যাবার বেলায় পিছু থেকে ডাক দিয়ে কেন বলো কাঁদালে আমায় ? আমার এ মন বুঝি মন নয় ! হাসি আর গানে গানে এতদিন ফুল ফোটানোর খেলা চলে ছিল, যে কাঁটা রয়েছে বিঁধে মরমের মাঝে তার কথা এ মন ভুলে ছিল----- ব্যথায় ব্যথায় তাকে মনে পড়ে যায় | স্মৃতির আকাশ থেকে কোনোদিন হয়তো আমার তুমি মুছে দেবে, স্বপ্নের রঙে যত ছবি আঁকা হলো চোখের জলেতে ভেসে যাবে------ যা কিছু গিয়েছে পাওয়া, সে আমার নয় ||
শুধু স্বপ্ন নিয়ে খেলা চলেছে , সেই থেকে শুধু শুধু স্বপ্ন নিয়ে খেলা চলেছে | রাতের আকাশ ভেঙে এক ঝাঁক তারা যেন উড়ে চলেছে || বলে ফুল ভ্রমরার মতো সেও পাখা চায় উড়বার নেশা তার নীলিমার অজানায় | সে যে লতার বাঁধন কেটে সারাদিন মনে মনে মুক্তির কথা আজ ভেবে চলেছে || ছিলাম ভালো নিজের মনে আমি একা একা--- আমার এ মন হারিয়ে গিয়ে যখন তখন আসতে ফিরে আবার নীড়ে একা একা | সে আলোর পারাবত আঁধারে মিশে যায়, তাই আজ মন আমার কান্নায় ভেঙে যায় | তাই বেদনার তীর ধরে ভুলের আলোয় বুঝি পায়ে পায়ে পথ চিনে চলা চলেছে ||
আরও ভালো হত যদি তুমি আর আমি পাশাপাশি বসে কাটিয়ে দিতাম মোরা কিছুটা সময় ; কত ভালো হত যদি তোমাতে আমাতে চোখে চোখে চেয়ে কাটিয়ে দিতাম মোরা কিছুটা সময় | ক্ষতি হত না কি যদি সব ফেলে রেখে অবসর কিছু কুড়িয়ে নিতাম মোরা কাজের মাঝেতে খুঁজে খুঁজে | এই পরিচয় দিতো জড়িয়ে জড়িয়ে বেঁধে লতার মতোই তোমাকে আমাকে ; এ মাটি তীর্থ করে যেতাম সাজিয়ে দিয়ে আলো হাসি গানে তোমাতে আমাতে | পথে যেতে যেতে যদি থমকে থেমে অকারণে বসি’ নিবিড় শীতল ছায়া দেখিয়া সময় কাছাকাছি ||
ও দুটি আঁখি যেন পাখি লাগে, ভোরের আকাশ দেখে নীড় ফেলে উড়ে যেতে চায় | কি জানি মনে কী যে রঙ লাগে, নয়নে নয়ন রেখে শতবার মরে যেতে চায় || তারা শুধু ভুল করে সোনার খাঁচায় যারা ও পাখিটি ধরে নিতে চায়, আকাশের আঙিনায় যে পাখি বেঁধেছে বাসা সে পাখি তো থাকে না খাঁচায় || মনের দুয়ার দিয়ে আলো থেকে আরও আলো ছায়া থেকে অনেক ছায়ায় ও দুটি নয়নপাখি বহুযুগ থেকে যেন বারে বারে ডেকেছে আমায় ||
কথা- মুকুল দত্ত সুর ও শিল্পী -হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ছবি- পলাতক
জীবনপুরের পথিক রে ভাই কোনো দেশে সাকিন নাই--- কোথাও আমার মনের খবর পেলাম না | খেয়াল পোকা যখন আমার মাথায় নড়ে চড়ে আমার তাসের ঘরের বসতি যে অমনি ভেঙে পড়ে | তখন তালুক ছেড়ে মুলুক ছেড়ে হইরে ঘরের বার ( বন্ধু রে ) | মন চলে আগে আগে আমি পড়ে রই, সোনার পিঞ্জিরা দিলাম বাসা বাঁধে কই | ( পাখি বাসা বাঁধে কই ) অকূল গাঙে ভাসলাম আমি কূলের আশা ছাড়ি, তবু কোথাও আমার মনের মানুষ পেলাম না ||
হাজার বছর ধরে কত নদী প্রান্তর পেড়িয়ে গেলাম---- এ চলার মানে তবু বোঝা গেল না, আমি হারিয়ে গেলাম | ঘূর্ণি হাওয়ার মতো যত ঝরা পাতা নিয়ে ঘুরে মরে মন, যার পথ চেয়ে বসে আছি চলে গেছে সে যে কখন--- এত কাছে পেয়ে তাকে চেনা গেল না || সরে গেছে কত পথ বয়ে গেছে কতটা সময়--- কি হবে তা জেনে নিয়ে সব দিয়ে তার বিনিময় | যদি এসে কোনোদিন খোঁজে কেউ ডাক দিয়ে দিয়ে বোলো, হিসাব মিলিয়ে গেছে গরমিল দিয়ে-- কত কিছু পেয়ে কিছু পাওয়া হলো না ||
এই মাল নিয়ে চিরকাল যত গোলমাল হিসেব নিকেশ করে কি হবে গোঁজামিলই চলবে দাদা দাও না সামাল || আত্মপর ভেদ রাখিনি মা, সবই নিজের মনে করি কামিনী কাঞ্চনে লোভ নেই মা ( তবে ) অসময়ে সামলে মরি আমার মত হাফ গেরস্ত . পরের বোঝা বয়ে মরে চিরকাল || ইহকালের ভাবনা যতো শুঁড়ির হাতে ছেড়ে দিয়েছি মা, পরকালের ভাবনা আমায় ভাবছে ওপরওয়ালা আমি বেশ আছি জীবনের এই কলকেটাতে, সুখ টান দিয়ে নিই মা তুমি সামলাও এই মাল নিয়ে---
আষাঢ় শ্রাবণ, মানে না তো মন ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরেছে | তোমাকে আমার মনে পড়েছে || আষাঢ় শ্রাবণ, মানে না তো মন ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরেছে | তোমাকে আমার মনে পড়েছে ||
আলোর তরীটি বেয়ে দিন চলে যায় আঁধারে মন জ্বলে তারায় তারায় | আমার মন কেন শুধু আকুলায় বরষণ যেন কোথা হয়েছে | তোমাকে আমার মনে পড়েছে || আষাঢ় শ্রাবণ, মানে না তো মন ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরেছে | তোমাকে আমার মনে পড়েছে ||
দিও নাকো কোনো কিছু দিও না আমায় সব কিছু পাওয়া হবে, পেলে গো তোমায় | চোখের জলেতে বেয়ে সুখ এলো তাই আজ মন মোহানায় মিশেছে || তোমাকে আমার মনে পড়েছে || আষাঢ় শ্রাবণ, মানে না তো মন ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরেছে | তোমাকে আমার মনে পড়েছে ||