কবি পৌষালী সেনগুপ্ত-র কবিতা
*
একবার পৃথিবীকে সাক্ষী রেখে বোলো, ভালবাসি
কবি পৌষালী সেনগুপ্ত

একবার পৃথিবীকে সাক্ষী রেখে বোলো, ভালবাসি
একবার বেঁচে নেবো হাজার মরণ পার করে,
ছাতিম ফুলের গন্ধ দুপুরের সন্মোহনী বাঁশি
সব ছেড়ে দিতে পারি, শীতের কুয়াশামাখা ভোরে
জিভের আশ্লেষে যদি শুষে নাও সব হাহাকার
দুবাহুর নিষ্পেষণে রাত্রি হয়ে ওঠে গন্ধরাজ,
ভেঙে যাক বৈধাবৈধ , বিধিনিষেধের সীমারেখা
সমস্ত কবিতা আমি তোমাকেই দিয়ে যাবো আজ

তারপর ---

পরিণতিহীনতায় খুঁজে নেবো শেষ আশ্রয়
তুমিও নতুন সুরে বেঁধে নিও অলৌকিক বাঁশি
বিদায় সম্ভাষণ, প্রচলিত হাত নাড়া শেষে
পৃথিবীকে সাক্ষী রেখে একবার বোলো “ভালোবাসি”


.              *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
তোর সন্ধানী চোখ বুকের ভেতর তীরের ফলা
কবি পৌষালী সেনগুপ্ত

তোর সন্ধানী চোখ বুকের ভেতর তীরের ফলা
তোকে বলবো ভাবি অনেক কিছুই, হয়না বলা |

তোর রঙচটা জীনস্ পাঞ্জাবীতে আগুনপাখী
তোকে বলতে গেলেই লজ্জাগুলো কোথায় রাখি ?

তোর  দীর্ঘ আঙ্গুল, অনামিকায় অলস দুপুর
তোকে স্মারক দিলাম পদচ্যুত সোনার নূপুর |

এই ছেলে তুই সেই নূপুরের একলা রাতের
কান্না লিখিস পশ্চিমের ওই বারান্দাতে |

.           *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
ভাবের ঘরে করছো চুরি অসাবধানী
কবি পৌষালী সেনগুপ্ত

ভাবের ঘরে করছো চুরি অসাবধানী
ছুঁড়ছো হাওয়ায় বেয়াক্কেলে শব্দ যতো
কবিতা আর হয়না লেখা অনেকদিন-ই
দশ আঙ্গুলে ছড়িয়ে পড়া গভীর ক্ষত

এর চে’ ভালো যাদুর খেলা জানতে যদি
জলের নীচে জারিয়ে রাখা আগুনে ভ্রূণ
খেল মাদারী দশটা আঙ্গুল ঠিক সাঁড়াশি
জাগার আগেই ঘুমপাড়ানি জিঘাংসা ধুন  |

কিন্তু তুমি পারলেনা তাও অস্থিরতায়
স্পর্ধা ছুঁয়ে বাড়তে থাকা যৌন খিদে
আজো তুমি জল কালিতে লিখছো চিঠি
খামের ওপর ঠিকানা  থাক মনোবিদের |

.           *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
মুছে যায় পদচিহ্ন দূর থেকে দূরে
কবি পৌষালী সেনগুপ্ত

মুছে যায় পদচিহ্ন দূর থেকে দূরে
ফেলে রেখে যায় কিছু ঝুরো বালি, ছবি
ছেড়ে যাওয়া কাকে বলে বুঝিনি এখনো,
বুঝিনি অবুঝ কে, কবিতা না কবি ?

বুঝেছি শরীরী খিদে আগুনের আঁচ
দৃঢ় দন্ড, যোনিমুখে কেঁপে ওঠা তিল
গোপন প্রবেশদ্বার অবাধ উন্মুখ
ডানা ঝাঁপটিয়ে মরা দুটো গাঙচিল |

বহতা জলের বুকে আকাশের ছায়া
প্রাণের গভীরে এক জেগে ওঠা প্রাণ
সত্যি নয় স্বপ্ন, তবু তাকেই চেয়েছি
তোমার আমার সেই অজাত সন্তান |

ছেড়ে যাওয়া  ?

ছেড়ে যাওয়া কাকে বলে এখনো বুঝিনি
কবি নয়, আমি সেই কবিতাকে চিনি |

.           *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
জীবন জোড়া ভ্রমণ কাহিনীরা থামছে এখন একলা চায়ের কাপে
কবি পৌষালী সেনগুপ্ত

জীবন জোড়া ভ্রমণ কাহিনীরা থামছে এখন একলা চায়ের কাপে
কাঁটার সাথে উলের বৈরীতা, আঙ্গুল কাঁদে নিছক অনুতাপে
পশম বেয়ে বাড়তে থাকা ওমে, ফাটল ধরায় ঈর্ষাগত খাদ
ভালোবাসার রক্ত চেটেপুটে, জীবন, প্রিয় জীবনটা বরবাদ,
ঘুমপাড়ানি তাবৎ আয়োজনে, ফাঁক ছিলো না, ফাঁকিও নেহাত কম
সাপের মুখে গড়িয়ে যেতে যেতে, ফুরিয়ে গেছে সিঁড়ি ভাঙার দম
দমের থেকে দম্ভ বড় হয়ে কখন যেন বাড়িয়েছিলো হাত
নাগাল থেকে ফস্কে যাওয়া ঘুড়ি, মুঠোর থেকে আলগা হওয়া রাত |
জখম সুতোর কান্না নিয়ে বুকে, লাটাই তখন প্রভাতী সংবাদে
অনেকটা পথ পর্যটনের শেষে, ক্লান্ত ঘুড়ি স্বপ্ন দেখে চাঁদের |

.                    *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর