কবি নরবাহাদুর লামা-র কবিতা
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।
*
সর্ব্ব বন্দনা   
কবি নরবাহাদুর লামা

প্রনাম্ ঈশ্বর !   অয়ীঃ পিতা,  মাতা-----
.        গুরু ও গুরুজনে,
সবার !   প্রতি , শ্রদ্ধা জানাই,
.        সদাই , মনে , মনে ||

.     স্বর্গ ও মর্ত্য, পাতাল পুরী ! ----
.             দেবতা হতে কীট !
.     সূর্য্য, চন্দ্র !   গ্রহ তারা হতে,
আকাশ !  জল, বায়ু, অগ্নির ছিট্ !

হে, দেব ও  মানব !   দস্যু ও দানব
.        জানাই, বারংবার !
.    যত ! প্রাণী হতে সকল বস্তু ?
.                সবারে !  নমস্কার  ||


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
ভাব সমাহিত
শ্রী রামকৃষ্ণ প্রার্থনা
কবি নরবাহাদুর লামা

হে  রামকৃষ্ণ !   হে  রামকৃষ্ণ !
.        প্রণাম চরণে তব,
যুগে !  যুগের ! অবতার তুমি ;
.     কি করে সাজিয়ে কবো ?


নারায়ণের যে অংশগো তুমি----
.        পরম হংসদেব,
রামের পরেই , কৃষ্ণ তুমি ;
.         মানবরূপে দেব  ||



হিন্দু ধর্মে, যিনি ভগবান !---
.       মুসলিম আল্লা বলে,
.     খ্রীষ্ট ধর্মে, মাইটি গড ,
.      সবাই !  ঈশ্বর বলে ||


শিষ্যের বেশে শিব এলেন----
.     নারায়ণ  গুরু বেশে,
.     শ্রীরামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ ?
.     চলেছেন দেশে, দেশে |

সনাতন্ ধর্ম রক্ষার তরে----
.      বিশ্বের দ্বারে, দ্বারে,
শিষ্যের ধ্যানে আপনি আসীন্
.    কোথা না পাঠালে তাঁরে ?
যুগে ! যুগে ! ঠিক্ আপনি আসেন----
.         এই মহা দুর্দিনে,
.     সেই ! কারণে, বিশ্ববাসীও
.     সুন্দর !  বলে চিনে ||


টুকরো !  টুকরো  ! মানিক যেন গো----
.           তোমার প্রতিটি বাণী,
.    অমুত ভরানো, অধার নয়নে,
.              মধুমম হৃদ খানি ||

পাপ  ও পাপীরে , নির্মূল করো----
.              দুঃখীর, দুঃখ হরো ;
.          বিশ্ব যেন, ধ্বংসের পথে !
.                তুমিই রক্ষা করো ||


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
বিশ্বজননী মা টেরেসার সঙ্গে সাক্ষাত্কালে অর্পিত কবিতা
কবি নরবাহাদুর লামা

টেরেসা  নামে জননী তুমি----
.        প্রণাম গ্রহণ করো-----
মানবী রূপে  ঈশ্বরী তুমি
.        দুঃখীর দুঃখ হরো ||

অনাথ শিশু ও অবলা নারী------
.        কুড়ায়ে নিয়েছো বুকে,
কিছুই  ছিল না,   যার সংসারে,
.          অন্ন দিয়েছো মুখে ||

মৃত্যুর সাথে,  লড়াই করে----
.        ফিরিয়ে এনেছো কত!
জননী  হারার,  জননী হয়ে,
.          খাটিতেছ অবিরত ||

ধন্য হে মাগো !  রাখিয়াছ তুমি--
.          যীশু খ্রীষ্টের বাণী,
আসিয়াছি তাই দেখিতে তোমার,
.            মধুর মুরতী খানি ||


তোমা হেন মাগো ; দুঃখীর মতো
.           আসুক ! বারংবার,
ঈশ্বর সাথে, তোমার চরণেও.
.            রহিল নমস্কার ||


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
বঙ্গমাকে ভালবেসে
কবি নরবাহাদুর লামা

নেপাল দেশে,  জন্ম লয়ে---
.        এলাম বঙ্গ দেশে,
বঙ্গ মায়ের সেবা করেই ,
.        মরব হেসে হেসে ||

সারা   ভারত  ঘুরে  ঘুরে---
.        করবো তারই কাজ,
গড়িয়ে  এনে,   পরিয়ে দেব;
.        নূতন !  নূতন ! সাজ ||

নিখিল  ভারত গড়তে চাহে----
.        বঙ্গ ভাষাভাষি,
তারি  সাথে  ছড়িয়ে  দেব ;
.        প্রীতি রাশি ! রাশি !

নেপাল  ভূটান্  তিব্বতেও-----
.        ঘটবে,  যোগা যোগ্ ,
বাংলা  মায়ের মধুর ! ভাষা ;
.        করবে তারাও ভোগ!

ছন্দ  মাঝে  ধরবো  তুলে----
.        বাংলা মায়ের ছবি,
বঙ্গ মাকে,   ভাল বেসে ?
.        ধন্য ! হবে  কবি ||


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
উদয় দিবস
কবি নরবাহাদুর লামা

কোন এক শুভদিনে----
জোড়া সাঁকো রাজ গৃহে
এসেছিলে তুমি, বেজে ছিল,
শাঁখ উলুধ্বনি সাথে
সেই !  পঁচিশে বৈশাখ ||

    তাই,------

প্রনাম রবি,  বিশ্বের কবি------
তোমার উদয় দিবস মানি,
ছড়িয়ে  আছে বিশ্বজুড়ে
মধুর!  অমৃত বানী ||

এই দিবসেই জন্মিয়াছিলেন----
বঙ্গ মাতার বুকে,
সরস্বতীর ভাষার ভাড়,
দিয়ে গেছে তব মুখে ||

ভরিয়া দিলে মানব হৃদয়---
তোমার কবিতা গানে,
গাঁথিয়া ছিলে প্রেমের মালা  ;
সবার ! প্রানে প্রানে  ||

অগাধ  আশা ও ভালবাসা------
বিলিয়ে গেছো তুমি,
ধন্য !  ধন্য ! করিয়া গেছো ;
মোদের ভারত ভূমি  ||

সেই কারণে পূজা করি----
সকল ভারত বাসী,
অন্তর দিয়ে ভাল বাসে ;
তোমায় বিশ্ববাসী  ||

দেখিয়ে গেছো শিশুর মত ;----
সকল হৃদয় খানি,
তাইতো তোমার বারে ! বারে !
জন্মদিবস মানি  ||


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
বন্ধু
কবি নরবাহাদুর লামা

ভাল মানুষের বন্ধু আমি
মন্দের চির যম |
সকলের তরে কাজ করে যাই,
যত দিন থাকি সক্ষম ||

দরিদ্র জনের , রক্ত! শোষন----
সহিতে পারিনা কভু,
ইচ্ছা করে তার বদলে
জীবন দেব তবু |

ঘুমিয়ে আছে দেশবাসীগণ ,
জাগবে না সবাই !  মিলে ?
ক্ষুধার অন্ন , যোগাতেই হবে,
সবাইকে তিলে, তিলে  ||

কত! শিশু নারী ! নগ্ন অনাহারে
ঐ দ্যাখো, পথে পড়ে,
তাদের বার্তা ? পৌছাতে হবে,
ধনীদের ঘরে !   ঘরে  ||

শুধাও না গিয়ে, তাদের ঘরে----
খুলবে না পাষাণ দ্বার  ?
দেখতেও বুঝি পায় না তারা
দেশের হাহা কার ||
ভুলে গেছে তারা ! তারা
.                  যেন কারা ?---

নয়কি ভারত বাসী
দুঃখী গণের দুঃখ ! দেখেও ;
হাসে, ক্রুর হাসি ||

অন্ধ ! আরো বধীর! তারা----
হৃদয়, পাষাণ !  কাড়া,
দেশের কথা ? বিন্দু মাত্র
ভাবে না কভু তারা |

ভাঁড়ারে খাদ্য পচানো মুখে
কত ! লোক মরে ধুকে,
তাদের অর্থ শ্মশানে যেতে,
নিয়ে যাবে বেঁধে বুকে  ?

হানিতে হবে বজ্রাঘাত !---
ওই সব ! পাষাণ বুকে,
ঝঞ্ঝার মুখে বুক পেতে দিয়ে,
দাঁড়াতে হবে রূখে ||

আনিতে হবে , কর্ণ ধরে ! -----
দেখাতে হবে চোখে,
অনাহারেরা, ক্ষুধার অন্ন ?
পায়  যেন একটু মুখে |

বলিনা দিতে , কারো , ঘরবাড়ী-----
অথবা টাকার সিন্দুক
নয়কো আমি , কারো দুশমন ;
সবার !  চির বন্ধু ||


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
পুলিশ কেন দূরে
কবি নরবাহাদুর লামা

সমাজের কাছে প্রশ্ন করি---
.     কাহারও বিচার আছে ?
সারাটা জীবন দাসত্য করে ,
.      সুখ মেলে না পাছে  ||

একের দোষ চাপিয়ে দিয়ে---
.       লক্ষ লক্ষ শিরে,
তিনটি যুগে বোঝা তো উচিত,
.       সবাই ! ধীরে, ধীরে ||

তোমার আমারই ঘরের ছেলে---
.        অথবা কাহারো ভাই !
সুখ ও  দুঃখ ; ভাল ও মন্দ
.         বলতে কি কিছুই নাই ?

সবার ! তরে, ঝঞ্ঝার মুখে---
.         ঝাঁপ দিয়ে পড়ে যারা !
অকারণে  বিলায় জীবন !
.         সেই হয় সর্ব্বহারা ||

মাতা ও পিতা !  যৌবন সহ
.         হারায় কত কিছু,
তৃষ্ণার  ছোটে জল ভাবিয়া ;
.          মরিচীকার পিছু ! পিছু !

প্রখর রোদে ! ঝড় তুফানে----
.          খাটিয়া অবিরত,
কঠিন !   শীতে কর্মে রত
.          বদন করিয়া নত |

সর্পের মুখে , ব্যাগ্রসনে----
.          দুষ্টুর  সাথেও লড়ে,
ধন  বাঁচাতে ,  প্রাণ বাঁচাতে ;
.          তবুও রক্ষা করে ||

নিশিতে হয়না,  চোখের ঘুম !
.           দিবায় পেটেরও দানা
ভাই বলিয়া  কেহ কি ভাবে ?
চোখেও পড়েছে ছানা ?

একই বাপের পাঁচটি ছেলে----
.            সবাই কি সমান হয় ?
তাইতো বলি এ সংসারে
.            কাহারও বিচার নাই ||

জীবন  দিয়ে  ভালবাসে !
.            তবুও ফেলে ছুঁড়ে
পুলিশ বলে আজিও সমাজ
.             রাখছে কেন দূরে ?


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
ভারত সূর্য্য
কবি নরবাহাদুর লামা

প্রনাম রবি, হে, বঙ্গের কবি
.        ভারত বর্ষের মুখ ;
অনেক ! উঁচুতে থেকে  ও তুমি,
.        দেখেছো , নিচের দুঃখ ||
তোমারই কথা, ভাবতে , ভাবতে,
.        শূন্য, হৃদয় ও ভরে’
তোমার সুনাম রহিল এঁকে,
.        বিশ্বে , স্বর্ণাক্ষরে ||
সেই যে, গুনের তুলনা করি ?
.        পাই না যে, ভাষা আমি,
কি যে,  বলে ডাকিবো তোমায়,
.        জানেন , অন্তর যামী ||
মানব কুলে জনম লয়ে ----
.        হয়েছো , সত্যই রবি,
উপাধি বিনে ও সবাই চিনে,
.        হয়েছো, বিশ্ব ! কবি  ||
শিশু ও নারী জাগাইয়া ছিলে---
.        তোমার কবিতা গানে,
ধনী ও জ্ঞানী ,  বৃদ্ধ জোয়ান,
.        সবার, প্রাণে , প্রাণে ||
সূর্য্য,  তোমার মধুর কিরণ ! ---
.        বিশ্বের কোনে, কোনে,
তোমার সেই যে, প্রেমের আলো ?
.        রহিবে , সবার !   মনে ||
তোমার বারতা ?  পৌঁছে দেব----
.        যেখানে আছে বাকি ;
আমি যে নিঃস্ব  অদেখা শিষ্য
.        দিওনা শুধু ফাঁকি ||
দ্রোনাচার্য্যের  শিষ্য যথা-----
.        একলব্য সম,
তোমার, দর্শন পাইনি বলে,
.        দগ্ধ !  হৃদয় মমঃ ||
এখনো আছে কিঞ্চিৎ বাকি---
.        ঐ যে ? উঁচু, পাহাড়ে,
সেখানে ও আমি পৌঁছে দেব ;
.        প্রতিটি ,  ঘরে , ঘরে ||
নেপালী আমি , মেতেছি  ঐ-----
.        তোমার কবিতা গানে,
তোমারই ছবি,   এঁকেছি বসে,
.        আমার ক্ষুদ্র প্রাণে ||
আশীষ দিওগো, হতে পারি----
.        আমিও মানুষ খাশা,
তোমারই  মত, সবার কাছে,
.        পাই যেন , ভালবাসা ||
নমঃ হে সূর্য্য , শত ! শত! নমঃ---
.        মোদের প্রাণে রবি ;
যুগে !   যুগের , সূর্য্য তুমি,
.        প্রণাম  বিশ্ব কবি ||


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
বার ! বার ! তোমারে নমী
কবি নরবাহাদুর লামা

ভারত বর্ষের, আকাশে বাতাসে---
.    ঘুড়ির মত উড়ি,
.        মনের ডানায় ;  ছুটিয়া বেড়াই,
.             বিশ্ব !  ভুবন জুড়ি  |

কখনো যাই ! জার্মান , জাপান----
.      ইউরোপ  মহাদেশে,
.          রাশিয়া হতে আমেরিকা চীন ?
.              আনন্দে ! ভেসে , ভেসে |

অষ্ট্রেলিয়া,  সুইজারল্যান্ড----
.    আফ্রিকা মহাদেশে,
.        ছোট ও বড়, সব ! দেশ  ঘুরে ?
.             গিয়েছি নেপাল শেষে  |

সে দেশ  ? আমার জন্ম ভূমি -----
.     দেবকী মনে করি,
.         ভারত বর্ষ যশদামাতা  ;
.             কী ! করে দুঃখ হরি ?

গিয়েছি ছুটে, কাম্পোচিয়া----
.      কোরিয়া, ভিয়েত নাম |
.           বিশ্ব ঘুরে , দেখেছি আমি ;
.                 ভারত স্বর্গ ধাম |

তাই বলে,  কারেও করিনা ছোট----
.     তারাও সবাই ! মাসি,
.         বিশ্বের সকল মানব জাতে  ?
.                 সমান, ভালবাসি |

তাহারি  দুদ্ধ, পান করে আমি---
.     মানুষ  হয়েছি কোলে,
.         দুঃখিনী  মায়ের দুঃখ দেখে ;
.             ভরে আসে নয়ন জলে |

একের পর আর এক জনা---
.     করেছে, অত্যাচার ,
.        হিন্দু ! মুসলীম !  খৃষ্টান !  সবাই ;
.              দলেছে , বারংবার !

কখনো মোগল !  কখনো পাঠান !-----
.            করেছে  কাড়া!   কাড়ি,
.             রক্তের !  বন্যা , রয়েছে কত ;
.                 মরক !    ভুমি ও ছাড়ি |

আবার শীখ ! ব্যাঘ্র ! সিংহ------
.        তারাও ধাইয়া এসে,
.            মায়ের বুকে সন্তান গনের ;
.                 রক্তে ! রক্তে ! ভাসে |

সবার মুখেই , খাই !  খাই ! রব----
.       মায়ের বুকের রক্ত,
.           তাহারই ছেলে ! আমারও ভাই
.                 হয়েছে , কাদের ভক্ত ?

ঝড় ! ও তুফান ! বয়েচে কত----
.      বন্যায় ডুবেছে কভু,
.          খড়ার কবলে , নিঃস্ব করেছে,
.               বাঁচিয়ে রেখেছে তবু |

ধন্য ! মাগো, স্বর্গ , আমার----
.     ভারত ভুমিরে চুমি,
.          কোটি |  কোটি | দুঃখির মাতা ;
.               বার | বার | তোমারে নমী ||


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
রাখবি  তোরাই মান
কবি নরবাহাদুর লামা
(২১.১২.৮৫ লবন হ্রদের বি.ডি.অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক
যুববর্ষ উত্সবের সৌজন্যে রচিত কবিতা | )

শোনো মোর প্রিয়, যুবক যুবতী----
.    দাঁড়াও না !  সোজা হয়ে,
.       মহা !  মূল্যের দিনগুলি মোদের ;
.           কেটে যায়, বৃথা বয়ে |

অর্থ অভাবি, ব্যর্থ !  পিতারা-----
.     স্তব্ধ !  হয়ে জান,
.         ছোট ও বড়, আপন পরের ?
.              রাখতে পারেনি মান |

যাদের আছে, অর্থ ও শক্তি ?-----
.       হয়েছে , স্বার্থপর!
.          ভুলে গিয়ে তাঁরা , জাতি ও দেশ ?
.                ভাঁঙ্গছে , ভাইয়ের ঘর ||

তাই বলি ভাই ! জাগাতে হবে----
.       সকলেই , পরস্পরে,
.            দেশের কাজ, করিতে হবে-----
.                 ধরিয়া তাঁদের ও হাত |

কাছের হউক , দুরের হউক-----
.       সকলেই মানব জাতি,
.           কাউকে ! শত্রু ভেবনা যেন ;
.                ভাববে , ভাই বা সাথী |

কেহ হবি তোরা , বিবেকানন্দ-----
.      সুভাষ বসুর মত,
.           ভারত মায়ের বীর সন্তান ?
.               সব্ !  দিকে  শত ! শত !

দুঃখীর দুঃখে | দৌড়ে গিয়ে,----
.      দাঁড়াবে তাঁদের পাশে,
.           ধর্ম ও কর্মে এগিয়ে যাবে
.               যতই ! তুফান ও আসে |

খেলা ও ধূলা, শিক্ষা , দিক্ষায় ?----
.       বিজ্ঞানী, যোদ্ধা বীর |
.            বিশ্ব সমাজে, চলিতে হবে ;
.                 উর্দ্ধে, তুলিয়া শির |

মানুষের মত |  মানুষ হবি |----
.           মহান আদর্শ বান,
.           বংশের | জাতির | মহান দেশের |
.                         রাখবি , তোরাই মান ||


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
প্রার্থনা
কবি নরবাহাদুর লামা

হে রামকৃষ্ণ, হে রামকৃষ্ণ, প্রণাম চরণে তব
যুগে যুগের অবতার তুমি, কী করে সাজিয়ে কবো ?
নারায়ণের অংশ গো তুমি , পরম হংস দেব
রামের পরেই কৃষ্ণ তুমি, মানবরূপে দেব |

হিন্দু ধর্মে যিনি ভগবান ; মুসলিম আল্লাহ বলে
খৃষ্ট ধর্মে মাইটি গড ! সবাই ঈশ্বর বলে |
শিষ্যের বেশে শিব এলেন নারায়ণ গুরু বেশে---
শ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ , চলেছে দেশেদেশে |

সনাতন ধর্ম রক্ষার তরে, বিশ্বের দ্বারে দ্বারে
শিষ্যের ধ্যানে আপনি আসীন, কোথা না পাঠালে তাঁরে ?
যুগে যুগে ঠিক আপনি আসেন ; এই মহাদুর্দিনে !
সেই কারণেই বিশ্ববাসীও সুন্দর বলে চিনে !


টুকরো টুকরো মানিক যেন গো !  তোমার প্রতিটি বাণী
অমৃত ভরানো অধরে নয়নে, মধুময় হৃদিখানি |
পাপ ও পাপীরে নির্মূল করো , দুঃখীর দুঃখ হরো
বিশ্বই যেন ধ্বংসের পথে ! তুমিই রক্ষা করো |


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
ফিরিয়ে আনো জ্ঞান
( বুদ্ধের প্রতি )
কবি নরবাহাদুর লামা

বলো হে প্রভু, একি লীলা ! অসব কাদের কর্ম !
বিশ্বজুড়ে খুনাখুনি কেন ? এই কি মানব ধর্ম ?
হিন্দু ও মুসলিম, বৌদ্ধ ও খৃষ্টান ; জৈন বা ইসাই , শিখ
তাঁরা তো সবাই দেখিয়ে গেছেন নতুন নতুন দিক

সব মহাজনই শুনিয়ে গেছেন , অমৃত বাণী কতো !
যুগযুগ ধরে মানব জাতি কি, থাকিবে পশুর মতো ?
তুমি তো মহান রাজার ছেলে , সব কিছু ত্যজিয়া গেলে
তরুণী ভার্যা, রাজার মান ! বলো তো কি সুখ পেলে ?

অনাহারে অনিদ্রায়, কাটালে বহুদিন
মানব জাতিকে যাদিয়ে গেছো, শোধাতে পারে সে ঋণ ?
মাঘের হিম ! বর্ষার ঝড়, বয়ে গেছে কত যে শিরে
অনেক কষ্টে লভিয়া সিদ্ধি, বুঝিলে  ধীরে ধীরে  |

রাজার ভূষণও ছুড়িয়া ফেলে ; ভ্রমিলা মলিনবেশে
জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে গেছো, বিশ্বের প্রতিটি দেশে |
জীব হত্যা যে মহাপাপ ! অহিংসাই পরম ধর্মে---
এই সভ্য যুগেও অবাক হই ! মানব জাতির কর্মে !

পরের চর্চাও তেমনই পাপ ! অথবা অভিশাপ !
নিষ্ঠুর যুগ আসিয়া আজ ; পুত্রেও চেনে না বাপ !
ভুলে গেছে তাঁদের অমৃতবাণী ;   মানুষ হয়েছে পশু
ইহার ফলে যে মানব দানব ; জীবকুলের ধ্বংস আশু !

পথের ভিক্ষু, নিরীহ মানুষ  ; তারেও হত্যা করে !
মানব জাতির এ দশা কেন ? তাই তো অশ্রু ঝরে !
মাতৃজাতি নারীর প্রতিও নেই কোনো দয়া বা মায়া
মানবতাবোধ কি লুপ্ত হলো, নাকি প্রেতাত্মা কায়া !

অতীব তুচ্ছস্বার্থের বশে, মিষ্টি মিষ্টি মুখে
শানিত ছুরিকা বসাতে পারে, সহোদর ভাইয়েরও বুকে !
দ্যাখো না আর শিশুর পরেও চলিছে অত্যাচার
কলির দাপটে কবির প্রাণ করিছে হাহাকার |

নেতারা ভুলে দেশের কথা ;   অথবা জাতিরও কথা
সমাজে শ্রেষ্ঠ আসনে বসে, বোঝে কি কাহারও ব্যথা ?
সভ্যযুগের মানুষ হয়েও এমন কেন তবে ?
চেতনাহীন পশুরও অধম, বলো তো জাগবে কবে ?

পরের কথায় মারিতে গিয়ে নিজেরাও মরে কতো !
মোদের ঘরেরই অবুঝ সন্তান ---হাঁস বা মুর্গির মতো |
আমি তো একজন ক্ষুদ্র মানুষ ! বুঝি না এদোষ কার ?
মানুষের পরে এত অনাচার ! সহিতে পারি না আর |

আর তুমি ? পুত্রে দিয়েছ ভিক্ষার ঝুলি , বলিয়া করুণ বুলি !
মানব জাতিকে শিক্ষার তরে ; তবুও কি চোখে ঠুলি  ?
বলো প্রভু, কেন এ দশা আজ ? বারবার প্রশ্ন করি
তুমি বুদ্ধ মহাজ্ঞানীগুণী, শুধাই চরণ ধরি |

শ্রীরামকৃষ্ণ ও মোহম্মদ ইশাই এসো এসো নানক গুরু
যীশুখৃষ্ট মহাবীর মুশা, আবার করোগো শুরু |
এসো বুদ্ধ পুনঃ ফিরে এসো , জাগাতে মানবপ্রাণ
জীবে যে শ্রেষ্ঠ মানব জাতির , ফিরিয়ে আনো জ্ঞান |


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
জীবন রক্ষা করো
( স্বামী বিবেকানন্দের প্রতি )
কবি নরবাহাদুর লামা

হে স্বামীজী স্বর্গের দেব !  প্রণাম গ্রহণ করো--
শিবরূপে এসে বিশ্ববাসীর দুঃখ ও গ্লানি হরো |
গেরুয়া বসনে দন্ড হস্তে, ঘুরছো কত না ঠাঁই---
সীমাহীন দুঃখ সয়ে গেছো তুমি, তাহারও হিসাব নাই !

ক্ষুধার জ্বালায় ক্লীষ্ট হয়ে, বর্জিতে চাহিলা প্রাণ ---
অরণ্য মাঝে ব্যাঘ্রের মুখে, নিজেকেই করিলা দান |
আসিল এক ক্ষুধার্থ ব্যাঘ্র, নিকটে ধীরে ধীরে
তোমারে দেখে সেই হিংস্র জীবও পালাল নতশিরে |

বনের এমন হিংস্র পশুও , হেরেছে তোমার কাছে
মহান তব কীর্তির কথা , ইতিহাসে লেখা আছে |
সনাতনধর্ম লুপ্তের মুখে , বিশ্বধর্ম সভায় গিয়া
বিশ্বের সকল মানব জাতির , জয় করেছ হিয়া |

নিমেষের মধ্যে শেষ করেছিলে , বৃহৎ বাইবেল পড়ে |
কত পৃষ্ঠায় কী কী লেখা আছে, তাই সবে বাহাবাহা করে !
ধর্ম ও কর্মে মহাবীর তুমি ; ভারতবাসীরা বলে--
বিশ্বের মানুষই এসেছে ছুটে তাই তোমার চরণ তলে |

তোমার জ্ঞানে তো মানব জাতির ভাবনি ভিন্ন জাত
তাইতো যত অহংকারীরা , হয়েছিল কুপোকাত |
বিদেশে গিয়েও কেঁদেছো শুনি, ভারতবাসীর তরে---
কত হত জন অনাহারে আছে , ভাবিয়া অশ্রু ঝরে |

একদল  খুনী দেশ ছেড়ে গেল, এসেছে অন্য খুনী
যাদের ভাবি আপন ভাই, তারা কি মানুষ শুনি ?
নেতার বেশে গুন্ডা-ডাকাত, তারাই করিছে রাজ,
গণহত্যা-গণধর্ষণ বিচারই হয় না আজ |

একশো কোটিরও অধিক মোদের, পীড়িত ভারতবাসী,
আমি তো সবারে আপন ভেবে, ভীষণ ভালোবাসি !
রাষ্ট্রশক্তি খুনীর দ্বারাই, ঘরছাড়া কত যে লোক
মানুষের পরে এ অনাচার ! কেই বা করিবে শোক |

মরে গেছে আজ মানবতা বোধ, অবোলা পশুর মতো
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী,নেতারাও শতশত !
মহামান্য বিচারকগণ --- তাঁরাও অচল দেখি !
ধর্ষণকারী খুনীর পক্ষেই বৈধ রায় দেন একি ?

দেশের যারা ব্যাঘ্র-সিংহ , শৃগাল হয়েছে তারা
বুনো কুকুর, হায়না ও নেকড়ে করিছে সর্বহারা !
আই এ এস ও আই পি এসরা, এতোই দুর্বল কেন ?
চোখেও দেখনা , কানেও শোনে না, অন্ধ বা বোকা যেন |

শ্রীরামকৃষ্ণের কৃপায় ধন্য, কোমল হৃদয়খানি
জীবের সেবায় শিবের সেবা , বলিয়া গেছ বাণী |
একদা এসে সনাতন ধর্ম, রক্ষা করেছো তুমি---
ঐ দ্যাখো আজ মানব রক্তে লালে লাল বিশ্বভূমি |

এসো শিবরূপে, দুষ্টুর বুকে, ডমরু ও ত্রিশূল ধরো
নিরীহ মানুষ, শিশু ও নারীর, জীবন রক্ষা করো |


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
মহান দুর্গাপূজা
কবি নরবাহাদুর লামা

শোন হে আমার প্রিয় জন, সকল জনগণ
পূজিতে হবে সবহারাদের , পবিত্র রাখিয়া মন |
গোটা দেশজুড়ে বন্যা ও ঝড়ে, নানান বিপদ এসে
খাদ্য বস্ত্র ঠাঁই বিনে মানুষ---রয়েছে কতো যে ভেসে !

তবুও দেখি পূজার নামে ;  আনন্দে অট্টহাসে !
কোটি কোটি টাকা খরচ করে, খুশির জোয়ারে ভাসে---
প্যান্ডেল এবং আলোর পিছে, করিয়া অপচয়
অবুঝসম ডাকিয়া আনে দেশের অবক্ষয় !

বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা রোগী শিশুনারী, পড়ে আছে অনাহারে !
আপন বলতে যার কেহ নাই ! সে ব্যথা জানাবে কারে ?
মনে কর তারাই মার পরিবার; নররূপে নারায়ণ তারা
দেবের দোষে, দুষ্টুর রোষে, যারা হয়েছে সর্বহারা !

তারাও মানুষ ! ভাব না কেন ? আমার তোমারই মতো
সমাজের হাতেই মার খেয়ে যারা হয়েছে ক্ষতবিক্ষত !
যাহার যেটুকু সাধ্য আছে, সেইটুক সাহায্য করো |
এক-এক জনে এক-এক জনের চরম দুঃখ হরো !

দশের লাঠিতো একের বোঝা, একথা সবাই জানে
সবারে শুধাই তাদের ব্যথায় ব্যথা কি পাও না প্রাণে ?
খাদ্য ও বস্ত্র যোগাতে যে হবে , ভাবিয়া সবারে ভাই !
তাই তো কবি মিনতি করে, যাদের কিছু নাই----

একটুকু হলেও ক্ষুধার্ত জনে, পায় যেন সবাই ভুজা
এটাই হবে স্বার্থক মোদের মহান দুর্গাপূজা |


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
সবার দুঃখ হরো
কবি নরবাহাদুর লামা

হে দুর্গা, তুমি কি মাতা ? পাগল সম যে ধাও
সকল জীবের জননী হয়ে কেন সন্তান-রক্ত চাও ?
কখনো বন্যা কখনো খরায় জীবেরই বিপদ আনো
সুনামি ও ঝড় ! ভূমিকম্পে চরম আঘাত হানো !

তোমার এই পূজার তরে কত না আয়োজন
তিল তিল করে যোগায়ে অর্থ ; যোগাই তোমার মন |
দেবগণ মিলে দিয়েছে তোমায়, দশহাতে অস্ত্র ভরে
মানববেশী দানব যারা, দেখ না লুন্ঠন করে ?

নারীধর্ষণ লুট খুন করে, করিছে যে ছার খার !
তোমার পরে ভরসা করে, কী কর প্রতিকার ?
কেহ বা জমায় টকার পাহাড়, কেহ মরে অনাহারে
জীবের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মানুষ ; দোষ দেব বলো কারে ?

দেশের নেতা ও জাতির পিতারা হয়েছে স্বার্থপর
পশুরও অধম নিষ্ঠুর হয়ে ভাঙিছে দুঃখীর ঘর !
কত রোগ শোকেও ভুগিছে মানুষ--- বিশ্বের চারিধার
নানান বিপদে ত্রাশিত প্রাণ--করিছে যে হাহাকার !

এসব কি ঠেকাতে পার না তুমি ? তোমার মন্ত্র বলে--
কী করে ইহার সমাধান হবে---তাই ভাসি চোখের জলে |
জননী হয়ে তুমিও কী ভাব সন্তানগণের কথা ?
ভ্রষ্টাচারী নেতাদের মতোই বোঝে না কাহারও ব্যথা ?

নইলে বিবেকহীনে বিবেক দাও, অর্থহীনে ধন,
সবার মাঝে শান্তি এনে, ভরিয়ে দাও না মন |
হয় তুমি সবারে শেষ করে দাও, না হয় রক্ষা করো
মানব,দানব, পশু-পাখি-কীট-সবার দুঃখ হরো |


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
লেখক ও কবিদের প্রতি
কবি নরবাহাদুর লামা

বলো হে প্রিয় লেখক ও কবি, এহেন ভীত কেন ?
বরফ নাকি ননীর পুতুল, ছুলেই গলিবে যেন !
শিক্ষা ও দীক্ষায় বি এ , এম এ রয়েছে অনেক ডিগ্রি
দেশদ্রোহী দুষ্টদের কাছে , মাথ কি করেছ বিক্রি ?

সারা দেশ জুড়ে কত অনাচার , চলিছে অবক্ষয় |
সত্য কথা প্রকাশ করিতে ,কর কেন এতো ভয় ?
দেশপ্রেমিকেরা দেশের তরে, দিয়েছে কত না প্রাণ
জীবন ধন সর্বস্ব দিয়ে রেখে গেছে অবদান |

মোরা তো কেহ অমর নই, একদা মরিতে হবে
একশত কোটি ঘুমন্ত জনে , জাগাও না কেন তবে ?
ঊগ্রপন্থী গুন্ডা বা ডাকাত , তারাও মোদের ভাই !
অবুঝ ভেবে প্রতিটি জনে , বুঝিয়ে বলা চাই |

মুনাফা-খোর মাফিয়া চোর, সমাজ-বিরোধী যত
সমাজে ফিরিয়ে আনিতে হবে, বুঝিয়ে ভাইয়ের মতো |
সমাজ হতে বঞ্চিত কেন ? বলো না এদোষ কার
সবার মতো তোমারও আছে, বাঁচার অধিকার |

পরের কথায় আপন জনেও হত্যা কর তুমি
বুঝাতে হবে এ দেশ তোমার, বাঁচাও মাতৃভূমি |
ভ্রষ্টাচার নেতা ও আমলা ভাঙবে তাদেরও ভুল
রক্ষা করো দেশ ও জাতি বাঁচাও নিজেরও কুল |

এমনভাবে বোঝালে হয়তো , অনেকেই জাগতেও পারে
জীবনে যারা অন্যায় করেছে, বুঝিবে হাড়ে হাড়ে !
অতীব মন্দও হতে পারে, হয়তো ভীষণ ভালো
লেখক ও কবিরা নিষ্ঠাভাবে দেখালে  জ্ঞানের আলো |


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
বিশ্বকবির স্মরণে
কবি নরবাহাদুর লামা

হে গুরুদেব !
অমৃততে  অচল গুরু, ওটাই নিয়ে করলাম শুরু
.        তোমারই ঘরের অনেক ছেলে---
.                 দিচ্ছে তারা দূরে ফেলে |

সোনার মূর্তি ভাঙছে বসে, বালির পুতুল গড়ছে কষে---
.        লৌহ সাথে সোনারে পিশায়,
.             তোমার ছন্দ মাটিতে মিশায় |

বাতিল করে সুর ও ছন্দ , কাহার সাথে করব দ্বন্দ্ব ?
.        উপাধিবিহীন গুরুর চেলা
.              করছে বড্ড অবহেলা |

তোমারই কবিতা গানের সুরে এগিয়ে ছিলাম অনক দূরে
.        অচল বলে ব্যঙ্গ করে---
.             মানিক দেখেও দিয়েছে ছুড়ে |

প্রাণের গুরু হৃদয় স্বামী , অচল বলে বাচাল আমি
.        সেই কারণেই ক’বার গেলাম
.             আঘাত খেয়ে ফিরে এলাম |

সেই আঘাতে পড়েছি নীচু , পথ ফিরেছে অনেক পিছু |
.        হোক না অচল প্রাণের রতন
.              তবুও আমি করব যতন |


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল স্মরণে
কবি নরবাহাদুর লামা

সেলাম তোমায় শতকোটি সেলাম
.     হে বিদ্রোহী কবি নজরুল !
.          আমি যে ক্ষুদ্র পাহাড়ি কবি
.              ধরো না আমায় ভুল |

কবিদের মাঝে মহাবীর তুমি----
.      এসেছিলে কবে যে হেথা
.           পরাধীন দেশে দীন হয়ে থাকা,
.               বুঝেছিলে কী যে ব্যথা |

পরের সাথে লড়িতে গিয়া--
.     দেখেছো শত্রু ঘরে
.         তাই, ঘর হতে সেই শত্রুগণে
.              তাড়াব কেমন করে ?

যাদের ঘরে দাসত্ব করো,
.      লড়েছ তাদেরই সাথে----
.            ঘুমন্ত জনে জাগাইয়া অসি
.                 দিয়াছ হাতে হাতে |

হুংকার দিয়ে বলেছিলে নাকি
.       সাবধান শত্রু তোরা !
.            ভারতবাসী হতে পারি দীন
.                নয়রে মোরা যে হীন !

যে করেই হোক তাড়াতেই হবে
.        ঘর হতে শত্রুদলে |
.             ধনপ্রাণ যাক রক্ত দিয়েও
.                  যেকোন ছলে-বলে |

সেইজন তুমি মহাবীর কবি
.      মোদের প্রিয় নজরুল,
.            সেলাম তোমায় শতকোটি সেলাম
.                 হে বিদ্রোহী কবি নজরুল  |


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
মহর্ষি অরবিন্দ স্মরণে
কবি নরবাহাদুর লামা

হে দেশপ্রেমিক মানবদরদী, প্রণাম চরণে তব----
অরবিন্দ হতে মহর্ষি যে হলেন , সে কথা কেমনে কবো ?
দর্শন তব পাইনিকো আমি, ঘরে ঘরে দেখেছি তব ছবি
কি কথা তব লিখিব আমি, অতীব ক্ষুদ্র কবি !

দেশবাসী ও দেশের তবে, কঠোর সাধনা করে,
পরাধীন দেশ স্বাধীন করাতে ঘুরেছো ঘরে ঘরে |
জীবনের স্বপ্ন , কত কি আশা, নিজের সবকিছু ভুলে
দেশ রক্ষার দায়িত্বভার , লয়েছিলে মাথায় তুলে |

কতই না কষ্ট সয়েছ তুমি ! তাহার যে হিসাব নাই---
সেসব কথা ভাবিতে গেলে, বুক-ফাটা ব্যথা পাই !
ত্যজিলে গৃহ, মাতা বা পিতা , ধনজন , ভগিনী , ভ্রাতা---
কয়েক কোটি ভারতবাসীর , ভাবিয়া আপন ত্রাতা |

ঘুমন্তজনে জাগাবার তরে ঘুরেছ দ্বারে দ্বারে---
চোখে নেই ঘুম, নেই পেটে দানা, কি করে জাগাবে কারে ?
কাহিনী তব বলে শেষ নেই, কী আর কহিব আমি---
মহান  তব পুণ্যের ফলে, হয়েছো যে অন্তরযামী |

একদা হঠাৎ পড়িলে ধরা, বিদেশী-শত্রুর হাতে--
কারাবাস কাহিনী রচিলা সেথায়, কারাতেই দিনেরাতে |
দিব্যচোখে দেখিলে তুমি, এসেছে ভগবান !
সি আর দাশ ও সুভাষ রূপে, রাখিতে দেশের মান |

ভীষণ মজার দৃশ্য দেখিয়া আনন্দে ভরিল বুক
শত্রু ও মিত্র যাকেই দেখেছ ইষ্টদেবের মুখ |
সেই কারা হতে মুক্তি পেলে , মুক্ত কর্ম হতে---
এবার দেশ স্বাধীন হবেই, ভাসিলা আনন্দস্রোতে |

সি আর দাস ও সুভাষ ‘পরে, সঁপিয়া কর্মভার---
পন্ডিচেরি চলিলা তুমি, এলে না ফিরে আর!
ভারত স্বাধীন হয়েছে বটে, এল না দেশে সুখ
একশত কোটি ভারতবাসী, সহিছে চরম দুখ !

কত মানুষের রক্তের দাম, গিয়াছে ধুলায় মিশে !
তোমরা যে এতো বেদনা লয়ে সাধনা করেছ কিসে ?
রামের ভারত, কৃষ্ণের ভারত. ভারত যে মহান দেশ
কুক্কুর সম লোভীরা এসে, সবারে করেছে শেষ |

দেশের কথাই ভাবে না যারা, সে-ই বলে গদিটি চাই !
তাই তো ভাবি নিষ্ঠ-নেতা বলো তো কোথা পাই ?
প্রশাসন ও বিচার বিভাগ ? অচল হয়েছে আজ
আইননীতি কর্তব্য ভুলে, করিছে উল্টো কাজ |

হাজার হাজার খুন হয় মানুষ, শাসক-শোষক দ্বারা
নারী ধর্ষণ, ধন জন লুটে, করিছে যে সর্বহারা !
খাদ্য নাই, বস্ত্র নাই, নাই কারও থাকার ঠাঁই-----
যেদিকে দেখি শুধু হাহাকার ! দেউলিয়া হয়েছে প্রায় !

দেশের এই দুর্দশা দেখে, মোরা যে ভাবিয়া মরি
আজিকে তাই বড়ই দুঃখে , বারবার তোমারে স্মরি !


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর
*
ডাক্তার বিধান রায়ের স্মরণে
কবি নরবাহাদুর লামা

হে মহামানব বিধান রায়, প্রণাম চরণে তব---
তোমার মহান কীর্তির কথা, কাহার কাছে কব !
বাংলা মায়ের মহান সন্তান, বিধানচন্দ্র রায়,
তোমার স্বপ্নের সোনার বাংলা, দ্যাখ আজ খাবি খায় |

কী ভেবেছিলে, কী হয়ে গেল, ব্যথা পাই গভীর প্রাণে
সুখের আশায় কত কী গড়েও, ভাসিছে দুঃখের বানে !
চারিদিকে শুধু হাহাকার শুনি, না জানি সে সুর কার
যতই তারা চেচিয়ে মরুক, জানি হবে না প্রতিকার |

দেশদ্রোহীরে বিশ্বাস করে, আদর করেছিল যারে,
কয়েক কোটি অবুঝ মোরাও, সন্মান করেছি তারে |
শয়তান সে তো বিশ্বাসঘাতক, চরম সে দুর্মতি
একেবারেই খোকলা করে, করেছে এ দুর্গতি |

কলকারখানা বন্ধ করিয়ে, শ্রমিক কর্মীরা মরে---
দানবসম লুটেপুটে খেয়ে, মানব জীবনও হরে |
পরের পিতাকে বাপ মনে করে ,ভুলে যায় নিজের বাপ
সিংহাসনে বসিয়ে দানবে, এনেছি ডাকিয়া সাপ |

গায়ের জোরে যে-কোনো লোকের, কাড়িছে মুখের গ্রাস
মুখেও কুলুপ, চোখেও ঠুলি দেখিয়া তাদের ত্রাস !
পৈতৃক ভিটা ধন প্রাণ মান, শাসক ও শোষাকে লুটে
মানববেশী ছাগ ও মেষেরা, তাদের পেছনেই ছোটে |

প্রসাশনের হাত পা বেঁধে, রেখেছে পঙ্গু করে |
খাদ্য ও বস্ত্র ঠাঁই বিনে মানুষ, জ্বলিয়া পুড়িয়া মরে |
তুমিও যেমন ভুল করেছিলে , মোরাও করেছি ভুল |
সোনার বাংলার বেহাল আজ, খুঁজিয়া পাইনা কুল !

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, পানীয় জল, আলো ও যোগাযোগ---
উন্নয়নের অর্থ লুটে, নেতারাই করে ভোগ |
দুগ্ধ-গাভীরে বিকিয়ে যারা, আখের গুছাতে চায়---
নিষ্ঠ ও সৎ, নেতাও আমলা একটিও খুঁজে পাই ?

নিজের সুখ ও তুচ্ছকরে-- দেশ ও জাতির পিছে
কঠোর কঠিন সাধনা করা, সবই হয়েছে মিছে |
যাহারা ভাবেন ভাবনা তব, তাহারাই ভাবিয়া মরি---
জন্ম ও তব মৃত্যু দিবসে , বারবার তোমায় স্মরি |

দেবতা সম ভক্তি করি, অনেকেই মনে মনে---
পরম সুখে বিরাজ কর গো, স্বর্গের সিংহাসনে |
বঙ্গবাসীর পিতার তুল্য রেগীর অন্তর্যামী---
ডাক্তার রূপেও ভগবান ছিলে, তাই সকলেই মোরা নমি |


.                   ****************                                                    
উপরে   




মিলনসাগর