কবি দিলীপ কুমার বসু-র কাব্যোপন্যাস
কঙ্কনমালা
*
.                                                                                       না হলেও,
তত্ত্বগতভাবে মানে | ‘ক্রুপস্কায়া’ ভিন্ন কারণেতে ভাল -- তর্ক ওঠে তিনটি বন্ধুর |
জহ্ ন ও বিয়েট্রিস -- অল্পবয়সেই তারা বিয়ে করে, বাড়িতে সংবাদ
দেওয়া প্রয়োজন বলে মনেই করে না | কংকণা অবাক হয়ে দ্যাখে, ভাবে,
শুভ-ইচ্ছাসহ নেয় ওয়াইনের প্রথম গেলাশ
দু-আঙুলে তুলে | বান্ধবীর আঙুলেতে হীরা |
হীরা---- কাঁচ ? হীরা --বিষ ? হীরা কি কার্বন ?
হীরা --- প্রেম ?
এক বিন্দু আলোক ঝক্ ঝক্ করে কংকণার চোখে |
সপ্রশ্ন, মদির |

.                                    *

এবং এদিকে এক গোহালে যার অনেকদিন আগে
জন্ম হল, সেই মেয়েটি কোমরটিতে জড়িয়ে নয়া শাড়ী
খাটতে গেল, মাথায় ঝুড়ি, কয়লাগাদা  | শরীরখানি ভারী
বয়সকালে, খেয়েছে নেশা, খাবেও নেশা, শরীর-পেষা পেশা |

ভিতরে তার জমেছে রোগ, যদিও দ্যাখো রসিক ভাই তাকে
বিকেলবেলা সূর্য নামে যখন পাটে শুকনো মাঠে, ডোবায়,
পরিশ্রমের দিন খসিয়ে ---তরুণ তালরসের হাঁড়ি গাছের গায়ে যেন |

মিষ্টান্নের ভেট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এ-ওর বাড়িতে যায় ভারতের রমণীসমাজ,
বসুধা কুটুম্ব যেন | কংকণা নীরবে দ্যাখে | জ্যাজ শুনতে চলে যায় |

কার থেকে কে বড়ো, তার লড়াই সড়োগড়ো, শৈব্যা থরোথরো
কাঁপছে রাগে, ‘হারামজাদা, ‘গায়ে আমার আবার যদি হাত
দিয়েছ ত দেখব তোমায় !’ –  ছুটে পালায় দীনবন্ধু |  ---শৈব্যা গতর
‘ধান মাড়াই’য়ে খাটে |  পায়েতে রাগ ফোটে তাহার  | চলছে দ্রুত |
কাহার জাতির মেয়ে  | গন্ গনে সব ফুলকি ওঠে
পায়ের পাড়-এ | শহর যাবে খাটতে কলে ভাবে |
ফিক্ করে সে হেসেও ফ্যালে | দীনবন্ধুর দৌড়খানা দ্যাখো |


.                                                                        
কঙ্কনমালার সূচিতে . . .    
.                                                                          
কবির মূল সূচিতে . . .    
.                                *

প্রান্তে রেখে চোক দাঁড়ালো একজন চুলেতে লেগে আছে ময়লার
ধূসর চেনা ভার  এবং জীবনেতে  দেহটি আছে তার নিজস্ব |

গ্রামের পথ ছেড়ে, ---চিন্তামণি নাম, --পা দেবে গঞ্জে ও বাজারে ;
সেখানে লোক চাই, খাদ্য পাওয়া যাবে, --যদিও ভয় আছে হাজার--এক
ধ্বসছে গ্রাম সব, এমন বিপদের সময় হাজামজা গাঁ ছেড়ে
ঘাসের পোকা সব ছুটছে বিন্ বিন্ --- শহরে মাঠে ঘাস আছে রে !

পোকার চেয়ে যারা দীর্ঘতর দেহ মানুষ নামে যারা অভিহিত
আকাশে চোখ ছুঁয়ে মাটিতে চোখ দ্যায়, পায়ের নখ খোঁটে, আনমিত |

কখনো জঙ্গল হয়েছে যেই গ্রাম সেখানে বহু পোকা দেখা যায় |
কখনো দাবানল --ককনো দমকল--- স্টিলের টুপি এঁটে পাহারায় ,

মজুত       
      

         
        

       
    

   
         

               
                   

        
                     


.                                                                          
কঙ্কনমালার সূচিতে . . .    
.                                                                           
কবির মূল সূচিতে . . .    
.                              *

কংকণারা দেশে ফিরল সকলেই | ঢাউস প্লেন | ফাল্গুনের ভোরের দমদম |
কংকণার অঙ্গে অঙ্গে স্বাস্থ্য আর স্বাধীনতা | কী সুন্দর হয়েছে কংকণা !
আত্মীয়রা সকলেই একবাক্যে এই কথা বলাবলি করে |
বাঁকা চোখে কংকণার মাসি তার বুক দেখে বুঝে নিতে চেষ্টা করল উন্নতিটা
বিলেতী জামার প্রসাদাৎ কিনা | অতবা সত্যিই স্বাস্থ্য | হেসে হেসে ডাকল বোনঝিকে |
এই কবিতা মিলনসাগর ডট কম থেকে নেওয়া        
ফাল্গুনের ভোরের দমদম |
তাতে কার কি গেল এল . . .   
.                              *

ট্রেনে ছট্ ফট্ লক্কা পায়রা
চিন্তামণির গায়ে চেপে বসে, হাত দিতে চায় |
আবছা সকালে চোখ মট্ কিয়ে ইসারা জানায় |
শীত আসছে তবু কনুই ঢুঁশতে
খড়খড় করে জানালা ওঠায় ;
পানও’লাকে ডেকে পান খেতে চায়,
চিন্তামণিকে বলে, ‘কিগো, খাবে ?’

বসন্ত তার দুয়ার খুলেছে |

বেগে পিক ছোটে, সাদা মাঠে লাল ফোটে ;
বসন্তদিনে বাংলাকাননে |

বাংলার মাঠে কত বনফুল,
ভদ্রলোকেরা স্বভাবে আকুল |

কেন এত ফুল তুলিলি সজনি, ভরিয়া ডালা ?

.                          *

শিয়ালদহের পাশে আলোর সংকেত,
কংকণার বাধা পড়ল ;--- যেন সব প্রেত
হেঁটে যাচ্ছে, দৌড়োচ্ছে দিনশেষে রঞ্জন আলোয় |
দেখল দীঘল চোখে |

কড়ির পাহাড়ে এসে চিন্তামণি সেই ভিড়ে |
হাড় ক’খানাকে নিয়ে মিশে গেল মৃদু পায়ে, ধীরে |
মিলনসাগর মৃদুপায় কে যায়       
ধীর সমীরে |

কংকণার চোখে পড়ল মেয়েটিকে | তারপর, ভিড়টা গড়িয়ে গেল |
এই কবিতা মিলনসাগর ডট কম থেকে নেওয়া     
মুহূর্তের জন্য পথ ফাঁকা |

.           ***********************      


.                                                                          
কঙ্কনমালার সূচিতে . . .    
.                                                                            
কবির মূল সূচিতে . . .    


মিলনসাগর