি |
যে জীবন ছিলো, ঙয়তো বা সুন্দরের অপেক্ষায়
একটানা ঠায় !  এই কবি তাকে, খুঁজিবে কোথায় |
-------তবে, সে কি আত্মহনন ?
------কি সেই পুঞ্জীভূত দহন  ?

হাতে ফোরেন সিগারেটের প্যাকেট, সেই মধ্যবয়সিনী
স্থাপত্য, নিঃসঙ্গ একাকিনী
ঝাঁপিয়ে পড়তোই যতো সব মাংসের সন্ধানী  |

এসব ঘটনা কবেকার-----জান কি তা ?  যখন এই কবি, হায়
বসে লিখেছিলেন আরেক যুগের অন্নদামঙ্গল
নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেতার ‘মেঘ-আলাপ’  কানে
এসে যখন ধাক্কায় |

অথবা ভাবো
ঐ সেই মহিলা হাঁটুর শাড়ি তুলে যাচ্ছেন হেঁটে----
তার দু’চোখে অশ্রুর কুয়াশা কেবল------

.         *************************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
জল      
দেবী রায়

রাজনীতি ছাপিয়ে দলমত নির্বিশেষে তৃষ্ণার্ত কন্ঠ
চায় জল !
গাঁ-গেরামে যা সোনার চেয়েও দামী  !
জলস্তর অভিমানে নামতে নামতে নেমে গেছে
অতল পাতালে !
কারা সব তেতে আগুন ;
কাদের পাতে জোটে না নুন !
চোখে পড়ে, পথের দু’ধারে
কাতারে কাতারে
বালতি হাতে বহু মানুষের সুদীর্ঘ লাইন-----

গ্রামের কোন সুদূর প্রান্তে কারা যেন ঠিক
রটিয়ে দেয় ‘আর্সেনিক’----- ‘ডাইন’
বিস্তীর্ণ জনপদ এখন শুখা-----
উথ্বান ঘটে যায় অন্ধকারের
যে জগতের
পথ আঁকাবাঁকা  !

মিনারেল ওয়াটারের বিলাসিতা নয়
গ্রামগঞ্জ চায়, গলা ভেজানোর
তৃষ্ণা মেটানোর জল |

.         *************************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
রণবীর সেনা      
দেবী রায়

ভোজপুর জেলায়
সাহারা থানায়
বাথানিটোলায়
এসবি ঘটেছিল, গত সন্ধ্যায়!

গিয়েছিল দেখা, কাদের ?
শক্ত  ঘাঁটি তাদের
পোষা রণবীর সেনার
অচানক দুর্বার হানায়

সাঙ্গ হল ভবলীলা
তাতে কার
কি-ই বা এসে যায়!

---ওরা কি খুব মাথাভারি---
ভোটার ?
তবে, মাথাওয়ালাদেরও
যিনি মাথা

তিনি-ই বা করতে পারেন কি ?
কিই বা আছে করার!

বাথানিটোলায় হাহাকার!

.         *************************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
ছিন্ন তাঁবু      
দেবী রায়

চাঁদতে ধীর লয়ে একটু একটু করে
ঢেকে দিচ্ছে চিরচেনা এই পৃথিবী!

ঠাসাঠাসি ভিড়ে
ভিড়াক্কার
ছিন্ন-তাঁবু জোড়া তাপ্পি...

---তোমার দৈন্যদশা
তবু ঘুচল কই ?
ছন্দ-মিল আর
অক্ষরবৃত্ত,
মাত্রা বৃত্ত
নিয়ে নিরবধি তোমার
ডানা ঝাপটানো!

আজও কতদূর ?  মই---

কিচিরমিচির কিচিরমিচির
করে শালিখ ও চড়ুই...

ভাসমান বাতাসে
দেখি, কেলি তরে জুঁই।

.         ******************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর
*
ঐ বৃহৎ দেশটি      
দেবী রায়

ঐ বৃহৎ-দেশটি দাম্ভিক উন্মত্ত ক্ষমতা পাগল।
এসব নিয়ে ভারাক্রান্ত মগজ, আর ঘিমিও না হে
নাছোড়, ফালতু আর দাদাগিরিই একদিন না একদিন
দু’চোখের ঘুম কেড়ে নেবে! আবহাওয়া রয়েছে
কোন মাত্রায় থমথমে

ওয়ার্ল্ড-ট্রেড-সেন্টার ভেঙে পড়ল হুড়মুড়। কোনও দিন
ভেবেছিলে কি ? ধুরন্ধর গোয়েন্দা বাহিনীও ফ্লপ।
প্রয়োজন, তলিয়ে চিন্তা করার
থোড়াই কেয়ার
বে-পরোয়া সন্ত্রাসীর মারণ-খেলা কবে যে বন্ধ হবে!
---আদৌ হবে কি ?
মশা-মাছির মত সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ছে দিকে দিকে!

কা ভয়ংকর, নির্মম ইতিহাস
মৃত্যু, রগ ঘেঁষে ছুটে যেতে চায়। ত্রাস
যেন বা রয়েছে ওৎ-পেতে।
সর্বত্র বিবস্ত্র রাজনীতি। অন্ধকারাচ্ছন্ন চতুর্দিকে

মুষলধারে অবিরাম বৃষ্টি এ বজ্রপাতের শব্দ... ।

.              ******************         

.                                                                                     
উপরে  
.       
হাংরি জেনারেশনের কবিদের সূচির পাতায় ফেরত যেতে এখানে ক্লিক করুন   
.                 
হাংরি জেনারেশনের কবিতার মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন   



মিলনসাগর