গলায় ভারী পাথর বেঁধে চাঁদ ঐ আস্তে আস্তে ধানখেতের সমুদ্রে ডুবে যাচ্ছে শেষ-জবানবন্দি রাতপাখির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এতক্ষণ হাওয়ায় উড়ছিল এখন সাপের খোলসের সঙ্গে মিশে গিয়ে শামুক ও গুগলির কঙ্কালের . মধ্যিখানে পড়ে আছে এ-সময়ে দূরে একজন পাঁজর-ওঠা জ্যোত্স্না একটা ভিখিরি-বালকেকে ডেকে উঠল . খোকা ভাত খাবি আয় গলায় ভারী পাথর বেঁধে চাঁদ ধানখেতের সমুদ্রে ডুবে গেল
আর জেলখানার ডায়েরির কবিতা থেকে কতকগুলো ‘কী’ ছুটে এসে . ঝাঁপিয়ে পড়ে ধানখেতের উপর খুব দ্রুত গাঢ় করতে থাকে ধানের ঘোলাটে দুধ ধানগাছের রঙের সঙ্গে মিশে থাকা সবুজ পোকাগুলোকে জান্তব খিদেয় . গিলতে থাকে ওরা কিছুক্ষণ পরেই আবার ছয় ঋতু কাঁপিয়ে প্রস্ফুটিত হবে ঢং ঢং শব্দ এ-সময় দূরে প্রতিমার মতো একজন মৃত্যু কাকে যেন ডেকে উঠল . খোকা ভাত খাবি আয় খুব দ্রুত গাঢ় হতে-হতে শক্ত হয়ে ওঠে ধানের ঘোলাটে দুধ
ফেরার সময় চাঁদের জবানবন্দির কাগজটা ওরা গভীর মমতাভরে কুড়িয়ে নিয়ে যায় দু-একজনের হাতে ভুলক্রমে সাপের দু-একটা খোলসো উঠে আসে
ভিখিরি-বালক শেষরাত্রের স্বপ্নে ভাত খেতে – খেতে বলে উঠল . চাঁদ দেখব মা
সময় হলেই কালো পাথর ও নীল জল ফিরে পায় . তাদের অস্ত্রের গোপনতা তবুও ধাঁধার মতো পাথর জলের হাতে জলপাইপাতা তুলে দ্যায় নিজস্ব শুরুর আগে আর জল পাথরকে দ্যায় গাঢ় শাঁখ পাহাড় কি জেনেছিল জলপাইপাতা ছিন্নভিন্ন ভেসে যাবে সমুদ্র কি জেনেছিল শাঁখের চুরমার শুধু এই কুয়াশা ভাঙার জন্যে জলপাইবর্ণ ডানা . শাঁখের রঙের বুক নিয়ে চিরস্থায়ী স্মৃতিস্বপ্ন সমুদ্র ও পাহাড়ের মাঝখানে পালক খসায়
এভাবেই গ্রীষ্ম আসে লীলা আসে বর্ষা আসে . বুনো কচুফুল আসে আর শরতের সঙ্গে যুদ্ধ আসে ঐ হেমন্তে জীবনানন্দ . শীত এসেছিল রানুর জ্বরের দিন বসন্ত ছুঁড়েছে চিনেবাদাম অন্ধকে ঋতু ও সূর্যের এই কানামাছি খেলার আড়ালে আরো খেলা থেকে যায় চাঁদের বলয় বাড়ে কমে
তবু এই স্মৃতিস্বপ্নে অমাবস্যা-পূর্ণিমায় . অগোপন কোনো যুদ্ধ নেই আমার জানালা খোলা পেলে শুধু ফিরে পায় . তাদের অস্ত্রের গোপনতা নিজেদের মধ্যে তারা যুদ্ধ করে ভুলক্রমে আমার সঙ্গেও নিজস্ব শুরুর আগে অমাবস্যা পূর্ণমার হাতে দ্যায় . মন্দিরের চাবি আর খড়্গ ও মহিষ বিনিময়ে পূর্ণিমাও ওর হাতে তুলে দ্যায় বুদ্ধের প্রতিমা আর আমি দুজনের হাতে দিচ্ছি লীলা ও রাণুর ছবি . সঙ্গে কিছু গাঙ্গেয় কবিতা