যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তর কবিতা যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে। www.milansagar.com
|
সুখ বাঁচে মরে, দুঃখ অমর, ----- তুমি মৃত্যুঞ্জয় |
বিরাট বক্ষে চিরনিরুপায় বিশ্বের ব্যথা বহি,
মাঝে মাঝে বুঝি ববম্ ববম্ জেগে উঠে বিদ্রোহী !
পূজা পেয়ে হেসে আবার ঘুমাও আশুতোষ উদাসীন !
তোমার ব্যথার ম্লান সায়াহ্নে মিলায় দীনের দিন |
. তবু শেষ হবে খেলা,
. ------এই চির অবহেলা-----
. প্রলয়-সন্ধ্যাবেলা
যবে----দুঃখ-সিন্ধু ছাপায়ে উঠিবে তোমারও ধৈর্য-বেলা |
. তখন জাগিবে রাঙা কল্লোল ভীষণ বিষাণ রবে,
. লণ্ড ভণ্ড এ ব্রহ্মাণ্ড হবে শিব-তাণ্ডবে !
. সহস্র-ফণ অনন্ত ফণী আস্ফালি লাঙ্গুল
. তোমার নৃত্য-ঘূ্র্ণাবর্তে হবে বিচূর্ণ ধূল |
. পলকে জ্বলিয়া লেলিহ শিখায় লক্ষ সুখের বাতি
. পলকে নিভিয়া আনিবে প্রলয়-চিরান্ধ-দুখ-রাতি |
. জাগিবে একক বিরাট দুঃখী রাখি দুঃখের মান,
. মহাশব-বুকে মহাশিব সুখে জাগাবে মহাশ্মশান |
. সে দিনের আশে পরম নিরাশে বাজা রে বগল বাজা’,
. -----জয় শঙ্কর, প্রলয়ঙ্কর জয় দুঃখের রাজা !
. ******************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
শিব-স্তোত্র
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
‘জয় শিব, জয় শঙ্কর, জয় স্বর্গ-মোক্ষ দাতা,
জয় কৃপাময়, মৃত্যুঞ্জয়, সর্বদুঃখত্রাতা,
কেতকী
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
এ বাদলরাতে কেন গো বন্ধু আমার শয়নঘরে ?
মোর মত কি গো নিদ্ নামিল না তোমারও নয়ন ‘পরে ?
বাহিরে শহরে কাঁদিছে বরষা, ভিতরে বস গো ভাই !
শ্যামপাতে ঢাকা শ্বেত কিশলয়, তাহে ঢাকা পীত-রেণু,
শ্রাবণ-সোহাগে যৌবন জাগে বাজে গন্ধের বেণু |
এল বায়ুরথে মত্ত ভ্রমর নূতন মধুর লোভে,
তরুমূলবাসী বিষভুজঙ্গ ফণা তুলে ফোঁসে ক্ষোভে |
বাদল দারুণ, বিধি অকরুণ------ কি হতে কি হল হায় |
গন্ধ ধরিয়া শহরের মালী গ্রাম ছেড়ে বনে যায় |
উড়ায়ে ভ্রমর মারি বিষধর শহরের পাকা মালী
বৌবাজারের মোড়ে বিকাইতে কেয়ার ভরিল ডালি |
তারি মাঝে যারে বাছিয়া আদরে আমি আনিলাম ঘরে,
এ বাদল রাতি যারে করি সাথী কাটাই কাব্যভরে,
যার গন্ধের আনন্দে মোর নয়নে তন্দ্রা লাগে,-----
না জানি কি দুখে সে তরুণ বুকে মরণের লোভ জাগে !
আধঘুমে চাহি দেখিনু চমকি ----- ঝুলিছে সর্বনাশী
নিজ অঙ্গের নীলাম্বরীতে কন্ঠে লাগায়ে ফাঁসি !
. কষিয়া কোমর বাঁধা,
অলকগুচ্ছে আধঢাকা মুখ অস্বাভাবিক সাদা !
তোমারই শপথ, কহিনু সত্য,---- দেখিলাম প্রাণবন্ধো !
দেয়াল ধরিয়া বেড়াইছে ঘুরে মৃত কেতকীর গন্ধ !
হাঁকিল পাহারা,--- উঠি ধরমড়ি দু’হাতে খসানু ফাঁসি,---
ঝর ঝর ভুঁয়ে ঝরিয়া পড়িল শুষ্ক পরাগরাশি !
কাঁটা বিঁধে হাতে বুঝিনু,----স্বপন, আমারই মনের ভুল ;
দুপ’র রাতের ঘুম মাটি করে দু’পইসে কেয়াফুল !
. সে হতে বন্ধু হায় !
এমন ঠান্ডা বাদল রাতেও জেগে বসে আছি ঠায় !
বনের বেদনা পথে বিকাইছে,--- কি মোর কপাল-ভোগ,---
গন্ধের লোভে কিনে এনে ঘরে ধরে অনিদ্রারোগ !
চোখে মুখে গায়ে কে যেন মাখায়ে দিয়েছে লঙ্কাবাটা,
বুকে ফুটে আছে কেয়ার গন্ধ, হাতে ফুটে আছে কাঁটা |
বাহিরের জ্বালা জ্বালায় ভিতর, ভিতর জ্বালায় বা’র----
-----জ্বলে স্তম্ভিত বিদ্যুৎ-বাতি পথে পথে সারে সার |
. ওগো জাগরণ-সাথী !
কখন কাটিবে অনিদ্-রাতি এ, নিবিবে পথের বাতি ?
রিম্ ঝিম্ ঝিম্ ঘুমায় যামিনী, আমি কান পেতে থাকি,
যদি ডেকে উঠে অরুণ-বিহীন ভোরের করুণ পাখি |
ঘুম ঘুম ঘুম, ---- কোথায় বা ঘুম ? হায় গো বন্ধু হায় |
বাদল-মেঘেতে অস্ত-চাঁদের আদল কি দেখা যায় ?
নয়নের নিদ্ নয়নে রুধিতে আঁখিপাত মুদি মিছে,---
কচি ডাব
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
‘ডাব চাই, ডাব, কচি ডাব ?’
. আমার বাসার ধারে
. হাঁকে বৃদ্ধ ঝাঁকা ঘাড়ে,
সে পথে তখন লোকাভাব |
অঘ্রাণের শীত-সন্ধ্যা
শ্বাসরোধী ধূম্রগন্ধা
. চাপিয়াছে শহরের বুকে,
. অনুকূল কত-না সুযোগ |
সে-সব কবির বেলা,---
শ্রাবণের সন্ধ্যাবেলা,
. দুয়ারে তরুণী পসারিনী,
তনুদেহে সিক্ত বাস,
নয়নে মিনতি-ফাঁস,
. ফুল নিয়ে করে বিকিকিনি |
আরো ভাগ্যবান যিনি
আসে তাঁর পসারিনী
. কোমল করুণ ক্লান্তময়,
‘শয্যা শুভ্রফেননিভ
স্বহস্তে পাতিয়া দিব’
. সাধে কবি সমবেদনায় |
এ ভালে তেঁতুল-গোলা---
অতি বৃদ্ধ ডাবওলা !
. তাও নহে বৈশাখী দু’পরে ;
মিটাতে প্রাক্তন দেনা
শীতরাত্রে ডাব কেনা !
তাই কি কাটারি আছে ঘরে ?
সহসা ঝনাক্ ঝান্
তানপুরা কাটে তান,
. ছিঁড়ে গেল সব কটা তার ;
আমার শ্রবণ-মূলে
অকস্মাৎ গেল দুলে
. কোন্ রুদ্র নৃত্যের ঝঙ্কার !
দারুণ শীতের সাঁঝ,
হে আমার নটরাজ,
. কোন্ রূপে এসেছিলে দ্বারে ?
অশ্রুর সাগরমন্থ
হে আমার নীলকন্ঠ |
. ভাগ্যে ফিরাইনি একেবারে |
শীতাতপে দিগম্বর,
দিশাহীন পথচর,
. দেহ টলে ক্ষুধার নেশায় ;
অন্তর-শ্মশানে চিতা
সারি সারি নির্বাপিতা,
. তাহারই বিভূতি ফুটে গায় |
সর্বাঙ্গে হাড়ের মালা,
শিরায় ফণীর জ্বালা,
. গণ্ডে ঝরে জাহ্নবী উতলা |
কৃষ্ণাচতুর্দশী-শেষে
তোমারি ললাটে এসে
. অস্ত গেছে শেষ শশীকলা !
তোমার মাথার ভার,
ধরেছি যে একবার,
. তাহে মোর মিটিয়াছে সাধ |
দিয়েছি তামার চাকি,----
সে মোর হয়নি ফাঁকি,
. সোনায় ঘটিত অপরাধ |
যে মোহিনী স্বর্ণটাটে
পাতে পাতে সুধা বাঁটে,
. সে যাদের করে প্রবঞ্চনা,
একদা এক বাঘের গলায় হাড় ফুটিয়াছিল
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
শনিবারের চিঠি, আষাঢ় ১৩৫৭ (জুন ১৯৫০) সংখ্যা থেকে নেওয়া
বাঘ-ছাগলের কথা (বনপীরের গান)
বরাবর মোরা আসছি দেখে
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
শনিবারের চিঠি, ভাদ্র ১৩৫৭ (অগাস্ট ১৯৫০) সংখ্যা থেকে নেওয়া
ভয় কি
দেখে এনু প্ল্যাটফরমে-ফরমে
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
শনিবারের চিঠি, বৈশাখ ১৩৫৭ (অগাস্ট ১৯৫০) সংখ্যা থেকে নেওয়া
দরিদ্র নারায়ণ
প্রাণ আর মান যদি বাঁচাইতে চাও
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
শনিবারের চিঠি, জৈষ্ঠ ১৩৫৭ (মে ১৯৫০) সংখ্যা থেকে নেওয়া
ফিরে চল
দৈনিক দীনতাগুচ্ছে আটি ধাঁধা বাঁধা
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
শনিবারের চিঠি, বৈশাখ ১৩৫১ (এপ্রিল ১৯৫১) সংখ্যা থেকে নেওয়া
উত্সব
সনাতন সার্বভৌমের একমাত্র কন্যা---ভারতী
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
শনিবারের চিঠি, বৈশাখ ১৩৫৫ (এপ্রিল ১৯৪৮) সংখ্যা থেকে নেওয়া
প্যাথি-বিভ্রাট
ড্যাঞ্চিরা বহ্রম্ পুরে যবে
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
শনিবারের চিঠি, চৈত্র ১৩৪৮ (মার্চ ১৯৪২) সংখ্যা থেকে নেওয়া
বাড়ি ভাড়া