ফিরে চাও বালা, আমার এ মালা তুমি ভাল করে’ তুমি পরখ কর, ক্ষণ-মিলনের এ শুভ লগনে অন্তর-দীপ তুলিয়া ধর! . ভাল করে’ দেখ সে দীপ-আলোকে . এ ফুল কখনো পড়েছে কি চোখে, বাসনার নব দলগুলি তার রঙীন হয়েছে নবীনতর!
কত আশা করে’ গেঁথেছি এ মালা জীবনের সাধ পরাব গলে, পরশে তাহার কাঁকিয়া উঠিলে কি ব্যথা জাগিল মরম-তলে ? . নয়ন-মোহন ভোরের স্বপন . অন্তরপুরে ছিল কি গোপন, আজিকে সহসা ভুলে-যাওয়া গান মনে পড়ে’ গেল নয়ন-জলে!
তনু-দেহ তব কেন শিহরায় তপ্ত বুকের পরশ লেগে, পরশ-বিধুর বিগত দিনের মলিন মাধুরী উঠে কি জেগে ? . তোমার দীর্ঘনিশ্বাস বায় . মালার এ ফুল যদি বা শুকায়, তব মালঞ্চে কবি-মালাকর ফুলদল লবে আবার মেগে।
আমার এ মালা দিই নি কাহারে গাঁথা মালা মোর গিয়েছে ঝরি’--- পথে পথে তোমা খুঁজিতে আবার তুলেছি পুষ্পপাত্র ভরি’ ; . কত চেনা মুখে পড়িয়াছে আলো, . হয়তো কাহারে লাগিয়াছে ভালো, কেহ হাসিয়াছে নিকটে আসিয়া কেহ বা দাঁড়াল দু’বাহু ধরি’!
এ মালা তাই তো লুকায়ে রাখিনু বুকের আড়ালে জানে নি কেহ, পুষ্প-পরাগে করে’ প্রসাধন জানে না তাহারা ফুলের স্নেহ। . আমারে চাহিল, চাহিল না মালা, . জানে না তাহারা ফুলের কি জ্বালা, তাই তো তোমারে খুঁজি বারে বারে পথে পাব বলে’ ছেড়েছি গেহ।
আপনা বিলাতে যদি দেখা দিলে শেফালি বনের পুষ্পরানী, আজি কোজাগরী, হে প্রেম-নাগরী, শরমে দিও না ঘোমটা টানি। . ব্যথা জান বলে’ তোমারে জানাই . মম জীবনের কত বেদনাই, তোমারে জানাই ধূলি-বিমলিন বিফল মালার মরম-গ্লানি।
মখ পানে চেয়ে যদি কথা কও দেখিবে সেথায় আরতি করে এ দুটি তৃষিত নয়ন-প্রদীপ কম্পিত শত শঙ্কা ভরে ; . চির-রহস্যে ঢাকা আলো ছায়া . তারই মাঝে তুমি লভিয়াছ কায়া, দিনু শরতের অশ্রুধারায় হৃদয়-মাল্য তোমারি করে।