কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা
*
মৃত্যু মিলন
কবি কণকভূষণ মুখোপাধ্যায়

পারুল বেলা
করছে খেলা
মিলন মেলা
.             নিখিল ভরে

বাঁধকি মানে
আমার প্রাণে
কাহার টানে
.              নয়ন ঝরে |

নদীর বাঁকে
কলস কাঁখে
চুলের ঝাঁকে
.             সুবাস্ দিয়া

হাস্ তো ধরা
গরব ভরা
হৃদয়-হরা
.           প্রিয়ায় নিয়া |

গোপন কাছে
চলিয়া গ্যাছে
স্বপন মাঝে
.            নয়ন হানে

প্রাণে’র  কথা
হরষ- ব্যথা
করুণ চ্ছটা
.              ছড়ায় গানে |

সুদূর দেশে
আমায় হেসে
মোহন বেশে
.              আমায় চুমি

বলবে--, ‘ প্রিয়
কাঁদ্ ছ  কি’ ও
আমায় দিও
.              কাঁদন তুমি |
মোহন বেশে
.              আমায় চুমি  ||

.       **********************     


.                                                                                      
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
বিষাদ-বাঁশী (গান)
কবি কণকভূষণ মুখোপাধ্যায়

ঐ- গোপন দেশের পার হতে আজ
.            আস্ চে হাসির লহর ভাসি
মোর-গোপন পুরে নয়ন ঝুরে
.            ব্যথা’র-সুরে মন-উদাসী
লালিম্ ঠোঁটের হাসিখানি
ছড়ায় আমার প্রাণের রাণী
রেশমী রং’এর আঁচল খানি
.             রাণী আমার’ ভালবাসি ?

বিদায়-বেলায় গোধূলি তার
.             সীমাহারা অসীম্ ছেয়ে
মাদল্ বাজে বাদল রাতে
.             আমার প্রাণে’র পথটী বেয়ে

ধীরি ধীরি চরণ চেপে
মুর্চ্ছনা আজ উঠ্ ছে কেঁপে
বেদন-বেহাগ উঠ্ ছে ছেপে
.             বিষাদ্ - ব্যথা বাজায় বাঁশী |

চপল-মলয় জান্ তো শুধু
.             তরুণ হীয়া’র মিলন কথা
সে’ও আমায় দিচ্ছে হানা
.             বোঝেনা কেউ আমার ব্যথা  ?

আজকে সবাই হাসির’ ছলে
চরণ-তলে আমায় দলে
ঢেউ-উছলে চোখের’-জলে
.              ছলে আমায় কান্নাহাসি ||

.           **********************     


.                                                                                      
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
হে প্রিয় তুমি যে আঁকা
কবি কণকভূষণ মুখোপাধ্যায়
নবশক্তি পত্রিকায় প্রকাশিত

নিখিল ভুবন জুড়ে ঘেরিয়াছে আঁধারের ছায়া
আমার অন্তরে শুধু নিবে নাই হৃদয়ের আলো
ধরার ধূলোয় হেরি শিশিরের স্নেহে মিশে মায়া
আমার অন্তরে প্রিয়া দীপ জ্বালি কোথায় মিলালো
জানিনা সেথায় তার চারিধারে দীপ জ্বালা নাকি
কোমল চরণ তলে খেলে কিনা চাঁদের কিরণ
হেথায় বসিয়া একা স্মৃতির সুরভি মনে মাখি
হয়তো বুকের ভাষা আনে তার মৃদু সমীরণ
যেন সে আমার কানে কয়ে যায় হে প্রিয় আমার
হেথায় এসেছি চলে জীবনের তীর্থসিন্ধু তীরে ----
আমি যে তোমার বুকে আজো আছি কোথায় আঁধার
আজি ও রেখেচি জ্বেলে হৃদয়ের দীপ শিখাটিরে |
আঁধার কাঁদিয়া ফেরে প্রেমের প্রদীপ হেথা জ্বলে
হে প্রিয় তুমি যে আঁকা আজ ও মম চিত্ত শতদলে |

.               **********************     


.                                                                                      
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
হাঁচির লজিক
কবি কণকভূষণ মুখোপাধ্যায়
জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৫, পূর্ণিমা পত্রিকায় প্রকাশিত

না’ খেলেও ভুরি ভুরি ঢেকুর উঠে
ইসারায় লাজ ভরা কুসুম ফুটে
মুখে চোখে প্রণয়ীর নীরব ভাষা
মেশানো তাহাতে কত অফুট্ - আশা
প্রাণ-নিয়া বাহিরিয়া আসে উদ্ধার
হাঁচি আনে ধীরি ধীরি উত্তর তার
কোন্ রসিকের দেওয়া প্রেমের ছলা
শিখেছে প্রেমিক বঁধু নবীন কলা
ও’-বউ--ও’ বউ করি তোলে সে ঢেকুর
মধুঢালি বঁধু বুক করি ভরপুর
একটি হাঁচির সনে যাচ্চি বলি
অভিসারে যায় প্রিয়া নীরবে চলি
ভরায় তাদের বুক গোপন হাসি
মেলায় মিলন সুখ স্বপন আসি ||

.       **********************     


.                                                                                      
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
আনো
কবি কণকভূষণ মুখোপাধ্যায়
শ্রাবণ সংখ্যা, মাতৃমন্দির পত্রিকায় প্রকাশিত


আলোকের দীপ্ত-রস্মি প্রজ্বলিয়া নাশিছে আঁধার |
ধ্যান-পাঠে মগ্ন কেহ ; সে’ আলোয় কেহ’বা আবার
গুপ্তগৃহে ‘জাল’ করি আনিতেছে ডাকি সর্ব্বনাশ
অপরের নিষ্পেষণে, উদ্গিরিছে তপ্ত ‘হা’ হুতাশ্
দীপশিখা স্থির নির্ব্বিকার | বিলাইছে সমভাবে আলো
হাসিছে নেহারি কভূ, মানুষে’র অন্তরে’র  কালো
জগতে সাধু’র চিত্ত চিরদিন রহে অ’মলীন
শিখেনা মানুষ তবু , তাই বিশ্বে, সেই চির-দীন ||

.                **********************     


.                                                                                      
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর