হরু ঠাকুর-এর আসল নাম হরেকৃষ্ণ দীর্ঘাড়ি | মাত্র এগারো বছর বয়সে কবির দলে যোগ দেন | তিনি গোঁজলা গুঁই-এর শিষ্য তাঁতী জাতীয় রঘুনাথ দাসের কাছে গান রচনার শিক্ষা গ্রহণ করেন | শোভাবাজারের রাজা নবকৃষ্ণ বাহাদুর ছিলেন তাঁর পৃষ্ঠপোষক এবং তিনি তাঁরই সভাসদ ছিলেন |
কথিত আছে যে একবার রাজা নবকৃষ্ণের বাড়ীতে একদল কবিয়াল গান করেন | হরু ঠাকুরের গানে রাজা খুশী হয়ে তাঁকে একটি শাল উপহার দিতেই তিনি তা তাঁর ঢুলীর মাথায় জড়িয়ে দিয়েছিলেন | রাজা অপমানিত বোধ করে কৈফিয়ৎ চাইতে হরু ঠাকুর বলেছিলেন যে তিনি সখের কবি, পেশাদার নন---গান গেয়ে উপহার নেওয়া তাঁর আত্মসম্মানে বাধে | এই উত্তরে রাজা সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে নানাভাবে বিশেষ অনুগ্রহ করতে লাগলেন | এতে রাজার অন্যান্য সভাস্থ পণ্ডিতেরা খুব ক্ষুব্ধ হলেন | তাঁদের শিক্ষা দেবার জন্য রাজা তাঁদের একটি সমস্যা-পূরণ করতে বললে তাঁরা কয়েকদিন সময় চাইলেন | তক্ষুনি তিনি হরু ঠাকুরকে ডাকিয়ে এনে তাঁকেও সেই সমস্যাটি দিতেই তিনি তা একটি গানের মাধ্যমে পূরণ করে দিলেন | চারিদিকে ধন্য ধন্য পড়ে গেল এবং তখন থেকে হরু ঠাকুরকে পণ্ডিতেরাও যথাযথ সম্মান দিতে লাগলেন | হরু ঠাকুরের বৃদ্ধাবস্থায়, যখন তিনি কবি গান গাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন, তখন রাজা নবকৃষ্ণ তাঁকেই দিয়েছিলেন কবির লড়াইয়ের মিমাংসার ভার |
হরু ঠাকুরের শিষ্য ভোলা ময়রা, রামবসু, নীলু ঠাকুর প্রভৃতি | এন্টনি ফিরিঙ্গী প্রভৃতি কবিয়ালদের সাথে কবির লড়াইয়ে অংশ গ্রহণ করেন | হরু ঠাকুরের সখী সংবাদ এক সময় প্রসিদ্ধ ছিল | তাঁর কোন কোন গানে সহজ সরল ভক্তিভাব আছে |
. --- উত্স: ডঃ শিশির কুমার দাশ, সংসদ সাহিত্য সঙ্গী ২০০৩ . রমেশচন্দ্র মজুমদার, বাংলা দেশের ইতিহাস, . ডঃ শ্রীপ্রফুল্লচন্দ্র পাল, প্রাচীন কবিওয়ার গান, . শ্রী কমলকুমার গঙ্গোপাধ্যায়, শাক্ত-পদ সাহিত্য ও শাক্ত-পদাবলী চয়ন
হরু ঠাকুর-এর কবিগান
হরু ঠাকুর ১৭৩৮ ~ ১৮১২
আমাদের কাছে কবিয়াল হরু ঠাকুরের কোনো ছবি নেই | একটি ছবি আমাদের কাছে পাঠালে আমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে প্রেরকের নাম এইখানে ছবির সাখে উল্লেখ করবো |