আজ অনেকদিন পরে তোমাকে দেখলাম, সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে সকলকে মন্ত্রমুগ্ধ করে দেওয়ার খেলায় রত। ধারাল দুটি চোখে বিদ্যুৎ মাথা নিচু করে আভিবাদন গ্রহণের সেই চেনা ভঙ্গীটি বড় প্রিয় সবার আড়াল থেকে দেখলাম বুকের মধ্যে ড্রামের শব্দ......
তুমি কি আমাকে দেখলে? না দেখার ভান করে এড়িয়ে গেলে? আমি আঁতিপাঁতি করে খুঁজলাম তোমার চোখে নিঃসঙ্গতা- তোমাকে অসুখী দেখতে চাই- কোনও অতৃপ্তি পেলাম না তো! হাসিটা যেন আরও চওড়া, আমি পুড়লাম আবারও।
তোমার চোখ কাকে যেন খুঁজছিল- কি চাপা দিতে অত বেশী হাসি? তুমি কি জানতে আমি যাব? তাই কি আমার পছন্দের সাজে? আমাকে পোড়াতে অমন সুখীর মুখোশ? চোখে আমার কমলা আগুন জ্বলে যাচ্ছি... পুড়ে যাচ্ছি... আমার জ্বলন্ত আভিবাদন তোমাকে।
তুমি আমার কমলা রঙ সকাল বেলা, তোমার জন্য ভাবনা জুড়ে রঙের খেলা। ভাবনা যখন প্রজাপতির রঙিন পাখা বাইরে তখন দুপুর নামে হলুদ মাখা। দুপুরটুকু গড়িয়ে যায় বিনা কাজে বিকেল তবে আসবে কি আজ রঙিন সাজে? হলদে -রাঙা উধাও হল প্রতীক্ষাতে ফ্যাকাসে নীল সন্ধ্যা নামে উঠোনেতে। নীচের ঠোঁট কামড়ে শাসন চোখের জলও একলা ঘরে রাত্রি যেন মৃত্যু কালো... আঁধার রাত্রি ফিকে হয়ে ভোর আসে- ঠিক তখনই তোমার কথা দূরাভাষে... তোমার ছোঁয়ায় বিবর্ণ রাত রঙিন হলো তুমি আমার গোলাপী লাল ভোরের আলো।
---ব্যস্ততা আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধেছে তোমায়... মুঠোফোন ও অপেক্ষমান... ---আমি হাজার কাজের খড়কুটো দিয়ে বাসা বাঁধি যে ---ব্যস্ততা তো তোমার আগেও ছিল। তার মাঝেও তো কথার মালা গাঁথা হয়েছে ---আমার কাছে কিছু দাবী করোনা... না চেয়ে কিছু পেলে তাই নিয়ে খুশি থাকো।
ঐ পাখিটিকে দেখছো? ---হ্যাঁ, ভারী মিষ্টি ওর ডাক। নাম কি গো ওর? ---স্বাধীনতা- ---ওকে ধরে দাও না... বেঁধে রাখি... আমার একাকীত্বের মাঝে একটা সঙ্গী তো পাই... ওকে কথা বলতে শেখাই। ---বেঁধে রাখলে এমন গান আর গাইবে না। ---ওকে আমি আদর দেবো ---তবুও না- আদর দিয়ে কি আলোকে বাঁধা যায়? বাতাস কে? ---আলোকে বাঁধি যত্ন দিয়ে সাঁঝ পিদিমের শিখায় আর বাতাস কে ভালোবেসে বাঁধি তালপাতার পাখায় ---আকাশ কে তো বাঁধতে পারোনা! ---পারি তো - আমার জানলার ফ্রেমে! ---ওই টুকু আকাশে মন ভরে তোমার? ---আমি ছোটো করেই চাই তবে একান্ত নিজের করে চাই- তোমাকেও- ---আমাকে? অধিকার করতে চাও? ---অধিকার নয়- ভালোবাসা দিয়ে বাঁধতে চাই। ---আমি তো তোমার একার নই- আমি সবার ---আকাশ- বাতাস- আলো ও তো সবার- সবার হয়েও আমার ---না, আমাকে অমন করে বাঁধতে চেওনা, দমবন্ধ হয়ে যায়... ---বন্ধন মুক্তি চাও? দিলাম- --- স্বাধীনতা দাও ---তাও দিলাম- যাও উড়ে যাও ,মন পাখি ---আঃ- এবার আমি আলোয় ভাসবো ---একদিন এই আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যাবে- চার দেয়ালের আঁধারটুকুকে মনে পড়বে। সেদিন যদি আমার ঘরে আসো- পূর্ণ হবে সকল চাওয়া পাওয়া।
---সারাটিদিন তোমার পথ চেয়ে কাটালাম...। কোনও কাজেই মন দিতে পারলামনা ---কেন? ---আজ যে বছরের প্রথম দিন ---তাতে কি?একটা তারিখ মাত্র,নতুন কিছু তো নয়! ---ওঃ, তোমার সাথে কথায় পারিনা। তোমার শুধু কথার খেলা, কথার ঘর বাঁধা, কথার হট্টমেলা ---তবে এসো খেলি ভাঙার খেলা ---না,না ,ভাঙার কথা বলোনা,এমন নিঠুর খেলায় মেতোনা। ---ভাঙন যে অমোঘ, খেলাঘর তো ভাঙতেই হবে ---ভাঙবে যদি গড়লে কেন তবে? আমি ত আপন খেলায় মগ্ন ছিলাম, তোমার খেলার সাথী হতে তো চাইনি!কেন আমায় ডাক পাঠালে পথের খেলায়? ---রাঙা ধুলো মাখিয়ে তোমায় মৃন্ময়ী বানিয়ে পুতুল খেলবো বলে ---এখন আমায় পথের ধুলোর মাঝে ফেলে চলে যাবে?বাকি পথটা আমি কি করে পার হবো? --- আমি তো কিছুটা পথ হাঁটার সাথী ছিলাম, সারাজীবনের খেলার সাথী নই। --- এখন তবে নতুন খেলার ভাবনা করছো ? ---পুরনো খেলার আসর ভেঙে নতুন খেলার আয়োজনই তো জীবন ---আমাকে যে পাতার মুকুটে বনদেবী সাজিয়ে ছিলে সে খেলা ত শুরুই হল না! --- ও পাতা শুকিয়ে গেছে, নতুন খেলার জন্য নতুন অলঙ্কার চাই --- সে অলঙ্কার ও তো একদিন জীর্ণ হবে পাতার মুকুটের মতন --- তখন আবার পাততে হবে নতুন খেলার আসন --- বড় সর্বনাশের খেলায় মেতেছো তুমি... --- সর্বনাশের পথ চেয়েই তো বসে আছি...তার মুখোমুখি দাঁড়াতে চাই-