Our freedom and its daily sustenance are the colour of blood and swollen with sacrifice. Our sacrifice is a conscious one : it is in payment for the freedom we are building. --- Che
যে পিতা সন্তানের লাশ সনাক্ত করতে ভয় পায় . আমি তাকে ঘৃণা করি--- যে ভাই এখনও নির্লজ্জ স্বাভাবিক হয়ে আছে . আমি তাকে ঘৃণা করি--- যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরাণী . প্রকাশ্য পথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায় না . আমি তাকে ঘৃণা করি--- আটজন মৃতদেহ চেতনার পথ জুড়ে শুয়ে আছে আমি অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাচ্ছি আট জোড়া খোলা চোখ আমাকে ঘুমের মধ্যে দেখে আমি চিত্কার ক’রে উঠি আমাকে তারা ডাকছে অবেলায় উদ্যানে সকল সময় আমি উন্মাদ হয়ে যাব আত্মহত্যা করবো যা ইচ্ছা হয় করবো
কবিতা এখনই লেখার সময় ইস্তাহারে দেয়ালে স্টেনসিলে নিজের রক্ত অশ্রু হাড় দিয়ে কোলাজ পদ্ধতিতে এখনই কবিতা লেখা যায় তীব্রতম যন্ত্রণায় ছিন্নভিন্ন মুখে সন্ত্রাসের মুখোমুখি---ভ্যানের হেডলাইটের ঝলসানো আলোয় স্থির দৃষ্টি রেখে এখনই কবিতা ছুঁড়ে দেওয়া যায় .৩৮ ও আরো যা যা আছে হত্যাকারীর কাছে সব অস্বীকার ক’রে এখনই কবিতা পড়া যায়
লক্-আপের পাথর-হিম কক্ষে ময়না তদন্তের হ্যাজা আলোকে কাঁপিয়ে দিয়ে হত্যাকারীর পরিচালিত বিচারালয়ে মিথ্যা অশিক্ষার বিদ্যায়তনে শোষণ ও ত্রাসের রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে সামরিক-অসামরিক কর্তৃপক্ষের বুকে কবিতার প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হোক বাংলাদেশের কবিরাও লোরকার মতো প্রস্তুত থাকুক হত্যার শ্বাসরোধের লাশ নিখোঁজ হওয়ার স্টেনগানের গুলিতে সেলাই হয়ে যাবার জন্য প্রস্তুত থাকুক তবু কবিতার গ্রামাঞ্চল দিয়ে কবিতার শহরকে ঘিরে ফেলবার একান্ত দরকার এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না এই রক্তস্নাত কসাইখানা আমার দেশ না এই জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ আমার দেশ না এই বিস্তীর্ণ শ্মশান আমার দেশ না এই রক্তস্নাত কসাইখানা আমার দেশ না
আমি আমার দেশকে ফিরে কেড়ে নেব বুকের মধ্যে নেব কুয়াশায় ভেজা কাশ বিকেল ও ভাসান সমস্ত শরীর ঘিরে জোনাকী না পাহাড়ে পাহাড়ে জুম অহণিত হৃদয় শষ্য, রূপকথা ফুল নারী নদী প্রতিটি শহিদের নামে এক-একটি তারকার নাম দেব ইচ্ছেমতো ডেকে নেব টলমলে হাওয়া রৌদ্রের ছায়ায় মাছের চোখের মতো দীঘি ভালবাসা---যার থেকে আলোকবর্ষ দূরে জন্মাবধি অচ্ছুৎ হয়ে আছি--- তাকেও ডেকে নেব কাছে বিপ্লবের উত্সবের দিন হাজার ওয়াট্ আলো চোখে ফেলে রাত্রিদিন ইন্টারোগেশন্ মানি না নখের মধ্যে সূঁচ বরফের চাঙ্গড়ে শুইয়ে রাখা মানি না পা বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে যতক্ষণ রক্ত ঝরে নাক দিয়ে মানি না ঠোঁটের উপরে বুট জ্বলন্ত শলাকায় সারা গা’য় ক্ষত মানি না ধারালো চাবুক দিয়ে খণ্ড খণ্ড রক্তাক্ত পিঠে সহসা অ্যালকহল্ মানি না নগ্নদেহে ইলেক্ট্রিক শক্ কুৎসিত বিকৃত যৌন অত্যাচার মানি না পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা খুলির মধ্যে রিভলভার ঠেকিয়ে গুলি মানি না কবিতা কোন বাধাকে স্বীকার করে না কবিতা সশস্ত্র কবিতা স্বাধীন কবিতা নির্ভিক চেয়ে দেখো মায়কোভস্কি হিকমেত নেরুদা আরাগ এলুয়ার তোমাদের কবিতাকে আমরা হেরে যেতে দিইনি বরং সারাটা দেশ জুড়ে নতুন একটা মহাকাব্য লেখবার চেষ্টা চলছে গেরিলা ছন্দে রচিত হতে চলেছে সকল অলংকার
গর্জে উঠুক মাদল প্রবাল দ্বীপের মতো আদিবাসী গ্রাম রক্তে লাল নীল ক্ষেত শঙ্খচূড়ের বিষ-ফণা মুখে আহত তিতাস বিষাক্ত মৃত্যুসিক্ত তৃষ্ণায় কুচিলা টঙ্কারে সূর্য অন্ধ উৎক্ষিপ্ত গাণ্ডীবের ছিলা তীক্ষ্ণ তীব্র হিংস্রতম ফলা--- ভাল্লা তোমার টাঙ্গি পাশ ঝলকে ঝলকে বল্লম চর-দখলের সড়কি বর্শা মাদলের তালে তালে রক্তচক্ষু ট্রাইবাল টোটেম বন্দুক কুকরি দা ও রাশি রাশি সাহস এত সাহস যে আর ভয় করে না আরো আছে ক্রেন্ দাঁতাল বুলডোজার কনভয়ের মিছিল চলমান ডাইনামো টারবাইন লেদ ও ইঞ্জিন ধ্বস নামা কয়লার মিথেন অন্ধকারে কঠিন হীরার মতো চোখ আশ্চর্য ইস্পাতের হাতুড়ি ডক্ জুটমিল ফার্ণেসের আকাশে উত্তোলিত সহস্র হাতে না ভয় করে না ভয়ের ফ্যাকাশে মুখ কেমন অচেনা লাগে যখন জানি মৃত্যু ভালবাসা ছাড়া কিছু নয় আমাকে হত্যা করলে বাংলার সব ক’টি মাটির প্রদীপে শিখা হয়ে ছড়িয়ে যাব আমার বিনাশ নেই বছর বছর মাটির মধ্য হতে সবুজ আশ্বাস হয়ে ফিরে আসবো আমার বিনাশ নেই--- সুখে থাকবো দুঃখে থাকবো সন্তান-জন্মে সত্কারে বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন যে-মৃত্যু রাত্রির শীতের জ্বলন্ত বুদ্বুদ্ হয়ে উঠে যায় সেই দিন সেই যুদ্ধ সেই মৃত্যু আনো সেভেন্থ ফ্লিটকে রুখে দিক সপ্তডিঙ্গা মধুকর শিঙ্গা ও শঙ্খে যুদ্ধারম্ভ ঘোষিত হয়ে যাক রক্তের গন্ধ নিয়ে বাতাস যখন মাতাল জ্বলে উঠুক কবিতা বিস্ফোরক বারুদের মাটি--- আল্পনা গ্রাম নৌকা নগর মন্দির যখন তরাই থেকে সুন্দরবনের সীমা সারারাত্রি কান্নার পর শুষ্ক দাহ্য হয়ে আছে যখন জন্মভূমির মাটি ও বধ্যভূমির কাদা এক হয়ে গেছে তখন আর দ্বিধা কেন . সংশয় কিসের . ত্রাস কি
( নন্দীগ্রামের সেই মাকে আমরা দেখেছি টিভিতে | মাথায় ব্যাণ্ডেজ জড়ানো | নিষ্প্রাণ | চোখ খোলা | )
কেন চেয়ে আছ গো মা চিত্ হয়ে শুয়ে টেবিলের ওপরে মাথায় রক্তমাথা, ব্যাণ্ডেজ না পতাকা কিছু কি দেখছো তুমি? ক্ষুব্ধ জন্মভূমি! শুনতে পাচ্ছ? বলতে চাইছো কোন কথা? না কি শব্ দহীন মর্গে দৃশ্যমান ঠাণ্ডা নিরবতা | না-শোনাই ভাল ওই ঘাতকের নির্লজ্জ্ দামামা কেন চেয়ে আছ গো মা ওরা কিছু দেবা না তোমাকে এমনটা নয় এতটা অকৃতজ্ঞ ওরা? না কি দেদারে সদয় হার্মাদ আদরে ওরা বিলিয়েছে সরকারি বা বেসরকারি টোটা খুলিফাটা --- যার শব্ দে উড়ে গিয়েছিল মাছরাঙা, আয়নাপক্ষি, গাংশালিক, শ্যামা, কেন চেয়ে আছ গো মা পুলিশ ছিল শিরস্ত্রাণে, সঙ্গে ছিল বস্ত্রে-মুখ-আবৃত খুনে তখন কি গ্রহণে টেকেছিল কৃষ্ণছায়া চরাচর তত্পর হয়েছিল তখন কি নরকের বাসিন্দারা ভূপৃষ্ঠে নেমেছিল কীচক-পিশাচবুদ্ধি যৌথবাহিনী মুখে হায়নার মত ডাক, বুট পায়ে চটি পায়ে ছোটে এ-ভাবে কি হানা দিত বর্গি বা সন্ত্রাসী বোম্বেটে রাইফেল, রিভলভার, লাঠি, ছুরি, পাইপগান, বোমা ট্রিগারে দক্ষ টান, খান খান মুহুর্ত বা চূর্ণ লহমা কেন চেয়ে আছ গো মা যে-ট্রলারে চেপে সমুদ্র থেকে আসে খুন করা মাছ সে-ট্রলারে খুন হওয়া ছেলে সমুদ্র গভীরে চলে যায় মাটির পাহাড় ঢাকে দগ্ধ মৃত শিশু চাপ চাপ রক্ত চাটে রৌদ্র জিভ, ওরে বুদ্ধিজীব মাছি ধর্ষিত মেয়েদের রুধিরাক্ত চুল, অন্তর্বাস, ওড়না নখে দাঁতে ছেঁড়া শাড়ি তার মধ্যো দেখা যায় একরত্তি ইউনিফর্ম--- নিতান্ত স্কুলবালিকার জামা কেন চেয়ে আছ গো মা বৃষ্টির ঝালর, কনে দেখবার আলো, কোকতুর পাখির ডাক সব তোমার কষ্ণকের হলুদ,আকাশে বাটনার ছোপ, শিলাবর্ষণের ডগর সব তোমার শিশির ফোঁটার ছোট-ছোট হাত পা, চমকানো গঙ্গাফড়িং মেঘলোকে উড়ন্ত বিদ্যুত্ সব তোমার সমুদ্র থেকে উঠে আসা শাঁখা, দুধ ও কাজলের দেয়ালা গঙ্গাপুজোর মেলার আলো সব তোমার সব তোমার সব তোমার সব তোমার সব তোমার তোমার মুখপানে চেয়ে রূপকথা বলে যাবে ব্যাঙ্গমী ব্যাঙ্গমা কেন চেয়ে আছ গো মা তোমারই স্মরণে দেখ আকাশ প্রদীপ জ্বলে কত চাঁদ, গ্রহ, তারা --- চোখ বোজো কুয়াসার আচ্ছাদন ঢাকুক তোমায় চোখ বোজো ধান, খই, ফুল, নদী জড়াবে তোমায় চোখ বোজো আরতি ও আজানে জেন বড় শান্তি আনে চোখ বোজো চোখ বোজো চোখ বোজো চোখ বোজো চোখ বোজো তুমি কি প্রত্যেকবুদ্ধ*, খোলা চোখে করুণা না ক্ষমা কেন চেয়ে আছ গো মা সূর্য রোজ তোমার হয়ে আকাশে জমা দেবে রক্তমাখা হলফনামা কেন চেয়ে আছ গো মা কেন চেয়ে আছ গো মা
. **************
*প্রত্যেকবুদ্ধ - বিশ্বে যখন বুদ্ধ অনুপস্থিত থাকেন, ধর্ম যখন লুপ্ত হয়ে যায়, তখন খণ্ডমহিমা নিয়ে যাঁরা পথ দেখেন, তাঁরা প্রত্যেকবুদ্ধ | --- সূত্র নাগার্জুন |
এই হচ্ছে মওকা, এই উঠছে হাওয়া গরিবদের ধাওয়া করার কী আনন্দ, গরিবদের তাড়া করে যাওয়া ক্যানেস্তারা পিটিয়ে জন্তু তাড়ানোর মতো এই উঠছে হাওয়া গরিবরা মোক্ষম ধন্দে পড়েছে রাক্ষসের ফুঁ-তে তাদের ভিটে উড়ে যাচ্ছে পায়ের তলার সরতে থাকা মাটি আরও বেশি করে যাচ্ছে তলিয়ে তারিয়ে তারিয়ে এই দৃশ্য উপভোগ করার এই হয়েছে বরাদ্দ সময় ইতিহাসের সিরিয়ালে সময় হল টাকা এবং এই হল সময় গরিবদের ফাঁকা করে দেওয়ার
গরিবরা পড়েছে জব্বর গ্যাঁড়াকলে তারা জানে না তাদের পাশে লেনিন না লোকনাথ তারা জানে না গুলি চলবে নাকি চলবে না! তারা জানে না শহর, গ্রাম কেউ তাদের চায় না এত না-জানা হল জ্বরের এক ঘোর যখন মানুষ তো দূর, ঘরদোর, কাঁসা, বাটি সব প্রজাপতি হয়ে উড়ে যায় একেই বলে গরিব তাড়াবার সময় গরিবদের পাশ থেকে কবিরা চলে গেছে ওদের নিয়ে কবিতা কেউ লিখতে চাইছে না ওদের মুখ দেখলে জ্বলে যাচ্ছে গা এই উঠেছে হাওয়া, এই হচ্ছে মওকা গরিবদের ধাওয়া করার ক্যানেস্তারা পিটিয়ে জন্তু তাড়ানোর মতো গরিবদের তাড়া করে যাওয়া
ইতরের দেশ কবি নবারুণ ভট্টাচার্য ইনটারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে, এই কবিতাটি কবি ঋত্বিক ঘটকের রচনা বলে প্রকাশিত করা হয়েছে। কবিতাটি আসলে কবি নবারুণ ভট্টাচার্যর রচনা। মিলনসাগরে এই পাতায় প্রকাশ ১৬.৯.২০২২।
আমি একটা ইতরের দেশে বাস করি এখানে বণিকেরা লেখকদের উদ্বাবন করে, এবং লেখকরা উদ্ভাবিত হয়।
আমি একটা ইতরের দেশে থাকি যে দেশের বুদ্ধিজীবী-অধ্যুষিত সরকার শীতের ইথারের মধ্যে গরীব মানুষের ঘর ভেঙে দেয়।
আমি একটা ইতরের দেশে থাকি যেখানে অবশ অক্ষরমালা চিবোতে চিবেতে কবিরা গরু হয়ে যায়, উল্টোটাও যে হয়না এমন বলা যায় না।
আমার ভাগ্য আমি নিজের হাতেই ভেঙেছি, তাই বাতিল স্টীমরোলারদের কাছে বসে থাকি, বসে থাকি আর, নতুন কাল্পনিক রাস্তা বানাবার গল্প শুনি।
পার্থ, না, মিথ্যে বলবো না আমাকে দিয়ে হবেনা এ কাজ ম্যানিফেস্টো আমাকে স্ক্র্যাপ দরে ছেড়ে দিক বন্ধ কল-কারখানা কখনো কবিতার বিষয় হতে পারে না আবার বলছি--- না, অনাহক লোক হাসাব না।
তুমি আমার চেয়েও ভালো করে জানো কবিতার জন্ম হল সেই সুন্দরী মেয়েটির মধ্যে যাকে শ্রম ও ছন্দের এক সুভৌল শরীর বলে দেশে দেশে হৃদয় কেমন শ্রম করছে রক্তের নদীদের নিয়ে কোলিয়ারিতে নেমে যাচ্ছে খাঁচাবন্দী মজুরের গান ডকের ঐ নিরবচ্ছিন্ন কবিতার হুটার যার্নেসের শব্দে ভাসে, হাতুড়ির আলোয় আসে কত কথা আলোকমালায়--- কত না কবিতার জন্যে কত মানুষের শ্রম, সশ্রম অস্তিত্বের, পাল্টানোর স্বাদ।
নিস্তব্ধতা, যা মুখের ওপর সুখের ওপর পাথর আমি তা নিয়ে কবিতা লিখতে পারবো না।
আশ্চর্য এক কবিতা শোনা যায় আমি জানি যখন ম্যানিফেস্টো ছাপা হয় এখানে ওখানে কিন্তু যদি কখনো ছাপা বন্ধ হয়ে যায় (নববর্ষের শুভেচ্ছা বলে ওটাকে না ভাবাই ভালো) যদি ট্রেডল মেশিন চুপ করে থাকে মরে যায় সীসের অক্ষর ভাবলে আমার মন হিমঘরে নিভে আসে
লেদ চুপ, পাওয়ার লুমে মৌনতা, ঠাণ্ডা জেনারেটর থমকে আছে কনভেয়ার বেল্ট, মোটর, এক্সহস্ট ফ্যান লটকে আছে তালা কারখানার ভাগাড়ের গেটে ভারতের “রুর” জুড়ে রূঢ় রসিকতা এই আশির দশকে (পার্থ, সেই পাঁউরুটির কারখানাটা খুলেছে?) অধিগ্রহণ, মন্দা, স্ফীতি, লে-অফ, ছাঁটাই, বয়লারে বিস্ফোরণ “বেলডাঙার চিনিকল চালু হবে” এদিকে যে ফাঁড়াই হয়ে যাচ্ছে মানুষ হাড়কল মজুরেরা হাড় গুঁড়ো করে এখন তাদের স্বপ্নের “বন্ধ করাৎকল আবার খুলবে বলেছেন” এদিকে যে ফাঁড়াই হয়ে যাচ্ছে মানুষ--- কেমন সেই মানুষ?
নিষ্পাপ মানুষ, অলৌকিক মানুষ, মজবুত মানুষ হারামি অর্থনীতির এক নির্মোহ পেষাই কলে কখনো ফেরার, কখনো অসুস্থ, কোথাও কৌটো নাড়ছে কখনো আত্মঘাতী, কোথাও গ্রেফতার, কোথাও বোবা কখনো রক্ত বেচে, কখনো লাফিয়ে পড়ে, কখনো টুঁটি কামড়ে এই অপমানিত শ্রমের, নির্যাতিত শ্রমিকের, মৃত্যুর নিয়মের জন্যে কোনো কবিতার নির্মাণ বা প্রতীক্ষা নেই নেই কোনো ছন্দ, গতি-জাড্য বা বৈজ্ঞানিক আনন্দের ভাষা আমার দুচোখে তাই তাসার শব্দ নেই বন্ধ কলকারখানায় বিশ্বকর্মা পুজো এবারও হলো না।
কবিতার কারখানায় আমিও একজন সাধারণ মজুর মেঘের ওভারঅল পরে বাড়ি ফিরি তাই পার্থ, ছেপে দিও ম্যানিফেস্টোতে বন্ধ কল-কারখানা নিয়ে কবিতা যদি লিখতেই হয় তাহলে পাঠিয়ে দেব--- কালো পাতা, মর্গের রোদ্দুর, টিবির রক্তশূন্য মুখ, মরচে পড়া ব্লেড আর এইসব হাহাকার ও দুঃখী চিত্রকল্পের এক্স-রে করলে দেখা যাবে পুঁজির ফুসফুসে এক হিংস্র ঘাতক ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষিপ্রতায় সমাজ-ব্যবস্থার দেহে এবং এই অমোঘ ও নিশ্চিত মৃত্যু আমি গভীর, গভীরতম আনন্দের সাঙ্গে লক্ষ করে যাচ্ছি।