রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্য |
রূপরামের ধর্মমঙ্গল কাব্যের সূচি |
শূদ্রেতে আনিল অন্ন ব্রাহ্মণেতে খায় || মনুষ্যের দায় থাক সদাশিব যিনি | প্রভুর উচ্ছিষ্ট খেয়ে নাচেন আপুনি || প্রসাদ খাইয়া সবে শিরে পোঁচে হাত | এমন কোথা শুনেছ বাজারে বিকায় ভাত || ভাই বলরাম বন্দো সুভদ্রা ভগিনী | সন্মুখে জাগিয়া রহে দিবস রজনী || কাঁজিপোড়া খাইতে বদনে লাগে ঝাল | ঘুষিব প্রভুর গুণ জীব যতকাল || ধন্য প্রভু জগন্নাথ নীলাচলের মাঝে | পঞ্চ-সংখ্য বাদ্য যার রাত্রি দিন বাজে || দেবের প্রধান স্থান জগন্নাথের পুরী | দক্ষিণ দুয়ারী ঘর পিদিপ সারি সারি || উড়ষ্যায় জগন্নাথ পরতেক বড় | শতেক হাত ধ্বজা উপরে হয় ঠাড় || জগন্নাথের কাছে আছে নিধি মহাধন | সমুদ্রের কুলে বন্দো পবননন্দন || পুরী নীলাচল বন্দো মন করি দড় | পৃথিবীর লোক সব সিঙ-দরজায় জড় || সাগরসঙ্গম বন্দো তীর্থ বারাণসী | স্বর্গের কপিলা বন্দো আদ্যের তুলসী || রাম সীতা লক্ষ্মণ বন্দিব অযোধ্যায় | যার গুণে বনের পশু রাম-গুণ গায় || দক্ষিণে লক্ষ্মণ ধন্য সীতালক্ষ্মী বামে | পুঞ্জ পুঞ্জ পাপ খন্ডে তারকব্রহ্ম নামে || রামনাম বলে যেই করে উচ্চারণ | অবহেলে হয় তার গোলকে গমন || রামনামে কত সুধা জানে কোন জনা | পদেতে পাষাণ মুক্ত কাষ্ঠের তরী সোনা || ইন্দ্রজিৎ বন্দো আর পাতালে বাসুকি | জলাসনে যোদ্ধাপতি লক্ষ্মী সরস্বতী || অপদ্মলোচন বন্দো প্রভাতের ভানু | বাস বৃন্দাবন বন্দো আর রাধা কানু || নবদ্বীপ চাঁদ বন্দো শচীর নন্দন | যার গুণে মোহ গেল এ তিন ভুবন || গোরাচান্দের মহিমা কহিব কার সনে | গোরাচান্দের কহি কথা শুন একমনে | বৈষ্ণব হয় যদি জাতি অবসান | অবধৌত সন্ন্যাসী নহে তাহার সমান || বৈষ্ণব হয় যদি জাতিয়ে যবন | যুগে যুগে হই তার দাসীর নন্দন || বৈষ্ণব দেখিয়া যেবা করে উপহাস | গোলকে রাখিয়া তার নরতে নিবাস || বৈষ্ণবের কুড়ে ঘর কৃষ্ণের আলয় | বৈষ্ণবের শাক-অন্ন শুধু সুধাময় || চন্দ্র সূর্য্য বন্দিলাম আর তারাগণ | ডাকিনী যোগিনীর পায়ে লিলাম শরণ || ত্রিভূবনে সার বন্দিব ভগবতী | জন্ম জন্ম তুয়া পায় রহুক প্রণতি || সাগরের জল যদি কলসে প্রমাণি | তোমার মহিমা মাতা কি বলিতে জানি || কোথা আছ মহামায়া ই মেড় মশানে | এক দন্ড উর গো সেবক-স্মঙরণে || বিক্রমপুর বন্দিব তোমার আদ্যস্থান | মৌলায় বন্দিব মাতা তোমার বিশ্রাম || জয় জয় দিয়া বন্দো জয় বিষহরি | পাতাল ভুবনে বন্দো পাতাল-কুমারী || কিয়াপাতে বন্দি গাইব কেতুকাসুন্দরী | উন কোটি নাগের মাতা জয় বিষহরি || তোমার মহিমা মাতা কি বলিতে জানি | বাপের কোলেতে যেন পুত্রের চালনি || বন্দনা বন্দিতে ভাই মন কর স্থির | পেড়োয় বন্দিয়া গাইব সুভি খাঁ পীর || ধবল খাট ধবল পাট ধবল সিংহাসন | আগু ধর্ম্ম বন্দিব ঠাকুর নিরাঞ্জন || মূল তরু কদলী সমুখে এড়ে বালি | মান্দারণ গড়ে বন্দিব পীরিসমালি || দিগ্-বন্দনার পরের পৃষ্ঠায় . . . . এই পাতার উপরে . . . মিলনসাগর |