দণ্ডিরাজার ঊর্ব্বশীর প্রণয় নিবেদনের উত্তরে বলছেন---
তোমাকে যে ভালবাসি, প্রেয়সি কি তা জাননা | গেল রাজ্য, সে ঐশ্বর্য্য, তাহে করি না ভাবনা | যাবত রব জীবনে, হব সুখী তব সনে, অভিলাষ ছিল মনে, যদি বিধি প্রতিবাদী, তবে আর কারে সাধি কে নাশিবে এ যাতনা।
তবে আর প্রয়োজন নাহি এ জীবনে | তেজিব জীবন আমি নাথ তব সনে || আমার বিচ্ছেদ তুমি সহিতে না পার | সেই হেতু প্রাণ দিতে করিলে স্বীকার || আমার উপায় আর আছে কিহে সখা | কি আসা. এত জ্বালা সয়ে প্রাণ রাখা || রেখেছিলে বহুদিন তোমা আশ্রমে | প্রণয়ের পাশে মোরে বেঁধেছিলে ক্রমে || এখন তেজিয়ে তুমি প্রবেশিলে জলে | দহিতেছে এ হৃদয় ঘোর দুখানলে || আমাদের প্রণয়েতে বাদী হন হরি | কিন্তু তারে দেখাইব প্রাণ পরিহরি || তথাপি না ছাড়াছাড়ি হবে তহ সহ | কে সহিবে বিচ্ছেদের যাতনা দুঃসহ || বালবাসা হবে আশা করেছিনু মনে | গেল দুঃখ হল সুখ, রব তব সনে || সেইত অমরাবতী যথা মন সুখ ; ভুলেছিনু সকলি হে চেয়ে তব মুখ || যে বদন ইন্দুনাথ শুকাইল ত্রাসে | অভিমানে নয়ন কমল নীরে ভাসে || প্রাণের অধিক ভালবেসেছি যে জনে | তাহার এতেক কষ্ট সহিব কেমনে || কেমন করিয়া আমি নয়নে দেখিব | জীবন তেজিবে মোর জীবন বল্লভ || আজ্ঞা কর প্রাণনাথ ঘুচাই যাতনা | আর কেহ কার লাগি ভাবিতে হবে না ||
কি কব মনেরই কথা, সকলি রহিল মনে | এমন হইবে শেষে, না জানি কখন জ্ঞানে || কি আর জানাব আমি, জানেন অন্তরযামী, শুনিয়া তোমার বাণী, যে করে আমার প্রাণে | করেছিনু এক আশা, ঘটিল আর এক দশা, বিষম স্বপন ধনী, দেখালে অধীর জনে ||