কবি ঠাকুরদাস চক্রবর্তী-র গান
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।
*
( কেউ কেউ মনে করেন এই গানটি গদাধর মুখোপাধ্যায়ের রচিত )


শ্রীমতি, এই মিনতি রাখো গো আমার |
পাবে সময়ে কালাচাঁদ, ঘুচিবে এ বিষাদ,
সও গো সও অল্প দিন আর দুখের ভার ||
.        হবি কি পাগলিনি, কমলিনী,
.        কৃষ্ণবিরহের দায় ?
.   ছি ছি ধৈর্য ধরো, সহ্য করো দুখ,
.           সময়ে পাবে শ্যামরায় |
.     আছে প্রমোদিনী ওই যে কুটিলে---
.    সাধে কৃষ্ণসাধে বাদ, পরিবাদ
.          ঘটালে এই গোকুলে |
দুঃখ অন্তরে রাখো রাই, প্রকাশে কাজ নাই,
.   ঘটাসনে জ্বালার উপর জ্বালা আর |
.          জেনো সকলই কপালে হয়,
.          রাধে গো, দোষ নাই কারো |
.          বাঁধো ধৈর্যগুণে প্রাণ, কিশোরি,
ভাবো কৃষ্ণের অভয় পদ, ঘুচিবে এ বিপদ,
.      বিপদের কান্ডারী হরি |
.  ভাবো একান্তে শ্রীকান্ত, হবে দুখ অন্ত
.   হয় দুঃখান্তে সুখ, বিধি বিধাতার ||


.                   ****************                                                       
উপরে


মিলনসাগর
*
.          নাহি একান্ত জানি বিনা শ্রীরাধায় |
.         যতনে চরণে শরণ লয়েছি রাধার ;
.          এ দায়ে রাখেন রাই যদি পায়,
.     নতুবা নিরুপায়, মানের দায় সখি,
.                 আমার প্রাণ যায় ||
.       রাধার মাধব রাধার প্রেমে,
.       সদা গো বাঁধা আছি সই!
.      নাহি অন্য জনে জানি মনে সই,
.         একান্ত প্রাণের রাধা বই |
.    ব্রহ্ম সনাতনী, চিন্তা-স্বরূপিনী শ্রীমতী---
.  কৃষ্ণবিরহে কী ভয় তার,বিচ্ছেদ নাই শ্রীরাধার,
.     তুচ্ছ অনঙ্গে কী হবে তার দুর্গতি ||
.  ইচ্ছাময়ী নাম শ্রীরাধার, রাই কৃষ্ণের মূলাধার,
.     ভিকারি আমি রাধার প্রেমের দায় ||



.                   ****************                                                       
উপরে


মিলনসাগর
*
একবার বলিস তো, আসতে বলি মাধবকে,
.           প্যারি, তোর সন্মুখে |
ওই দেখো কালিয়ে, কুঞ্জের বাহিরে দাঁড়ায়ে,
. কেঁদে বলতেছে---“দয়া করো রাধিকে” ||
.   প্রভাতে শ্রীকৃষ্ণে, নিকুঞ্জের নিকটে,
.          হেরিয়ে বৃন্দে, শ্রীমতীরে কয় ;
.   রাধে, কেঁদেছ যার আশাতে নিশিতে,
.   সেই শ্যাম প্রভাতে উদয় |
.   কৃষ্ণ অতি ম্রিয়মাণ, তাহে লজ্জাভয়---
.   মুখে আধো আধো ভাষা,গললগ্নবাসা,
.   কাতর মাধব অতিশয় |
.   দেখে রূপের ছাঁদ, পাছে রাই হয় উন্মাদ,
.  কৃষ্ণ আগে তাই পাঠিয়ে দিলেন আমাকে |
. যদি স্বেচ্ছা হয় বলো গো প্রধানা গোপিকে |
.     কৃষ্ণ সেজেছেন অতি বিপরীত ;
.    যেন গ্রহণান্তে শশী, উদয় হল আসি,
.       সর্বাঙ্গে কলঙ্ক অঙ্কিত|
.  নাহি সর্বাঙ্গে সুরাগ, হৃদে কলঙ্কের দাগ,
.     নাহি লাবণ্য কালাচাঁদের চাঁদমুখে ||



.                   ****************                                                       
উপরে


মিলনসাগর
*
.  আমি অনন্ত, আমার অন্ত কেবা পায় |
.  কভু কুবুজায় সুন্দরী, করি হে সুন্দরি,
.    কখনো ধরি রাধার রাঙা পায় ||
সকলে জানে সিই, রসমই! আমি ইচ্ছাময়;
.   জগৎ ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি স্থিতি লয়,
.        সই রে, আমা হতে হয় |
.   কভু ইচ্ছা করে করি রাজত্ব---
করি কখনো ঘাটালি, কখনো রাধার দাসত্ব |
.     কভু গোষ্ঠে চরাই গোধন,
. কভু গোপের উচ্ছিষ্ট করি হে ভোজন
. কভু বাঁশির গানে ভুলাই গোপিকায় |
কভু ভিক্ষা করি মান, মানিনী রাধার মানের দায় |
.  কভু করে ধরি গিরি গোবর্ধন---
. ইন্দ্রদেবের ভয় হতে, রক্ষা করি গোপীগণ,
. কভু পুতনা করি নিধন, কভু করি গো সখি,
কালিয় দমন, কভু উদুখলে বাঁধেন যশোদা আমায় ||



.                   ****************                                                       
উপরে


মিলনসাগর