কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা
*
শরৎ কি আসিল এখন?
কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়
সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত মাসিক বসুমতি পত্রিকার আশ্বিন ১৩৪৮ ( সেপ্টেম্বর
১৯৪১ ) সংখ্যা থেকে পাওয়া |


বত্সরের পুঞ্জীভূত সীমাহীন জজ্জর ব্যথায়
.        বর্ষ পরে আসিল আশ্বিন—
বঞ্চিত অসংখ্যক মনে যে আসিল স্বপন-দোলায়
.        ঝঙ্কারিয়া মরমের বীণ |

চাষীর নয়নকোণে উতলিছে সজল বাদল
.        ঘরে নাই কণিকাও ধান—
কি করিয়া চলে দিন :  বহু দেরী ফলিতে ফসল
.        কৃষকের ব্যাকুল পরাণ |

বঙ্গদেশ ভরা আজ জীবনের মলিন আঁধার
.          বেদনার রূপে মায়াময়—
বিদগ্ধ বিশুষ্ক প্রাণ --- আলোয় কে ভরিল আবার
.         জাগাইয়া বিপুল বিস্ময় !

পুঞ্জীভূত সব গ্লানি দহনের যেন অবশেষ
.        শেফালিতে ভরে দিগঙ্গন ---
আমার মনের বনে প্রেয়সীর মনোহর বেশ
.         শরৎ কি আসিল এখন ?

.               **********************     


.                                                                             
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
বৈশাখ
কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়
ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ভারতবর্ষ পত্রিকায় জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৮ ( মে ১৯৪৯ ) সংখ্যা
থেকে পাওয়া |


বত্সরের পুঞ্জীভূত ধূলিক্লিন্ন বেদনার দিনে
হে বৈশাখ তুমি এলে বসন্তের অস্তরাগ শেষে –
পরিপূর্ণ রুদ্র সুর ঝঙ্কারিছে মর্ম্মে মনোবীণে
ভয়াল ধূর্জ্জটি তুমি মর্ম্মে এলে মনোহর বেশে |

অফুরন্ত আনন্দের তুমি যেন নব অগ্রদূত
দিগন্ত ভোলানো তব পিঙ্গল সে ধূম্র জটাজাল---
ভুবনের খেলাঘরে হে ভীষণ সুন্দর অদ্ভুত
তোমার চলার ছন্দে নৃত্যরত হ’ল মহাকাল |

মরুভূর দাব-দাহে আজি মোর বিশুষ্ক জীবন
অপূর্ব্ব ভ্রূভঙ্গ নিয়া এসো বন্ধু ছন্দে নটরাজ---
প্রেয়সীর স্মিতহাস্যে ল’ব মাখি আনন্দ চন্দন
দহনের ব্যর্থতারে নির্ব্বিচারে দেখাইব লাজ |

‘সুন্দর ধরণীতল’, --- আনন্দের এই বার্ত্তা নিয়া---
আমি কবি ধরণীরে জাগাইব প্রাণ সঞ্চারিয়া |

.               **********************     


.                                                                             
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
চম্পাইনগর
কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়
ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ভারতবর্ষ পত্রিকার মাঘ ১৩৪৮ ( জানুয়ারী ১৯৪২ )
সংখ্যা থেকে পাওয়া |


জনার্দন শিষ্যচাঁদ মগ্ন আজি শঙ্করের ধ্যানে
মুগ্ধ নর ভক্ত হেরি ধন্য যেন চম্পাই নগর---
শঙ্কর শঙ্করী রাজে অন্তর ভরিয়া সবখানে
দানিবে না পুষ্পাঞ্জলি মনসারে চাঁদসদাগর |

মর্ত্তের কমলবনে পদ্মা দেবী রোষে ওঠে ফুলে
‘চাঁদ মোরে পূজিবে না ?’ কাঁপে দেহ উদগ্র স্পর্দ্ধায়---
কহে দেবী ‘সপ্ত পুত্র বলি চাই মোর বেদী মুলে
ধ্বংসের ঘনান্ধকারে ডুবে যাক শাপের জ্বালায় |’

পূজিল না তবু চাঁদ – গেল ছয়, বাকী লখীন্দর
সরোষে গর্জিল দেবী--- ‘ওরে চাঁদ, আজও পূজিলি না ?
বেহুলার সাথে তব তনয়ের মিলন-বাসর
মৃত্যুরে আনিবে ডাকি --- ঝঙ্কারিয়া মরণের বীণা |’

মিলন-উত্সবশেষে বেজে ওঠে জীবনের বাঁশী
শিল্পীরাজ বিশ্বকর্মা রচিয়াছে লোহার বাসর---
রূপময়ী বেহুলার রূপে হাসে সর্ব দেশবাসী
হিয়ার ব্যাকুল বনে প্রেয়সীরে লভে লখীন্দর |

সীমন্তিনী বধূ পাশে লখীন্দর ওঠে ফুকারিয়া
‘বড় জ্বালা রে বেহুলা সর্পাঘাতে গেল মোর প্রাণ’ –
প্রিয়তম বক্ষে সতী দামোদরে ভাসে ভেলা নিয়া
প্রথম মিলনরাত্রি, মিলনের হ’ল অবসান |

প্রেয়সীর সাধনায় লখীন্দর লভিল জীবন
বামহস্তে পদ্মারতি করে পুনঃ চাঁদ সদাগর---
জীবন আনন্দলোকে ফিরে এল সপ্ত হারাধন
বেহুলার প্রেমে ধন্য সতী-তীর্থ চম্পাইনগর |

.               **********************     


.                                                                             
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
ইয়াসিন্
কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়
ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ভারতবর্ষ পত্রিকার আষাঢ় ১৩৪৯ ( জুন ১৯৪২ )
সংখ্যা থেকে পাওয়া |


তোমারে দেখিয়াছিনু পরিপূর্ণ জীবন-গৌরবে
স্বদেশের সাধনায় হে প্রদীপ্ত মুক্তির সৈনিক ---
তব দীপ্তি বিচ্ছুরণে জীবনের মহিম সৌরভে
মন্ত্রমুগ্ধ একদিন অকস্মাৎ হারাইনু দিক্ |

ভুলি নাই আজো বন্ধু অপরূপ সে জীবন-ছবি
জীবন-নন্দিত-করা সে মাধুরী ভুলিবার নয়—
মৃত্যুর মুহূর্ত্ত আগে জানিত না অবজ্ঞাত কবি
তুমি ছিলে এত প্রিয় হৃদয়ের আনন্দ সঞ্চয় |

মৃত্যুর তীর্থের পারে যেথা বন্ধু মিলিয়াছ আজ
সেথা কি পড়িবে মনে সর্বহারা নিরন্নের দল –
যাদের অন্তর্লোকে নির্বিচারে ছিলে অধিরাজ
শেষের শয়ানে যারা নিবেদিল বেদন-বাদল ?

পরিশ্রান্ত হে সৈনিক নিদ্রা যাও কবরের কোলে
অনাগত ভবিষ্যতে রবে লেখা তব ইতিহাস---
তোমার সে সৌম্যরূপ গেল মিশে অনন্ত কল্লোলে
ধন্য তুমি কর্ম্মবীর জীবনের প্রদীপ্ত আভাষ !

.               **********************     


.                                                                             
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
নবীন ভারত জাগো
কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়
ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ভারতবর্য পত্রিকার ভাদ্র ১৩৪৯ ( অগাষ্ট ১৯৪২ )
সংখ্যা থেকে পাওয়া |


প্রমত্ত বিশ্বের বক্ষে অবিশ্রাম নাচিছে দানব
উল্লসিয়া বিচ্ছুরিছে লেলিহান জ্বালার উদগার—
দহনের অন্ধকারে সভ্যতা সে মানে পরাভব
শিহরিছে মুহুর্মুহু শঙ্কাকুল কর্কশ ঝঙ্কার |

কামান গর্জিছে দূর কম্পমান ম্লান গৃহাঙ্গনে
বোমার দাবাগ্নিধূমে বজ্রাহত সবে গৃহহীন---
গভীর অরণ্যে দেখি নিরাশ্রয় কাঁদে সঙ্গোপনে
তৃষ্ণায় বিশুষ্ক প্রাণ কাঁদে প্রিয়া পাশে বিমলিন |

পুষ্পের স্বর্ণাভ রেণু শিশুগণ মরণ-মুখর
মা’র স্তন্য দুগ্ধহীন নিষ্করুণ ঊষর বসুধা---
কন্টক-সঙ্কুল পথে প্রবাসীরা জ্বালায় জর্জর
কেহবা মৃত্যুর অঙ্কে অকস্মাৎ মিটাইছে ক্ষুধা |

হে ভারত তব দ্বারে নির্য্যাতিত অযুত সন্তান
প্রশান্ত আশ্রয় লাগি দিকে দিকে হানে করাঘাত---
বিলুপ্ত ঐশ্বর্য্য সব বিশৃঙ্খল দাবদগ্ধ প্রাণ
অমার ঘনান্ধকারে ক্ষুব্ধ যেন আলোক সম্পাত |

নৃত্যানন্দে মহাকাল প্রলয়ের ধ্বংসের লীলায়
সৃষ্টির রহস্যে কোন্ বাজাইছে সঞ্জীবনী সুর---
মৃত্যুর কঙ্কাল মাঝে আনন্দের জীবন বেলায়
নবীন ভারত জাগো তেজঃপুঞ্জে হে রুদ্র মধুর |

.               **********************     


.                                                                             
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
জননী ফিরিয়া যাও
কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়
ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ভারতবর্ষ পত্রিকার কার্তিক ১৩৪৯ ( অক্টোবর ১৯৪২ )
সংখ্যা থেকে পাওয়া |


জননী ফিরিয়া যাও ব্যর্থ আজ তব আগমন
হৃদয়ের মরুভূমে অবলুপ্ত তোমার আহ্বান---
সুতীব্র দহনে ওঠে বঙ্গদেশ ভরিয়া ক্রন্দন
হে জননী কোথা তব শরতের আনন্দের গান ?

জীবন আনন্দহীন ; লেখনী সে চলেনাক আর
তবুও লিখিতে হবে মূল্যহীন কথা ও কবিতা---
অভাগা স্বদেশ মোর, দারিদ্র্যের দহন-সম্ভার
জ্বালিল নূতন রূপে লেলিহান জীবনের চিতা |

বেদনার কারাগারে আনন্দ পুড়িয়া হোল ছাই
মরণ আসিল যেন প্রলয়ের দীপশিখা জ্বালি ---
অসংখ্য বঞ্চিত প্রাণ মুখে কথা শুধু নাই নাই
অশ্রুর-উত্সব-সিক্ত আঙিনায় ঝরিছে শেফালি |

“জননী ফিরিয়া যাও”  ক্ষীণ কন্ঠে ওঠে কলরব---
দৈন্যের জীবন্ত গ্লানি মোরা সবে করি অনুভব |

.               **********************     


.                                                                             
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
পৌষালী
কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়
ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ভারতবর্ষ পত্রিকার পৌষ ১৩৪৯ ( ডিসেম্বর ১৯৪২ )
সংখ্যা থেকে পাওয়া |


কাস্তে চালায় মাঠে মাঠে আজ চাষী—
মুঠো মুঠো ধরি সোনার ধানের রাশি |
আজ মনে তার থরে থরে হাসে সোনা---
বড় ভালো লাগে আলি পথে আনাগোনা |
এতদিন ধরি ঘরে ছিল হাহাকার—
পায়নিক স্নেহ --- ফসল লক্ষ্মীমার |
সাগর-শুকানো করুণ চাহনি তাই---
ঘর ভরা সব দেখিয়াছে, ‘নাই নাই’ |

#                #                 #

গোধন চরায় ডহরে রাখাল ছেলে---
দেখে তার রূপ কৃষক নয়ন মেলে |
ফুঁ  দিয়া ঝরায় মেঠো রাখালিয়া সুর---
সুরলোকে জাগে সুন্দর সুমধুর |

#               #                #

গ্রামে গ্রামে আজ দুঃখের মহানিশি
বেদনায় তবু মধুময় দশ দিশি |
আনে যে মাধুরী মায়াময়ী বিভাবরী –
নীরবে সে আসে পরাণের পথ ধরি |

#               #               #

চাষী কাটে ধান ; এলো  “পৌষালি” পথে ?
স্মৃতি কত জাগে অতীতের দিন হ’তে !

.               **********************     


.                                                                             
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
যাবার বেলায়
কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়
ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ভারতবর্ষ পত্রিকার শ্রাবণ ১৩৫০ ( জুলাই ১৯৪৩ )
সংখ্যা থেকে পাওয়া |


অন্তরে মোর বন্দী মনের পাখী
গান ভুলিয়াছে বেদনার কারাগারে—
মন চায় তারে হিয়ার গোপনে ঢাকি
ঘুম পাড়ানিয়া গান শুনি বারে বারে |

চারিদিক্ ভরা বেদনার গানে গানে
গভীর রজনী জাগরণে কেটে যায়---
অগণিত প্রাণ দহনের জ্বালা হানে
ললিত কূজনে ক্ষুধা কিরে মেটে হায় ?

আমার পল্লী আজ দহনের বাসা
সেথা ফিরে দেখি সব ক্ষুধিতের দল—
নাইকো মমতা এতটুকু ভালোবাসা
দুই চোখে ভরা মহিমার শতদল |

ঘর ভরা যেথা ছিল ঘরে ঘরে ধান
অজিকে সেথায় হাহাস্বর নাই নাই ---
চ’লে যেতে হবে ; তবুও মাটীর টান
যাবার বেলায় পিছনে টানিছে তাই |

.               **********************     


.                                                                             
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
শেষের দিন
কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়
প্রথমে প্রকাশিত হয় ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ভারতবর্ষ পত্রিকার আষাঢ় ১৩৫১
( জুন ১৯৪৪ ) সংখ্যায় |  কবিতাটি কবির মৃত্যুর পরে, পুনঃপ্রকাশিত হয় এই পত্রিকারই
অগ্রহায়ণ ১৩৫২ ( নভেম্বর ১৯৪৫ ) সংখ্যায়    কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়ের নামে |


চারিদিকে ধূ ধূ করে লেলিহান দারিদ্র্য কঠোর
একা আমি বসে দেখি জনহীন গ্রাম মরুময়—
কল্পনার মায়ামৃগ আজ ভাবি কোথা গেল মোর ?
শৈশবের যাত্রাক্ষণে যার সাথে ছিল পরিচয় |
জীবনের কোলাহল গ্রামে গ্রামে আনন্দ প্রচুর
কে কোথায় গেল চলি ছাড়ি নিজ সাধের ভিটায়—
আনন্দের বেণুবনে সুর কোথা তন্দ্রালু মধুর
বিরহের স্বপ্নলোকে ভরে প্রাণ স্মৃতির জ্বালায় |
জননীর শেষ দিনে আজো মাখা গ্রামের কুটীরে
অশোক শেফালী কাঁদে যে ঘরের গুচ্ছ আঙিনায়
তাহার স্মরণে প্রাণ দূরে আজ ভাসে আঁখিনীরে
স্বদেশ জননী মোর প্রবাসীর আনন্দ কোথায় ?
যেথায় যে ভাবে রহি হে জননী তোমা ভুলিব না
প্রবাস বিরহী মন নিত্য রবে তোমার ধূলায়—
অশ্রুর উত্সব মাঝে কুড়াইব স্মরণের কণা
আমার শেষের দিন তব সাথে লইব বিদায় |

.               **********************     


.                                                                             
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর
*
শরতের উত্সব
কবি কনকভূষণ মুখোপাধ্যায়
রসিকচন্দ্র ভট্টাচার্য সম্পাদিত “বঙ্গশ্রী” পত্রিকার কার্তিক ১৩৪৯ ( নভেম্বর ১৯৪২ ) সংখ্যায়
প্রকাশিত |


চাষার নয়নে ভাদর ঝরিল আশ্বিন এলো পরে---
মার আগমনে বিষাদ বাড়িল বাঙ্গালীর ঘরে ঘরে |
সারা বছরের ভরা বেদনায় কত ছিল মনে আশা—
জননী আসিলে রাঙা পায়ে তার নিবেদিব ভালবাসা |
নিবেদিবে সব বেদনার বোঝা খুশীর লহর তুলি---
বঞ্চিত যত করুণাবিহীন অতীতের দিনগুলি |
এলো আশ্বিন হৃদয়ের বীণ গাহিয়া করুণ সুরে---
সবই যেন ছিল, আজ নাই নাই হারাল সে কোন্ দূরে |
ঘরে নাই ধান মাঠের ফসল দেরীতে ফলিবে সব---
ক্ষুধার তাড়নে কে পূজিবে কারে ? ক্ষুধিতের কলরব |
মলিন করিল গ্রাম অঙ্গন দহনের কোলাহলে---
পূজা উপচার আজিকে কেবল ভরিল আঁখির জলে |
গ্রামের মহিমা মলিন হইল দুঃখের কারাগারে –
অনাহার সেথা হাতছানি দেয় ; অনটন বারে বারে
দুঃখ ওদের গভীর অতল বেদনায় সীমাহীন—
কে রাখে জগতে গরীবের খোঁজ যারা অসহায় দীন ?
গভীর মিতালী বাঁধিয়াছে ওরা মরিয়া মরণ সাথে—
ভয়ালের রূপ দেখে ওরা নীতি আপনার আঙিনাতে |
আসে ম্যালেরিয়া মহামারী আসে করে না কাহারে ভয়---
তিলে তিলে ওরা জীবন দানিয়া মরণে করেছে জয় |
গ্রাম ছাড়ি যারা শহর গড়িল পল্লীরে অবহেলি---
বছরের পর তারা এলো ঘরে ওরা দেখে আঁখি মেলি |
বলে যেন শুনি এলে ভাই সব শরতের উত্সবে –
কঙ্কালসার কাঙাল আমরা কিসে উত্সব হবে ?

কাঙালিনী মার পূজা জীবনের অবসানে---
সার্থক হোক বঙ্গ ভরিয়া চাষীদের বলিদানে |”

.               **********************     


.                                                                             
সূচিতে . . .    




মিলনসাগর