ভাগ্যে যা আছে তাই হবে সই, কী হবে ব্যাকুল হলে ? এখন ভ্রান্তি পরিহরি, বাঁচাও সি কিশোরী, হরিমন্ত্র, শুনাও প্যারির শ্রবণ-মূলে || কেন ব্রজধাম, ত্যজে যাবেন শ্যাম, রাধার দুঃখের কপাল না হলে! মনে জ্ঞান হয়, জন্মান্তরে, আমরা কৃষ্ণ হরি সখি, নিছিলাম কার | বুঝি সেই শাপে এ মনস্তাপে, দহিল প্রাণ গোপিকার | নহিলে যার নামে বিপদ যায়, প্রাণ সঁপে সেই শ্যামের পায়, রাধার প্রাণ যায়, গোকুল ভাসে দুঃখসলিলে || গিয়াছেন মধুপুরে শ্রীকৃষ্ণ ত্যজিয়া শ্রীবৃন্দারণ্য , কারে বলো সই, শুনতে রাধার যন্ত্রণা | ওযে শ্যামের চরণচিহ্ন, সখি ওই যার পদচিহ্ন , সেই মাধব যখন দুঃখ বুঝলে না | অরণ্যে রোদন, করিলে এখন, ঘুচবে না মনের বেদনা | রাধার সুখের কপাল তো নয়, তা হলে কি এমন দশা হয়? কাঁদে কৃষ্ণহীন হয়ে রাধা, পড়ে ভূতলে ||
প্রাণ তুমি আর পথে এসো না | শুধু দেখা, দিবে সখা, সে তো তা মনেতে বুঝে না | তুমি যার, এখন তার, পুরাও বাসনা || তোমা হতে সুখ যা হবার | প্রাণ তো হয়ে বয়ে গিয়েছে আমার | দেখা হলে মরি জ্বলে, এমন দেথা সখা আর দিয়ো না || আগে তোমার দেখলে সখা, হত পরম আহ্লাদ | এখন তোমায় দেখলে ঘটে হরিষে বিষাদ | এসো বসো বলা হল দায় | কী জানি কে গিয়ে সখা, বলে দিবে তায় | সে তোমাকে, আমার পাকে, করিবে লাঞ্ছনা || উচিত নয় রসময়, হেথা আসা এখন | নূতন রঙ্গিণী তোমার করিবে ভর্ত্সন | আমায় বরং সখা, দিয়ো দেখা, যুগ-যুগান্তে | অনাদর নাহি কোরো নব্য প্রেমেতে | নবরসে সে যে রঙ্গিণী! প্রাণ হয়েছে তোমার প্রেমের অধীনী | আমায় যেমন জ্বলিয়ে ছিলে, প্রাণ তারে এমন জ্বালা দিয়ো না ||