কবি বিনোদিনী দাসীর কবিতা
*
সাধনা  
( বাসনা )
কবি নটী বিনোদিনী

.             নিতুই নূতন ভাবে গাঁথি ফুলহার |
নিভৃত নিকুঞ্জ মাঝে,                         বনফুল কত সাজে
.              প্রেমডোর দিয়ে তারে বাঁধি অনিবার
.              মালা কি ভালবাস প্রাণেশ আমার ?

.              স্বাধীন বনের ফুল স্ব-ইচ্ছায় ফোটে
কণামাত্র মধু ল’য়ে,                          কন্টকের বোঝা ব’য়ে
.              সাধ ক’রে ঝরে পড়ে প্রিয় পায় লুটে
.              তাহাতে কি প্রেমময় তব মন উঠে  ?

.             চাঁদেতে চকোর খেলে আকাশের গায়
বসিয়ে লতাবিতানে,                        আনন্দ বিভোর প্রাণে
.             বনপাখি নাচে গায় প্রমোদিত কায়
.             কুল কুল তানে যবে নদী ব’য়ে যায় ||
.             স্বপনসঙ্গিনী ল’য়ে নীরব নিশীথে
কত ভাবে খেলা করি,                     কতই যতনে ধরি |
.                    বিনা সূতে গেঁথে হার তোমায় বাঁধিতে,
.             ভাল কি বাস না নাথ ! তাতে বাঁধা দিতে ?

.             ঘুমন্ত জ্যোত্স্নার কোলে বিজলীর হাসি
মধুর মলয়ানিল,                            সোহাগে কুসুম টলে
.             কোকিলের কুহুতান পথিকের বাঁশি |
.             ঘুমন্ত শিশুর মুখে সরলতারাশি ||

.             এসব সৌন্দর্য্যশ্রেষ্ঠ বলে ধরাবাসী,
আমার নয়ন মন,                           তব প্রেমে নিমগন ;
.             অসীম সৌন্দর্য হেরে ও মুখের হাসি |
.             তোমার প্রণয় প্রাণ সদা অভিলাষী ||

.               নিকটে বা দূরে থাক তুমিই কামনা,
তুমি হৃদয়ের তৃপ্তি,                        তুমি নয়নের দীপ্তি ;
.            প্রেমভাবে সদা তোমা করি আরাধনা |
.            সিদ্ধ যেন হই নাথ ! ইহাই বাসনা ||

.           *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
স্মৃতি
( বাসনা )
কবি নটী বিনোদিনী

স্মৃতি লো বিয়ের জ্বালা দিও নাকো আর,
এ সংসারে চিরদিন কিছুই না রয় ;
তবে কেন দুঃখ তুমি দাও অনিবার |
তুমি মনে হলে প্রাণে জ্বালা অতিশয় ||

অস্থায়ী সংসারে কিছু চিরস্থায়ী নয়,
সুখ দুঃখ চিরদিন ঘোরে সমভাবে ;
কালের কবলে সবে হয়ে যাবে লয় |
অনন্ত নিদ্রার কোলে নিশ্চিন্তে ঘুমাবে ||

কালে নর ভুলে সব কালেতে বিলীন,
চিরদিন নাহি কিছু রহে সুখ আর |
তথাপি সকলে রহে তোমার অধীন ;
সকলি ভুলিতে পারে তোরে ভোলা ভার ||

যা হবার হইয়াছে পুড়েছে হৃদয়,
কেবল বিষের জ্বালা স্মরণে তোমার |
এখন জীবন মম শ্মশান আলয় |
তবুও তোমার চিন্তা দহে অনিবার ||

দয়া ক’রে ভুল মোরে শক্তিস্বরূপিণী,
স্মৃতি হ’তে বিস্মৃতিতে অধিক সন্তোষ |
ছাড়িয়ে আশার আশা হ’য়েছি দুঃখিনী ;
আপনা ভুলিলে পরে আরো পরিতোষ ||

.           *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
সোহাগ
( বাসনা )
কবি নটী বিনোদিনী

আসে সন্ধ্যা দেখি সব নাচে ফুলচয়
.       হাসে কলি, গায় পাখী
.       সোনার বরণ মাখি
হেলে দুলে তরতরে বহিছে মলয় ||

পরশে মলয়ানিল কলিকা সকল
.       কেহ চমকি চাহিল
.       ( মৃদু ) হাসি কেহবা হাসিল
অনিল পরশে কেহ হইল বিকল ||
মৃদু মৃদু ধীরে ধীরে বহিল পবন
.       ফুটিল গোলাপকলি
.       রূপের ঘোমটা খুলি
আদরেতে সমীরণ চুমিল বদন ||

সোহাগে গোলাপ কয় যাও নাথ যাও
.      এখন কহিছ কত
.      প্রেমকথা নানা মত
মল্লিকা পাশেতে গেলে ফিরে নাহি চাও ||

জানি হে পুরুষজাতি নিঠুর-নিদয়
.       থাকে যবে যার কাছে
.       যেন সে তাহার আছে
অদর্শনে কোন কথা প্রাণে নাহি রয় |
যাও যাও প্রাণনাথ আদর এ নয় ||

.           *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
পিপাসা
( বাসনা )
কবি নটী বিনোদিনী

.        তৃষিত চাতকী প্রাণ কাতর রহিল,
.         জীবন শুকাল তবু বারি না মিলিল ;
নবীন নীরদ পানে,                চাহিতে তৃষিত প্রাণে
.         এই আশা ছিল মনে বুঝি বারি পাব ;
.         জানি না জগতে আমি এরূপে শুকাব ||

.        শীতল বারির তরে কাতর হইয়া
.        শত বজ্র ধরিয়াছি হৃদয় পাতিয়া
খেলিত দামিনী-বালা,            গগন করিয়ে আলা
.        এ হৃদয়ে দিত ঢেলে আঁধারের রাশি |
.        আমারে দেখিয়া হাসিত ঘৃণার হাসি ||


.        ঘনঘটাপরিপূর্ণ যে দিকে হেরিত,
.        কাতর পরাণ মম সেখানে ধাইত,
শুধু বজ্রাঘাত পেতো             হৃদয় ভাঙ্গিয়া যেতো
.        ভাঙা হৃদে কতবার জোড়াতাড়া দিয়ে
.        তথাপি নীরদ পানে থাকিতাম চেয়ে ||

.        শুধু আকাঙ্ক্ষিত প্রাণ রহিল এখন,
.        কখন না পেলে বিন্দু বারির সিঞ্চন ||
এখনও রয়েছে মোর,            দারুণ আশার ঘোর
.        নিবেও নিবে না তাহা খালি হাহাকার,
.        এরূপ জীবন শেষ হইল আমার ||

.                  *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
সারাদিন
( বাসনা )
কবি নটী বিনোদিনী

.         সারাদিন সমীরণে খেলিয়া বেড়াই
সন্ধ্যার আলোক জ্বলে,          প্রাণের নিভৃত কোলে
.         নিশ্বাস লুকায়ে রেখে পথ পানে চাই
.         একটি তারার আলো দেখিবারে পাই ||


.        সারাদিন ঘুমঘোরে অবশ হৃদয়
সন্ধ্যার আলোক পেয়ে,           একবার দেখে চেয়ে
.        মিলন মলিন ভাবে গায় প্রেমগান |
.        বায়ুর নিশ্বাস সনে মিশে সেই তান ||


.        সারাদিন স্বপনের ছায়াপথে বসে
সন্ধ্যার বিষাদ-মাখা,               আধ ছায়া আধ ঢাকা
.        ভাসিয়া ডুবিয়া তাতে ভাবি অবিরাম |
.        মরমের গ্রন্থি-মাঝে গাঁথা যেই নাম ||


.        সারাদিন ছায়াপথে প্রাণ কোথা যায়,
শূন্যে গিয়ে ফিরেঘুরে,             কার অন্বেষণ করে,
.        কাতর প্রাণের কথা সমীরণে গায় |
.        সন্ধ্যার আলোক সনে ফিরে যে ধরায় ||


.       সারাদিন প্রাণ মোর জাগিয়া ঘুমায়,
কিবা চাই কিবা পাই,               এই আছে এই নাই,
.       ভাবি মনে ঘুমঘোরে দিন কেটে যাক্ |
.       রবির উত্তাপ তাপে সন্ধ্যা আলো পাক্ ||
.       সারাদিন স্বপ্নে বসে গাঁথি ফুলহার
সাঙ্গ হ’লে ফুলহার,                 চেয়ে দেখি চারিধার |
.       সন্ধ্যার আলোক মাঝে ভাসে এক তারা |
.       না ফেলিতে অশ্রুকণা, হয় পথ-হারা  ||

.                  *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
কি যেন
( বাসনা )
কবি নটী বিনোদিনী

নীরব যামিনী মাঝে বসি নদীকূলে |
.         দূর স্বপ্ন স্মৃতি যেন,
.         মনেতে উদয় হেন
জীবনের কোন পথ গেছি যেন ভুলে ||

সুখ স্মৃতি কিবা যেন আসে যায় মনে |
.         গহনে নির্ঝর সনে,
.         বসি যেন দুইজনে,
চেয়ে যেন মুখ পানে প্রফুল্ল বদনে ||

কি যেন সুখের কথা বলেছিল তার |
.         নির্ঝরের ঝর্ ঝরে
.         মিশি হেন তার স্বরে
নূতন মধুর কিবা হয়েছিল আর ||

সজল উজ্জ্বল যেন নয়ন যুগল
.          আধ যেন হাসি হাসি,
.          আধ যেন জলে ভাসি,
কাতর করুণাপূর্ণ হৃদয় কমল ||

কবে যেন যত্ন করে গেঁথেছিনু হার,
.          নিজ হাতে ফুল তুলি,
.          বেছেছিনু সবগুলি
কোথা কি কন্টক কিবা কীট আছে তার ||

কি যেন আশার আশে হৃদয় মগন |
.         আগমন প্রতীক্ষায়,
.         দূরে যেন প্রাণ ধায়
শুষ্ক পত্র পতনেতে সলাজ নয়ন ||
নিরাশা-পূরিত প্রাণে পূর্ব স্মৃতি কেন |
.         শুষ্ক তৃণ শয্যা যার,
.         মহা রত্ন স্বপ্ন তার ;
মরুভূমি মাঝে কেন মরীচিকা হেন ||

.         *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
অনুতাপ
( বাসনা )
কবি নটী বিনোদিনী

.                               ১
.           এখন কি সেইরূপ ভালবাস মোরে |
এখন কি দয়া হয়,                      এখন মমতাময়,
.           আছে কি হৃদয় তব এ দাসীর তরে ||
                      
.                               ২
.           কঠিন পাষাণ আমি ভুলেছি তোমায়  |
ভুলেছি তোমার দয়া,                  ভুলেছি তোমার মায়া
.           ভুলিয়াছি অকারণ জ্বালাতে জ্বালায় ||

.                              ৩
.            ভুলিয়াছি সেই দিন, যে দিন তোমায়
বিনা দোষে দোষী করে,                 থাকিতাম রাগ ভরে,
.            যতনে ধরিয়া কর সাধিতে আমায় ||


.                              ৪
.            আদরে ধরিলে কর যেতাম চলিয়া,
অতিশয় কাতর হয়ে                    থাকিতে যে পথ চেয়ে
.            দীর্ঘশ্বাসে যেত কত মরম দহিয়া ||


.                             ৫
.            আবার হেরিলে মোরে সোহাগে তখন,
ভাসিত যুগল আঁখি,                    হৃদয়ে আনন্দ মাখি,
.            কতই যতন করি তুষিতে যে মন ||

.                            ৬
.            লইয়া গোলাপ ফুল দিতে গেলে করে,
ফুলে যদি ব্যথা পাই,                   দিব কিনা দিব তাই,
.            এই কথা বার বার ভাবিতে কাতরে ||


.                             ৭
.            ক্ষণে ক্ষণে করিতাম কত জ্বালাতন,
নিদারুণ বাক্যবাণে,                    সতত দহিতে প্রাণে,
.            তবু অযতন মোর করনি কখন ||

.                             ৮
.            চাঁদের দেখিতে ভাল বাসিতাম বলে  |
বলিতে সোহাগ ভরে                   শশী কোথা কহ মোরে
.            গগনেতে শশী কিবা রয়েছে ভূতলে ||
                                           
.                             ৯
.             কি দেখিছ সুবদনি চাঁদ মুখ তুলে |
ও ত ধনী শশী নয়                     তব প্রতিবিম্ব হয়
.            আকাশেতে খেলা করে মম হৃদি ভুলে ||

.                             ১০
.            তোমার আদরে আমি এত আদরিণী |
শিখায়েছ অভিমান                    তাই নাহি পূরে প্রাণ
.            তুমিই করেছ মোরে এত গরবিণী ||

.                              ১১
.           সকল হৃদয় ঢেলে তুষিতে আমায় |
তোমার আদরে মোরে                সংসার আদর করে,
.           কোন আঁধারের কোলে ছিলাম কোথায় ||
                    
.                             ১২
.           প্রাণ ভরা প্রেম পূরা আদর তোমার |
কেনা জানে অভিমান                  লুকায়ে বিকায় প্রাণ
.           এত জেনে অযতন কেবা করে আর ||

.                              ১৩
.           নারী আবরণ মাত্র উপরে আমার |
ভিতরে পাষাণ দিয়া                    গড়েছে কঠিন হিয়া
.           পাষাণ কি গলে কভু দিলে অশ্রুধার ||

.                    *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
শিখাও আমায়
( বাসনা )
কবি নটী বিনোদিনী

আজিকে শশাঙ্ক বড় সেজেছ সুন্দর |
.         কালিমা হৃদয়ে,
.         পরাণ গলায়,
আনন্দেতে মত্ত হয়ে হয়েছ বিভোর ||

কাহার হৃদয় শশী করিতে রঞ্জন
.         লয়ে ফুল হাসি
.         খেলা কর শশী
মেঘেতে ঢালিয়ে কায় কোথায় গমন ?

লইয়া কলঙ্ক রেখা হাসিছে কেমন
.         কলঙ্কিনী নাম
.         ঘোষে ধরাধাম
দেখ এ হৃদয়শূন্য তম-আবরণে
যুগান্তের জ্বালা শশী সহিছ কেমনে ||

দেখ হে সুধাংশু নিতি হইলে নির্জন
.         বসি তরুতলে
.         নয়নসলিলে
ধুইয়া করিতে চাই কলঙ্ক বর্জ্জন |
ততই হৃদয় মাঝে দহে হুতাশন ||

একটি বচন তুমি রাখ আজি মোর |
.         হৃদয়ে কলঙ্ক
.         লইয়ে শশাঙ্ক
কেমন হইয়া থাক সুখেতে বিভোর |
আমারে শিখাও শশা দাসী হব তোর ||

.        *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
কেন যে এমন হল
( বাসনা )
কবি নটী বিনোদিনী

বিষাদিত প্রাণ মন কিসের কারণ,
কেন এত ভাঙ্গা ভাব হৃদয়-মাঝারে,
কেন ছলে ঘুরে এসে দেয় আবরণ |
মরমে মরমে পিষে প্রাণের সুসারে ||

যেন কোন দেশান্তরে হারায়েছি প্রাণ,
শুন্য দেহ বহি সদা ঘুরিয়া বেড়াই,
চারিদিকে দেখি সব জনশূন্য স্থান,
সংসারে বাসনা মম কিছু যেন নাই ||
চিত্রিত সংসারে যেন শূন্যভারে দোলে,
চিত্র করা ফল ফুল যেন শব্দহীন,
আঁকা তরু আঁকা পাখী আঁধারের কোলে
সকলই শূন্যে ভরা চেতনাবিহীন ||

পূর্ণ শশী কাঁদে শুয়ে যামিনীর গায়,
ভেঙ্গে ভেঙ্গে বয়ে যায় মলয়পবন,
দিনমানে প্রেম খেলা পাখি ভুলে যায় |
তমসায় ডোবে সব আশার স্বপন ||

কি চাই কি নাহি পাই কিসের কারণ,
সদাই কাতর প্রাণ মন উচাটন,
ছায়া আবরণে যেন কাটাই জীবন,
চির আঁধারের কোলে করিয়া শয়ন ||

.        *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
কি কথাটি তার
( বাসনা )
কবি নটী বিনোদিনী

.        কি যেন প্রাণের কথা বলে গেল কে ?
যেন কোন দূর দেশে,                    কি যেন প্রাণের আশে
.        কিসের তরে কোথায় যেন গিয়েছিল সে
.        কি যেন প্রাণের কথা বলে গেল কে ?

.        যেন সে চাঁদের কোলে তারার সনে
.                খেল্ তো দিবা নিশি |
.        যেন সে ফুলের সনে হেলে দুলে
.                নাচতো সুখে ভাসি  ||

.        যেন সে মধুর আলো গায়ে মেখে
.                চল্ তো বাতাস ভরে
.        যেন সে শূন্যে মিশে
.        যেতো ভেসে দেশ দেশান্তরে |

.        যেন সে প্রাণের ভিতর ধরত কত
.                সোহাগের ফুল
.       আপন মনে থাকতে সদা
.                     ঘুমে ঢুলু ঢুলু |

.       জানতো যেন আকাশেতে
.                     বাড়ী ঘর তার |
.      আর কি কোথায় আছে কিনা
.              জানতো নাকো আর ||

.      যেন সে ভেসে ভেসে দেশে দেশে
.              ধরতো ফুলের হাসি |
.      কত সাধ করে আপন গলায়
.               পরতো প্রেমের ফাঁসি  ||

.      যেন সে চাঁদের চুমোয় বিভোর হয়ে
.               হতো আপন হারা
.      মলয়ানিলে কোলে করে
.               ভাবতো পাগল পারা ||



.        যেন সে ঘুমের ঘোরে চম্ কে উঠে
.          চাইতে চারি ধার |
দেখতো কাছে সদা আছে
.          মুখখানি কার ||
.   এখন যেন সেখান হতে যাচ্ছে চলে সে |
.    কি যেন প্রাণের কথা হলে গেল কে  ?

.        *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর