কবি রাজীব চৌধুরীর কবিতা
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।
*
চোখ ও ঘেন্না কাহিনী
কবি রাজীব চৌধুরী

তোমার চোখের কাজলে এখন লুকিয়ে থাকে শয্যা যন্ত্রণা
কালো কালো চোখের কাজলের ওজন কান্না থেকে ভারী হয় যখন
তখন তুমি লজ্জা পেয়ে মুখ লুকাও সেই চাদরে
যাকে তুমি আঁকড়ে ধরে রাখতে চেয়েছিলে সহবাস কালে খড়কুটোর মত
মুঠো মুঠো বৃষ্টি ঝড়েছিল বলে টের পায়নি কেউ চোখের জলকে
শুধু ফুলকে ফুল ভেবে উঠিয়ে দিয়েছিলে ট্রেন স্টেশনে
ফুল চলে যাবে- বৃষ্টি চলে যাবে- চলে যাবে যৌবন তোমার
শুধু থেকে যাবে ক্লান্ত দেহের এপিটাফ-যেখানে একদিন আবার চুমু খেলা করতো।
রান্না ঘরে পড়ে থাকা খাবারের খোসা দেখে কি মনে পড়ে একদিন
তুমি বাড়িয়ে দিয়েছিলে প্রেম পত্র
আমি সেই প্রেমের জানু থেকে জঙ্ঘা অতিক্রম করেছি কাম যন্ত্রনায়
এতকাল জেনেছিলে ভালবাসি- আজ জেনে নাও প্রচন্ড ঘেন্না করি তোমায়।
পাশাপাশি দুটো ডিম যদি সমান দূরত্বে না থাকে
তবে যেভাবে ভেঙ্গে যায় ডিমের খোসা
সেভাবে ভেঙ্গে গেছে মনের সকল ইচ্ছে দেয়াল
এখন এখানে শুধু ঘেন্না খেলা করে- খেলা করে রোদ বৃষ্টী-সাথে শিলা ঝড় তোমার জন্য

.               
       *************************  

.                                                        
                                  সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
যৌন কান্না
কবি রাজীব চৌধুরী

সঙ্গম সংক্রান্তিতে যে নারী পুরুষের চিবুক গিলেছিল
আজ তার হাতে অন্য পুরুষের আস্তিন
প্রচন্ড ক্ষুব্ধতায় আসীন যে জীবন বালুচর হয়েছিল যৌনতায়
তাকে ভুলে থাকার অস্থিরতা এনে দেয় অন্য কোন দেহ

দেহ নাকি মাংসের স্তুপ? স্তন নাকি চামড়ার ফরাসী আস্তিন?
যে দেহে চুমু খাওয়া যায় যৌনতা ভুলে থাকার জন্য
সেই দেহ প্লাস্টিক নাকি সিলিকনের তা কোন বাঁধ মানেনা মনে।

চারিদিকে এখন শুধুই সঙ্গম সংক্রান্তি
নারী পুরুষের অদ্ভুত আদীম আদুরে লীলাকীর্তন।

.                 *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
আমি স্বেচ্ছাচারী
কবি রাজীব চৌধুরী

আমি স্বেচ্ছাচারী
সকালের সূর্যের মত ফালাফালা করে দিয়ে প্রবেশ করি সকল মনের অন্তর গহীনে
যেখান থেকে নিভে যায় শেষ সাঁঝের প্রদীপ- এবং জ্বলে ওঠে অপবিত্র কালচে রং
আমার জটায় নেই কোন আগুন-তবুও জানি এই আগুনে পুড়িয়ে দিতে পারি
দিতে পারি সকল বুনোহাসের পায়ের ছাপকে অঙ্গার করে দিতে-
শুকনো পাতার নুপুরের ধ্বনি মুছে দিয়ে নেভাতে পারি একরাশ বটশাখার দুঃখ
কারন-আমি স্বেচ্ছাচারী
চুরমার করে দিতে পারি তোমার সকল অহংকার-চুরমার অন্ধকার ভেঙ্গে ঢেলে দিতে
পারি আমার সকল অশ্রু ক্ষোভ-
লুকিয়ে থাকা আরশোলাদের যেভাবে বের করে আনে ঠিক সেভাবে আমি তোমাকে-তোমাদের
শুধু বের করে আনব প্রখর সত্যের মুখোমুখি-
কারন আমি স্বেচ্ছাচারী।।

.                 *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
প্রেম ও কাব্য
কবি রাজীব চৌধুরী

দাঁড়াও - এইখানে দাঁড়াও - এইখানে
আমার ঠিক সমান চিবুকে তাকিয়ে থাকা ইচ্ছেদের মাঝে খেলা করা পোকামাকড়ের মত
আমাকে লালন করে দাও ইচ্ছে সংগীতে- কিংবা সত্য আদুরে দাপটে -শুধু এই খানে
ঠোঁটে ভালবাসার লিপ্সা নিয়ে তাকিয়ে থাকা ভাদ্র মাসের চিলের মত চুষে খাও নিদারুন ইচ্ছেদের
যেমন করে খেতে চেয়েছিলে সেই অজানা বিষফল- ঠিক সেই ভাবে
সেখানে চিল উড়ে যায়- ভ্রান্ত দাওয়ায়- কিংবা অতিন্দ্রিয় ইচ্ছে মুকুলে উড়ে উড়ে যায় ইচ্ছে পোকা
সেখানে ছিলনা কোন বসন্তের একঘেয়ে কোকিল- ডেকে চলা ঝি ঝি পোকা
শুধু ছিল একমাসের মাসিক বেদনা- তুমি ছিড়ে ফেলো- ছিড়ে ফেলো তাদের- রাঙ্গিয়ে দাও
টেনে টেনে ছিড়ো- শুধু ছুড়ে ফেলার আগে একবার জানিও- কোথায় যাচ্ছে ইচ্ছে পোকারা
কিভাবে থাকছে কামনা বিলাস- শুধু আমাকে শুদ্ধ করো- শুদ্ধ তম চুমু ভঙ্গিতে- সংগীতে
যেভাবে শুদ্ধ হয়েছিল যিশু এক কালে- ঠিক সেভাবে আমাকে পান করো- ঠিক সেভাবে আমাকে
ছেদন করো-নিরলিপ্ত ভাবে- নিকৃষ্ট লোভেদের সত্ত্বাকে জাগাও- ফেলে দাও ঠিক যেভাবে
একদিন আমাকে বিছানা থেকে টেনে তুলেছিলে আটার চাকতি বানাবে বলে।
একদিন বুকের জমিনে ছিল মেঘ- সেখানে বৃষ্টি হয়েছিল কাম বাসনা বিস্তৃত করতে
তুমি হাত বুলিয়ে দিয়ে আমাকে আপন করে নিয়ে যাবে বলে সেখানে আমি আঙ্গুর বুনেছি
দেখো- এইখানে- এইখানে দেখো
ইচ্ছেগুলো তোমার চোখের চারপাশে খেলা করে- অপেক্ষা করে কখন তুমি নিজ থেকে এসে দাঁড়াবে
খুলে দেবে দুই হাত- আমার চারপাশে- নাগ পাশ হয়ে বেঁধে দেবে বিমূর্ত ইচ্ছায়
দেখো- এইখানে আমার ঠোঁটে জমেছে মৃত কোষের জন্মচিহ্ন- সেখানে নেই কোন কনক্রিট কাম
শুধু একবার ছুঁয়ে দেখো- কিভাবে আমি তোমার মাঝে বুনন করে দেব অতৃপ্ত ভালবাসা-
শুধু একবার ছুলেই আমি তোমার জন্য এনে দেব এক ফাগুনের আগুন জ্বালা ভালবাসা
এইখানে -শুধু এইখানে আমার ঠোঁটে।।

.                 *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
জোছনার গান
কবি রাজীব চৌধুরী

আজ জোছনায় ডুবেছে শহর
চারিদিকে জমাট আলোক
চেয়েছলাম পালিয়ে যাব
ফিরবোনা নিষ্টুর শহরে
পালাতে গিয়ে দেখি
আজ জোছনায় ডুবেছে শহর

চাঁদের আলো নিষ্টুর লাগে আজ
পুড়ে পুড়ে যায় নীলচে মোহনা আমার
আকাশের বুকে ঝুলে থাকে অন্ধ কালো চাঁদ
চাইনি আমি চেয়েছিলাম এক মিষ্টি অমাবস্যা
সে অমানিশা আসেনি আজ
যেই আমি পালাব ভেবেছি
সেই দেখি জোছনা অপার

এ শহরে ঠাই হয় না ঘড় হারা বালকের আজ
শুধু খুঁজে পাই কামনার ছাই
এই জোছনা চাইনিকো আমি
আমি শুধু নিরেট অন্ধকার চাই

এই ঘন আলোকে পুড়ে যায় মন
এই পোড়া মন চলে যেতে চায়
পালাতে পারিনা এ শহরের পলাতক চাঁদ থেকে
পালাতে গিয়ে দেখি
জোছনায় ডুবেছে শহর।।

.        *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
শেষ কাব্য
কবি রাজীব চৌধুরী

নষ্ট হবার জন্য আমি উড়ে গেলাম নীল জোছনার বুকে
আমাকে কেউ পাবেনা খুঁজে তোমাদের এই হরিকেল শহরে

পেছনে চাঁদ কে রেখে হেটে চলি নীলচে বঙ্গ মেঠো পথে
সেখানে চেনা মানুষ ছিলনা কোন- ছিল শুধু এক পথের কাব্য
আমি সেই কাব্য বুকে চেপে চিনতে চেয়েছি মগধের নারী
সে নারীর কপিল আঁচলে গিট বাঁধা ছিল সমতট ভালবাসা

শুধু সেই ভালবাসা পেতে- আমি ছুটে চলি এই হরিকেল শহর ছেড়ে
আমাকে খুঁজে পাবেনা কোন হস্তগত রাতের নিবিষের মাঝে

আমি উড়ে গেলাম এই তটহীন পাংশু রাতে
কে জানে কোন আঁধারের ভালবাসায় আমি নষ্ট হব
কে জানে কোন পাহাড়ের বুকে আমার বসত হবে

শুধু হাত নেড়ে ভালবাসা পেতে-শুধু রাত গেলে ভোরের আবেগ পেতে আমি
চলে গেলাম তোমাদের এই কামরূপ ছেড়ে- রুপের মসলা যেখানে ছিল অবগত।

.                    *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
ইচ্ছে পোকা
কবি রাজীব চৌধুরী

দাঁড়াও - এইখানে দাঁড়াও - এইখানে
আমার ঠিক সমান চিবুকে তাকিয়ে থাকা ইচ্ছেদের মাঝে খেলা করা পোকামাকড়ের মত
আমাকে লালন করে দাও ইচ্ছে সংগীতে- কিংবা সত্য আদুরে দাপটে -শুধু এই খানে
ঠোঁটে ভালবাসার লিপ্সা নিয়ে তাকিয়ে থাকা ভাদ্র মাসের চিলের মত চুষে খাও নিদারুন ইচ্ছেদের
যেমন করে খেতে চেয়েছিলে সেই অজানা বিষফল- ঠিক সেই ভাবে
সেখানে চিল উড়ে যায়- ভ্রান্ত দাওয়ায়- কিংবা অতিন্দ্রিয় ইচ্ছে মুকুলে উড়ে উড়ে যায় ইচ্ছে পোকা
সেখানে ছিলনা কোন বসন্তের একঘেয়ে কোকিল- ডেকে চলা ঝি ঝি পোকা
শুধু ছিল একমাসের মাসিক বেদনা- তুমি ছিড়ে ফেলো- ছিড়ে ফেলো তাদের- রাঙ্গিয়ে দাও
টেনে টেনে ছিড়ো- শুধু ছুড়ে ফেলার আগে একবার জানিও- কোথায় যাচ্ছে ইচ্ছে পোকারা
কিভাবে থাকছে কামনা বিলাস- শুধু আমাকে শুদ্ধ করো- শুদ্ধ তম চুমু ভঙ্গিতে- সংগীতে
যেভাবে শুদ্ধ হয়েছিল যিশু এক কালে- ঠিক সেভাবে আমাকে পান করো- ঠিক সেভাবে আমাকে
ছেদন করো-নিরলিপ্ত ভাবে- নিকৃষ্ট লোভেদের সত্ত্বাকে জাগাও- ফেলে দাও ঠিক যেভাবে
একদিন আমাকে বিছানা থেকে টেনে তুলেছিলে আটার চাকতি বানাবে বলে।
একদিন বুকের জমিনে ছিল মেঘ- সেখানে বৃষ্টি হয়েছিল কাম বাসনা বিস্তৃত করতে
তুমি হাত বুলিয়ে দিয়ে আমাকে আপন করে নিয়ে যাবে বলে সেখানে আমি আঙ্গুর বুনেছি
দেখো- এইখানে- এইখানে দেখো
ইচ্ছেগুলো তোমার চোখের চারপাশে খেলা করে- অপেক্ষা করে কখন তুমি নিজ থেকে এসে দাঁড়াবে
খুলে দেবে দুই হাত- আমার চারপাশে- নাগ পাশ হয়ে বেঁধে দেবে বিমূর্ত ইচ্ছায়
দেখো- এইখানে আমার ঠোঁটে জমেছে মৃত কোষের জন্মচিহ্ন- সেখানে নেই কোন কনক্রিট কাম
শুধু একবার ছুঁয়ে দেখো- কিভাবে আমি তোমার মাঝে বুনন করে দেব অতৃপ্ত ভালবাসা-
শুধু একবার ছুলেই আমি তোমার জন্য এনে দেব এক ফাগুনের আগুন জ্বালা ভালবাসা
এইখানে -শুধু এইখানে আমার ঠোঁটে।।

.                
         *************************  

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর