কবি রূপরাম চক্রবর্তীর জীবনী - আমরা নিয়েছি
"রূপরামের ধর্ম্মমঙ্গল" (প্রথম খন্ড), বইটি থেকে।
বইটি অলংকরণ করেছিলেন শিল্পাচার্য নন্দলাল বসু এবং
সম্পাদনা করেছিলেন শ্রীসুকুমার সেন, এম.এ, পি এইচ ডি এবং শ্রী পঞ্চানন মন্ডল, এম.এ। বইটির প্রকাশক
ছিলেন বর্দ্ধমান সাহিত্য-সভার শ্রী প্রাণদাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, বি.এল। মিলনসাগরে শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর
কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন . . .
এই বিষয়ে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের সুবিধার্থে আমরা এখানে লেখাটি অপরিবর্তিত রেখে তুলে দিচ্ছি।
*************************
*************************
রূপরাম চক্রবর্তী
খেলারাম চক্রবর্ত্তীর কাব্য লুপ্ত হইয়া গিয়াছে | শ্রীশ্যাম পন্ডিতের সম্পূর্ণ কাব্য আমরা দেখি নাই | সুতরাং
তিনি রূপরামের অপেক্ষা প্রাচীনতর কিনা সে-বিষয়ে চরম মীনাংসার পথ বন্ধ | অতএব প্রাচীনতর ধর্ম্মমঙ্গল
কবির সম্মান আপাততঃ রূপরাম চক্রবর্ত্তীরই প্রাপ্য |
রূপরামের নিবাস ছিল বর্দ্ধমান জেলার দক্ষিণ প্রান্তে কাইতির নিকটবর্তী শ্রীরামপুর গ্রামে | কবির পিতার
নাম শ্রীরাম চক্রবর্ত্তী, মাতার নাম দময়ন্তী | কবির অল্পবয়সে পিতৃবিয়োগ হইয়াছিল বলিয়া পিতার উল্লেখ
তাঁহার কাব্যে বড় পাই না | একটি অর্ব্বাচীন পুঁথির শুধু একস্থলে ভনিতায় কবিব পিতার নাম পাওয়া
গিয়াছে |
. শ্রীরাম চক্রবর্ত্তীর বেটা শ্রীরামপুরে ঘর,
. পলাশনের মাঠে ধর্ম্ম যারে দিলা বর |
কবি বোধ হয় মায়ের বিশেষ আদরের ছেলে ছিলেন তাই ভনিতায় পুনঃ পুনঃ মায়ের নাম করিয়াছেন |
. রূপরাম গীত গান দৈমন্তী-নন্দন |
আত্মকাহিনীতে পিতামাতার নাম নাই, তবে ভাই-ভগিনীদের নাম আছে |বড় ভাই রত্নেশ্বর মাতৃস্নেহলালিত
রূপরামকে দেখিতে পারিতেন না | ছোট ভাই রামেশ্বর ছিল কবির বিশেষ স্নেহপাত্র | দুই ছোট ভগিনী ছিল,
সোনা আর হীরা ( পাঠান্তরে রূপা ) | চতুর্থ ভ্রাতার নাম পাওয়া যায় নাই |
কাব্যের উপক্রমণিকায় রূপরাম যে আত্মকাহিনী বিবৃত করিয়াছেন তাহাতে কবিচিত্তের বাস্তব অভিজ্ঞতার
সঙ্গে রসদৃষ্টির অভাবিতপূর্ব্ব সমন্বয় হইয়াছে | তত্কালীন বাঙ্গালী-জীবনের বাস্তবতামন্ডিত কারুণ্যস্নিগ্ধ
পরিপূর্ণ রসোজ্জ্বল এই চিত্রটি সমগ্র প্রাচীন সাহিত্যে দ্বিতীয়রহিত | শুধু আত্মকাহিনীটির জন্য রূপরাম প্রাচীন
বাঙ্গালী কবিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের দাবী করিতে পারেন |
রূপরামের আত্মকাহিনী সর্ব্বপ্রথম প্রকাশ করিয়াছিলেন শ্রীযুক্ত বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায় | এই পাঠ কতকটা
অসম্পূর্ণ | আমরা ইহার প্রাচীনতর পাঠ এবং প্রচুরতর পাঠান্তর পাইয়াছি | আমাদের সংগৃহিত পাঠ তিন
পর্য্যায়ে পড়ে : ( ক ) প্রাচীন পুথির পাঠ, ( খ ) কয়েকটি অপেক্ষাকৃত অর্ব্বাচীন পুথির পাঠ এবং বসন্ত
বাবুর প্রকাশিত পাঠ, আর ( গ ) অর্ব্বাচীন দুইটি পুথির পাঠ | আমাদের গৃহীত পাট ক ও খ মিলাইয়া |
অর্ব্বাচীন পুথি দুইটির পাঠ স্থানে স্থানে ক পাঠের এবং ক্কচিৎ ক পাঠের অনুগত | তবে ইহাতে স্পষ্ট প্রক্ষিপ্ত
ছত্র প্রচুর রহিয়াছে | এই প্রক্ষিপ্ত পাঠ পাঠান্তরে দেখান হয় নাই বলিয়া কিছু উদ্ধৃত করা গেল |
প্রথমেই গায়নের উক্তি
. আর একটি কথা বড় পড়ে গেল মনে,
. রূপরামের আদ্যি কথা শুন সর্ব্বজনে |
বড় ভাইয়ের সঙ্গে মনান্তরের কথা ক পাঠে চারি ছত্রে বর্ণিত হইয়াছে, সে স্থলে গ পাঠে এই চৌদ্দ ছত্র
. বাড়িল ঘরের দুখু মনে সুখ নাঞী,
. মনে কৈল পড়িবারে যাব অন্য ঠাঞি |
. সহোদর হয়ে মোরে দেই টিটকারি,
. এ সব যন্ত্রণা আর সহিতে না পারি |
. বিদেশেতে পড়িলে বিদ্যায় বলবান ,
. মুখের পবিত্র হয় শাস্ত্রের বিধান |
. অভিধান ব্যাকরণ সন্ধিপাঠ আদি,
. ষড়শাস্ত্রে জ্ঞাত হয় জ্ঞান থাকে যদি |
. এসব প্রমাণ কথা শুনেচি পুরাণে,
. গৃহবাস তেজ্য করে যাব অন্যস্থানে |
. মা বাপে প্রণাম করি বিদেশে চলে ,
. দূর হও রে দুর্ম্মতি সহোদর বলে |
. টিটকারি কথা শুনে বান্ধে খুঙ্গি পুঁথি,
. চলিলাম বিদেশ যা কর সরস্বতী |
রূপরামের আত্মকাহিনী নিম্নে সংক্ষেপে বলা যাইতেছে |
রূপরামের পিতা নামজাদা ভট্টাচার্য্য ছিলেন | তাঁহার চৌপাড়িতে অনেক ছাত্র – “বিশাশয় পড়ুয়া” ---পড়িত |
পিতার মৃত্যুতে গূহস্থের আসিল দুর্দ্দিন | ঘরের টোল কোন রকমে ঠাট রাখিয়া চলিতেছিল, সম্ভবতঃ বড়
ভাই রত্নেশ্বরের তত্ত্বাবধানে | এই টোলে কবি পড়িতে লাগিলেন জমুর নন্দীর টীকা সহিত সংক্ষিপ্তসার
ব্যাকরণ এবং অমরসিংহের অভিধান | বোধ হয় মায়ের আদরে রূপরামের পাঠ আশানুরূপ আগাইতেছিল
না, তাই বড় ভাইয়ের শাসন কড়া রকমেই প্রকটিত হইয়াছিল | রূপরামকে লইয়া গৃহে প্রবল অশান্তির সৃষ্টি
হইল | একদিন মনান্তর চরমে উঠিল | সেদিন বুধবার | রূপরাম ঠিক করিল আর ঘরের টোলে পড়িবে না |
নিকটবর্ত্তী পাষন্ডা গ্রামের ভট্টাচার্য্যদের পান্ডিত্যের খুব খ্যাতি | রূপরাম পাষন্ডা চলিল | অভিমানী বালক
পরনের কাপড়খানি এবং খুঙ্গি-পুথি ছাড়া আর কিছুই লইল না | কবি-বংশের যজমান দয়ালু প্রতিবেশী
স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া তাহাকে উপযুক্ত পরিধেয় বস্ত্র ও পথের সম্বল কিছু কড়ি যোগাড় করিয়া দিল | কবিচন্দ্রের
পুত্র রঘুরাম ভট্টাচার্য্যের কাছে গিয়া রূপরাম হাজির হইল | খুঙ্গি-পুথি- হস্ত প্রিয়দর্শন গৃহছাড়া বালকে দেখিয়া
ভট্টাচার্য্যের মন গলিয়া গেল | ভট্টাচার্য্য আগ্রহ করিয়া তাহাকে “বেটা বলি বাসা দিল নিজ নিকেতনে” এবং
“আনন্দে পড়ান পাঠ হরষিত মনে |” আড়ুই গ্রামের টোলে রূপরাম অভিধান ও ব্যাকরণ শেষ করিয়া
কালিদাসের রঘুবংশ, মাঘের শিশুপালবধ ও শ্রীহর্ষের নৈষধচরিত কাব্য, পিঙ্গলের ছন্দঃসূত্র ( অথবা প্রাকৃত-
পৈঙ্গল ) প্রভৃতি একে একে পড়িতে লাগিল | শেষে নব্যন্যায় পড়া শুরু করিল | একদিন গুরুশিষ্যের মধ্যে তর্ক
উঠিল | শিষ্যের জেদে ভট্টাচার্য্য ক্রুদ্ধ হইয়া বসিলেন, তোমাকে আর পড়াইতে পারিব না | তুমি নবদ্বীপে-
শান্তিপুরে অথবা জৌগ্রামে পড়িতে যাও | গুরুর কথা মান্য করিয়া কবি নবদ্বীপের পথে পা বাড়াইয়াছে এমন
সময়ে মায়ের কথা মনে পড়িয়া গেল | রূপরাম শ্রীরামপুরের পথে ফিরিল | আড়ুই গ্রাম পিছনে ফেলিয়া বাঁশা
গ্রাম ডাহিনে রাখিয়া কবি সোজা অথচ দুর্গম পুরানো জাঙ্গাল ধরিল | পলাশনের বিলে আসিয়া দিশা লাগিলে
কবি পথ হারাইয়া ঘুরিতে লাগিল | এমন সময় ধর্ম্মঠাকুর ব্রাহ্মণের বেশে আবির্ভূত হইয়া ত্রস্ত বালককে
সান্ত্বনা দিলেন এবং তাহার হস্তভ্রষ্ট পুথিপত্র কুড়াইয়া দিয়া “বার দিনের গীত”অর্থাৎ ধর্ম্মমঙ্গল রচনা করিতে
আদেশ করিলেন | ঠাকুর ভরসা দিলেন
. যে বোল বলিবে তুমি সেই হব গীত,
. সদাই গাইবে গুণ আমার চরিত |
. যখন শুনিব তোমার মন্দিরার ধ্বনি,
. তুমি উপলক্ষ গীত গাইব আপনি |
ধর্ম্মঠাকুর অন্তর্হিত হইলে রূপরাম ভয় পাইয়া ঘর মুখে ছুটিল | বেনা বনে বিপর্য্যস্ত হইয়া অপরাহ্ন বেলায়
কবি শ্রীরামপুর গ্রামের প্রান্তে পৌঁছিয়া শাঁখারী পুকুরে নামিয়া এক-পেট জল খাইয়া লইল | অবশেষে সন্ধ্যার
ঝোঁকে সাহস করিয়া রূপরামের গৃহদ্বারে আসিয়া হাজির হইল | আসিয়াই রত্নেশ্বরের সামনে পড়িল |
রত্নেশ্বর যারপরনাই তিরস্কার করিল | ভগিনী দুইজনে দুয়ারের কাছে ছিল কিন্তু দাদার ভয়ে মাকে খবর
দিতে সাহস করিল না | ঘরের দরজা হইতেই রূপরাম ফিরিয়া চলিল |
উত্তরপশ্চিম-মুখে চলিয়া রূপরাম শানিঘাট গ্রামে পৌঁছিল | সেখানকার ঠাকুরদাস পাল তাহাকে “ না বলিতে
ভিক্ষা দিল আড়াই সের ধান |” আড়াই সের ধান দিয়া চিড়া-ভাজা কিনিয়া রূপরাম দামোদরের জলে
স্নানপূজা সারিয়া জলযোগে বসিল | দমকা হাওয়ায় চিড়া-ভাজা গেল উড়িয়া | অগত্যা কবি নদীর জল পান
করিয়া উদর ভরাইল, কিন্তু দেহে এমন বল নাই যে খুঙ্গি-পুঁথি বহা যায় | সেখান হইতে চলিয়া রূপরাম
পৌঁছিল দিগনগর ( পাঠান্তরে দীঘলগ্রাম , দীঘলনগর ) গ্রামে |পথে শুনিল, সেখানে তাঁতিদের বাড়িতে খুব ঘটা
করিয়া “কর্ম্ম” হইতেছে | রূপরাম দৌড়িল তাঁতি-ঘরে | সেখানে চিড়া-দধির খুব ঘটা, কিন্তু খই নাই | যাহা
হউক পাঁচ দিন উপবাসের পর ফলার সারিয়া কবি দক্ষিণা পাইল পনেরো ( পাঠান্তরে দশ ) গন্ডা কড়ি |
তাহার মধ্যে আবার দেড় বুড়ি কাণা !
দিগনগর গ্রাম ছাড়িয়া পশ্চিম-মুখে চলিয়া কবি পৌঁছিল এড়াল-বাহাদুরপুরে | সেখানে থাকিতেন গোপভূমির
ব্রাহ্মণ ভূস্বামী রাজা গণেশ রায় | রূপরাম তাঁহার আশ্রয় পাইল |ধর্ম্মঠাকুর কর্ত্তৃক স্বপ্নে আদিষ্ট হইয়া রাজা
রূপরামকে ধর্ম্মমঙ্গল-রচনায় নিযুক্ত করিলেন | কাব্যরচনা শেষ হইলে অকস্মাৎ দুইজন দোহার আসিয়া
জুটিল | রাজা তখন রূপরামকে চামর মন্দিরা ও “ নানাবর্ণ সাজ” দিয়া “দ্বাদশ মঙ্গল জুড়াইল শুভক্ষণে” | শুভা
যখন রাজমহলে সুবেদার ছিলেন, সে তখনকার কথা |
রূপরামের কাব্যরচনা-কাল এই পাতার উপরে . . .
সেকালের প্রথামত রূপরাম তাঁহার কাব্যের রচনাকাল এইরূপ হেঁয়ালীতে জ্ঞাপন করিয়াছেন
. শাকে শীমে জড় হইলে যত শক হয়,
. তিন বাণ চারি যুগ বেদে যত রয় |
. রসের উপরে রস তায় রস দেহ,
. এই শকে গীত হইল লেখা কব়্যা নেহ |
শ্রীযুক্ত যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি মহাশয় এই হেঁয়ালীর সমাধানে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন | তিনি হিসাব করিয়া
পাইয়াছিলেন ১৫২৬ শকাব্দ অর্থাৎ ১৬০৪—০৫ খ্রীষ্টাব্দ | এতদিন এই তারিখের কোন আপত্তি ছিল না | কিন্তু
আমাদের আদর্শ প্রাচীন পুঁথিতে আত্মকাহিনীতে রাজমহলে শাহ্ শুজার উল্লেখ পাওয়াতে এই তারিখ আর
টিকিতেছে না | তবে “শাকে শীমে” শব্দের যে অর্থ বিদ্যানিধি মহাশয় করিয়াছেন তাহাই এই সমস্যার
সমাধানের ছোড়ান বা কুঞ্চিকা বটে | দশমীতে এবং দ্বাদশীতে যথাক্রমে পুঁই ও কলমী শাক খাইতে নাই এবং
একাদশীতে শীম খাইতে নাই | সুতরাং শাক অর্থে ১০ এবং ১২, শীম অর্থে ১১ | এখন হেঁয়ালীর অঙ্ক
নিম্নলিখিত ভাবে পাতন করিলে রাজমহলে শাহ্ শুজার উল্লেখের সঙ্গে সামঞ্জস্য হয় |
শাকে x শীমে অর্থাৎ ১০ x ১১ x ১২ = ১৩২০
তিন বাণ + চারি যুগ + বেদ অর্থাৎ ১৫ + ১৬ + ৪ = ৩৫
রস রস রস অর্থাৎ ৬ x ৬ x ৬ = ২১৬
. --------------------------------------
একুনে ১৫৭১
অতএব ১৫৭১ শকাব্দ অর্থাৎ ১৬৪৯-৫০ খ্রীষ্টাব্দ হইতেছে রূপরামের ধর্ম্মমঙ্গল রচনাসমাপ্তির কাল |
*************************
*************************
আমরা কৃতজ্ঞ, দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ডঃ নন্দিতা বসুর কাছে, যিনি আমাদর অনুরোধে ধর্মমঙ্গল
কাব্যের উপর লেখাটি পাঠিয়েছেন। সেই লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক্ করুন।
কবি রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্য আগামী প্রজন্মের কাছে, এই আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে (ইনটারনেট),
পৌঁছে দিতে পারলে আমরা মিলনসাগরে এই প্রচেষ্টাকে সার্থক মনে করবো।
কবি রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল কাব্যের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রফেসার নন্দিতা বসুর "ধর্মমঙ্গল" লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক্ করুন।
আমাদের যোগাযোগের ঠিকানা :- এই পাতার উপরে . . .
srimilansengupta@yahoo.co.in
এই পাতার প্রথম প্রকাশ ১২.০৫.২০১৪
...
রূপরামের কাব্যের পুঁথির বিবরণ এই পাতার উপরে . . .
রূপরামের কাব্য-সম্পাদনে আমরা যে-সকল পুঁথি ব্যবহার করিয়াছি তাহার বিবরণ দেওয়া আবশ্যক |
প্রথমেই বলিয়া রাখা ভাল যে পুঁথির সংখ্যা এবং পাঠান্তরে অজস্রতা বিচার করিলে পশ্চিমবঙ্গে রূপরামের
কাব্যের জনপ্রিয়তা কৃত্তিবাস-কাশীরামেরও উপরে যায় | পশ্চিমে মানভূম, পূর্ব্বে হুগলী, উত্তরে বীরভূম ও
দক্ষিণে মেদিনীপুর --- এই বিস্তীর্ণ অঞ্চল হইতে রূপরামের পুঁথির সংখ্যা প্রায় তিরিশ | বঙ্গীয় সাহিত্য
পরিষদে নয় খানা পুঁথি আছে, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আট খানা, বঙ্গীয় রয়াল এশিয়াটিক সোসাইটীতে
দুইখানা | অন্যান্য সংগ্রহের দুই একখানা পুঁথি দেখিয়াছি | দুই একখানি বাদে এই পুঁথি সবই খন্ডিত |