লাল ঝুঁটি কাকাতুয়া ধরেছে যে বায়না চাই তার লাল ফিতে চিরুনি আর আয়না || জেদ বড়ো লালপেড়ে টিয়ারঙ শাড়ি চাই, মনভরা রাগ নিয়ে হলো মুখ ভারী তাই--- বাটাভরা পান দেবো, মান কেন যায় না || ছোট থেকে কোনোদিন বড়ো যদি হতে চাও, ভালো করে মন দিয়ে পড়াশুনা করে যাও--- দুষ্টুমি করে যে, কেউ তারে চায় না ||
শোন্ শোন্ শোন্ মজার কথা ভাই---- আমায় বাঁদর শুধায়, কুত্তা শুধায়, ছাগল শুধায় হায়, সকলেরই মা আছে রে, আমার কেন নাই || সব ছেলেকেই দেখি আমি ‘মানিক সোনা’ বলে আদর করে মা যে এসে নেয় রে টেনে কোলে---- কি হবে আর দুঃখ করে, আয় আয় আয়, সেই ব্যথা ভুলে যাই || মা না থাকুক, তোরা আছিস, তোরাই আমার সাথী, তোদের নিয়েই সুখে দুখে কাটে দিবস রাতি---- আমি তোদের সাথে জীবনটা যে কাটিয়ে দিতে চাই ||
না না আজ রাতে আর যাত্রা শুনতে যাবো না | শুনেছি চৌধুরী বাড়িতে নাকি বসেছে আসর , এসেছে কলকাতারই নাম করা সেই নট্ট কোম্পানি----- যে পালাটি করছে ও তার নাম যে ‘তাসের ঘর’ || ( বুঝলে নটবর ? ) মুখে রঙ মেখে আর মুখোশ পরে, পরি যে পরচুলো, আমরা যা নয় তাই সেজে সবার চোখে যে দিই ধুলো---- ছক-বাঁধা এই জীবন পালায় নেই যে অবসর || এই যাত্রাই দেখছি রোজই খোঁজ রাখে কে তারই----- ( আমার ) জীবনটা যে সেই যাত্রা দলের অধিকারী | আমার মনটা যদি সিরাজ সাজে, ভাগ্য মিরজাফর ||
কথা- গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার কথা ও সুর - শচীন দেববর্মণ
কথা দিয়ে এলে না, ডেকে সাড়া মেলে না---- তুমি কোথায়, তুমি কোথায় | ঝরি ঝরি করি মিলনের মালা তবুও এখনো ঝরেনি, পথ চেয়ে চেয়ে নিরাশায় তবু আঁখি দু’টি জলে ভরেনি | আসিবে কি তুমি এই পথে আর শুধায় হৃদয় শুধু বারে বার---- তবে কি গো তুমি ঠিকানা আমার---- বলো পেলে না, এলে না এলো না বারে বারে তবু মনে হয় শুধু এখনি বুঝি বা আসিবে, হয়তো আবার আগের মতই মুখপানে চেয়ে হাসিবে | মেঘের আড়ালে ডুবে গেল চাঁদ, শেষের প্রহরে এলো অবসাদ----- যদি সেই শেষ দেখা---- কেন গো আমায় বলে গেলে না, এলে না এলে না ||
কথা- গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার সুর ও শিল্পী - শচীন দেববর্মণ
খুলিয়া কুসুম সাজ শ্রীমতী যে কাঁদে অলখে রহিয়া কানু, ফুল বেণু সাধে---- আহা বিনোদিনী কাঁদে || সুরভি ঝরানো মালা দিল প্রাণে এ কি জ্বালা, যার লাগি হারালো কূল তারে কি দিয়ে গো বাঁধে--- বিরহিনী কাঁদে, শ্রীরাধিকা কাঁদে || অঙ্গের লাবণি হল নয়নের জল, প্রেমের যমুনা কূল হয়েছে কি ছল ? সে যে শুধু ফুলবাণে পরান বিঁধিতে জানে বিষভরা ফুলবাণে এ কি জ্বালা দিল প্রাণে | কলঙ্কিনী হল যে নাম কি বা অপরাধে ------ হায় বিনোদিনী কাঁদে, বিরহিনী কাঁদে ----- মরমী যে কাঁদে, শ্রীমতী যে কাঁদে |
কথা- গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার সুর ও শিল্পী- সতীনাথ মুখোপাধ্যায়
ওই ঝিরি ঝিরি পিয়ালের কুঞ্জে ওই গুন্ গুণ মৌমাছি গুঞ্জে, সেই সে বনছায় পাখি যে গান গায় মন যে চায় সেথা হাসিতে || আকাশের ওই দূরে নীল রং লেগেছে অন্তরে আজি মোর এ কী সুর জেগেছে | জানিনা কে ডাকে অলখে সে থাকে শুধু সে সাড়া দেয় বাঁশিতে || তারই পথ চেয়ে দিন যেন চলে য়ায়, এ কি ব্যথা পেয়ে হায়. মালা হতে ফুলগুলি ঝরে যেতে চায় | মিছে কি আমি তবে দিন শুধু গুনেছি----- পলকে কে জানে এ ব্যাথা সে আনে চায় না সে কাছে আসিতে ||
কথা- গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার সুর ও শিল্পী - শ্যামল মিত্র
যদি ডাকো এপার হতে এই আমি আর ফিরবে না, আমার খেয়া তোমার কূলে আর কখনো ভিরবে না || নিরুদ্দেশে যাত্রা করে কবে বলো কেই বা ফেরে, মিলনমালা ছেঁড়েই যদি মায়ার বাঁধন ছিঁড়বে না || কাছে আছি তাই তো আমার নেই তো কতোনো দাম,--- তোমার ব্যথায় মুখর হবে তোমার দেওয়া নাম | যায় যদি যাক্ প্রহর বয়ে মর্মে স্মৃতির অশ্রু লয়ে তবু এ প্রেম আঁধার হয়ে প্রদীপ তোমার ঘিরবে না ||
কথা- গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার সুর ও শিল্পী- শ্যামল মিত্র
সারাবেলা আজি কে ডাকে বাঁশরীর সুরে মন রাখে ? চমকি থমকি করবী গরবী আমার পথে কেন ঝরে থাকে ? বারে বারে পিছু ফিরে চাই, চেয়ে দেখি কেউ কোথা নাই --- কেন সে অকারণে ডাকে গো আমায় জানিনা সে কি বলিতে চায় | তারই সুরে আজ যেন গাহিছে পাখি ফুলে ফুলে দুলে দুলে কারে যে অলি ফিরিছে ডাকি | মন নিয়ে এ কি খেলা তার ছলনাতে কত ভুলি আর | পথে যেতে যেতে আমারে সে কেন গো কাঁদায় তারই খোঁজে দিন চলে যায় ||