রাত্রিশেষে চাঁদ ঝুঁকে ছিল ঝাউগাছের মাথায়---- অল্প হাওয়ায় পাতার কাঁপন, আর সাইকেল রিক্সার সামনে থমকে গিয়েছিল . একটা কাঠবিড়ালি | আধোছায়া ভেঙে বালিয়াড়ি বেয়ে . গড়িয়ে নামে আলো, পুণ্যার্থীর বিশাল জনতা সমুদ্র আড়াল করে . জয়ধ্বনি দেয় |
ফিরে আসি, ভেসে-যাওয়া নৌকা আর . জলের অস্থিরতা পিছনে রেখে ফিরে আসি, দুপায়ে জলের দাগ আর . নোনা বাতাসের কামড় নিয়ে ফিরে আসি, সমুদ্র আর মানুষের শিল্পের . মাঝখানে বেড়ে-ওঠা . সময়ের প্রান্তর পেরিয়ে |
নিথর রথের চূড়া, চাকায় লেগেছে কিছু স্থবিরতা দেবতার মুখে ছায়া নামে ; সূর্য উঠে আসে মধ্য-আকাশে দেখি রৌদ্রের প্রখর্য সরিয়ে দিয়েছে সব . ব্যস্ত পর্যটকদের
এই কি জীবন, যখন জন্মদিনের শিরায় শিরায় . জড়িয়ে আছে মৃত্যুতিথির মেঘ ! মাটি থেকে উঠে-আসা কটু গন্ধ . আমার জেগে থাকার উপর ছড়িয়ে দিচ্ছে বিষ ! আর ওই তো আজ ভেঙে পড়ছে পাথর শিকড় পর্যন্ত উপরে আসছে ঝুরি-নামানো গাছ খাদের নীচ থেকে উঠে-আসা কুয়াশা . ঢেকে দিচ্ছে আমাদের স্মৃতিস্বপ্ন |
এইখানে আমার যাত্রা শুরু------কোন্ দিকে ! হাঁ-করা সময়ের সামনে দাঁড়িয়ে দেখি তোমার মুখ অন্ধকারে ঢাকা----- সেখানে শুধু কৃষ্ণাচতুর্দশীর কয়েকটি পঙ্ ক্তি |
ওখানে কেঁপে উঠছে কোন্ দীর্ঘশ্বাস ! আঁকড়ে ধরি ফাটল থেকে বেরিয়ে-আসা . ধারালো ঘাসের মুঠি----- তোমার অঞ্জলিতে ক্ষতমুখ থেকে ঝড়ে পড়ে রক্ত | খুব দেরি হয়ে যায় আমার | . তোমার দিকে তাকিয়ে জেনে নিই শুরু করতে হবে চলা----- কুয়াশা ছিঁড়ে . বেজে উঠছে হাওয়ার করতালি, আর লম্বা গাছগুলোর মাথায় একটা একটা করে . মশাল জ্বেলে দিচ্ছে তারারা |
এই তো জীবন, এখন মৃত্যুতিথির ভিতর থেকে . জেগে উঠছে জন্মদিনের গান---
সূর্যাস্তের কাছে প্রণতি জানিয়েছিল শরীর, এখন মিলিয়ে যাচ্ছে তার স্পর্শ | এবার আলো জ্বলে ওঠার সময় তারাদের ভিড় করার সময় |
খস্ খস্ শব্দ তুলে শুকনো পাতার উপর দৌড়ে যায় মেঠো ইঁদুর-----
আজ তবে আমরা অন্ধকারের কথা বলি বলি সেইসব যুদ্ধের কথা সেইসব নিঃশব্দ রক্তপাতের পর . শিশির ঝরার কথা |
এখন রাত্রিকুসুমের ফুটে ওঠার সময়---- ঠোঁটের উপর নেমে আসে তৃষ্ণার্ত ঠোঁট ; মুহূর্তগুলো থমকে যায় সেখানে | এখন আমরা বলি তার ভিতর থেকে উঠে-আসা জলকণা আর প্রত্যাখ্যানের কথা----- আর সব কথামালা ছুঁয়ে থাকে . শস্যের পিপাসা |
অন্ধকার ঘরগুলো থেকে গান বেজে ওঠে ও আমার চাঁদের আলো----
কুয়াশার দীর্ঘ মিছিল হেঁটে যায় . মৃত্যুশিবিরের দিকে |
মেঘবিকেলে পশ্চিম আকাশ থেকে . বিদায়বেলার আলো এসে ছুঁল সিঁড়ির প্রান্তে দাঁড়িয়ে-থাকা . ওই স্তব্ধ মুখ আবছায়া বারান্দা থেকে ভেসে আসে . টুকরো কথা আর হঠাৎ-গেয়ে-ওঠা গানের একটি কলি
মৃত্যু আর চুম্বনের মাঝখানে উড়ে গেল . একটি ঝরাপাতা
আজ ভুলে গেছি সেইসব রাত্রিস্তব, তোমার চোখের পাতায় নেমে-আসা . মেঘভাঙা তারা আর বৃষ্টির মধ্যে ঢুকে-পড়া পুরনো দীর্ঘশ্বাস যেন আমাদের যা-কিছু চেনাজানা, . সে শুধু স্মৃতির সঙ্গেই
এই নিষ্ঠুর এপ্রিল, দুপুরশেষের হল্ কা . শুষে নিচ্ছে শ্রীময়ীর লাবণ্য আর তাকে ঘিরে ধরছে কোল্ড ক্রিমের . বিজ্ঞাপনের ভিড় মাথার ভিতর তাল তাল কুয়াশা এখানে কোনো রূপকথা নেই, আমাদের রূপকথায় কখন যেন . নেমে এসেছে মুশোশপরা সুপারম্যান এখন আমরা অলৌকিক বিস্ফোরণের অপেক্ষায় থাকি কখন রোবটসুন্দরীর তীব্র রশ্মিতে ছিঁড়ে যাবে . ট্রাফিক-জ্যাম
কোনো কিছুই ঘটে না, ছায়াপথের আলো এসে . কাঁপিয়ে দেয় না কালো পরীর ডানা এপ্রিল নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতর----- বর্ণহীন আকাশে শুধু মাথা তোলে হাইরাইজ ফিরে আসি------- তোমার চোখের পাতায় মুখ রাখি আর একফোঁটা জলের ছোঁয়ায় শুনতে পাই . বয়ে-যাওয়া নদীর কলোচ্ছাস