কবি শ্রীরামমতির কবিতা
*
ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা
কবি শ্রীরামমতি

কোথা ওহে দয়াময় জগত জীবন,
কৃপা করি কৃপাময় দেহ শ্রীচরণ।
যতেক সঞ্চিত পাপ করিয়া স্মরণ,
খেদেতে অন্তর মম করিছে ক্রন্দন।
পাপের সাগরে নাথ হইয়া পতিত,
জানিতে না পারি নিজে কোন হিতাহিত।
একেত অবলা নারী জ্ঞান বুদ্ধি হীন,
তায় আরো বিদ্যাহীনা আছি চিরদিন।
বৃথা কাটাতেছি কাল সংসার মায়ায়,
চাই না কেমনে পাই তব পদাস্রয়।
দেখিতে মানব কায়ে কিন্তু পশু মত,
বিদ্যা-বুদ্ধি উপদেশে হইয়া বঞ্চিত।
কদাচারে বদ্ধ হয়ে সদা মন মম,
লঙ্ঘন করিছে কত তোমার নিয়ম।
তথাপি তোমার দয়া বর্ণিতে না পারি,
আনিতেছ ধর্ম্মপথে বলে আপনারি।
আমার যা অপরাধ সংখ্যা নাহি তার,
তেমনি তোমার দয়া অসীম অপার।
এইমাত্র আছে নাথ সাহস আমার,
ক্ষমিবে করুণা গুণে যত পাপাচার।
দূর কর দয়াময় দাসীর দুর্গতি,
দীনবন্ধো! দয়াকর এদীনার প্রতি।
নাহি জানি পিতা আমি তব স্তুতি নতি,
তোমা বিনা বিশ্বনাথ নাহি অন্যগতি।
কৃপাসিন্ধু নাম তব জানিহে নিশ্চয়,
চরণে আশ্রয় দিয়া দূর কর ভয়।
অনাতের নাথ তুমি নির্ধনের ধনষ
দুর্ব্বলের বল তুমি অন্ধের লোচন।
অগতির গতি তুমি পতিত পাবন,
নিজাশ্রয়ে রাখি সবে করিছ পালন।
পিতা মাতা ভ্রাতা ভগ্নী বন্ধু পরিজন,
না করে যতন কেহ তোমার মতন।
তোমার গুণের নাথ নাহিক তুলন,
সংসারের সার তুমি অদ্বিতীয় ধন।
কে বর্ণিতে পারে প্রভু মহিমা তোমার,
অপার মহিমা বর্ণি কি সাধ্য আমার।
তাহাতে যে পিতা আমি অতি অভাগিনী,
তোমার যথার্থ তত্ত্ব কিছু নাহি জানি।
দয়া কর দয়াময় এই অধীনীরে,
পরিত্রাণ পাই যাতে এই ভব তিমিরে।
তোমার নিকটে পিতা এই ভিক্ষা চাই,
করিয়া তোমার সেবা জীবন কাটাই।
কায়মনে প্রাণপণে যাবতজীবন,
হৃদয়ে তোমায় জেন করি দরশন।
যখন আসিবে সেই দুরন্ত শমন,
বলে ধরি লয়ে যাবে আপন ভবন।
প্রস্তুত থাকি হে যেন সেই অসময়,
অধীনী কন্যাকে নাথ দিও পদাশ্রয়।
তোমারে সহায় করে যেন জয়ী হই,
অনুক্ষণ ছায়া তুল্য তব সঙ্গে রই।
বার বার নমস্কার চরণে তোমার,
কৃপা করি লহ মম এই উপহার।

.        *************************        

.                                                                              
সূচিতে . . .    


মিলনসাগর