বৃন্তের ফুল যদি যায় গো ঝরে ; নিয়তি বিধানে আছে ফুল কি করে ? ঝরতে যে হবে তাকে নয় তার ভূল ; ফুলের কি দোষ বলো যদি ঝরে ফুল | পূজোর ডালিতে যদি দেয় সেই ফুল ; দেবতা নিবে না অর্ঘ্য হয়ে যাবে ভূল | ফেলিয়া দিতে হবে ডালা ভরা ফুল ; ফুলের কি দোষ বলো কি করে সে ফুল ? ঝরা ফুলে মালা গেঁথে বাসর সাজায় ; সেই মালা পড়ে রবে পায়ের ধূলায় | ঝরা ফুলে মালা গাঁথা হয়ে যাবে ভূল ; ফুলের কি দোষ বলো কি করে সে ফুল ? প্রেমের আঙিনা যদি ফুলে ফুলে ছায় ; সমাজ ঢালিয়া কালি দিবে তার গায় | সমাজের পায়ে শোভা হবে সেই ফুল ; ফুলের কি দোষ বলো কি করে সে ফুল ? রূপ আছে গন্ধ আছে ছড়ায়ে সৌরভ ; সকলেই চায় তবু নেই কো গৌরব | বাগান বাড়ীর শোভা এই তার ভূল ; ফুলের কি দোষ বলো কি করে সে ফুল ? পতি ধন বড় ধন মিলে সকলের ; ঝরা ফুলে নাহি মিলে সে যে বিকেলের | ঘর চাওয়া হবে না তার হবে ভূল ; ফুলের কি দোষ বলো কি করে সে ফুল ? বড় বড় নেতাদের বড় বড় গুণ ; ঝরা ফুলে রাজনীতি ভোট শত গুণ | কাজ শেষে ছুঁড়ে দেয় পায়ের যে ধূল ; ফুলের কি দোষ বলো কি করে সে ফুল ? নখে ছেঁড়া ফুল যদি হয় তার বধূ ; ঝরা ফুলে লুটে নেয় যত তার মধু | মধুকরে মধু পানে নেই কোন ভূল ; ফুলের কি দোষ বলো কি করে সে ফুল ? আমাদের মত সব অভাগার ঘরে ; ঝরা ফুল ঝরে শুধু অভাবের তরে | সমাজ আর আমরা যত করি ভূল ; ফুলের কি দোষ বলো ঝরে শুধু ফুল ||
অসহায় এক শিশু হাত পা নেড়ে চেয়ে থাকে তার মায়ের দিকে ; ট্যাঁ ট্যাঁ কাঁদতে থাকে খিদের জ্বালায় ; জন্ম গ্রহণ করেই সে চিনতে পারে তার মা কে | যে মায়ের গর্ভে দশ মাস দশ দিন থেকে লাথি ঘুষি মেরে , রক্ত চুষে পূর্ণাঙ্গ শিশু রূপে কঠিন যন্ত্রণা দিয়ে জন্ম লয় একদিন | সেই মা যন্ত্রণা উপেক্ষা করে রক্ত শোধন কোষ থেকে আগত, পুঞ্জিভূত দুগ্ধ পান করায় পরম মমতা ভরে | সেই মা ব্যাথা বেদনার পৃথিবীতে ঘর পরিবার, কর্তব্য অধিকারে নিয়োজিত থেকে, স্ব স্ব কর্মে লিপ্ত থেকে, পরম আদরে অসহায় শিশুর পরিচর্য্যায় দিনাতিপাত করে | যেই মা শিশুকে আলো দেখায়, বলতে শেখায়, চলতে শেখায়, চেনায় নতুন পৃথিবীকে | নিজের সমস্ত রক্ত কণিকায় গঠিত শিশুকে প্রাণের স্পর্শ দিয়ে, মমতা দিয়ে, স্নেহ দিয়ে উজার করা ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তোলে পূর্ণাঙ্গ মানুষ রূপে | সেই মাকে কেমন করে ভূলতে পারি ? কেমন করে ভূলে যায় কেউ এই ধরণীর ধূলোয় নিজের শক্তি ফিরে পেয়ে ? ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের মাঝে ডুব দিয়ে সেই সন্তান চিনতে পারেনা কেমন করে ; তার সেই মাকে ? তবুও অভিশাপ নয় ক্ষমা রয় তাঁর হৃদয়ে ; কোটি কোটি প্রণাম আমার . সেই “মা” কে ||
আমাদের ধরা ফলে ফুলে ভরা . নতুন জীবনে জাগে, নতুন প্রজন্ম তুমি তাতে নেই . ভাবতে অবাক লাগে | বড়বাজার ও শিয়ালদহে . জ্যাম আজকে হয়নি, মনুমেন্ট মাঠে কলকাতা পথে . মিছিল আজ যায়নি | ধর্মতলায় অধর্ম হয়নি . গুন্ডা মারেনি রাগে, সোনাগাছিতে গণিকা ছিল না . ভাবতে অবাক লাগে | আমেরিকা সৈন্য পেরে তার ঘরে . অর্থে পড়েছে টান, ব্রিটেন তাদের সঙ্গ ছেড়েছে . থাকে না বুশের মান | পুলিশ আজকে লয় না ঘুস . বদমাস সব ভাগে, শহরে কোথাও হয়নি যে খুন . ভাবতে অবাক লাগে | অট্টালিকায় সাজানো বাগান . মোবাইল নাই ঘরে, মোটর গাড়িতে সোনিয়া গান্ধী . পাকিস্থান থেকে ফেরে | কোকিল আজকে গায়নি যে গান . বসন্ত অনুরাগে, মধুকর মধু করেনি যে পান . ভাবতে অবাক লাগে | ইসরায়েল ও প্যালেস্টাইন . এক রাষ্ট্র গড়েছে, ভ্রাতৃ প্রেমের অবাধ মিলন . নজির তারা রেখেছে | গুজরাত আজ গলায় মিলেছে . ভাই ভাই অনুরাগে, মোদির ইস্তাফা কংগ্রেস রাজ . ভাবতে অবাক লাগে | রাশিয়া প্যারিসে উলঙ্গ নৃত্য . সূর্য স্নান করেনি, মুম্বাই শটে জামা ঢাকা ছিল . নারী হরণ হয়নি | পশ্চিমী ছোঁয়া মুম্বাই ক্লাবে . পূবের হাওয়া লাগে, ধ্রুপদ ঠুংরি নৃত্য করে যে . ভাবতে অবাক লাগে | ভারতের সাথে পাকিস্তান মিশে . একাকার হয়ে যাবে, একই প্রেমের গাহি জয়গান . ভারতবর্ষ হয়ে রবে | দাঙ্গা ফ্যাসাদ শেষ হয়ে যাবে . মানুষের নেতা জাগে, গুন্ডানীতির রাজনীতি শেষ . ভাবতে অবাক লাগে | বিশাল আকাশ আমাদের ছাদ . পৃথিবী একটি ঘর, তার মাঝে মোরা বসবাস করি . যত নারী আর নর | আজও বেনিয়া পাপীরে তাড়াতে . নেতাজী রক্ত মাগে, স্বাধীন ভারত গড়বে আবার . ভাবতে অবাক লাগে !!