কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা
কবি
কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়ের
পরিচিতির পাতায় . . .
*
পরাণ-আমার কাঁদে কেন ? (গান)
কবি কণকভূষণ মুখোপাধ্যায়
গুরু গুরু মেঘের ডাকে,
. পরাণ আমার কাঁদে কেন ?
এম্নি গভীর বাদল-রাতে
. কারে’ আমি-হারাই যেন ?
বিজুলী ‘ঐ চমক হানে---
পরাণ আমার বেদন বানে,
আকাশ পানে মন-বিমানে ;
. ভেসে শুধায় আমায় চেন ?
. কাঁদে কেন ?
গুরু গুরু মেঘে’র ডাকে ---
পরাণ আমার কাঁদে কেন ?
নীলা-পরীর আঁচল ঝাঁপি,
. কান্তা আমার নীরব থাকি---
কহে আমার নিঠুর প্রিয়,
. বাদল-রাতে আসবে’ নাকি ?
প্রেম-মিলনে আবেগ ঢালা--
বঁধু আমার কর আলা,
কত দিনের গাঁথা মালা ;
. পরে বঁধু তারে মেন |
. কাঁদে কেন ?
গুরু গুরু মেঘের ডাকে ---
পরাণ - আমার কাঁদে কেন ?
. **********************
.
সূচিতে . . .
মিলনসাগর
কবি
কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়ের
পরিচিতির পাতায় . . .
*
প্রার্থনা
কবি কণকভূষণ মুখোপাধ্যায়
দীনেশরঞ্জন দাশ ও গোকুলচন্দ্র নাগ সম্পাদিত “কল্লোল” পত্রিকার ১৩৩৪, শ্রাবণ (অগাস্ট ১৯২৭)
সংখ্যায় প্রকাশিত।
দুঃখ ও দহনে প্রভু বুক পেতে সয়ে নিতে দাও,
রুদ্রের মধুর খেলা, বক্ষে মোর কেবলি খেলাও |
দগ্ধ করি রুদ্র তেজে, পুনঃ মোরে করহ নূতন ---
আঘাতে জাগ্রত কর লুপ্ত মোর সুষুপ্ত জীবন |
. **********************
.
সূচিতে . . .
মিলনসাগর
কবি
কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়ের
পরিচিতির পাতায় . . .
*
জমীদার
কবি কণকভূষণ মুখোপাধ্যায়
দীনেশরঞ্জন দাশ ও গোকুলচন্দ্র নাগ সম্পাদিত “কল্লোল” পত্রিকার ১৩৩৪, শ্রাবণ (অগাস্ট ১৯২৭)
সংখ্যায় প্রকাশিত।
পল্লীর মোহন শোভা শুষ্ক আজ মলিন বিকল !
হাসি নাই কোনখানে, দু’নয়নে তপ্ত আঁখি জল
ঝরিতেছে পল্লী—মা’র | বক্ষ দহে, লাঞ্ছনা-পীড়ন !
রোষদীপ্ত শাসকের বিশ্বত্রাস ভীষণ শাষন---
পল্লীর সৌন্দর্য হরি জ্বলিয়াছে ব্যর্থ হাহাকার !
শ্রীহীন-শ্মশানে তার, অট্ট হাস্য করে জমিদার |
. **********************
.
সূচিতে . . .
মিলনসাগর
কবি
কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়ের
পরিচিতির পাতায় . . .
*
বনের-জোছনা
কবি কণকভূষণ মুখোপাধ্যায়
বনানীর পথে বিমল জ্যোছনা ছড়াইছে হাসি আলো
হরিয়া লইতে নিখিলের ব্যথা আর তার যত কালো
বন-কিশলয় মনে মনে কয় এই আলো আর হাসি
বঁধুর মধুর অধরের শোভা তাই এরে ভালোবাসি
পিয়াল বকুল আকুল আজিকে নিখিলের হাসি দেখে
বন কদমের চারাগুলি সব হাসি লয় বুকে এঁকে
ভরা জ্যোছনায় ঢলিয়া পড়েছে চিকন কৌরি দল
কেশর তাদের বাতাসে ছড়ায় সুরভির পরিমল
বনানীর শ্যাম্-লতায় পাতায় সবুজে’র উত্সব
প্রাণের মেলায় নীরবতা আর বুকে বুক অনুভব
আলোর পরশে শাল পলাশে’র আজিকে হয়েছে ----
মর্ম্মে মর্ম্মে কম্পন শিহরণ জেগে ওঠা
কোথা অবসর অন্তর-ভরা এসেছে নবীন গান
আলোর নেশায় পাগল করিতে কাড়িয়া লইতে প্রাণ
বিমল আলোয় দুনিয়া পাগল হাসি-আলো একাকার
জ্যোছনা আজ নবীন-মাধুরী ফুটেচে নিখিল মার
শ্যাম অঞ্চল পাতিয়া জননী শ্যামল তূণের পর
আপন হস্তে বিতারিছে আলো হাসিতেছে চরাচর
আপনার মনে ছড়াইছে আলো নীরব হইয়া চাঁদ
হতেছে পাগল হেরিয়া নিখিল পাগল করা সে ফাঁদ
ধরার বক্ষে সুন্দর হয়ে এসেছে আলো’র রাত
ধরনী জননী চাঁদের মতন করি যোড় দুটী হাত
নমিতেছে ঐ নীলিম আকাশে প্রেমে সুন্দর পানে
তাই’এ নিখিল সুন্দর হোল মগ্ন প্রেমের ধ্যানে
বন উপবন গহন কানন আলোয় গিয়াছে ভরে
তটিনীর বুকে আলোর লহর মৌন প্রেমেতে ঝরে
বনানীর সব পত্র-পুষ্প দুলিয়া পিরিছে বায়
সমীরণ শুনে আবেদন ... কাঁদে কে, দক্ষিণায় ?
হে’ প্রিয় আমার ক্রন্দন আবেদন এই বেলা
ভাঙ্গো প্রভু মোর আলোর মেলায় জীবনের ধুলোখেলা ||
. || ১৭ই চৈত্র ১৩৩৩, অমরার গড় ||
. **********************
.
সূচিতে . . .
মিলনসাগর
কবি
কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়ের
পরিচিতির পাতায় . . .
*
ব্যথিত কাঁদন
কবি কণকভূষণ মুখোপাধ্যায়
মনে’র কথাটী তারে হয়নি বলা
প্রাণের পথটী বেয়ে হয়নি চলা
আধফোঁটা চুমকুঁড়ি খসেছে বোঁটা
হাবাছুঁড়ি গেছে ফেলে জলের ফোঁটা
শীত্ শীত্ হেন এই মেঘলা দিনে
কেমনে কাটিবে বেলা তাহারে বিনে
আমার কুঞ্জমাঝে আসবে নাকি ?
আশা’র স্মৃতির বুকে ভাসাতে থাকি
প্রকৃতি ছড়ায় হাসি মৌয়া বনে
ছল করে কয় বাঁশী বৌয়া সনে
কহে তুঁহু প্রাণ মোর মনীর মালা
বুকের কলিজাপর রাহনে ওয়ালা
হিংশুটে তারাগুলো মিটী মিটী চায়
তাহার খবর আসে চঞ্চল বায়
অঞ্চলে ছিল রিং’ চুড়ি ঠুন্ ঠুন্
হাসে তার গাল বেয়ে যেতে লাল খুন
অমর সে মোর মনে ছবিটী তারি
আজো কাঁদায়, ব্যথা বোধিতে নারি ||
. **********************
.
সূচিতে . . .
মিলনসাগর