কবি নবনীতা দেব সেন - কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কবি নরেন্দ্র দেব এবং মাতা কবি
রাধারাণী দেবী। নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত সেনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় তাঁর মাস্টার্স ডিগ্রি  লাভ   
করার ঠিক পরেই। ১৯৭৬ সালে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।

বাংলা সাহিত্যের দুই তারকা পিতামাতার যোগ্য উত্তরসুরি এবং মা সরস্বতীর আশির্বাদধন্যা এই কবি,
কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে স্নাতক হবার পরে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন এবং ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়  থেকে   
পিএইচ. ডি লাভ করেন। এর পরে বার্কলে-এর ক্যালিফোরনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং  কেমব্রিজ   
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত নিউয়েনহ্যাম কলেজ থেকে তিনি পোস্ট-ডক্টোরাল রিসার্চ শেষ করেন। দিল্লী   
বিশ্ববিদ্যালয়তে তিনি “ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস্ কমিশন”-এর “সিনিয়ার ফেলো” হিসেবেও যুক্ত ছিলেন।

তাঁর সাহিত্যকর্মের ব্যাপ্তি বিশাল। সামাজিক, রাজনৈতিক, মনোবৈজ্ঞানিক ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর  
অবদান অনস্বীকার্য। কবিতা, ছোট গল্প, নভেল, সাহিত্য-আলোচনা, প্রবন্ধ, একাঙ্ক নাটক, ভ্রমণ-বৃত্তান্ত, হাস্য-
কৌতুক রচনা, অনুবাদ-সাহিত্য এবং শিশু-সাহিত্য নিয়ে তাঁর রচনার পরিধি বিপুল।

তাঁর প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ “প্রথম প্রত্যয়” (১৯৫৯)। তাঁর অন্যান্য বিশিষ্ট রচনার মধ্যে রয়েছে কাব্যগ্রন্থ
“স্বাগত দেবদূত” (১৯৫১), “আমি অনুপম” (১৯৭৭), “মঁশিয়ে হুলোর হলিডে” (১৯৮০), “নবনীতা”  (১৯৯৬)  
প্রভৃতি আখ্যান, ভ্রমণ কথা “করুণা তোমার কোন পথ দিয়ে” (১৯৭৮)। বহুদর্শিতা, কৌতুক-প্রবণতা এবং
অন্তরঙ্গ রচনাভঙ্গি তাঁর বৈশিষ্ট। তাঁর আরেকটি উল্লখযোগ্য কাজ হল ষোড়ষ শতকের “
কবি চন্দ্রাবতী
রচিত “রামায়ণের” ইংরজীতে অনুবাদ।

সামাজিক ও মনোবৈজ্ঞানিক বিষয়ের উপর তাঁর বিভিন্ন লেখা তাঁকে সাহিত্য জগতের এক বিশেষ আসনে
উপবিষ্ট করিয়েছে, যেমন নকশালবাড়ী আন্দোলনে বুদ্ধিজীবিদের ভূমিকা নিয়ে লেখা “আমি  অনুপম”  
(১৯৯৬), ভারতীয় ইংরেজী লেখকদের আইডেনটিটি ক্রাইসিস নিয়ে ১৯৭৭ সালের লেখা, দ্বিতীয় প্রজন্মের  
অনাবাসী ভারতীয়দের নিয়ে ১৯৮৫ সালের লেখা, এইডস নিয়ে ১৯৯৯ এবং ২০০২ সালে লেখা, সমকামিতা
নিয়ে ১৯৯৫ সালের লেখা, শিশু-নির্যাতন নিয়ে লেখা প্রভৃতি তাঁর চিন্তার ব্যাপ্তির পরিচায়ক।

তাঁর প্রাপ্ত পুরস্কার ও সম্মানের মধ্যে রয়েছে “গৌরী দেবী মেমোরিয়াল পুরস্কার”, “
মহাদেবী ভার্মা পুরস্কার”
(১৯৯২), “ভারতীয় ভাষা পরিষদ পুরস্কার”, “হারমনি এওয়ার্ড”, ভারত সরকারের “পদ্মশ্রী” (২০০০),   
রকফেলার  ফাউণ্ডেশনের দেওয়া “সেল্লি এওয়ার্ড” (১৯৯৩), ভাগলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া “শরৎ  
পুরস্কার” (১৯৯৪), “প্রসাদ পুরস্কার”, “সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার” (১৯৯৯) প্রভৃতি।

২০১৯ সালের
নভেম্বর তারিখে কবি পরলোকে গমন করেন। মিলনসাগরে কবি নবনীতা দেব সেনের এই
পাতা তাঁর প্রতি মিলনসাগরের শ্রদ্ধার্ঘ্য।

আমরা
মিলনসাগরে  তাঁর কবিতা প্রকাশিত করে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে আমাদের এই
প্রচেষ্টা সার্থক বলে মনে করবো।

কবি নবনীতা দেব সেনের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন

.                     
.            
উত্স:   শিশিরকুমার দাশ, সংসদ সাহিত্য সঙ্গী ২০০৩,
.                        
উইকিপেডিয়া     

আমাদের ই-মেল
- srimilansengupta@yahoo.co.in      


এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ১৫.৭.২০১২
কবির প্রয়াণে পরিবর্ধিত সংস্করণ - ১১.১১.২০১৯
...