কবি হিরণ্ময়ী দেবীর কবিতা
*
প্রতিদান
কবি হিরন্ময়ী চৌধুরাণী
ঢাকার শেরপুরের জমিদার হেমাঙ্গচন্দ্র চৌধুরীর পত্নী হিরন্ময়ী দেবীর, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে (
১৯২৫ সাল ) প্রকাশিত পুষ্পাধার কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।

কভু কোন দিন তাহা জাগে কি স্মরণে
কিশো দেবতা মোর, নয়নে নয়নে,
কি শুভ মুহুর্ত্ত সে যে কিবা সুসময়
পরিপূর্ণ প্রেমে সেই প্রাণ বিনিময়?

.                    ****************     
.                                                                                 
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
বরষা প্রভাত
কবি হিরন্ময়ী চৌধুরাণী
ঢাকার শেরপুরের জমিদার হেমাঙ্গচন্দ্র চৌধুরীর পত্নী হিরন্ময়ী দেবীর, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে (
১৯২৫ সাল ) প্রকাশিত পুষ্পাধার কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।

আজি বরষা প্রভাতে
.      ঘন বারি পাতে
.             তোমারে পড়িছে মনে,
অশ্রু উঠিছে ফুটিয়া,
.       হৃদয় টুটিয়া,
.               আসিছে ময়ন কোণে।

.                    ****************     
.                                                                                 
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
স্মৃতি
কবি হিরন্ময়ী চৌধুরাণী
ঢাকার শেরপুরের জমিদার হেমাঙ্গচন্দ্র চৌধুরীর পত্নী হিরন্ময়ী দেবীর, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে (
১৯২৫ সাল ) প্রকাশিত পুষ্পাধার কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।


অতীত কাঁদিয়া আজি লইছে বিদায়,
হৃদয় শতধা চূর্ণ তীব্র বেদনায়।
স্মৃতি তব প্রতিনিধি ব্যথাভরা বুকে
আনিবে কণিকা শান্তি জ্বালাময় দুঃখে,
ভুগিয়া অশেষ ক্লেশ অসহ্য বেদন
চিরতরে আজি তাই নিদ্রায় মগন।
আনন্দময়ের কোলে পেয়েছ আশ্রয়
শান্তিপূর্ণ হোক তব ব্যথিত হৃদয়॥

.                ****************     
.                                                                                 
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
শিশুর হাসি
কবি হিরন্ময়ী চৌধুরাণী
ঢাকার শেরপুরের জমিদার হেমাঙ্গচন্দ্র চৌধুরীর পত্নী হিরন্ময়ী দেবীর, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে (
১৯২৫ সাল ) প্রকাশিত পুষ্পাধার কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।

এ মধুর হাসি তুই পাইলি কোথায়?
.    টুকটুকে রাঙ্গা ঠোঁটে
.    আহা মরি ফুটে উঠে
আঁধার গৃহেতে যেন আলোকের ভায়।

.                    ****************     
.                                                                                 
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
নববর্ষে উপহার
কবি হিরন্ময়ী চৌধুরাণী
ঢাকার শেরপুরের জমিদার হেমাঙ্গচন্দ্র চৌধুরীর পত্নী হিরন্ময়ী দেবীর, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে (
১৯২৫ সাল ) প্রকাশিত পুষ্পাধার কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।

প্রিয় ভগিনি,
বাঙ্গালার বঙ্গনারী বিহারেতে এসে,
নিঃসঙ্গ দিবস রাতি কাটে হা হুতাশে
কঠিন নীরস সবই, নাহি রস লেশ,
তপন তাপেতে তপ্ত যেন মরুদেশ।

.                    ****************     
.                                                                                 
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
শুধু চাহি
কবি হিরন্ময়ী চৌধুরাণী
ঢাকার শেরপুরের জমিদার হেমাঙ্গচন্দ্র চৌধুরীর পত্নী হিরন্ময়ী দেবীর, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে ( ১৯২৫ সাল )
প্রকাশিত পুষ্পাধার কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।


চাহি শুধু চাহি হে দয়াময়,
গাহিবারে তব অতুলন জয়
শান্ত তপনে, চাঁদিমা কিরণে
যে করুণা তব সদা প্রভু বয়।
দেহ দেহ বল,                   জীবনে সম্বল
কর কৃপা মোরে হে করুণাময়॥

.                      ****************                      
.                                                                                                   
সূচিতে . . .   
               

মিলনসাগর
*
সে যে তুমি
কবি হিরন্ময়ী চৌধুরাণী
ঢাকার শেরপুরের জমিদার হেমাঙ্গচন্দ্র চৌধুরীর পত্নী হিরন্ময়ী দেবীর, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে (
১৯২৫ সাল ) প্রকাশিত পুষ্পাধার কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।

আমি যে আমারে, ফেলেছি হারায়ে
.                                         নাহি জানি কোন্ খানে ;
স্রোত বেগে ভাসি ক্ষুদ্র তৃণ সম
.                                            উদাস আকুল প্রাণে।
সমুখে পশ্চাতে, দৃষ্টি নাহি করি
.                                            চলেছি আপনা খুঁজি,
গৃহ কোণে রাখি, রতনের ঝাঁপি
.                                          হায়রে কিছু না বুঝি।
অগাধ সলিলে ডুবুরীর মত
.                                           যতনে তুলিতে তায়
অবোধ অজ্ঞান, পাগলের প্রায়
.                                            চলেছি ছুটিয়া হায়!

.                    ****************     
.                                                                                 
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
দণ্ড
কবি হিরন্ময়ী চৌধুরাণী
ঢাকার শেরপুরের জমিদার হেমাঙ্গচন্দ্র চৌধুরীর পত্নী হিরন্ময়ী দেবীর, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে (
১৯২৫ সাল ) প্রকাশিত পুষ্পাধার কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।


উচ্চ শৃঙ্গ হিমাদ্রির
অভ্রভেদী শিরে
আশার কলিকা মোর
ফুটাইয়া ধীরে,
চকিতে ফেলিলে তাহা
ছিন্ন করি তায়,
কোন অপরাধে দিলে
এ দণ্ড আমায়?

.    ****************                      
.                                                                                
সূচিতে . . .   
             

মিলনসাগর
*
অলির প্রতি কুসুম
কবি হিরন্ময়ী চৌধুরাণী
ঢাকার শেরপুরের জমিদার হেমাঙ্গচন্দ্র চৌধুরীর পত্নী হিরন্ময়ী দেবীর, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে (
১৯২৫ সাল ) প্রকাশিত পুষ্পাধার কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।

নিরদয় প্রাণ নিয়ে একি তব খেলা
অবলার প্রাণ বলি এত কর খেলা
.        এ ফুলে ও ফুলে বসি
.        কেন এত হাসাহাসি
লুটো পুটি ছুটোছুটি সারা সন্ধ্যা বেলা
নিরদয় প্রাণ নিয়ে কেন এত খেলা
.        আজি হেথা অলি রাজ
.        সাধিছ আপন কাজ
ঢালিছ অধরে তীব্র গরলের জ্বালা
তোমাদের প্রেম সখা প্রাণ নিয়া খেলা।
.        কালি পুনঃ অন্য ফুলে
.        চুমিবে আপনা ভুলে
নিতি নিতি নবোত্সাহে নব নব খেলা
অবলার প্রাণ নিয়ে এত অবহেলা!
.        তোমরা তো খেল ভাই
.        আমরা মরিয়া যাই
তা তো না বুঝিতে পার নিঠুর নিদয়
কোমল কলিকা পেয়ে, “গুণ গুণে” ভুলাইয়ে
.         খেলা হলে ভেঙ্গে চুরে দেও হে হৃদয়।

.                      ****************                      
.                                                                                
সূচিতে . . .   
           

মিলনসাগর
*
দেখা হবে
কবি হিরন্ময়ী চৌধুরাণী
ঢাকার শেরপুরের জমিদার হেমাঙ্গচন্দ্র চৌধুরীর পত্নী হিরন্ময়ী দেবীর, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে (
১৯২৫ সাল ) প্রকাশিত পুষ্পাধার কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।


জীবনের পরপারে মরণের পুণ্যপথে
পুনঃ কি গো দরশন হবে, দেব, তব সাথে?
হেথায় বিদায় সাথে স্মৃতিটুকু মুছে রেখে
কোথা তুমি চলে গেছ পুণ্যময় কোন লোকে?
স্মরণের রবে কি তব পুরাতন বন্ধু বলে’
চিনিতে পারিবে কি গো সেথা কভু দেখা হ’লে?
বিস্মৃতির যবনিকা তুলে দিও একবার
স্মৃতির আলোক জ্বালি ঘুচাইও অন্ধকার।

.                      ****************                      
.                                                                                
সূচিতে . . .   
         

মিলনসাগর