ধরুন পেছনে বাঘ সামনে বিশাল এর গর্ভবতী নদী ঘাটে বাঁধা . শেষ খেয়া প্রায় যায় যায় . সে-সময় . সামাজিক সভ্যতাসন্মত কোনো . নান্দনিক নূপুর নিক্কণ . নাকি . পড়ি-মরি-ছুট . কোনটা যথার্থ হবে . সে সমস্ত আপনি জানেন
. আমি শুধু খেয়াঘাট . জল ও ডাঙার মধ্যে মুদ্ধ বোঝাপড়া . পারাপার . পলায়ন জানি . জানি আর্তিময় ব্যতিক্রমী ছুট
খুব বেশি জরুরী না-হলে . ঘোলাজলে কে আর নামতে চায় পরিপূর্ণ স্নানে
যতটুকু দিতে পারো দিও যেটুকু পারো না রঙীন কাগজে মুড়ে . সেটুকুও রেখে দিও বিছানার নিচে যতটা এগোতে পারো এসো যেটুকু পারো না সে দূরত্ব সঙ্গোপনে . রেখে দিও উদাসীন চোখের ভেতরে
যতটা রাখতে পারো রাখো যেটুকু পারো না চন্দন মাখিয়ে তাকে . রেখে দিও স্মৃতিকোষে . রক্তমাখা বীজে
নিঃশব্দ দহনে কাটে দিন অস্থির ভ্রমণে কাটে দিন প্রাচীন তৃষ্ণায় কাটে দিন
রেখে দিও . সব রেখে দিও যদি ফিরি . কোনদিন যদি ফিরে আসি
ভালোবাসা যেখানে ফুরোয় . সেখানেই জন্ম নেয় ঘৃণা শোলার মুকুট থেকে . ঝরে পড়া অহংকার . মাটি খুঁড়ে নিয়ে আসে পাপ মুখাপেক্ষী মানুষের হাত . নষ্ট করে ইতিহাস . প্রকৃত গৌরব মঞ্চের উপর থেকে . মিথ্যাচারে . কেনা কিছু পায়রা উড়িয়ে নিঃশব্দ আরালে যারা . ঢেকে রাখে রক্তমাখা নখ শরীরে শরীর রেখে . যারা খোঁজে বিশল্যকরণী তারা আজ ধুলোপায়ে . ঢুকে গেছে অন্দরমহলে
অঘোষিত যুদ্ধের বিষাদ . বিভাজনে . শুধুমাত্র আগুন ছড়ায়
যে সমস্ত স্বপ্নের বেলুন . কোনদিন আকাশে ওড়েনি . আমার খেলায় তারা সঙ্গী হয় রোজ যে সব নদীর ঘাটে কোনোদিন মানুষ আসে না . সেখানে জলের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাই . ঘাটে বসে ছুঁয়ে দেখি নির্জন ছায়াকে যে মন্দিরে কোনোদিন সন্ধ্যারতি নেই . সেখানেই ভয়ে ভয়ে মাথা রাখি . অন্ধকার বিগ্রহের পায়ে যে নারীর পদপাতে চঞ্চলতা নেই . চোখের ভেতরে নেই নিঃশব্দ ভ্রমর . তাকে নিয়ে . সবুজ মাঠের শেষে . চড়কের মেলা দেখে আসি
যে যুবক . কেবলই চাঁদের দিকে হাঁটে . সারাদিন হেঁটে হেঁটে . নিঃস্ব হয়ে . নিষ্ঠাহীন সাঁকোর ওপার থেকে . ফিরে আসে গোধূলিবালায়
আমি তাকে . ধুলোমাখা জামা ও গামছা দিয়ে . বর্ণহীন বিশ্রাম শেখাই মুক্তির উপায় আর . স্বাধীনতা নিয়ে . যত খুশি গবেষণা হোক মানুষের পাশে এসে শেষ অবধি মানুষই দাঁড়ায়
তারা চেয়েছিল স্বপ্ন ও বাতাস তীব্র স্বাধীন থাকুক ভেজা মাটি থেকে ইচ্ছেমতো উড়ে যাক মশা পাখিদের ডানায় জমুক স্মৃতি সাবলীল রোদ থেকে যে যেমন চায় . উজ্জ্বলতা মেখে নিক . উল্লাসে কাঁপুক চরাচর অসংখ্য ফুলের নীল . মিশে যাক সমুদ্রের নীলে উদ্দাম তরঙ্গ থেকে রঙ নিয়ে . আরো নীল সবুজ আকাশ ভগ্নস্তূপ থেকে ধুলো ঝেড়ে মানুষেরা বেড়িয়ে আসুক
তাদের ছিল না ভয় তাই তারা সতর্ক থাকেনি ছিল না বিনষ্ট লোভ তাই তারা হিসেবী ছিল না মুঠো ভরা অবিশ্বাস সাবধানী নিয়ত সজাগ চোখ বেড়ালের নিঃশব্দ গোপন খেলা তৃষ্ণার্ত পৌরুষ এ সমস্ত আয়ত্তে ছিল না . তাই বারম্বার হাওয়া এসে ছিন্নভিন্ন করেছিল তাদের বসতি
শীতল শৈশব বিপন্ন কিশোরবেলা পরিশ্রমী অস্থির যৌবন . মুষ্ঠিবদ্ধ হাতের আড়ালে . জমে থাকা প্রাচীন বিষাদ এ সমস্ত ভুলে . মুক্তিকামী অপূর্ণ ইচ্ছেরা জানে আমাদের রক্তে ঘামে . এ মাটির স্বাধীনতা সমস্ত বৈভব . এ মাটির শরীরে মেধায় . আমাদের তীব্র বেঁচে থাকা
এ মাটি স্বপ্নের মাটি একে ঘিরে আমাদের মায়াময় শাশ্বত জীবন . অলৌকিক আদিম ভ্রমণ
ক্ষমতার লুকোচুরি নয় প্রেমহীন রক্তপাত নয় অপবিত্র অস্থিরতা নয় এ মাটির গর্ভ থেকে ফুটে ওঠে আনন্দকুসুম . আমাদের মুগ্ধ ইতিহাস
আমাদের মধ্যে কোন ধর্ম বা আইন নেই নেই পরিচ্ছন্ন কোন চুক্তি . যার কাছে দায়বদ্ধ প্রেম নেই স্বপ্নের নূপুর . নিরাপত্তাময় স্বপ্নের উঠোন . নেই কোন নিরিবিলি সাঁকো যে কোন সময় তাই . যাই বলে চলে যেতে পারো
আমাদের মধ্যে কোন ধর্ম বা আইন নেই . আছে অস্পষ্ট আকাশ . আছে ধূলোঢাকা সবুজ ডিভান . অন্তর্লীন প্রসন্ন সোহাগ . আছে শীতল সম্ভ্রম
নির্ভীক শপথহীন . একান্ত স্বাধী . মাটির ওপরে তাই . চালাঘর ভেঙে দিয়ে . “এই শেষ” . বলে চলে যাওয়া হয়তো বা আপাতনিষ্ঠুর . সামাজিক আইনবিরুদ্ধ কিছু নয়