কবি মলয় রায়চৌধুরীর কবিতা "জখম" যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই তা আপনার সামনে চলে আসবে। www.milansagar.com
|
কাঁচা কয়লার গন্ধ ঘোঁট পাকিয়ে উঠছে দুঁদে অসংযমী শিরার ১৮ নং টোটায়
আমার বাবা-মা'র ক্রোমোজম
. আমাকে আমার দিকহীন খপ্পরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কিনা জানি না
ওফ্
ব্রেনের ক্রুদ্ধ শাঁসের ভাপ থেকে
. রেটিনার উপর রঙিন নাইট্রো সেলুলোজ ঝরে পড়ছে
সমবেদনাজ্ঞাপক চিঠির আড়ত গড়ে উঠছে
. আধভেজানো সদর দরোজার ভবিষ্যৎহীন চৌকাঠে
আখচার জং ধরে যাচ্ছে বহুব্যাবহৃত মাংসপেশীতে
মাটির সঙ্গে ১ যোগে গলে ঘাঁট হয়ে যাচ্ছে জ্ঞানী আর মূর্খের সমসত্য মড়া
গর্ভের ফ্যাচাঙে
. ১টা কোরে কনভার্সান চার্ট নিয়ে ওৎ পেতে রয়েছেন প্রতিটি নারী
আমার ১ই শিরার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে
. গান্ধী আর আত্তিলার সমকেমিকাল রক্ত
কিছুই হল না আমার পৃথিবীরো খিছু হবে না শেষ ওব্দি
তেজারতি কর্বার করা হল না
হাওয়ায় ভাসমান গাছগাছালির বীজ
. আমার অনুর্বর ঘামের উপর বসে ফ্যাঁকড়া ছড়াতে চাইছে
বুমঘাঙের আপেলবাগানে বসে ব্যর্থতার কথা ভেবেছি দুপুরে রোদ্দুরে
শয্যের শাঁসের হেঁসেলে ঢুকে-থাকা পোকার অলস আরামের খোঁজে
. ছুটোছুটি করা হল না আমার
নিজের শরীরের ভেতরদিকেই আজকাল থুতু ফেলছি আমি
আয়নায় শঠ পারা থেকে খুঁটে তুলছি আমি
. আমার হিংস্র চোখমুখের আত্মত্রাণকারী ছাপছোপ
সকলেই যে-যার কাজ গুছিয়ে ঘাটবাবুর সার্টিফিকেট নিতে চলে যাচ্ছে
আমারি মগজ থেকে বেরিয়ে
. ২০০০ শিকারী কুকুর আমাকে তাড়া কোরে ফির্ছে ২৫ বছর
স্ত্রীলোকদের পায়ে চলা রাস্তার গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে
. আমি এগিয়ে যাচ্ছি তাদের আমেচার আস্তানার দিকে
অন্ধকার রাস্তার ওপর পায়ের শাদা ছাপ দেখে
. আমার বুক ছাঁৎ কোরে উঠেছিল
দেওয়াল থেকে ঝুরঝুরে বালি খসে পড়ার শব্দে কাঁটা দিয়ে উঠতে চেয়েছে
. আমার ম্লান চামড়া
লোমের চিমনিগুলো দিয়ে ঠেলাঠেলি মেরে বেরিয়ে যাচ্ছে
. আমার সির্দাঁড়া পুড়ে যাওয়া ধোঁয়া
উইদের থুতু দিয়ে তৈরি মাটির শিরার মধ্য দিয়ে
. কাঁচা মাংসের লাশ টেনে নিয়ে যাচ্ছে ডেঁয়ো পিঁপড়ের সার
গায়ে-পড়া ঢেউদের সামুদ্রিক পাড় দিয়ে
. খালি-পায়ে আমি চলে যাচ্ছি শকুনদের বিমর্ষ আড্ডায়
আমি জেনেছি খাদ্যজিনিষের মধ্যেই ১ সঙ্গে লুকিয়ে থাকে
. রক্ত আর পুঁজের আকালষেঁড়ে রং
আখের বিকারগ্রস্ত মেধা মাটি থেকে শুষে তোলে
. তরল পরোপকারী নোংরামি
আমার নোংরামি আমার ভালোবাসা আমার রক্ত
মেঘের পাশে পাশে উড়ে যায় ফেলে-দেওয়া রক্তমাখা ন্যাকড়া
হৃৎযন্ত্রের আলতো কাঁপনে কেঁপে ওঠা
. নীলা-র বাঁদিকে রুগ্ন স্তন আমার মনে পড়ছে এখন
মরবার দিন অব্দি মুখ বুজে জীবনের লাথানি সয়ে যেতে হয়
এখন আমার হৃদমেশিনের যায়গায় ঝুলছে ১টা জ্বলন্ত ম্যান্টল্
এখন আমার ধমনীদের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে
. যোগবিযোগের চিহ্ন আর কাঁটা-ভাঙা কম্পাস
মাটির ভেতর সিসের মগজে ওৎ পেতে আছে
. সংবাদপত্রিকাদের হ্যাঁ কিংবা না
আমি বুঝতে পার্ছিনা আমি স্বধর্মনিষ্ঠ কি না
আমার পা বুঝতে পার্ছেনা যে আমিই তাদের গতি আর দিক নিয়ন্ত্রণ কোর্ছি
অফেরৎযোগ্য নারী নিয়ে
. আয়কর / শুল্ককর দিয়ে বুড়ো হয়ে যেতে হবে কি না জানি না
নিজের সই জ্বাল করে চালিয়ে দিলুম গোটা শীতকাল
চাইনি তবু জন্মালাম
জুতোর ফিতে না খুলেই
. এবার আমি জোনাকিহীন অন্ধকারে লাফিয়ে পড়তে চাই
সকলেই কালকের জন্য তৈরি হয়ে নিচ্ছে
কালকের জন্যই আজ সন্ধেবেলা চোলছে জুতোর মমতায় পালিশ
. জখম কবিতাটি হাংরি জেনারেশন বা হাংরিয়ালিস্ট সাহিত্য আন্দোলন (১৯৬১ ~ ১৯৬৫) -
এর সময়ে লেখা | এই কবিতাটি কবি নিজে অনুবাদ করেছেন ইংরেজীতে | এই কাজে তাঁকে সহযোগীতা
করেন ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হাওয়ার্ড ম্যক্ কর্ড, যিনি উইলিয়াম বারোস
এর সহ-ইন্টারভিউয়ার ছিলেন | বিদ্বজনেরা এই কবিতাটিকে কবি ওয়াল্ট হুইটম্যান এর "Leaves of
Grass", কবি টি.এস.ইলিয়ট-এর "Ash Wednesday" এবং কবি এলেন জিনসবার্গ এর
"Howl" কবিতার সঙ্গে তুলনা করেছেন | সমালোচকগন "জখম" এর উপর কবি ফেনটন জনসন এর
"Tired", কবি রিচার্ড রাইট এর "Between the World and Me" এবং কবি খৃস্টোফার স্মার্ট এর
"Jubilet Agnow" কবিতার প্রভাব লক্ষ্য করেছেন |
. বাংলা দেশের অধ্যাপক শফিক আশরাফ "জখম" কে বাংলা সাহিত্যের একটি মাইল
স্টোন বলে উল্লেখ করেছেন, কবিতার ছন্দ, স্বরপ্রবাহ, শব্দবিন্যাস, রচনাশৈলী, প্রতীকি গভীরতা এবং
সন্মোহের জন্য | এই কবিতাটিকে পোস্ট-মর্ডান বাংলা কবিতার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিন্তু তা অন্যান্য
দীর্ঘ কবিতা থেকে ভিন্ন, যেমন রবীন্দ্রনাথ-এর "পৃথিবী", সুধিন্দ্রনাথ দত্ত-র "সংবর্ত", বিষ্ণু দে-এর
"ক্রেসিডা", অমিয় চক্রবর্তী-র "ইতিহাস", শামসুর রাহমান-এর "প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে", আল
মামুদ-এর "সোনালি কেবিন", পবিত্র মুখোপাধ্যায়-এর "ইবলিশের আত্মদর্শন", রুদ্র মহম্মদ শহিদুল্লা-র
"মানুষের মানচিত্র", আহমেদ ছাফা-র "বস্তি উজাড়" এবং শিমুল মামুদ-এর "পয়গম্বর নামা" | কবি
ও কাব্য সমালোচক অনুপম মুখোপাধ্যায় দাবী করেছেন যে "জখম", বাংলা ভাষা তথা যে কোনো
ভাষাতেই হোক, এমন একটি কবিতা যা চিরতরের জন্যে মনে রাখার যোগ্য |
. মিলনসাগর -এ আমরা এই কবিতাটি তুলতে পারার অনুমতি পেয়ে গর্বিত |
Click here to read the English Translation of this poem "Jakham"
বৃদ্ধের ২৫১০ বছর পর গান্ধীময়দানে পড়ে থাকে
. পুলিশ ও অপুলিশ মার্পিটের ১৯৬৫ মডেলের জুতোছাতা
কোকেন আর জাল টাকার আড়তে
. দেদার আরামে ১ সঙ্গে শুয়ে থাকে ভারত আর চিনের নাগরিক
আমি অন্ধ ভিকিরির হাত থেকে ৫ পয়সার চাক্তি তুলে নিয়েছিলাম
আমি খইয়ের ভেতর থেকে কাড়াকাড়ি কোরে ছিনিয়ে নিয়েছি
. মড়ার দয়ালু পয়সা
সাঁতার না-জেনেও নৌকোয় পার হয়ছি মরে যাবার ভয়
আমাকে ধিক্কার দেয়া যায় আমাকে উপেক্ষা করা যায় না
ঈশ্বর যন্ত্রস্থ
আমি ভুল গর্ভ থেকে নেবে ভুল নাম নিয়ে ঘুড়ে বেড়ালাম ৬৫টা বছর
ভুল ইচ্ছে থেকে পেয়েছি ভুল দ্বেষ
ভুল সুখ থেকে ভুল দুঃখ পেয়ে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল
আমি ভুল সংঘাত থেকে জড়ো কোরেছি ভুল চেতনা
আহ্ এ ভুল কোল্কাতা এ ভুল মানুষমানুষী
ভুল দম্ভ থেকে তৈরি কোরেছি ভুল হিংসে
আমি ভুল শৌচকাজ থেকে জেনেছি ভুল সরলতা
ভুল সংযম আমাকে এনে দিয়েছে ভুল বিরাগ
আমি ভুল অহংকার নিয়ে ভুল ভিড়ের কাছে চলে গেছি
আমি ভুল ভক্তি নিয়ে যে-কোনো কারুর খোঁজে জেগে বসে রইলুম সারারাত
ভুল স্বপ্ন দেখে ভুল জায়গায় স্ত্রীযন্ত্রের বদলে পেলুম অশ্বত্থের পাতা
ভুল শিক্ষা থেকে ভুল সুনাম পেয়ে কব্জির শিরা ছিঁড়ে ফেলে দিলুম
আমি ভুল নারীর পায়ের ওপরে রেখেছিলুম আমার নির্ভুল ভালোবাসা
ভুল প্রেম থেকে ভুল গন্ধের কাছে আমাকে অনেকবার চলে যেতে হল
আমি ভুল মদরুটি থেকে তৈরি কোরেছি আমার ভুল রক্তমাংস
ভুল সড়কের ওপরে দাঁড়িয়ে ভুল মত্লবের পাল্লায় ছিঁড়ে ছিঁড়ে ওড়চ্ছি
. আমার ভুল ট্যানকরা চামড়া
নতুন চামড়া দেখব বলে আমি আমার ঘায়ের মামড়ি খুঁটে ফেলছি এখন
আস্তিনের তলায় আধপচা দগদগে ঘা লুকিয়ে
. সকলের সঙ্গে হাত নেড়ে কথা বোলে যাচ্ছি
মুখের চামড়া নিচে আমার খুলি সব সময় হা কোরে হাসছে
আহ্
আঙ্গুলগুলো হৃদয়ের সঙ্গে সেলাই কোরে সিল কোরে রেখেছিলুম ২৫ বছর
আমি নদীর অযোগ্য জলে ডুবে গিয়েও ফিরে এসেছি কলের নিচে
মরামানুষের হতাশ জামাকাপড় পরে তারি খোঁজে ঘুরেছি রাস্তায় রাস্তায়
মাসিক ২৮৭.৭৫ টাকা ভাড়ায়
. আমাকে খাটিয়ে নিল জমিদারী নিলামের চোথাপত্তর
আমি খালি পেটে ইন্টারভ্যু দিতে গিয়ে বলে এলুম অর্থমন্ত্রীর কাকিমার নাম
ঢালু জায়গায় প্রস্রাব কোর্লে নিজেরি পায়ের দিকে স্রোত গড়িয়ে আসে
শরীরে এ.সি. আর ডি.সি. ২ রকম শিরার ব্যবহারই পুরোদস্তুর চালালুম
স্বপ্নে আমি নীল আমেরিকা থেকে ধূসর জর্ডন ওব্দি চালিয়ে ফেরাচ্ছি
. আমার হাইফেন গোড়ালি
আঘাতের রক্ত খুঁজতে খুঁজতে ১৫০০ মাইল চলে যায় সহৃদয় বোরিক তুলো
এখন মলয়ের বেওয়ারিশ আশা আকাঙ্খা ফির্ছে
. আমার হাড়হাভাতে কোলজের খাপখোপে
বিশ্বভাতৃত্ব শিখে এঁদো বস্তিতে ফিরে যাচ্ছে মানুষ
সফল মানুষদের লাংস থেকে আমি কার্বন রড টেনে বের কোরে আনছি
আমি গোলাপের পায়ের কাছে বসে দেখছি
. কী কোরে তার কুঁড়ির ভেতর থেকে ফেটে বেরোয় ৩৪টা আলজিভ
একগাদা সবুজ কাচের টুকরো দেখছি চৈত্রের আতাগাছের ধুলোতে চামড়ায়
বিদেশি খনির সোরাগন্ধক এসে ফেটে পড়ছে ঝিকাবাড়ির মাঠময়দানে
আশেপাশের রাজ্য থেকে ৯৯০০০ পুরোনো জিভছোলা উড়ে এসে
. কোল্কাতার আকাশ চষে ফলছে
গোখরোর মাথায় খুলে উঠছে জাপানি হাতপাখা আর মানুষের জীবন্ত পাঞ্জা
আমি লুকিয়ে-চুরিয়ে নিজের সমস্ত গতিবিধির ওপর লক্ষ রাখছি
গর্ভের ভেতরেই সকলে শিখে আসছে তাদের অপ্রাপ্ত জীবনের ১ম ডিগবাজি
আমার মুখ কান পায়ুকোটর দিয়ে
. ২৫ বছরের পুরোনো টাইমটেব্ লের ছেঁড়া পাতা বেরিয়ে আসছে
আদালতের অবমাননার দায়ে নিয়মের কাছে মাথা নোয়াচ্ছে ডারউইনের মানুষ
মরে যাবার আগে
ক্যাজুয়াল লিভ / অর্ডিনারি লিভ / সিক্ লিভ সম্পর্কে ভাবিত হচ্ছে মানুষমানুষী
খাবার সমেত হাত ঠিক উঠে আসছে মুখের কাছে
মহাজ্ঞানী রেডিও থেকে থুতুর ছাঁট আসছে এদিকে
উলটো শার্ট পরে আমি দেখাচ্ছি
. সেলায়ের দাগ বগল আর কলারে বসে থাকা তেলচিটে ময়লা
চশ্মার কাচের ওপরে লেগে ছিটকে চলে যাচ্ছে ক্রুদ্ধ ভিমরুল
লোকলস্করের কান খুঁজে চলে যাচ্ছে ধ্বনিপ্রতিধ্বনি
আমি যে-বাড়িতে জন্মেছিলুম তাকে ভেঙে জন্ম নিয়ন্ত্রণের আপিস তৈরি হয়েছে
অনেক কিছু না-বুঝে না-জেনে না-শিখে মরে যেতে হবে
ওফ্
আমি জানোয়ারের কাছে শিখলুম তর্জনী অনুগত মানুষপনা
বাবার ধর্মের কাছে হাত পেতেছি পরিত্রাণের জন্যে
. মায়ের ধর্মহীনতার কাছে ২৫ বছর
মাথার শিয়রে নকল ধারালো দাঁত ভিজিয়ে শোবার জন্যে এবার তৈরি হচ্ছি
এখানে কেউ নিচু কোর্টে হেরে গিয়ে সদর কোর্টে জিতে ফিরে আসে
কেউ মানুষের কাছে জিতে গিয়ে মানুষের কাছে হেরে যায়
ভারতের রাজপথ দিয়ে বুলেটপ্রুফ পেশাদার দেশপ্রেমিকরা আর একলা হাঁটে না
আণবিক চুল্লি আর রেডক্রসের কার্যখেত
. আপোশে ভাগ কোরে কর্তব্যবোধে ঘেমে উঠে মানুষ
ভূমধ্যাকর্ষণের হাতে নিজেকে পুরোপুরি ছেড়ে দেবার পর ঘুম আসে
মানুষের আদর খেতে পাথরের নুড়ি চলে আসে পেতলের পূজনীয় সিংহাসনের
সমাজের সোহাগ ছেড়ে পাহাড়জঙ্গলের দিকে চলে যায়
. আধান্যাংটো মানুষ ও তার নিজেস্ব দেশলাই
খুলির হোল্ডঅলে থাকে পরিচিত মুখ রাস্তাঘাট আর রঙিন অস্থায়ী মানচিত্র
আমি স্ত্রীলোক থেকে স্ত্রীলোকের কাছে ছুটে গেলুম
ডাকবাক্সের ভূগর্ভ সুড়ঙ্গ দিয়ে নেবে গেছে
. গেল-অসুখে লেখা সব প্রতিবাদপত্র
২টো লাংসের মাঝখানের ফাঁকটুকুতে
. হু হু কোরে ঝাপ্টা মেরে উঠতে চায় উদ্দেশ্যহীন বিষাদ
নিরুদ্দিষ্টের প্রতি ছাপানো সবকটা চিঠি আমারি জন্যে দেয়া থাকে কিনা জানিনা
নিজের পায়ে কুঠারাঘাত কোর্তে গিয়ে কুঠার ভেঙে যাচ্ছে ফিদফায়
কোল্কাতার আকাশ দিয়ে এখন সমাজকল্যাণকমিটির কাগজপত্তর উড়ে যাচ্ছে
ঘুমের মধ্যেই আমি আজ সকালের-দিকে ফুঁপিয়ে উঠেছিলুম
এখন স্বপ্ন থেকে উঠেই পেতে দিচ্ছি আর সি সি গাঁথুনি করা কাঁধ
আমি নাপিতের ক্ষুরের কাছে শিখেছি ধৈর্য
আঙ্গিক মানে তোমার হাড় আর হাড়ের আণবিক সাজসরঞ্জাম
এবার আমি নিজেই সবকিছু জাচাই কোরে দেখতে চাই
জান্তে চাই কাকে বলে বিষ কাকে বলে মলয় রায়চৌধুরী
ভরতবর্ষ কারুর বাপের একলার কিনা জান্তে চাই
স্রেফ নিজে আগাপাশতলা ভুগে দেখতে চাই কাকে বলে অধঃপতন
আমি স্বাধীন ভারতবর্ষবোলতে জেনেছিলুম অক্সিজেন
আজ প্রেসের মেশিনের সামনে মাতৃজঠরের কথা মনে পড়ে যায়
ঘুম থেকে উঠে বালিশের নীচে পেলুম স্প্রিঙখোলা ছুরি
বারবার পেছন ফিরেও দেখতে পাচ্ছি না কারা সেই থেকে ফিসফিস কোর্ছে
ছাদের আলসেতে পড়ে থাকা রহস্যময়
. হাড়ের টুকরো দেখে কাল ভয় কোর্ছিল
আমার হাড়ের ব্যথা আমি সারাতে পার্লুমনা আজো
ভারতবর্ষের মাটির তলা থেকে জ্বলন্ত মাদুর তুলে এনে বিলোলুম
. বন্যাপিড়িত এলাকায়
খিল আর ছিটকিনির কাছে বসে শিখে এলুম আত্মপরিত্রাণ
পুরোপুরি চার দিন গুম মেরে থেকে আমার গলা ভেঙে গেল
আমি খালি পেটে মদ খেয়ে লাফিয়ে দেখেছি কঙ্কাল আওয়াজ
আমি নদীর কাছ থেক জেনে এলুম
. মাটিপাথর কামড়ে এগিয়ে যাবার খসড়া পরিকল্পনা
শীতকালেও আমার গোড়ালির ঘাম
. আমার মোজায় অসামাজিক গন্ধ ঠুসে তোলে
বাহুমূলে মাটি জমে গিয়ে
. আমার ২ কাঁধ ফুঁড়ে বেরোচ্ছে স্পর্শময় ইউকালিপটাস