ভূতে ধরা ভাঙ্গাবাড়ী, চল ভাই মেরামত করি
নূতন সাজে হইবে তৈয়ার------
দাও ভাঙ্গা চালে নূতন ছাউনিরে, ওরে আমার দেশবাসী ভাই
নূতন গান কন্ঠে ধর, গঠন কর নূতন সংসার ||

কৃষকের ঘাড় হইতে, ভূতের বোঝা নামাইতে
আগে যেতে হইবে তোমার-----
নেংটি পরা অর্দ্ধমরারে, ওরে আমার দেশবাসী ভাই
এই চাষী বাঁচিলে হবে দেশের দশের উপকার ||

যে বোঝা আজ চাষীর ঘাড়ে
সে বোঝা নামিতে পারে
পাইলে চাষী চাষের ক্ষেতখামার------
নয়াচীনের চাষীর মতরে, ওরে আমার দেশবাসী ভাই
হাড্ডিসার এই চাষীরা করবে সোনার ফসল তৈয়ার ||

আজ মধ্যবিত্ত চায় চাকুরী
মজুর চায় তার হক মজুরী
কাজ চাইছে যত সব বেকার----
পেলে শিক্ষকেরা শিক্ষার মূল্যরে, ওরে আমার দেশবাসী ভাই
গ্রামে গ্রামে স্কুল কলেজে হইবে নূতন শিক্ষার প্রসার ||

কুটির শিল্পী জেলে তাঁতী
যদি তারা পায় মাল যন্ত্রপাতি
পন্থা হবে তাদের বাঁচিবার-----
কমলে ট্যাক্সের উপর বোঝারে, ওরে আমার দেশবাসী ভাই
যত লক্ষ্মীছাড়া কপাল পোড়া ছোট ছোট দোকানদার ||

সবার বাঁচার দাবি নিয়া
চল সবে এক হইয়া
নূতন সাজে হইরে তৈয়ার-----
খুব হুঁশিয়ারে চলতে হবে রে, ওরে আমার দেশবাসী ভাই
যেন সুযোগ বুঝে বিভেদ বুদ্ধি ঘাড় না মটকায় আর একবার ||

.                      ******************     
.                                                                               
সুচিতে...   


[ গানটি প্রথমে “বাস্তুহারার মরণকান্না” পুস্তিকায়  ( ১৯৫১ ) প্রকাশিত হয় | পরবর্তীকালে “জমিদারী
ক্রয় আইনের সারমর্ম” পুস্তিকায় ( ১৯৫৪ ) কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত রূপে পুনঃ প্রকাশিত
হয় | এখানে নূতন রূপটি দেওয়া হল | --- কঙ্কণ ভট্টাচার্য, লোককবি নিবারণ পণ্ডিতের গান ]


মিলনসাগর
কবি নিবারণ পণ্ডিতের কবিতা
যে কোন গানের উপর ক্লিক করলেই সেই গানটি আপনার সামনে চলে আসবে।
*
.                       কান্দেন চাষী সর্বহারা হইয়া
ষাট বিঘা যার জমি ছিল, সেও আজ ফকির হইল
.          এখন ভাবেন কপালত্ হাত দিয়া  ||

কোন্ টে বা করিবেন বাড়ী কোন্ টে পাবেন টাকাকড়ি
.          কাঁয় বা কার করেন খোঁজ খবর
.        জঙ্গবলবাড়ী আর শ্মশানবাড়ী মধ্যত এখান ঘরকরি
.                      আছেন তারা যেমন বাজিকর ||

.        কপালের দোষ নয় ভাইরে কপালের গুণ কয় তারে
.                   যেমন হইল কুচবিহার শহরে
.          নাটাকুড়া হাজ্ রাপাড়া সাহায্য পাইলেন তারা
.                   আছেন তারা দালান কোঠা করে ||

.          পাথরের বাঁধ উঠিল শহরবাসী স্থান পাইল
.                  আছেন তারা ঘরবাড়ী বান্ধিয়া
.       প্রায় বিশখানা গ্রাম আছে তোর্ষানদী ভাঙিয়াছে
.                সরকার আছেন একচক্ষু মুদিয়া  ||

.             সন ১৩৬১ সনে প্রবল বন্যার কারণে
.                  সরকার কিছু টাকা দিয়াছিল
.      শহরবাসী খয়রাতি পাইল গ্রামে তাহা লোন হইল
.                  ঐ টাকারও নোটিশ আসি গেল ||

.      বাঁচি এখন কি খাইয়া তার উপর লোন লইয়া
.               সগার মাথা গিয়াছে ঘুরিয়া
.      নিদানকালে লোন নিল সরকার এখন হুমকি দিল
.               আদায় করবেন সার্টিফেট করিয়া ||

.      স্বাধীন দেশের স্বাধীন সরকার বিচার তাহার সুবিচার
.                   খানে খানে হয় বিভিন্ন ধরন
কাউকে পিঠে কাউকে কোলে কারও ভীতি নাচান চক্ষু মেলে
.                  গরীব চাষীর হইল মরণ ||
.     হাহাকার বৃদ্ধি পাইল জিনিষপত্রের দাম বাড়িল
.                  চাষীর আয় মোটেই বাড়ে নাই
.     কথাগুলি বুঝি লইয়া চল ভাই জুট বান্ধিয়া
.                  নেহ্যকথা সরকারকে জানাই ||

.                      ******************     
.                                                                               
সুচিতে...   


[  ১৯৫৬--৫৭ সালে কোচবিহার জেলায় তোর্ষানদীর ভাঙ্গনে পার্শ্ববর্তী অনেক গ্রাম বিপন্ন হলে
কবি গানটি রচনা করেন |  গানটিতে সুরারোপ করেন প্রখ্যাত ভাওয়াইয়া গায়ক ঢুঁড়ো গীদাল |
শব্দার্থ :  
কোনটে -----কোথায়,  
সগার ----সবার,  
ভীতি নাচান--- ভয় দেখানো  
--- কঙ্কণ ভট্টাচার্য, লোককবি নিবারণ পণ্ডিতের গান ]


মিলনসাগর
*
নতুন দিনের গান           
নিবারণ পণ্ডিত

.     নতুন দিনের গান
.       ( ভাটিয়ালী )
তোর্ষা নদী ভাঙ্গার গান           
নিবারণ পণ্ডিত

             তোর্ষা নদী ভাঙ্গার গান