কবি পবিত্র কুমার আচার্য্যর কবিতা
*
ছায়াবৃত্ত
কবি পবিত্র আচার্য্য

ইতিহাসের
         ছায়াবৃত্তে দাড়িয়ে সে মেয়েটি
         দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
বুঝতে
         সে পারে না
         জ্যামিতি না পরিমিতি?
এ শহর
         লুম্পেন দের আঁতুড় ঘর
অবলুণ্ঠিত
         হয় তার লজ্জা-শরম
মৃত্যু হয়
         এক সরল কস্তুরীর।
উদরের
         অসহ ক্ষুধা নল
ভোগ করে
          তার উরুর ব্যথা
রাক্ষসের
          করাল চুম্বনে।


মনের ক্যানভাসে
               তুলি দিয়ে আঁকা
সে পুতুল ঘর
             হয়ে যায় স্বপ্ন-ভঙ্গ
ক্ষুধাতুর বক্ষের
             জঠর  জ্বালা
নিয়ে যায়
              নীল রাজ্যে
এর পর
           প্রতি-দিন, প্রতি-রাত
সপে দিতে
           চায় না মণ
তবু দিতে হয়
           তার আপন ইজ্জৎ।
তলপেটের
          শিরা-গুলি ছেঁড়ে
মধু রাক্ষসের
          অতিপ্রসুক্তির টানে,
রক্তের অণুচক্রিকা
          জমাট বাঁধে
ফ্যালোপিয়ান
           নলের গভীর ক্ষতে।
তবুও দিতে হবে
           আরও-আরও বেশী
ক্লান্তির ক্ষমা
          নেই ওদের কাছে।

মন ঘুমিয়ে থাকে
            শরীরের যৌন ভাষে
ইচ্ছার দাম নেই
            বুকের পেশীর ভাঁজে।
কখন সে মরদ
            প্রাণ-হীন শরীর-টাকে   
নিয়ে করে
            উন্মাদের প্রলয় নাচন।
এই শরীর
           খোজে না উষ্ণতা
মেকি
           মত্ত আদরে
তবুও করতে
           হয় নাটক
ভুল
   মন-ভোলানো শীৎকারে।
এ মেয়ে
      আজো বোঝে না
এই শরীরের
     জ্যামিতি না পরিমিতি?

চাঁদের কলঙ্ক আছে
      এ দায় কার?
যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ,
      মেলে না হিসাব
ইতিহাসের
         ছায়াবৃত্তে দাড়িয়ে সে মেয়েটি।।

.       *************************           

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
কফিন থেকে স্বাধীনতা
কবি পবিত্র আচার্য্য

আমি ৬*৭ এর
           নোনা দেওয়ালের কফিনে মোড়া
           জ্যান্ত লাশ,
           আমার নিবিড় স্বপ্নময় ভাবনারা
           বোকা বাক্সে বন্দী -
           মগজ থেকে শরীরের তার বেয়ে বেয়ে
           স্যাঁত স্যেঁতে  মেঝে টাকে
           স্পর্শ করে ঘোরা ঘুরি করে
           ধুমসো কালো নিস্তব্ধ ঘরটা তে।
           দেওয়াল ভেদ করে বেড়িয়ে
           পরতেই কি ভয়ানক জিজ্ঞাসা -
           যদি গলা চেপে ধরে একশো কোটির
           কালো হাত।

আমি চিৎকার করে গলা ফাটাই
         কিন্তু নিজের আওয়াজ নিজেই
         শুনতে পাই না কখনো।
         আমি চাই শহীদের বেদীতে
         শান্তির ফুল ফোটাতে,
         আমি হা হা কার করি
         অভাবের ঘনত্ব কমাতে,   
         আমি স্বাধীনতা চাই
         শিক্ষার জন জাগরণে,
         আমি মুক্তি চাই
         মুক্ত চিন্তা বপনে।

আমার শত কণ্ঠের আর্তনাদ,
         আমার প্রতিবাদের ভাষা
         বোকা বাক্সে বন্দী।

এমনি করে নীরব শুধু,
         মানুষ সবাই লাশ
         নব চেতনা আসবে কি ভাবে
         বন্দী গোটা সমাজ।     
         প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নেয় শাসক
         গণতন্ত্র এর টুটি চেপে,
         তবে পরিবর্তন আসবে নিশ্চয়
         সত্যের কাঁধে চেপে।
         বোকা কফিনে বন্দী থেকো না,
         জাগ্রত জনতা,
         জাগো,জাগাও
         বুঝে নাও আজ নিজের স্বাধীনতা।

.              *************************           

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর