হাঁ করা মুখ গুলো দেশ জুড়ে কি জানায় ওদের অস্তিত্ব না বেঁচে থাকার তিতিক্ষা? জীবন্ত মন কে যদি প্রশ্ন রাখি অজ্ঞতায়, পাশ কাটিওনা দোহাই চাই যে কিছু জ্ঞান।
এতো আয়োজন সাজ সাজ রব কাদের জন্য? বিদেশী তকমা অর্থনৈতিক ডামাডোল সাতকাহন। বুদ্ধি দিয়ে আর কিচ্ছু হবেনা আগে বিচ্ছু চোরগুলো ধরো। এরা সেই চোর যারা রাতের ঘুম কেঁড়েছে আমার ওদের কেঁড়েছে খাবার।
একটা দুটো নেংটি ধরলে কি হবে, নেংটি কিংবা ধেড়ে গেছে অনেক বেড়ে। সব ব্যাটা খোসামুদের কালো ব্যাগ সিল করে মোহর কেড়ে নাও লুকোনো গর্ত থেকে, রাজকোষ করো পূর্ণ। হোক কর্ম সংস্থান বাঁচুক হাঁ করা মুখ গুলো। এরা সেই চোর যারা রাতের ঘুম কেঁড়েছে আমার ওদের কেঁড়েছে খাবার।
খেলার দোকানে চোখ যেতেই দেখি ঝোলানো ফুটবল, ফুটবল দেখতেই কতো হারানো স্মৃতি মনে পড়ে যায় . কতো সাফল্য, কতো ভালোবাসা, . কিশোর তখন দেহমনে অদম্য শক্তি, . পায়ে অসম্ভব কিক সুন্দর পাস . ড্রিব্লিং আর দূরন্ত ঝোড়ো গতি।
সবাই ভালোবাসে পরিচিতি কয়েক গ্রাম ছাড়িয়ে; ভাড়া খাটি অন্য দলের,পুরো পেশাদার খেলোয়াড়। . জগতটা তখন মনে হতো মুঠোর মধ্যে, . মনে হ'তো এভাবেই কেটে যাবে দিন; . অনেক ম্যাচ খেলে অনেক সুনাম . পেলাম অর্থ মান যশ খ্যাতি সব।
কর্ম জীবনে প্রবেশ করলাম, সংসার করলাম, কাজে কর্মে দিন কিভাবে কেটে গেলো বুঝিনি। . '৫০ ঊর্ধ্ব একাদশে'র হয়ে মাঠে নামি, . একটা দৌড়ে পার করবো মাঠ- ভাবি, . 'অবিবাহিত একাদশে'র চনমনে গড়া দল, . শিকারী পাখি হয় তারা আর আমি শিকার।
জীবন সায়াহ্নে উপবিষ্ট বয়স্ক নাগরিকের নানাসুখ ভোগ করেছি অনেক ব্যর্থতা দাঁতে দাঁত চেপে । . মাঠের দিকে নজর কাড়েনা আর . মনটা শুধু পুরোনো স্মৃতি হাতড়ায়, . পাড়ায় পল্টুর দোকানে চোখ যায় যখন- . দেখি ঝোলানো আছে অনেক ফুটবল।
ময়নামতীর ক্ষীণ ধারা শুকিয়ে যেতে যেতে বলে, "যখন স্রোতবতী ছিলাম সে ছিল গল্প এক দুরন্ত যৌবনার। আমার ভরাট বুকে কত বড় বড় জাহাজ বয়ে নিতাম। বয়সের ভারে ইতিহাস আমি, স্নায়ুতে অনুভব করি অসহ্য দুর্বলতা। সার্থকতা নেই উন্মত্ত উল্লাসে, শ্বাস প্রশ্বাসে, হাতছানি নেই। মজা নেই আজ শুধু মজে গেছি, স্রোত বয় না আগের মত জলে।"
জলের কোন বন্ধু হয় না, পদার্থবিদ বলে তাকে নিরাকার । সে যে স্বার্থপর প্রৃকতির অকৃত্রিম কৃপণতা । আসে আর যায় বন্ধুর মত, অঢেল সুখের সময়ে মধুকর হয়ে আসে, নিতান্ত দুঃখে তারা কেউ থাকেনা পাশে ।
"আমার কত বন্ধু ছিল, কি নাম তাদের মনেও পড়েনা। ভাসত আমার প্লাবন জলে। ঘাটের পাড় আজ কারো নজর কাড়েনা । তখন জোয়ার জলে ভাসিয়ে দিতাম ওদের মন বিলাসী ময়ূরপঙ্খী।"
"তখন ওদের সুখের নীড়ে বসত ছিল আমার। অজানায় দিতাম পাড়ি কোন কিছু না ভেবেই। দোল দোলান হিল্লোল যৌবনঘন সম্ভাবনায়, উষ্ণ বুকের তপ্ত পরশ সংগীত হয়ে ঝরত।"
শুষ্ক চোখের জলের বাঁধ কবে শুকিয়ে গেছে। আজ সে বহে শীর্ণা কায়ায় শেষ জোয়ারের টানে। সময়ের চাকা এগিয়ে চলে জীবনের চাকা পিছে।
ময়নামতী জীবন সাঁঝে না বলা নীরব ব্যথা । বুক চেপে রয় পায়না বন্ধু, ডাক দিল শেষে করূণাসিন্ধু । ময়নামতীর বালুচরে আজ রয়ে যায় শুধু অগ্নিদগ্ধ বালু ।
উড়ন্ত এই জীবনে প্রাণ ভ'রে শুধু হাওয়া খাওয়া। গাছপালা ঘর বাড়ী মানুষজন ছেড়ে উপরে যাওয়া । সাদা কালো মেঘেদের সাথে অনেক ভালোবাসা হয়। গর্বে বুকটা বারে বারে ফুলে ওঠে, গোত্তা মারে লাট খায়।
মালিক কতো কাটাকাটি খেলা করে যেন মমত্ব ছাড়া ই ঘুড়ি ওড়ে উপরে আরো সুতো যত ছাড়তে থাকে লাটাই। খুশি মনে থাকে ঘুড়ি ভাগ্যের চাকা পাল্টি খেয়ে দেখায়, দেখ কতো ওঠা নামা জীবনের জলছবি আলো ছায়ায়।
প্রতিদিন নিয়ম সুতোয় বেঁধে নিজের পথে জীবন চলে। ঝোড়ো হাওয়ায় টলমল করে, সুতো বুঝি কাটে ঝঞ্ঝা এলে। বিদ্যুৎ ঝলকানিতে ঘুড়ি বিবর্ণ হয় ক্ষণিক, আবার চলে খেলা। আরেকটি ঘুড়ি বন্ধু পেলে কথা হয় সুখ দুখের সারা বেলা।
কাগজের পলকা দেহ রৌদ্র জল হাওয়ায় জীর্ণ হয়। কখনো প্রবল ঝড় ঝঞ্ঝায় অকালেও প্রাণ ঝ'রে যায়। যদিও টেকে খেলা শেষ হ'লে মালিক ছিড়ে ফেলে। আকাশে নতুন মেঘ নতুন আশা নতুন ঘুড়িরা খেলে।