কবি সাহানা দেবী – জন্মগ্রহণ করেন অবিভক্ত বাংলার ফরিদপুরে। পিতা ডঃ প্যারিমোহন গুপ্ত মাতা
তরলা দেবী। মামা
কবি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ , মাসী রবীন্দ্রনাথের প্রিয় গায়িকা অমলা দাশ, মেসোমশায়
ছিলেন আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু।
কবি অতুলপ্রসাদ সেন ছিলেন কবির পিসতুতো দাদা, বড়পিসিমা হেমন্তশশী
দেবীর পুত্র। কবির ধনপিসিমা সরলা দেবী ছিলেন প্রখ্যাত চলচিত্রকার সাহিত্যিক এবং
কবি সত্যজিত
রায়ের মাতামহী।  

বহু গুণীজনের স্নেহ-সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন সাহানা দেবী। তিনি নিজে সুকণ্ঠী ছিলেন এবং গান শিখেছিলেন
প্রথমে মাসিমা অমলা দাশের কাছে। তিনি
রবীন্দ্রনাথের বিশেষ স্নেভাজন ছিলেন। সাহানা দেবীর বারো
থেকে পনেরো বছর বয়সের সময়ে তিনি তাঁর মাকে চিঠি লিখে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কে পাঠিয়ে দেন
সাহানা দেবীর গানের শিক্ষক হিসেবে। প্রথাগতভাবে তাঁর কাছেই গানের শিক্ষার শুরু হয়। পরে স্বয়ং
রবীন্দ্রনাথের কাছে শিখেছেন বহু গান। সাহানা দেবীর গানের প্রতি আগ্রহ ও নিষ্ঠা দেখে রবীন্দ্রনাথ অবাক
হয়েছিলেন। এছাড়া গান শিখেছেন দাদা
অতুলপ্রসাদ সেনের কাছে। দিলীপ রায়ের কাছেও শিখেছেন তাঁর
গান।

সাহানা দেবীর বিবাহের কিছুকাল পরে (১৯১৭ – ১৯২২ এর মধ্যে) একবার
রবীন্দ্রনাথ কাশী মহারাজের
অতিথি হয়ে কাশীতে গিয়েছিলেন। সেখানে কথায় কথায় সাহানা দেবীকে বলেছিলেন . . .
“ . . . যাক, শুনে খুশি হলুম যে তোমার গান শেখার মন আছে। এক তোমাকেই দেখলুম বিয়ে করেও গান
ছাড়নি। তোমাদের মেয়েদের হয় বিয়ে নয় গান, দুটোর মাঝামাঝি কিছু নেই।
”  --- স্মৃতির খেয়া, পৃষ্ঠা ১০৫।

রবীন্দ্রনাথ, সাহানা দেবীর গান সম্বন্ধে তাঁকে ৪/৮/৩৮ তারিখে লেখা একটি পত্রে লিখেছিলেন . . .

“. . .তুমি যখন আমার গান করো শুনলে মনে হয় আমার গান রচনা সার্থক হয়েছে--- সে গানে যতখানি আমি
আছি ততখানি ঝুনুও আছে--- এই মিলনের দ্বারা যে পূর্ণতা ঘটে সেটার  জন্যে  রচয়িতার সাগ্রহ প্রতীক্ষা
আছে। আমি যদি সেকালের সম্রাট হতুম তাহলে তোমাকে বন্দিনী করে আনতুম লড়াই করে কেননা তোমার
কণ্ঠের জন্য আমার গানের একান্ত প্রয়োজন আছে”।
--- স্মৃতির খেয়া, পৃষ্ঠা ১০৮।

সাহানা দেবী, রবীন্দ্রনাথের গানের স্বরলিপিকারও ছিলেন। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত “প্রবাসী”
পত্রিকার, ভাদ্র ১৩৩০ ( ফেব্রুয়ারী ১৯২৫) সংখ্যায়, রবীন্দ্রনাথের “আজ কিছুতে যায় না মনের ভার” গানটির,
সাহানা দেবী রচিত স্বরলিপি প্রকাশিত হয়।

তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়া আরও অনেক রকমের গান করেছেন। তাঁর গানের বহু রেকর্ডও বার করা হয়।

তাঁর জন্মকাল থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ের জীবন কাহিনী নিয়ে লিখেছেন আত্মজীবনী “স্মৃতির খেয়া”।
বইটি প্রকাশিত করেন প্রাইমা পাবলিকেশনস এর নারায়ণ সেনগুপ্ত, ১৯৭৮ সালের নভেম্বর মাসে।

আমরা
মিলনসাগরে  কবি সাহানা দেবীর কবিতা তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে এই
প্রচেষ্টার সার্থকতা।


উত্স ---  সাহানা দেবী, স্মৃতির খেয়া, ১৯৭৮।   


কবি সাহানা দেবীর মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন


আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     


এই পাতা প্রথম প্রকাশ - ১০.১১.২০১৪
৭টি নতুন কবিতা নিয়ে এই পাতার পরিবর্ধিত সংস্করণ - ১০.৭.২০১৬
...