কবি দিলীপ কুমার বসু-র কাব্যোপন্যাস
কঙ্কনমালা
*
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

আগডুম বাগডুম ঘোড়াডুম সাজে |
কংকণা বিয়ে করে মণিময় সাজে ||
কন্যার বে’ হয়, মৃদং বাজে

     
       
                    

          
           
            


                  


          
       
             

            
            
       
        

পতির তারে ভুঞ্জিবে আজিকে |
যুবতীর হৃদয়ে কী ভাব--
অনুমেয় |
অবর্ণনীয় তাহা ||



||  কন্যার সাজবর্ণন ||

হাঙরমুখ, মকরমুখ বালায় হাত
আঁকড়ে ধরা | জড়িয়ে গলা বিছেহারের
আলম্বিত সোনা  | মায়ের, পিতামহীর
গয়না গায়ে অনাধুনিক ; কিন্তু আহা
দেবীর মত মুখটি তার উঠছে ভেসে |

.                  *

চুড়ি ও চূড় ---- হয়েছে সব ! সোনার স্তুপ |


.                  *

কপালে নখের দাগ চন্দনের,
হৃদয় জড়িয়ে বিছেহার,
চোখে তার কৃষ্ণকাজল |

ম্যাস্ কারায় হয়েছে আঁকা চোখ,
কুশলী হাত কালিমা দেয় এঁকে
নয়নতারা দীপ্ত জ্বলজ্বল
দিব্য প্রসাধনের ছোঁয়া লেগে |

ভ্রূয়ের কালো মুখের শ্বেত ছোঁয়
পাখির মতো হাল্ কা মিঠে পায়ে |
রঙের নদী অধরপ্রবাহিনী
হৃদয় থেকে হৃদয়ে ভেসে যায়  |

অ         
     
            
    

         
    
    
       

    

   
    
     
     
    

       
   
      
      
       
          


||  বাড়িতে ||


এক ধামা তারা ফুল তোলে,
‘সারেগামাপাধা’ গানও গায়,
সখিমাসিবোন ফুলতলায় |

কেন এতফুল তুলিলি সজনি, ভরিয়া ডালা ?

ছুটোছুটি করে ট্রাংক খোলে,
হট্ পট্ করে ব্যাংকে যায় ;
যে যার নিজের ভল্ট খোলায় |
ভল্ট খুলে তারা বার করে দামী হীরের মালা |


এবাড়ি |
সারাটি দিন মীনভাজার মুখর ‘ছ্যাঁক্’ স্বর |

.                                                                         
কঙ্কনমালার সূচিতে . . .    
.                                                                           
কবির মূল সূচিতে . . .   

|| সন্ধ্যালগ্ন ||

বিকেলে বিবাহ,
নচিকেতা ইত্যাদিরা, আসে |
গাড়ি হতে নামে--
মহিলা প্রথম--
সু-উন্নত শির,
রাজেন্দ্রানী ননদিনী


ধবল শরীর,
কোমল গলাটি তার,
পুষ্ট স্তন,
পায়ের জুতায় খুর |
মাথা উঁচু হেঁটে চলে যায় |

পালে পালে বরযাত্রী তার পিছে,
বরকর্তা, বরও স্বয়ং | নচিকেতা, আহা, অজ যেন |
দাড়িচাঁছা, ঝকঝকে চিবুক ও চোখ,
কাছা করে সামান্য বিব্রত,
নতুবা অজ-ই যেন ইন্দুমতী-স্বয়ংবরে |



|| নারীগণের খেদ ও ঈর্ষা ||


ললনা           
     
     
       
       
    
      
          
     
      
       
      
   
          


        
            
      
            


|| কানাকানি ||

“হায় বস্ গো যায় মস্ কো ; --- ওয়াশিংটন সগ্ গো,
যেতে পারল না ওর বরটা ;  কুমুটার কী ভাগ্য !”
“যাক্ , কপাল, করবে কী !”   “কৃষ্ণাদিও ধন্য !
ইস্ , কান্ড ! ওই লাল রঙ কেনা যে কি জন্য ?
ফুল্ কির ভাই রং চাপা-ই--- আলগা সেই ফর্সা
বিলেতছাপ--- থাকল কি ? ঠিক না ? এক ভরসা --
ভবিষ্যৎ  | বেনারসী তখন কাজে লাগবে,
মেটাবে তো ? খুলবে রং | তখন যদি----”

----বিয়েবাড়ি গেলে-টেলে লাগতে পারে, পরে যেতে পারে
আজকের বেমানান বেনারসী, ইত্যাদি এককোণে কথা, অন্যকোণে অন্য কথা,
বিয়ে হচ্ছে |


|| বিবাহ ||

অঙ্গ, বঙ্গ, ব্যঙ্গ | সাহা গয়নাগুলো ভালই গড়েছে  |
মুগ্ধ, লুব্ধ চোখ বাবাজীবনের | দেহ, দেহ, বলছে নচিকেতা,
তার পিতা | ‘যদি দম্ কা হৃদয়কে দিতে পার’--- চেঁচাচ্ছে পুরুত |

এই সব অনুষ্ঠান ; বড় এ সুন্দর দেশ |
অঙ্গ, বঙ্গ | বলতে গেলে, গয়নাগুলো ভালই গড়েছে ও ---‘সাহা’ |
যজ্ঞাগ্নিতে ঈষৎ ঘামছে কন্যা  |
এ একটা সম্বন্ধ বটে !

আকাশে মহার্ঘ চাঁদ ;
টেবিলে মহার্ঘ উপহার |
---খাতা লেখা হয় ; কে কী দিল, তার এক গাথাকাব্য !

চারিদিকে রসের জোয়ার |
মাথায় বিলাতী টুপি,
ছেঁড়া জুতো, ছেঁড়া গেঞ্জি,
ফুস্ ফুসে প্রাণপণে হাওয়া টেনে নিয়ে
মজুরসন্তান এক আঁকাবাঁকা বাজনা বাজায় |
মানুষের শুভ ইচ্ছা ঝরে পড়ে এইভাবে |
একসময় শঙ্খধ্বনি, জোকার পড়ছে |
অঙ্গ বঙ্গে দেয়াথোয়া ---হৃদয়ের ---সুচারু ভীষণ ;
নচিকেতা মন্ত্রপুত কংকণাকে পায় |

অযুত কাঞ্চন যায় যথাস্থানে |

স       
     
     
         
         
      
         

       


                     
      
           
      

     
       
      
      
             
      
        
          

.       ***********************              


.                                                               
কঙ্কনমালার সূচিতে . . .    
.                                                                 
কবির মূল সূচিতে . . .    


মিলনসাগর
বল বর্ণনা তাহার !
মাতার |
হবার সময় |
আয়ত চোখ মেলে দ্যাখে,