প্রচন্ড প্রখর রোদে উত্তপ্ত সোনা গলা রোদে
অবিশ্রাম ক্লান্তিহীন কর্মযোগী
মজুরের ছবি, এক ঘটি জল আর বাসি ও শুকনো
এক বাটি ভাত তিনটে নিত্যকালের মধ্যাহ্নের জন্য
এক বাটি পান্তার ঝোলও নিশ্চিন্ত বরাদ্দ নয়
যেমন চিরকাল এই মধ্যাহ্নের দাবদাহ ওদের পাওনা |

আমি একটা সায়াহ্ন দেখেছি
সন্ধ্যারতির নামে বিরাট দেবালয়ের ধারে
মস্ত ঘোমটা টেনে কাঙ্গালীর মিছিলে দাঁড়াল
বাংলার সলজ্জ সধবা |  অসুস্থ স্বামীর জন্যে, সামান্য আহার,
সংকোচের সীমা মেপে পুণ্যার্থীর বেশে তার হোক অনাচার |

আমি একটা রাত্রি দেখেছি
কুমারী কন্যার পূজো যখন মন্দিরে সংসারে
তখনও মাংসকাটা দোকানের চেয়েও চটপটে
ব্যবসায়ী ঘরে ব্যস্ত আছে, ষোড়শী ব্যভিচারে,
রাত্রির কুসুম জাগে ভোরের প্রকাশে
অন্নক্লিষ্টা অসহায়া ষোড়শীরা অনাবৃতা রাতের আকাশে |

.               ******************     
.                                                                               
সুচিতে...   


মিলনসাগর
কবি প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সীর কবিতা
*
ভেঙ্গে চূরমার সাম্রাজ্যবাদের তাঁবু |
কমরেড হো বলেন কান্না নয় লড়াই দাও-----

আমরা বোমার আঘাতে ভাইকে হারাই
ভাই-এর রক্তে পথকে রাঙ্গাই---
মনে মনে বলি বদলা প্রাণ নয় বদলার স্বাধীনতা চাই |
আমরা ট্যাঙ্কের তলায় গুঁড়িয়ে যাই
সেই পাঁজর দিয়ে হাতিয়ারের বাঁট বানাই |

আমাদের চোখের জল রক্তের স্মৃতি
আমাদের মৃত্যুর চেয়েও লড়াই সাথী
তাই কবরে কফিনে, শ্মশানে-মশানে
*
জীবনদর্শন      
প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী
কমরেড হো জিন্দাবাদ      
প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী
কমরেড হো বলেছেন লড়তে
অমনি সাইরেন বাজিয়ে গ্রামে
আমেরিকার তরমুজের মত সে
কুচকুচে কালো অথবা টকটকে
জবাব দিয়েছি কান্তিহীন ব্যারে

কমরেড হো বলেছেন মরতে
অমনি সামনের সারিতে লাইন
থেকে যুবতী শানুথিন্ -- এর
ধানক্ষেতে, জলার ধারে, কুঁড়ে

চোরের মত রাতের আকাশ
লালমুখো মুলোর মত সেপাই
পালিয়ে গেল সি-আই-এর আ

কমরেড হো বলেছেন জিততে
আমরা এই মুহূর্তে সূর্য ওঠার
হলুদ সরষে ক্ষেত, পাকা সোনা
ভাইবোনের কবর আর শবের
চোখের জলকে আগুন করে,
আস্তে বা জোড়ে পথ করে এসেছি  |  মেশিনগান
ট্যাঙ্ক, কামান, আর উড়োজাহা
স্বাধীনতার গান এত জোড়ে বা
যোজন পত পার হয়ে আমি তোমারই কাছে আসছি,
সেই কবেকার ঘরছাড়া অথবা নিরুদ্দেশ আমি তোমাকে দেখিনি
অথচ প্রতি মুহূর্তেই তোমার ইশারায় হেঁটেছি পথ,
চুরমার করেছি দুর্গ শত্রুকে দমন করে
তোমারই নামে মিছিলে দেখেছি এক নাম
হঠাৎ কোন এক সন্ধ্যায় কালবৈশাখীর ঝড়ে আমরা ছত্রভঙ্গ,
তোমার ছবিটা গেলো মিলিয়ে. কেননা অন্ধকারে তোমায় যায় না দেখা
সেই থেকে অন্যান্য মানুষের চেয়ে আমি অনেক দূরে |
এখানে এসে দিয়েছি তোমায় চিঠি, জানিয়েছি এখানকার সবকিছু অন্ধকার |


বাতাস এখন মন্থর,
মিলনসাগর  
আকাশ এখানে মেঘাচ্ছন্ন
তৃণ শস্যহীন এই নিঃসীম প্রান্তরে
সবুজের বিরুদ্ধে প্রতিদিনের বিদ্রোহ |
রাতদিন একাকার হয়ে বর্ণ গোত্র ধর্মহীন জানা অজানার কিছু প্রাণী,
আমাকে বিস্ময় ভেবে দয়া করে, করুণার পাত্র এনে বিষ ঢেলে দেয়
আমি যে নীলকন্ঠ নই, কৈলাসের দিকে যাত্রা করার শক্তি নেই
তবুও কোথায় যেন প্রচন্ড বিশ্বাস
মর্ত্য থেকে ছুটে আসা বসন্তের বাতাস আশস্ত করবে আমাকে |
এই কবিতাটি মিলনসাগর থেকে চুরি করে এখানে তোলা



তুমিও তো পারতে দুফোঁটা চোখের জল ফেলতে,
তোমার অনেক যত্ন করে রাখা সিঁদুরের একটা টিপ
অবশ্যই প্রত্যাশিত ছিল তোমার কপালে আমার নামে |
আমার শেষ হয়ে যাওয়া শুক্ নো দেহটাকে
বিশ্রামের জন্য চালান করে দিলে ঠান্ডা ঘরে
তুমি দ্বিচারিণী বা আমায় ত্যাগ করেছিলে এমন কোন প্রমাণ নিয়ে আসিনি
তবুও আমার সঙ্গসুখের থেকেও কোন কিছুর কামনা
প্রবৃত্তির তাড়নার মত তোমাকে মাতাল করে, তুমি জানতে না |

দ্যুলোকে ভূলোকে ঘেরা এত ছন্দ ভরা জীবন
মুহূর্তের জন্য ভুলেও করেনি কোথাও আত্মসমর্পণ
.
মিলনসাগর.কম তুমি ছাড়া অন্য কোন জীবনের ধ্যানে ||

বিশ্বাস অবিশ্বাসের গার্হস্থ রীতির কথা না হয় বাদ দিলাম----
লাভক্ষতির চূড়ান্ত ব্যবসায়িক দিকটা না হয় ছেড়েই দিলাম,
.              কিন্তু সেই অভ্রান্ত সত্যের মত
যা আমার চোখের তারার আর তোমার চোখের স্মৃতিতে এখনো স্পষ্ট ----
.              তাকে অস্বীকার করি কি করে ?
যাবার এই মুহূর্তে তুমি পাশের ঘরে ব্যস্ত,
সমস্ত মিলনসাগর
তোমার গোছগাছ, ভবিষ্যৎ, নূতন জীবনের সাড়ায় তুমি উত্তেজিত |  তাই
বিদায়বেলার বাঁশী সুরের অভাবে বন্ধ, সন্ধ্যা এখন স্তিমিত ||
*

.     ******************     
.                                                                               
সুচিতে...   


মিলনসাগর
ন্না নেই, বেদনা নেই, আছে লড়াইয়ের গান |

ওঠেনি
পুব দিকটা টকটকে লাল
ক্তের মশাল-----
কাল বেলার উত্তাল |


রক্তেভেজা রৌদ্রলেখা নাম
পদ্মে সবার ইনাম-----ভিয়েতনাম

. প্রহরজাগা রাত,


বলেছেন বাঁচার মত বাঁচতে হবে----
সেই সংগ্রামের জন্য
শস্য প্রান্তরে
ণের মূল্যে

রেড হো’র নির্দেশ-----
|

বাদ ধূলিসাৎ
জিন্দাবাদ ||
তাই একটু পরেই দেখি রক্তে লেখা নাম
ত্যাশায় আমরা অধীর |  সেলাম,
উদ্যানে মুক্তির পারিজাত
সাদ গড়ছি, যার মালিক আমরা সবাই |
প্রাণ ছাড়া এই দিনে দেবার কিছু নাই |

অনেক দিয়েছি প্রাণ
অনেক গেয়েছি গান |
সত্তরের দশকের রেখেছি সম্মান |

এবার নেবার পালা---,
এখন ভোরের বেলা কোন কথা নয়
আগে আগে পা ফেলে
বাঁধ ভেঙ্গে দ্বার খুলে হয়েছি নির্ভয় |

যতটুকু স্বাধীনতা জমা আছে এই ঘরে নিয়েছি হিসাব
আর কতটুকু হলে
গণতন্ত্রে ফুলে ফলে
শোষিতের লাঞ্ছিতের ঘুচবে অভাব |

গৃহবাসী দ্বার খোল-----
অবসাদ ভেঙ্গে বল আগে যেতে চাই,
অন্যায়ের বাঁধ ভেঙে ঐ শোন বেজে ওঠে ভোরের সানাই |

.       ******************     
.                                                                               
সুচিতে...   


মিলনসাগর
*
তিয়েনমিয়েন ঘিরে অনেককেই দেখতে পাচ্ছিনা
মসনদে মৃত্যুর ছায়াগুলো
জল্লাদের মত আমাদের ও চারধারে
.                                      ঘোরাফেরা করে
সেরি পেরামবুর রাত নিধাঘের অশনি সংকেত-----
রাজঘাট, শান্তিবন থেকে সংসদের আনাচে কানাচে
স্বগতোক্তি থেকে থেকে আত্মস্থ করে
দর্শকের উচ্ছিষ্টের মত বন্দুক নির্ভর সব ইন্দ্রের সংসার

খাপে ঢাকা তলোয়ার নিয়ে-----
.                         উষ্ণীষ বাঁধা রাখে,
রাত্রির দুঃসহ অবসাদ শেষে
নবকিশলয় দল প্রত্যুষের সূচিপত্র লেখে-----
আমরাও অপেক্ষায় থাকি
অস্থির মুহূর্তগুলো শুনি
কাকাতুয়ার শেখানো কথার প্রতিধ্বনি নয়
কমপিউটার প্রিন্টারের ঝকঝকে তথ্য
সত্য মিথ্যার পাহাড়ে চড়া অভিযাত্রীকে
সাহায্য পৌঁছাবে কি অনায়াসে ?
এখন মধ্যাহ্ন, বেলা সাগরে উজান
তবু কিছু চেষ্টা হোক,
শুরু করা যাক্
অবশিষ্ট জাতকের নয়া অভিযান ||

.         ******************     
.                                                                               
সুচিতে...   


মিলনসাগর
*
যদি পার, এসো            
প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী


ফোঁটা চোখের জল ফেলতে---

. র প্রতি
. বসন্তের অবিশ্বাস তীব্র

. মবেদনা নিয়ে
. ড়াতে অথবা আমার পাশে দুবাহু বাড়াতে ||

. ন ----

.     ******************     
.                                                                                                
সুচিতে...   


মিলনসাগর
ভোরের সানাই            
প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী
এখন মধ্যাহ্নে           
প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী