কবি কামিনী দাসীর কবিতা www.milansagar.com |
ভ্রমরাষ্টক কামিনী দাসী ( “ভ্রমরাষ্টক” প্রবন্ধটী সংস্কৃত ভ্রমরাষ্টকের অনুবাদ ) ১ ( ভ্রমরের উভয় সঙ্কট | ) সুগন্ধ-সংযুতা, ভুবন-বিদিতা, কেতকী হেম-বরণী পদ্ম ভাবি তায়, মধুর আশায়, পড়িল ভৃঙ্গ অমনি ; কুসুমের রজে নয়ন সহজে, দৃষ্টি-শক্তিহীন হ’ল, কন্টকের ঘায়, পক্ষ ছিন্ন তায়, কি দুর্দ্দৈব উপজিল | পড়িয়ে আপদে, অলি-রাজ কাঁদে, আপনারে তিরস্কারে, না পারে থাকিতে , না পারে যাইতে, পড়িল বিষম ফেরে | ২ ( ভ্রমরের অসন্তষ্টি হেতু পরাভব | ) ত্যাগ করি গন্ধ-যুতা সুনব মল্লিকা, মধুকর গেল পরে যথায় যুথিকা ; দৈবাং ত্যজিয়ে তারে চম্পকেতে গেল ; পশ্চাতে সরোজ-গত ; প্রমাদ ঘটিল ----- নিশাকর-বিধি-বশে হায়রে তথায় বন্ধ হ’য়ে কাঁদে মূঢ় না দেখি উপায় | সন্তোষ-বিহীন চিত্ত যত মূঢ় জন পরাভব-পদে প্রাপ্ত হয় সর্ব্বক্ষণ | ৩ ( ভ্রমরের অপমান | ) যে দিন হইতে তব মুকুল উদ্ গত, চূত! তদবধি ভৃঙ্গ তোমার আশ্রিত ; ফলের বাহিরে অলি করয়ে ভ্রমণ, তথাপি কর না তুমি তারে সম্ভাষণ ; যে কীট পড়ে নি তব নয়ন-পথেতে, পরাপর পরিজ্ঞান নাহি চূত ! তব, ধিক্ হে তোমারে ধিক্, অধিক কি কর | ৪ ( ভ্রমরের দশার দৈবকৃত বিপর্য্যয় | ) জনম নবীন নীরজ-বনে, পান করে মধু যথেচ্ছ মনে, মালতী কুসুমে হেলে বিহরে ; করে গুঞ্জা-লতা সেবন এঁবে | হায় হায় ধিক্ দৈব-প্রভাবে ! কি কি দশা প্রাপ্ত হ’ল এ ভৃঙ্গ হায় দেখ সবে অলির রঙ্গ | ৫ ( ভ্রমরের ভ্রান্তি--হেতু নাশ | ) পলাশ কুসুম ভাবি মনেতে পড়িল ভ্রমর শুক-তুন্ডেতে ; জন্বু-ভ্রমে শুক তায় বধিল, অবিবেকতার ফল ফলিল | ৬ ( ভ্রমরের বিড়ম্বনা | ) বিশাল আলেখ্য-পদ্ম করি দরশন, স্ফীত-কলেবর হ’য়ে, অতি হৃষ্ট মন, কি আশ্চর্য্য কি আশ্চর্য্য এ কি এ কি বুলি, লেখ্য-পদ্ম উপরেতে পড়িলেক অলি | সুগন্ধ নাহিক এতে নাহি মধু-কণা, নাহি সৌকুমার্য্য, দেখি, হ’য়ে ক্ষুব্ধ মনা, ঘুরায়ে মস্তক, লাজে শির করি নত, করিল গমন প্রতারিত মধুব্রত | ৭ ( ভ্রমরের দৈব-বশে অধম-সেবা | ) নলিনী-বন-ল্লভ এই যে ভ্রমর, কুমুদিনী-কুল-কেলি-লা রস-পর, বিধি-বশে বিদেশেতে হ’য়ে উপস্থিত, পিয়ে বন-মল্লী-রস করি সম্মানিত | ৮ ( ভ্রমরের হর্ষে বিষাদ | ) যামিনী যাইবে, প্রভাত হবে, তপন উদিবে, পদ্ম হাসিবে, কোষ-গত ভৃঙ্গ এরূপ চিন্তে ; এমন সময় করী দুরন্তে ভখিল নলিনী মৃণাল সহ ; হায় হায় একি দুখ দুঃসহ ! . ******************** সূচিতে... মিলনসাগর |