রবীন্দ্রনাথের গানের সংখ্যা ও অপ্রকাশিত স্বরলিপি
দীপক দে

দীপক দে একজন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী এবং কবি। তাঁর গানের গুরু ছিলেন সুচিত্রা মিত্র। রবীন্দ্রসঙ্গীতে তাঁর গায়কী এবং কণ্ঠ অনবদ্য। কর্মসূত্রে ভারতের
বিভিন্ন স্থানে তাঁকে থাকতে হয়েছে। সর্বত্রই তিনি তাঁর সুকণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করে মানুষের আশির্বাদ ও ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেছেন।

এই ওয়েবসাইটে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন . . .           
দীপক দে-র পরিচিতি পড়তে এখানে ক্লিক করুন . . .      
কবি দীপক দের কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন . . .         


নিজের গান রচনা প্রসঙ্গে ‘সংগীতচিন্তা’ গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন --- ‘গান লিখতে যেমন আমার আনন্দ হয় এমন আর
কিছুতে হয়না | এমন নেশায় ধরে যে, তখন গুরুতর কাজের গুরুত্ব একেবারে চলে য়ায়, বড়ো বড়ো দায়িত্বের ভারাকর্ষণ হঠাৎ
লোপ পায়, দাবিগুলিকে মন একধার থেকে নামঞ্জুর করে দেয় |’ আরও বলেছেন, ‘সংগীতের মত এমন আশ্চর্য ইন্দ্রজালবিদ্যা
জগতে আর কিছুই নেই---- প্রকৃতির সংগে যত নিকট সংগে গানের যত নিকট সম্পর্ক এমন আর কিছুনা |’ আবার বিনয়ী
মন্তব্যে আপন বোধ ব্যক্ত করেছেন এইভাবে---- ‘গানে আমার পান্ডিত্য নেই একথা আমার নিতান্ত জানা – তার চেয়ে বেশি
জানা গানের ভিতর দিয়ে অব্যবহিত আনন্দের সহজ বোধ | -  -   - গান যখন সম্পূর্ণ জাগে মনের মধ্যে , চখন চিত্ত
অমরাবতীতে গিয়ে পৌঁছয় |’  তাই তাঁর সংগীতরচনা বিশ্বসংগীতসভায়্তি দুর্লভ উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত এক
অনির্বচনীয় দৃষ্টান্ত হয়ে বিরাজমান |

তেরো বছর বয়স থেকে শুরু করে আশি বছর বয়স পর্যন্ত ( জীবনের শেষ বছর )  রবীন্দ্রনাথ নিয়মিত গান রচনা ক’
রে গেছেন | সর্বাধিক ১১৫টি গান রচনা করেছেন তিপ্পান্ন বছর বয়সে |  ১৫ ও ৫৯ বছর বয়সে কবি কোন গান রচনা করেন নি
|  রবীন্দ্রনাথের প্রথম গান তেরো বছর বয়সে ‘গগনের থালে রবি চন্দ্র দীপক জ্বলে’ আর শেষ রচিত গান আশি বছর বয়সে
‘হে নূতন, দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ’ |

বিশিষ্ঠ রবীন্দ্রজীবনীকার ও গবেষক শ্রদ্ধেয় প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় অক্লান্ত পরিশ্রম ও গবেষণায় রবীন্দ্রনাথের সমগ্র গানের
সংখ্যা নিরূপণ করেছেন এবং সেই গবেষণালব্ধ ফসল লিপিবদ্ধ করেছেন ‘গীতবিতান – কালানুক্রমিক সূচী’  নামাঙ্কিত আকর
গ্রন্থে | কবির বিভিন্ন বয়সে রচিত গানের সংখ্যা প্রভাতকুমারের হাত ধরে দেখা যাক---- তেরো, চোদ্দ ও পঞ্চান্ন বছর বয়সে
২টি করে, সত্তরে ৪টি, বিয়াল্লিশে ৫টি, ঊনত্রিশ ও সাঁইত্রিশ বছর বয়সে ৬টি করে. পঁয়তাল্লিশ ও ঊনআশিতে ৭টি করে,
সাতষট্টি ও একাত্তরে ৮টিকরে, ষোলো, তেত্রিশ ও ছেচল্লিশ বছরে ৯টি করে, সতেরো, তেতাল্লিশ ও তিয়াত্তরে ১০টি করে,
আঠাশে ১১টি, একত্রিশ ও চল্লিশে ১৩টি করে, একচল্লিশ ও ছাপ্পান্নয় ১৪টি করে, আঠারো বছর বয়সে ১৬টি,  ছাব্বিশ,
সাতচল্লিশ ও আটান্নয় ১৯টি করে, ঊনসত্তর বছরে ২২টি, পঁয়ত্রিশে ২৩টি, আটত্রিশে ২৪টি, চুয়ান্নয় ২৫টি, বত্রিশে ২৭টি,
ছত্রিশে ৩০টি, বাষট্টিতে ৩১টি, কুড়ি বছর বয়সে ৩২টি,  চৌত্রিশ,  সাতান্ন ও তেষট্টিতে ৩৩টি করে, চুয়াল্লিশে ৩৭টি, আটষট্টি
ও বাহাত্তরে ৩৮টি করে, ঊনিশ বছরে ৪৪টি, চব্বিশ ও পঞ্চাশে ৪৫টি করে, ছেষট্টি ও আটাত্তরে ৪৬টি করে, একুশ ও পঁচিশে
৪৭টি করে, ঊনচল্লিশ ও পঁচাত্তরে ৪৯টি করে, বাইশ বছরে ৫৬টি, ষাট বছরে ৫৭টি, সাতাশ বছরে ৬০টি, পঁয়ষট্টি
বছরে ৬১টি, বাহান্ন ও চুয়াত্তরে ৬৪টি করে, ঊনপঞ্চাশ বছরে ৬৬টি, আটচল্লিশ বছরে ৭৬টি, সাতাত্তর বছরে ৮০টি,
ছিয়াত্তরে  ৮৮টি, তেইশবছরে ৯১টি, একষট্টিতে ৯৭টি, চৌষট্টিতে ৯৯টি এবং তিপ্পান্ন বছর বয়সে ১১৫ টি গান ( ‘কেন আর
মিথ্যে আশা’ কে ধরে ) | মোট ২১৭৭ টি |

সাধারণ অঙ্কের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ১৩ থেকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত রচিত রবীন্দ্রনাথের সর্বমোট গানের সংখ্যা ২১৭৭ |
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘গীতবিতান – কালানুক্রমিক সূচী’ অনুসারে মোট গানের সংখ্যা ২১৭৮ | একটি  মাত্র
গানের পার্থক্য হওয়ার কারণ হলো, দুটি গান দু’বার করে ধরা আছে গ্রন্থে আর একটি গান তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হওয়া | দু’বার
করে ধরা গান দু’টি হলো, ‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’ ও ‘বিরহে মরিব বলে ছিল মনে পণ’ এবং অন্তর্ভূক্ত হওয়া
গান ‘কেন আর মিথ্যে আশা বারে বারে’ |

এখন এই ২১৭৭ সংখ্যক গানের মধ্যে দেখা যাচ্ছে ১৯৫ টি গানের স্বরলিপি মুদ্রিত নেই অর্থাৎ বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ কর্তৃক
এ’ যাবৎ প্রকাশিত স্বরলিপি গ্রন্থমালা ‘স্বরবিতানে’  ঐ গানগুলি অনুপস্থিত | স্বরলিপিহীন / স্বরলিপিযুক্ত গানগুলির মধ্যে
কয়েকটি গান আবার ‘গীতবিতানে’ মুদ্রিত নেই | এই গানগুলি হলো ----

১.    কে আমার সংশয় মিটায়                 ----------       ১৯ বছর বয়সের রচনা
২.    নিকুম্ভ মর্দিনী অম্বে                        ----------        -----------    ঐ  -----------
৩.    হৃদয়ে রাখো গো, দে
বী                   ----------        ------------    ঐ  ----------
৪.    প্রভু দয়াময়, কোথা হে দেখা দাও       ---------         ২২ বছর বয়সের রচনা
৫.    আজ তোমায় ধরব চাঁদ                  ----------         -----------    ঐ -----------
৬.    ডাকি তোমারে কাতরে, দয়া কর দীনে  ----------        ২৩ বছর বয়সের রচনা
৭.    ছেলেখেলা কোরো না                    -----------         ----------     ঐ -----------
৮.    সখা, শেষ করা কি ভালো               -----------         ৩৯ বছর বয়সের রচনা
৯.    তুমি জান আমার গাছে                  -----------          ----------     ঐ ----------
১০.  কেন আর মিথ্যে আশা বারে বারে      ----------          ৫৩ বছর বয়সের রচনা
১১.  মুখের হাসি চাপলে কি হয়               -----------          ২৫ বছর বয়সের রচনা

একটি গান ‘চলে ছলো ছলো নদীধারা নিবিড় ছায়ায়’ অন্য একটি গান ‘দেখো দেখো শুকতারা আঁখি মেলে চায়’ এর পরিপূরক
হলেও স্বতন্ত্রভাবে স্বরলিপি না থাকায় গানটিকে ( চলে ছলো ছলো---- )  স্বরলিপিহীন বলে ধরে নেওয়া যায় | বস্তুতঃ গ্রন্থকার
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় গানটির স্বরলিপি নেই বলে উল্লেখ করেছেন ‘গীতবিতান কালানুক্রমিক সূচী গ্রন্থে’ |

এই যে রবীন্দ্রনাথের প্রায় দুইশত ( ১৯৫ ) গানের স্বরলিপি নেই, সে বিষয়ে সংগীতপিপাসু মাত্রই কৌতূহলী হবেন | তাই যে
গানগুলির স্বরলিপি মুদ্রিত নেই সেই গানগুলির তালিকা দেওয়া হলো রাগ তাল সমেত ( যেগুলির উপলব্ধ ) . . .

১.    সাধের কাননে মোর         ( জয় জয়ন্তী – ঝাঁপতাল )                                            
এই পাতার উপরে . . .   
২.    হম সখি দারিদ নারী        ( ভানু সিংহের পদাবলী --- ভৈরবী )
৩.    সখিরে পিরীত বুঝবে কে   ( ভানু সিংহের পদাবলী --- টোড়ি )
৪.    বাদর বরখন, নীরদ গরজন ( ভানু সিংহের পদাবলী – মল্লার )
৫.    বার বার সখি, বারণ করণু  ( ভানু সিংহের পদাবলী – ইমনকল্যাণ )
৬.    অরি বিষাদিনী বীণা          ( বাহার – কাওয়ালি  )
৭.    ভারতরে তোর কলঙ্কিত পরমানুরাশি    ( ভৈরবী )
৮.    মাধব, না কহ আদর বাণী   ( ভানু সিংহের পদাবলী ---- বাহার )
৯.    পাগলিনী তোর লাগি
১০.   ওই কথা বলো সখি, বলো আরবার  ( সিন্ধু – কাফি--- কাওয়ালি )
১১.   মন হতে প্রেম যেতেছে শুকায়ে  ( ভূপালী  )
১২.   গিয়াছে সেদিন যেদিন হৃদয়     ( ভৌরবী – ঝাঁপতাল )
১৩.   না সখা, মনের ব্যথা কোরোনা গোপন     ( ইমন কল্যাণ --- কাওয়ালি )
১৪.    কী করিব বলো সখা  ( ইমনকল্যাণ ---কাওয়ালি )
১৫.    ও কথা বোলো না তারে   ( ঝিঁঝিট খাম্বাজ )
১৬.    হম যব না রব সজনী  ( ভানু সিংহের পদাবলী ----- বেহাগ )
১৭.    ছি  ছি  সখা, কী করিলে  ( জয়জয়ন্তী /  মিশ্রছায়ানট --- ঝাঁপতাল )
১৮.    সখী,  আর কতদিন সুখহীন শান্তিহীন   ( জয়জয়ন্তী ---- ঝাঁপতাল )
১৯.    সখিলো সখিলো নিকরুণ মাধব          ( ভানু সিংহের পদাবলী )
২০.    বিপাশার তীরে ভ্রমিবারে যাই           ( খট্ --- একতাল  )
২১.    খেলা কর্ , খেলা কর্                     ( কালাংড়া --- কাওয়ালি )
২২.   কে আমার সংশয় মেটায়                
২৩.   নিশুম্ভ মর্দিনী অম্বে    ( কানাড়া )
২৪.   হৃদয়ে রাখ গো দেবি  ( গৌড়মল্লার )
২৫.   কতদিন একসাথে ছিনু ঘুমায়ে ( ভৈরবী – কাওয়ালি  )
২৬.  যে ভালোবাসুক  সে ভালোবাসুক  ( মিশ্র )
২৭.  কে তুমি গো খুলিয়াছ স্বর্গের দুয়ার  ( মূলতান – আড়াঠেকা )
২৮.  জগতের পুরোহিত তুমি   ( খাম্বাজ – একতাল )
২৯.  তুমি হে প্রেমের রবি   ( জয়জয়ন্তী --- ঝাঁপতাল )
৩০.  করবীতে ফুল শুকালো  ( ললিত )
৩১.  এসো গো এসো বনদেবতা   ( প্রভাতী )
৩২.  আর কি আমি ছাড়ব তোরে   ( টোড়ি—ঝাঁপতাল )
৩৩.  আজ আমার আনন্দ দেখে কে
৩৪.  প্রভু,  এলেম কোথায়  ( আলাইয়া---- আড়াঠেকা )
৩৫.  প্রভু দয়াময়, কোথা হে দেখা দাও ( রামকেলি --- কাওয়ালি )
৩৬.  ভিক্ষে দে গো,  ভিক্ষে দে ( ছায়ানট --- কাওয়ালি )
৩৭.  মেঘেরা চলে যায় ( বেহাগ )
৩৮.  আয়রে আয়রে সাঁঝের   ( গৌড় সারং --- একতালা )
৩৯.  আজ তোমায় ধরব চাঁদ ( সোহিনী )
৪০.  রজনী পোহাইল, চলেছে যাত্রীদল  ( বিভাস --- ঝাঁপতাল )
৪১.  সোনার পিঞ্জর ভাঙিয়ে আমার ( ভৈরবী—একতালা )
৪২.  বসন্ত আোল রে ( ভানু সিংহের পদাবলি , বাহার )
৪৩.  শ্যামরে নিপট কঠিন মন তোর ( ভানু সিংহের পদাবলি , বেহাগড়া )
৪৪.  বঁধূয়া, হিয়া—পর আওরে  ( ভানু সিংহের পদাবলি, ভৈরবী )
৪৫.  শুন সখি,  বাজত বাঁশি  ( ভানু সিংহের পদাবলি )
৪৬.  শ্যাম, মুখে তব মধুর অধরমে ( ভানু সিংহের পদাবলি --- খাম্বাজ )
৪৭.  দিন তো চলি গেল প্রভু, বৃথা ( আশাবরি টোড়ি – তেওট )
৪৮.  দুয়ারে বসে আছি, প্রভু, সরাবেনা ( কামোদ – ধামার )
৪৯.  তাঁহার প্রেমে কে ডুবে আছে  ( ভৈঁরো—একতালা )
৫০.  সখা, মোদের বেঁধে রাখো প্রেম ডোরে ( ভৈরবী – একতালা )
৫১.   ডাকি তোমারে কাতরে, দয়া কর দীনে ( ইমনকল্যাণ--- চৌতাল )
৫২.  আইল আজি প্রাণসখা ( কেদারা – আড়াকোঠা )
৫৩.  আমার হৃদয় সমুদ্রতীরে কে তুমি দাঁড়ায়ে  ( কীর্তনের সুর )
৫৪.  অসীম সংসার যার কেহ নাহি কাঁদিবার  ( ভৈরবী --- ঝাঁপতাল )
৫৫.  দেখায়ে দে কোথা আছে একটু বিরল  ( দেশ--- আড়াঠেকা )
৫৬.  গা সখী, গাইলি যদি, আবার সে গান  ( মিশ্রবাহার – আড়াঠেকা )
৫৭.  সেই যদি সেই যদি ভাঙিল এ পোড়া হৃদি ( গৌড়সারং—ঝাঁপতাল )
৫৮.  একবার বলো সখি, ভালোবাসা মোরে  ( সাহানা---আড়াঠেকা )
৫৯.  এ’ ভালোবাসার যদি দিতে প্রতিদান  ( কাফি --- আড়াঠেকা )
৬০.  ও কি সখা, কেন মোরে কর তিরস্কার   ( সরফর্দা--- ঝাঁপতাল )
৬১.  এতদিন পরে, সখী, সত্য সে কি হেথা ফিরে এল  ( জয়জয়ন্তী --- কাওয়ালি )
৬২.  ছেলেখেলা করো না
৬৩.  শুভদিনে শুভক্ষণে পৃথিবী আনন্দ মনে ( সাহানা – যৎ )
৬৪.  মায়ের বিমল যশে যে সন্তান অরপিবে
৬৫.  আজি কাঁদে কারা ওই শুনা যায়  ( বেহাগ --- একতাল )
৬৬.  শান্তি সমুদ্র তুমি গভীর  ( টোড়ি – ঢিমে তেতালা  )
৬৭.  বর্ষ গেল, বৃথা গেল, কিছুই করিনি হায় ( ললিত – আড়াঠেকা )
৬৮.  ইহাদের কর আশীর্বাদ  ( ঝিঁঝিট – কাওয়ালি )
৬৯.  কো তুঁহু বোলবি মোয়  ( ভানু সিংহের পদাবলি ---- ইমনকল্যাণ )
৭০.  ভয় হয় পাছে তব নামে আমি আমারে করি প্রচার হে ( দেওগিরি--- সুরফাঁকতাল )
৭১.  আঁধার সকলই দেখি তোমারে দেখিনা যবে  ( মিশ্রকানাড়া )
৭২.  শোন্ রে শোন্ অবোধ মন
৭৩.  জয় রাজরাজেশ্বর | জয় অরূপসুন্দর  ( ভূপালী--- তালফেরতা )
৭৪.  হৃদয়মন্দিরে, প্রাণাধীশ, আছ গোপনে  ( বেহাগ --- কাওয়ালি )
৭৫.  সুমধুর শুনি আজি, প্রভু, তোমার নাম  ( শঙ্করাভরণ ---আড়াঠেকা )
৭৬.  যদি ভরিয়া লইবে কুম্ভ  ( ভৈরবী --- ঝাঁপতাল )
৭৭.  ওঠোরে মলিনমুখ, চলো এইবার
৭৮.  এসো গো নূতন জীবন  ( ভৈরোঁ )
৭৯.  হে অনাদি অসীম সুনীল অকূল সিন্ধু  (ভৈরবী )
৮০.  একদা প্রাণে কুঞ্জবনে অন্ধ বালিকা  ( ভৈরবী – ঝাঁপতাল )
৮১.  তুমি পরিতেছ হেসে তরঙ্গের মত এসে
৮২.  কেন নিবে গেল বাতি  ( গৌড় সারং --- একতালা )
৮৩.  উজ্জ্বল করো হে আজি এ আনন্দরাতি ( ভূপালী ---- একতালা )
৮৪.  তোমাহীন কাটে দিবস হে প্রভু ( বাগেশ্রী --- আড়াঠেকা )
৮৫.  হৃদয় আবরণ খুলে গেল
৮৬.  আমার সত্যমিথ্যা সকলই ভুলায়ে দাও ( দেশ --- একতালা )
৮৭.  মনপ্রাণ কাড়িয়া লও হে হৃদয়স্বামী
৮৮.  ব্যাকুল প্রাণ কোথা সুদূরে পিরে  ( ভূপালী --- মধ্যমান )
৮৯.  আজি উন্মাদ মধুনিশি  ( বেহাগ --- কাওয়ালি )
৯০.  সে আমি কহিল, ‘প্রিয়ে মুখ তুলে চাও’  ( কীর্তনের সুর )
৯১.  বৃথা গেয়েছি বহু গান  ( মিশ্র কানাড়া )
৯২.  এবার চলিনু তবে  (বিভাস )
৯৩.  বন্ধু কিসের তরে অশ্রু ঝরে ( বিভাস --- একতালা )
৯৪.  উঠি চলো, সুদিন আইল   ( কেদারা --- সুরফাঁক্তা )
৯৫.  তুমি কাছে নাই বলে হেরো, সখা, তাই  ( কীর্তন )
৯৬.  আজি শুভ শুভ্র প্রাতে কি বা শোভা দেখালে  ( দেওগান্ধার )
৯৭.  রক্ষা করো হে  ( আসোয়ারী --- চৌতাল )
৯৮.  দিনের বিচার করো ( পূরবী --- একতালা )
৯৯.  ভাঙা দেউলের দেবতা ( পূরবী --- একতালা )
১০০. সখা, শেষ করা কি ভালো ( ললিত কেদারা --- ভৈরবী )
১০১. ওগো হৃদয়বনের শিকারী  ( সিন্ধু ভৈরবী )
১০২. আমি কেবল ফুল যোগাব   ( খাম্বাজ  )
১০৩. তুমি আমায় করবে মস্ত লোক  ( ভৈরবী )
১০৪. চির পুরানো চাঁদ  ( সিন্ধু )
১০৫. পোড়া মনে শুধু পোড়া মুখখানি জাগেরে  ( ভৈরোঁ )
১০৬. যার মরণদশায় ধরে
১০৭. সকলই ভুলেছে ভোলা মন
১০৮. কার হাতে যে ধরা দেব, প্রাণ ( কাফি )
১০৯. বিরহে মরিব ব’লে ছিল মনে পণ ( কাফি )
১১০. তুমি জান আমার গাছে
১১১. ওগো দয়াময়ী চোর, এত দয়া মনে তোর ( ভৈরবী )
১১২. ভক্ত করিছে প্রভুর চরণে জীবন সমর্পণ  ( ইমন ভূপালী )
১১৩. ভুলে ভুলে আজ ভুলময়
১১৪. ওগো দেবতা আমার, পাষাণদেবতা ( ভৈরবী --- একতালা )
১১৫. নব বত্সর করিলাম পণ লব স্বদেশের দীক্ষা ( মিশ্র ঝিঁঝিট --- একতালা )
১১৬. জয় তব হোক জয়
১১৭. দুজনে যেথায় মিলিছে সেথায় ( সিন্ধুভৈরবী ---- একতালা )
১১৮. আজ সবাই জুটে আসুক ছুটে যে যেখানে থাকে
১১৯. ঘরে মুখ মলিন দেখে গলিস নে ( বাউল )
১২০. গভীর রাতে ভক্তি ভরে কে জাগে আজ  ( কানাড়া--- একতালা )
১২১. আজ বরষার রূপ হেরি মানবের মাঝে
১২২. আমারে তুমি কিসের ছলে পাঠাবে দূরে
১২৩. এ যে মোর আবরণ
১২৪. যেখানে রূপের প্রভা নয়ন-লোভা
১২৫. আমার ঘুর লেগেছে --- তাধিন্ – তাধিন্
১২৬.ভয়েরে মোর আঘাত করো ভীষণ , হে ভীষণ
১২৭. আমি কেবল তোমার দাসী
১২৮. এ অন্ধকার ডুবাও তোমার অতল অন্ধকারে
১২৯. অন্ধকারের মাঝে আমায় ধরেছ দুই হাতে
১৩০. বাজেরে বাজেরে ওই
১৩১. আমার বাণী আমার প্রাণে লাগে
১৩২.  হে অন্তরের ধন
১৩৩ . দু’জনে এক হ’য়ে যাও, মাথা রাখো একের পায়ে
১৩৪.  তোমার রঙিন পাতায় লিখব প্রাণের কোন্ বারতা
১৩৫.  দুঃখ এ নয়, সুখ নহে গো --- গভীর শান্তি  এযে
১৩৬.  পথে যেতে তোমার সাথে মিলন হলো
১৩৭.  আমায় নিকড়িয়া-রসের রসিক
১৩৮. যখন দেখা দাওনি,  রাধা
১৩৯. বঁধূর লাগি কেশে আমি পরব এমন ফুল
১৪০.  মধূঋতু নিত্য হ’য়ে রইল তোমার
১৪১.  বলো, বলো বন্ধু বলো তিনি তোমার কানে কানে ( বাউল )
১৪২. শুধু কি তার বেঁধেই তোর কাজ ফুরাবে
১৪৩ . ফেলে রাখলেই কি  পড়ে রবে
১৪৪. সাধন কি মোর আসন নেবে হট্টগোলের কাঁধে
১৪৫. তাহার অসীম মঙ্গললোক হ’তে  ( সাহানা )
১৪৬. জলে-ডোবা চিকণ শ্যামল
১৪৭. স্বপন লোকের বিদেশিনী কে যেন এলে কে
১৪৮. হিয়া মাঝে গোপনে হেরিযে তোমারে ( পিলু )
১৪৯  হে তাপস., তব শুষ্ক কঠোর
১৫০  তোর প্রাণের রস তো শুকিয়ে গেল ওরে
১৫১  শেষ ফলনের ফসল এবার
১৫২. আমার মনের বাঁধন ঘুচে যাবে যদি ও ভাইরে
১৫৩. এতদিন পরে মোরে ( ভৈরবী )
১৫৪. নূতন পথের পথিক হ’য়ে আসে, পুরাতন সাথী
১৫৫. কাজ ভোলাবার কে গো তোরা
১৫৬. কালো মেঘের ঘটা  ঘনায় রে
১৫৭. আঁধারের লীলা আকাশে
১৫৮. বাঁধন কেন ভূষণ বেশে
১৫৯. আকাশ, তোমায় কোন রূপে মন চিনতে পারে
১৬০. পান্থ পাখির রিক্ত কুলায় বনের গোপন ডালে
১৬১. তোমার হাতের অরুণলেখা পাবার লাগি রাতারাতি
১৬২. ওরে, তোরা যখন শুনবিনা
১৬৩. সন্ন্যাসী ধ্যানে নিমগ্ন তোমার চিত্ত
১৬৪. আরাম-ভাঙা উদাস সুরে
১৬৫. আপন মনে গোপন কোণে
১৬৬. জয় জয় জয় হে জয় জ্যোতির্ময়
১৬৭. আয় তোরা আয় আয় গো
১৬৮. তোমাদের দান যশের ডালায়
১৬৯. কত ডেকে ডেকে জাগাইছে মোরে ( বেহাগ --- একতালা )
১৭০. দয়া করো দয়া করো প্রভু , ফিরে ফিরে
১৭১. ও জলের রাণী
১৭২. ভয় নেই রে তোদের নেইরে ভয়
১৭৩. ঝাঁকড়া চুলের মেয়ের কথা কাউকে বলিনি ( বাউল )
১৭৪. বলেছিল ‘ধরা দেবনা’ শুনেছিল সেই বড়াই
১৭৫. প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্র মাস
১৭৬. আমরা না-গান-গাওয়ার দল রে
১৭৭. ও ভাই কানাই, কারে জানাই
১৭৮. চলে যাবি এই যদি তোর মনে থাকে ( সিন্ধু কাফি )
১৭৯. প্রভাতের আদিম আভাস অরুণবর্ণ
১৮০. এ কথা মিথ্যা অতি ঘোর
১৮১. ঠিক ঠিক ওরে মুগ্ধ
১৮২. কঠিন বেদনার তাপস দোঁহে
১৮৩. চলে ছলো ছলো নদীধারা নিবিড় ছায়ায়
১৮৪. আমরা ঝরে-পড়া ফুল দল
১৮৫. আজকে মোরে বোলো না
১৮৬. গুরুপদে মনে করো অর্পণ
১৮৭. যুদ্ধ যখন বাধিল অচলে চঞ্চলে
১৮৮. ভোর থেকে আজ বাদল ছুটেছে
১৮৯ এই তো ভরা হলো ফুলে ফুলে
১৯০. সুরের জালে কে জড়ালে আমার মন
১৯১. শ্রাবণের বারিধারা ঝরিছে বিরামহারা
১৯২. আলোকের পথে প্রভু, দাও দ্বার খুলে
১৯৩. পাখি, তোর সুর ভুলিস নে
১৯৪.  আমার হারিয়ে যাওয়া দিন
১৯৫.  মুখের হাসি চাপলে কি হয়                                                                  
এই পাতার উপরে . . .     

এখনও পর্যন্ত স্বরবিতানের ৬৬টি খন্ড প্রকাশিত | স্বরবিতানের ৬৫ খন্ডটি ‘পরিশোধ নাট্যগীতি’ | এই খন্ডের গানগুলি ‘শ্যামা’
নৃত্যনাট্য স্বরবিতান ১৯-এ সংকলিত আছে | কেবলমাত্র প্রহরীগণের গান ‘রাজার  আদেশ ভাই--- চোর ধরা চাই,   চোর ধরা
চাই’ এই ছোট্ট গানের স্বরলিপি সংযোজিত হয়েছে |
এ’ছাড়া আছে পরিশোধ নৃত্যনাট্য নিয়ে আলোচনা |

স্বরবিতানের ৬৬ খন্ডটি শিশুতীর্থ আখ্যান—গীতিনাট্য | এই খন্ডের গানগুলির স্বরলিপি ইতিপূর্বে স্বরবিতানের বিভিন্ন খন্ডে
সংকলিত আছে |

দেখা যাচ্ছে, স্বরলিপিহীন গানগুলির স্বরলিপি স্বরবিতানের ৬৪ খন্ডের পরবর্তী কোন খন্ডে প্রকাশিত হয়নি | তার অর্থ এই যে,
রবীন্দ্রনাথের ১৯৫ টি গানের স্বাদ থেকে শিক্ষার্থী ও অনুরাগীবৃন্দ বঞ্চিত হ’য়ে আছেন বহুকাল যাবৎ |  এই যে বিপুল সংখ্যক
গান রচিত হ’লো, তার তাল লয় রাগ ইত্যাদি নির্দিষ্ট হ’লো,  সেগুলি স্বরলিপিবদ্ধ হ’লো না কেন তার উত্তর কি এখন  জানা
সম্ভব | আর সম্ভব হলেও মূল সমস্যা সমাধানের পথে কতদূর এগনো যাবে |

আমরা জানি যে, রবীন্দ্রনাথ যখনই কোন গান রচনা সম্পূর্ণ করতেন, সে গান তখনই কাউকে শোনাতেন সুরটি ধরে রাখার
জন্য, পাছে পরবর্তী সময়ে নিজে তাঁর সুরটি ভুলে যান | এ’ ব্যাপারে তার গানের ভান্ডারী দিনেন্দ্র নাথ ঠাকুরের নাম
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য | বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গুণীজন রবীন্দ্রনাথের গানের স্বরলিপি নির্মাণ করেছেন | কবি নিজেও তাঁর
গানের স্বরলিপি তৈরী করেছেন কখনও কখনও | প্রশ্ন হলো, কেবল এই গানগুলিই তার ব্যতিক্রম কেন ?


অনুমান করতে বাধা নেই, কবির বিভিন্ন বয়সে রচিত গানগুলি সেই সময় হয়তো গাওয়া হতো | যাঁরা সেই গানগুলি গাইতেন,
সুরের একটা কাঠামোকে ভিত্তি করেই নিশ্চয় গাইতেন | সুরের সেই কাঠামোর কোন লিখিত রূপ তাঁরা রেখেছিলেন কি না কে
জানে ! ধরে নেওয়া যায়, গানগুলির সুর একজনের থেকে অন্যজনে মুখে মুখে প্রচারিত হলেও পরবর্তী প্রজন্মের কেউ তার
লিখিত রূপ ধরে রাখেনি | এ’ বিষয়ে স্বয়ং স্রষ্টার কোন নির্দেশ ছিল কি না আমরা জানিনা |

এখন আমাদের প্রশ্ন --- এই গানগুলি এখনো কি গাওয়া হয় ?  এই  গানগুলি এখন  কেউ গাইতে চাইলে স্বরলিপি  কোথায়
পাবেন ? স্বরলিপিহীন গানগুলি কি কখনও গীত হওয়ার মর্যাদা পাবে না --- সুর-তাল-লয়বদ্ধ হ’য়ে কেবল অন্তরালেই থেকে
যাবে ? অগণিত রসিকজনের শ্রবণে প্রবেশের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে ?  এই বঞ্চনার অবসান হোক | রবীন্দ্রনাথের গান
নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন, এ’বিষয়ে তাঁরা আলোকপাত করলে রবীন্দ্রপ্রেমী মাত্রই পুলকিত বোধ করবেন |

বিষয়টি অবশ্যই গবেষণা নির্ভর | আর এই গবেষণার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মত গুণী দক্ষ গবেষক ও বিশেষজ্ঞজন বিরল
নয় | প্রয়োজন যথার্থ উদ্যোগ ও উদ্যমের | আশা করা যায়, অদূর ভবিষ্যতে রবীন্দ্রগান বিশেষজ্ঞ ও গবেষকগণ এই সকল
গানের স্বরলিপি উদ্ধারের হদিশ দিতে পারবেন এবং স্বরলিপি প্রকাশের মাধ্যমে বহুকালের অবরুদ্ধ রবীন্দ্রগানের মুক্তধারায়
অবগাহন ক’রে রবীন্দ্রগান পিপাসু জনমানস কালের সঞ্চিত তৃষ্ণা মেটাতে সক্ষম হবেন | কাজেই স্বরবিতানের আরও বহু খন্ড
প্রকাশের প্রত্যাশা নিয়ে আমরা অপেক্ষায় থাকব | এ’ ব্যাপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও দায়িত্ব পালন করতে পারেন
বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ কর্তৃপক্ষ |

রবীন্দ্রনাথের কথাতেই এই আলোচনা শেষ করি--- “আমরা যা-কিছু জানি তার কিছুই থাকবেনা এবং যা চিরকাল থাকবে তার
আমরা কিছুই জানিনে |”


ঋণস্বীকার -
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত                                 
“গীতবিতান –কালানুক্রমিক সূচী |”                                  

লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ -
দীপক দে
“নবনীড়”
শুকসনাতনতলা মেন রোড
পোঃ চন্দননগর
জেঃ  হুগলী
পিনঃ ৭১২১৩৬
দূরভাষ - +৯১৩৩২৬৮৩৫১৩০
চলভাষ - +৯১৯৪৩৩৮২৮২৬০                                                                           
এই পাতার উপরে . . .  


আমরা
মিলনসাগরে  দীপক দে-র এই রচনাটি তুলে আনন্দিত।

দীপক দে-র কবিতার পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন
দীপক দে-র পরিচিতি পড়তে এখানে ক্লিক্ করুন
এই ওয়েবসাইটে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক্ করুন।     



আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     


এই পাতা প্রকাশ - ১০.৬.২০১৪
...