এই ঘন নীল তাঁতের শাড়িটির মধ্যে যে দূরবর্তী তাঁতীটির স্পর্শ লেগে আছে কে জানে হয়তো তার সলজ্জ স্ত্রীর চাহনিতে এই রঙ ধরা পড়েছিল মনে মনে তাঁত বুনে সেই নারী পরেছিল এই নীল আঁচলের ছায়া
ছায়া খুব দীর্ঘতম হলে বেলা গড়িয়ে গেছে মনে হয় মনে হয় যেন এলোচুল ছড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে
বিকেলের স্নান সেরে সারা পথ জল উল্কি এঁকে গেছে তেঁতুলের জালিকাটা ছায়া
আমি জানি আর কেউ টের না পাক এই নীল শাড়ীর জমিতে বুটিতে এমনি ঘোর সন্ধ্যা লেগে আছে।
বৃষ্টিতে সুপুরিগাছগুলি খিল খিল করে হাসছে কাঁঠাল এবং নিমগাছটিএ বেশ উল্লসিত আজ বিকেলের এই রোদবৃষ্টির ভুলভলাইয়া থেকে বেরিয়ে এল একটি সবুজ টিয়া ও এখন পেয়ারাগাছটির মাথায় বসবে এই যে হা হা করে এসে বৃষ্টি বাতাস একটা গল্প বানাল এরজন্য কি আমরা সকাল থেকেই তৈরি ছিলাম কেউ কেউ হয়তো মনে মনে ভেবেছিলাম হোক এভাবেই বিকেলটা অন্যরকমের কিছু গল্প নয়তো কবিতার বিন্দু বিন্দু ঘামে ছবি আঁকা হোক স্বতন্ত্র কোনও বিকেলের খুব কিছু তো গল্প নেই তবু একটি লাল রং মিলে কালোর মধ্যে একটা লম্বা লম্বা দাগ হয়ে হিরণের ছবির মতো মিশে যাক
এখন দেখি চারপায়ে হাঁটছে ছবিটা ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে গেল চাতাল পেরিয়ে বাড়ির দেয়াল ডিঙিয়ে ছাদের উপর দিয়ে আস্তে আস্তে আমাদের সকলের নাগালের বাইরে গিয়ে গোটা আকাশে উড়তে থাকলো একটি উদ্বেলিত বিকেল
দুইটি বালিশ আজীবন নির্বিবাদী মাথায় খাটের পাশে বাজুতে ধ্বনিহীন উপস্থিতি যথার্থই অনুমোদিত উড়োজাহাজের কালো বাক্সের ছক সম্স্ত জলিতা কর্কশতাগুমখুন এবং প্রেমের পাশাপাশি শুয়ে দুইটি বালিশ নির্ঘুম রাতের কিছু কথা তুলোর মধ্যে গুঁজে রাখে বেশ।
ওগো উতল হাওয়া কবি নমিতা চৌধুরী সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের প্রতিবাদ। কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছিল লুব্ধক পত্রিকার ২৫ বৈশাখ ২০০৭ এর সংখ্যায়।
নিরাপদ আশ্রয় জেনে শিশুটি আঁকড়ে ছিল মায়ের আঁচল, মা-ও বুঝু তাই ভেবেছিল মুহুর্তে সবকিছু বুঝবার আগে বাড়াতে জানো শিশুটির গলাকা লাশ মায়ের কোলের কাছে রেখে গেল হার্মাদ বাহিনী।
ওগো উতল হাওয়া তুমি কি জানো ওই মায়ের আর্তনাদে কোন সান্ত্বনার ভাষা! তুমি কি পারো ধর্ষিতা রমণী ও কিশেরীর লজ্জা মুছে দিতে তুমি কি বুলেটবিদ্ধ ক্ষতে বাড়াতে জানো শুশ্রূষার হাত খুঁজে দিতে পারো নিখোঁজ মানুষের ঘর ও বাহির
ওগো উতল হাওয়া তুমি কি তাড়াতে জানো সন্ত্রাসের ভয়াল আঁধার
না কিছুতেই নয় নমিতা চৌধুরী ( এই কবিতাটি 'একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন কমিটি'-র পত্রিকার ১ জুলাই ২০০৭ এর সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল )
আপনি যেভাবে বলেছিলেন আমি ঠিক সেইভাবেই ঘাড় গুঁজে লিখে যেতাম রোজনামচার খাতা নির্বাক সেই অক্ষরের মধ্যখানে আজ উঁকি দিচ্ছে দেখি নিষ্পাপ শিশুদের লাশ ধর্ষিতার চোখ | এতদিন আপনার কথামতই তো কাজ করে এসেছি এবার আমাকে মাপ করবেন হুজুর আর পারছি না | আমার হাতের আঙুল ক্রমশ শিথিল হয়ে পড়েছে | হাত থেকে খসে পড়েছে কলম কালো কালির ধারায় অনবরত মিশে যাচ্ছে --- রক্তের স্রোত বুলেবিদ্ধ প্রতিটি মানুষের চিত্কার সাদাপাতাকে উসকে দিচ্ছে---কিছু বলার জন্যে |
ওরাও কিছু বলতে চায় এখন, আপনি শুনুন শুনুন যতই আপনার ক্যাডার বাহিনী এভাবে ভয় দেখাক না কেন কিছুতেই ওরা ওদের জমি ছিনিয়ে নিতে দেবে না না প্রাণ থারতে কিছুতেই নয় |