অজ্ঞাতবাসের চোদ্দদিন কবি দীপক রায় ১৯৯২ সালে প্রকাশিত ‘অজ্ঞাতবাসের চোদ্দদিন’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি ১৯৯১ সালে প্রকাশিত, উত্তম দাশ ও মৃত্যুঞ্জয় সেন সম্পাদিত "আধুনিক প্রজন্মের কবিতা" সংকলন থেকে।
জিজ্ঞাসা কোরো না এই চোদ্দদিন কোথায় ছিলাম আমি জলে ভিজেছি এই চোদ্দদিন---আমাকে আর ঠাণ্ডা জলে চান করিও না, আমি খুঁজে পাইনি গলি, আমার ফেরার রাস্তা। ওই চোদ্দদিন আমি শুধু ফেরার কথা ভেবেছি ফেরার কথা ভেবেছি, কিন্তু খুঁজে পাইনি গলি। তখন ছিল অন্ধকার অন্ধকার থেকে আলো আনতে পারিনি। পোশাক খুলে নিয়ে চলে গেছে এক মজার লোক। আমার চোখে কি যে বুলিয়ে দিল সে! তারপর শুধু চোদ্দদিন রোদে বৃষ্টিতে অন্ধকারে।
নখ বেড়েছে চুল দাড়ি বেড়েছে ক্ষিদে বেড়েছে। আর চারদিক থেকে আলো কমে গিয়েছিল শুধু তারপর উত্তর থেকে দক্ষিণে---দক্ষিণ থেকে উত্তরে এমন দিনে দেখা হল তার সঙ্গে সে আমাকে আবার নিয়ে যাবে। আমাকে আবার গরম হলে চান করাবে। নখ চুল কেটে দেবে। লোকেদের সঙ্গে চিনিয়ে দেবে বুকের জড়ুল দেখিয়ে! আমার আমি কাঁদবো ? আমার আমি অষুধ খাবো ? গান হবে ? কিন্তু সর্ত দাও, জিজ্ঞেস করবে না। কেউ জিজ্ঞেস করবে না--- . কোথায় ছিলাম এই চোদ্দদিন!
চিহ্ন ১৯৭১ কবি দীপক রায় ১৯৯২ সালে প্রকাশিত ‘অজ্ঞাতবাসের চোদ্দদিন’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা।আমরা কবিতাটি পেয়েছি ১৯৯১ সালে প্রকাশিত, উত্তম দাশ ও মৃত্যুঞ্জয় সেন সম্পাদিত "আধুনিক প্রজন্মের কবিতা" সংকলন থেকে।
বাস থেকে নামিয়ে কাল যাদের গুলি করা হল তাদের লাশ সারারাত পড়েছিলো রাস্তায় লাশগুলি মর্গে যাবে আজ
শুধু ওয়াসিম কাপুরের তেল রঙ ছবির মতন দু এক ফোঁটা রক্ত লেগেছিলো দেওয়ালে দেওয়ালে . . .
স্নাত কবি দীপক রায় ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত ‘স্লেজগাড়ি’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা। ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও দীপক রায় সম্পাদিত "এই শতাব্দীর প্রেমের কবিতা" সংকলন থেকে নেওয়া।
এই দুপুরে এক অলৌকিক হ্রদ থেকে উঠে এলে। কানের পাশে গড়াচ্ছে জল। চিবুক বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা বুকের অন্তরঙ্গতায়। # একটি দূরে দাঁড়াও। না হলে তোমাকে ছুঁয়ে ফেলবো। কাবুল থেকে এসেছি জোব্বা পরে। কাল পরশু কি পরদিন ফিরে যাব আফগানে। এই নাও আখরোট হিং বাদাম কিসমিস। আমার আফগানের বালি আছে ঝুলিতে। নাও। আর যে হ্রদ থেকে এই দুপুরে ভিজে উঠে এলে তুমি ---আলগোছে কিছুটা জল নিংড়ে দাও পান করি আর তোমাকে দেখি---স্নাত তুমি, . ---আলগোছে তোমাকে একবার।
আঁধার হয়ে এলো, বাবুলাল কবি দীপক রায় ১৯৯২ সালে প্রকাশিত ‘অজ্ঞাতবাসের চোদ্দদিন’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি ১৯৯১ সালে প্রকাশিত, উত্তম দাশ ও মৃত্যুঞ্জয় সেন সম্পাদিত "আধুনিক প্রজন্মের কবিতা" সংকলন থেকে।
বাবুলাল, আজ আমি উঠে দাঁড়াবো, আমায় তুমি ধরো। বাবুলাল, আজ আমি স্টেশনে দাঁড়াবো, আমায় তুমি ধরো।
সেতু পার হয়ে কোথায় চলে যাচ্ছি ঝম্ ঝম্ ঝম্ ঝম্। বাইরে সরে যাচ্ছে খেলার মাঠ তাঁবু জঙ্গল ইঁটভাটা চিমনির আলো। স্টেশনে নামতে বলে সে চলে গেছে আর বছর ঘুরে গেল। সে কি অপেক্ষা করে আছে ওয়েটিংরুমে! দেখতে দেখতে দিন কাটে। রাত হয়ে যায় কখন। রাত্রি হয়ে যায়। রোত ভোর হয়। কেন আমার নামা হয় না, বাবুলাল ? কেন স্টেশন, খুঁজে পাই না।
বাবুলাল, আজ আমি উঠে দাঁড়িয়েছি, আমায় তুমি ধরো জঙ্গলের মধ্যে, অন্ধকারের মধ্যে তাঁবু আর খেলায় মাঠের মধ্যে আমি যে স্টেশন খুঁজে পাচ্ছি না, আমায় তুমি ধরো।
আপনার জন্য কবি দীপক রায় ১৯৯২ সালে প্রকাশিত ‘অজ্ঞাতবাসের চোদ্দদিন’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা। আমরা কবিতাটি পেয়েছি ১৯৯১ সালে প্রকাশিত, উত্তম দাশ ও মৃত্যুঞ্জয় সেন সম্পাদিত "আধুনিক প্রজন্মের কবিতা" সংকলন থেকে।
এই তুচ্ছ গার্ডার চেয়ে নিয়ে কাল যে বিনুনি জড়ালেন সেই লোভে আজ আমি প্রচুর গার্ডার এনেছি---লাল নীল সবুজ। আমা আমার গার্ডারে বোতাম আটকানো আছে। বিশ্বাস করুন, আপনাকে মানাবে ভাল, এই প্রত্যয় নিয়ে আপনার পিছন পিছন তিন মাইল হাঁটা হল। আজ আপনি যথেষ্ট সজ্জিত। রাজহাঁস। দীঘিতে সাঁতার কাটছেন। হে ঈশ্বর, যেন আপনার চটির স্ট্র্যাপ ছিঁড়ে যায়। মুহূর্তের স্বর্গ মর্ত্য পাতাল ওলট পালট। মুখ থুবড়ে পড়ে যাব প্রায়। ---এই যে আপনার জন্যই অমরাবতী থেকে বয়ে এনেছি তুচ্ছ নয়, অতীব মহার্ঘ সেফটিপিন। আপনি স্ট্র্যাপ আটকে নিন। রদ্যাঁর ভাস্কর্য ---ভেজা কাপড়ে দেখে নিই আপনাকে --- নিচু হয়ে সেফটিপিন দিয়ে ও কি করছেন আপনি ?
ছিন্ন বিচ্ছিন্ন কবি দীপক রায় মিলনসাগরে প্রকাশ কাল ১৭.৫.২০১৮। ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত ‘এখানে যিনি থাকেন তিনি রাজা’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা। কবিতাটি আমাদের বাংলায় টাইপ করে পাঠিয়েছেন কবির বিশেষ স্নেহভাজন, “ক্ষেপচুরিয়াস” পত্রিকার সম্পাদক শ্রী জুবিন ঘোষ। তাঁর ইমেল : jubgho@gmail.com । কবির পাশাপাশি আমরা তাঁর কাছেও কৃতজ্ঞ।
১ হাতের মধ্যে আর বুকের মধ্যে আর… লুকিয়ে ছিল বটের মতন বিরাট অন্ধকার
৪ কে যায় মেঘের ছায়ায় হলুদ ধানের গন্ধ ছড়িয়ে কে আহত পাখির ভেজা চোখ কার # কে যায় কে যায়
এখানে যিনি থাকেন তিনি রাজা কবি দীপক রায় মিলনসাগরে প্রকাশ কাল ১৭.৫.২০১৮। ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত ‘এখানে যিনি থাকেন তিনি রাজা’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা। কবিতাটি আমাদের বাংলায় টাইপ করে পাঠিয়েছেন কবির বিশেষ স্নেহভাজন, “ক্ষেপচুরিয়াস” পত্রিকার সম্পাদক শ্রী জুবিন ঘোষ। তাঁর ইমেল : jubgho@gmail.com । কবির পাশাপাশি আমরা তাঁর কাছেও কৃতজ্ঞ।
এখানে জ্যোৎস্না সবুজ। এখানে পাতা ঝরার শব্দ . এখানে যিনি থাকেন তিনি রাজা। এখানে রোদের গন্ধে নির্জনতা। এখানে নির্জনতায় পাখির কান্না। . এখানে যিনি থাকেন তিনি রাজা। এখানে জলের শব্দে কম্পন। এখানে পাতার মর্মরে হাহাকার। . এখানে যিনি থাকেন তিনি রাজা। # এখানে এক রাজা থাকেন। তার নগ্ন হাত আর পা। . ধূসর তার মুখ। . করতলে মাটির গন্ধ। এখানে রাতের আঁধারে বাতাবির গন্ধে তিনি হাঁটেন। দুপুরের রোদে দীঘির জলে পা ডুবিয়ে বসেন। আর অবিরল ধারায় বৃষ্টি হলে তিনি নতজানু প্রার্থনা করেন।