নবান্ন কবি ইরা ভঞ্জ (এই কবিতাটি সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলন চলা কালীন প্রতিবাদী কবিতা, ১/৬৩ এ, বিদ্যাসাগর কলোনী, কলকাতা ৭০০০৪৭ থেকে প্রকাশিত "বুলেটিন" পত্রিকার ২৫শে বৈশাখ ১৪১৪ (২০০৭) এর সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল |)
আমি "নবান্নের" প্রধান সমাদ্দার রাজার কূটচক্রে লুট হয়ে গেছে ধানের ক্ষেত ভাঙা সানকি নিয়ে হাত পেতে দাঁড়িয়েছি তোদের দরোজায় মা একটু ফ্যান দিবি' কান্না জড়ানো রুক্ষ উত্তর ছুটে আসে "ফ্যান দেব কিরে মিনসে চাল বাড়ন্ত আজ ঘরে ঘরে জানিস নে তুই সোনা ধান ডলে দিয়েছে সামন্ত সেনারা রক্তনদী বইছে এখন বাংলার মাঠে আমি প্রধান হেঁকে উঠি, দয়াল লাঠি গাছ আনো, রাজার জাল ছিঁড়ে চলো আমরা নতুন ধান ফলাবো, ভাতের গন্ধে ভরে উঠবে মায়ের আঙিনায় আবারও ইতিহাস গড়ে দেওয়া "নবান্ন" |
নয়া ইতিহাস কবি ইরা ভঞ্জ (এই কবিতাটি সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলন চলা কালীন প্রতিবাদী কবিতা, 'একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন কমিটি'-র পত্রিকার ১ জুলাই ২০০৭ এর সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল |)
পিপীলিকার পাখা ওঠে মরণের তরে কত যে ঝাপটানি দিল তিরিশ বছরে | "বলে লোকে, অতি বাড় বেড়ো না ঝড়ে পড়ে যাবে|" বিশ্বায়নের গানে শিল্পায়নের ধুয়ো ধরে শিশুর মুখের গ্রাস নেবে কেড়ে | করতে গিয়ে ধুরন্ধর দলবাজি দিলি যে নিজেরই মুখে চুনকালি, যখন আগ্রাসী থাবায় আপন ঘর ভাঙে ফেলা থুতু চাটিস তাই বারে বারে এক কান পকেটে পুরে দু-কান কাটাদের লজ্জা নাইরে | আবরণ খুলে গেছে মগজের কোশে সুচেতনার জলবিন্দুমাত্র নেই অবশেষে | দু-হাজার সাতে গিরগিটির জাত লিখে দিল মানবতার কালা-ইতিহাস মানুষের বুকের রক্তে করে যারা স্নান বাস্তুহারা শস্যহীন নিপীড়িত জন ছিঁড়েকুটে করবে এবার স্বেচ্ছাচারী রাজা খানখান | বেঁচে থাক ঘরে ঘরে যত ভাইবোন মানুষের জেগেছে পিঠে কুলো বাঁধা হুঁশ আর মান ভাঁওতাবাজিতে নয় আর অসম উন্নয়ন নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর দিয়েছে সাহসী আহ্বান তারা আজ প্রতিজ্ঞায় অটল, প্রতিবাদী বিনা যুদ্ধে দেবে না কণামাত্র আবাদি ভূমি, নজির গড়ল তাবৎ মানুষই দেশবাসীর জন্য দেশ, দেশের জন্য নয়া ইতিহাস আমরাই গড়ে তুলি |