( যুদ্ধজনিত দুর্ভিক্ষের বাজারে নিদারুণ লবণাভাব দেখা দেয় | কন্ট্রোলে লবণ কিছু কিছু পাওয়া যেত, কিন্তু তা সংগ্রহ করা ছিল, অত্যন্ত কঠিন | ঐ সময় গ্রামের জনৈকা মাঞ্জুর মায়ের আক্ষেপের প্রতিফলন ও অবস্থা সম্পর্কে নিদারুণ শ্লেষ এই গানে ফুটে ওঠে | রচনাকাল আনুমানিক ১৯৪৩--৪৪। --- কঙ্কণ ভট্টাচার্য, লোককবি নিবারণ পণ্ডিতের গান )
বঙ্গনারী হইল ( তারা ) দিবসেতে ঘর হইতে, বের হইতে আর পারে না | কলসী কাঁখে যায় না রে জ জলের ঘাটে গ্রা ( তারা ) আঁধার হলে যায় রে জলে, দিনের আলোয় আর আসে না || গ্রামের দুস্ত পু যারা ভিক্ষা ক ভিক্ষা ছাড়া যা তারা লোক সমাজে মুখ দেখাতে লেংটা হইয়া আর পারে না || ছিঁড়ে গেছে ক্ষী মিলে না আর বাজার হইল কাপড় দিয়া সৌতো এখন দাহন করা আর চলে না || লবণ কেরোসি আধ সের ( আর ) দেড় ছটাক কিনি রেশন কার্ডে কাপড় পাওয়া যায় না----- এমনি করে আর বা কত থাকবে দেশ বসন বিনা ||
বাবুদের নব্য বাবুদের নব্য ঘন্টায় ঘন্টায় পাইয়া কনট্রো কত গবুর হই চাল চলন দেখি হাতে ঘড়ি চশ নব্য সভ্য বাবু ইংরেজীতে আলাপ করে বাংলা আর বলে না দু এক কৌটা চুরট ছাড়া তাদের দিন চলে না দৈনিক বিশ কাপ চা না হলে সেই বাবুদের মেজাজ হয় না || হইলে মাস কাবার হিসাব দেখায় চা দোকানদার বাবু বলেন কত তোমার হয়েছে পাওনা----- গত মাসের চিনির বস্তার দাম দিতে হবে না | দেনা পাওনা নাই আর কারও কারও চুরট খাওয়াও আর একখানা |
( যুদ্ধের বাজারে কনট্রোল ব্যবস্থার দৌলতে ফুলে ওঠা একশ্রেণীর নব্য বাবুদের তীব্র আঘাত করে এই গান রচিত হয় | -- কঙ্কণ ভট্টাচার্য, লোককবি নিবারণ পণ্ডিতের গান )
( এই গানটির প্রথমাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে | ১৯৪৫ সালের মে মাসে ময়মনসিংহ জেলায় নেত্রকোনায় সারাভারত কৃষকসভার নবম সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয় | সম্মেলন উপলক্ষে এই গানটি রচনা করেন | এই গানটি কৃষকদের মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল | --- কঙ্কণ ভট্টাচার্য, লোককবি নিবারণ পণ্ডিতের গান )
( নেত্রকণা সম্মেলনের পূর্বে এক মাস ধরে গ্রামাঞ্চলে প্রচারাভিযান অনুষ্ঠিত হয়েছিল | প্রচার ও সম্মেলনের মঞ্চে গানটি বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে | পরবর্তীকালে গানটি সামান্য পরিবর্তিত হয় | এখানে পরিবর্তিত রূপটি দেওয়া হল | --- কঙ্কণ ভট্টাচার্য, লোককবি নিবারণ পণ্ডিতের গান )