কবি সান্ত্বনা চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা
*
মন সন্ন্যাসী হোক
কবি সান্ত্বনা চট্টোপাধ্যায়

মন খারাপ হয় যখন
নীল আকাশে সাদা পাখি ওড়ে,
মন যেতে চায় দূরে বহু দূরে
পিছনের পানে চেয়ে,
ফেলে আসা ভালো লাগা
নতুন ফুলের ঘ্রাণ, পুঁজর নতুন গান
জীবনের কত আশা
অপূর্ণ ভালবাসা ...
যাবেনা যাওয়া জানি -
সামনের পথ খানি

শুধু একলা হবার দিন
বেঁচে আছি যত দিন
সহসাই মনে বাজে
আগাম বিরহ শোক
জীবন কেন যে দুখের শুধু -
চাই আজ থেকে
মন সন্ন্যাসী হোক।

.           ****************  
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
আমরা কবির কাছে কৃতজ্ঞ কারণ এই সব কবিতাই কবি নিজে আমাদের টাইপ করে পাঠিয়েছেন।
*
বিষাদ পাখি
কবি সান্ত্বনা চট্টোপাধ্যায়

কেনরে বিষাদ পাখি মেঘ হয়ে ঢাকিস আকাশ,
তোর নরম গরম বুকে
হাত রেখে
কত না বোঝাই
তবু ঝরে যন্ত্রণা, মেঘের আড়াল
থেকে উঁকি মেরে যায়,
সন্ধ্যা বেলায় ,গোলাপি আকাশে
কেন বিদায়ী ভাষণ
শোনালি আমায়, ...
ফিরে আয় ফিরে আয় ফিরে আয় মন
আমার বাগানে আছে যত ফুল
তারা নয় ছিন্ন মূল,
আজো হাসে তারা আজো গান গায়
সোনালী সবুজ ঘাসে পা রেখে
রুপালি ঝর্ণার ধার ঘেঁষে
নতুন আলোয় ভেসে
চোখের তারায়,
আয় চলে আয়.

.           ****************  
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
প্রকৃতির হাসি
কবি সান্ত্বনা চট্টোপাধ্যায়


ভালবাসা বাসি কতো হলও  বাসী
তবু দেখো হাসি এখনো
মলিন নয়
আশা ছিল যত  - তারা আজ ক্ষত
কি করে কি হলও  -
কেউ আজ কারো নয়
উদাসীর বাঁশী  ডেকে চলে গেছে
দূর নীলিমায়  মেঘের ভেলায়
দেখি  বসে তাই  .....,.হাসি
মন বলে ভালোবাসি
একে একে  সব যাবে  যে জানি তা -
তবু যারা গেল  কি করে ভুলি তা  -
কি করে  বুকের  ক্ষত  কে ভুলি
কি জোরে আবার কলম তুলি !
তাই বসে আছি
চেয়ে  আছি দুরে
মিশে গেছে  দেখি সবুজ আর নীলে
দেখি প্রকৃতির হাসি
ভালোবাসি ভালোবাসি

.           ****************  
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
আমার ভাইয়ের হাসি কোই
কবি সান্ত্বনা চট্টোপাধ্যায়

সময়ের সাথে ক্ষয়ে যাওয়া স্মৃতি
উঁকি মারে -
বারে বারে  মনের আয়নায়
ছবি ধরা পরে  -
আমি কি এতটা নিষ্ঠুর  এতটাই উদাসীন
ভাবে আঘাত করেছি তাকে!
ভেবে ভেবে বুক ফেটে যায় -
হায়, কেন কিছু বলিসনি আমায় -
কেন চোখে আঙ্গুল দুটো  পুরে
বলিসনি জোরে -
একদিন নিজের ভুল  কাঁদাবে  আমায়-
সেদিন তুই কাছে নেই  -
পরিতাপ তাই শতগুণ হয়ে
জ্বলবে অন্তরে  -
ফিরে আয় ফিরে আয়  -
তোর প্রাণের অধিক প্রিয়  -
বোন ডাকে  -
চলে গেছে যে জীবন সে কি আসে!
আকাশ বাতাস হাসে
আমি চেয়ে রই -
আমার ভাইয়ের হাসি কোই

.           ****************  
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
যখন আমরা সবাই ছিলাম বারো
কবি সান্ত্বনা চট্টোপাধ্যায়

সাদা কালো ছবি
কল্পনায় আজ
রঙিন হল কই -
আমার
মন চঞ্চল  - ঝলোকি ঝলোকি
ঝর্না ধারায় পাথর  ডিঙ্গায়
মনের বয়স বারো
ওরে আয় ছুটে আরও যতো আছে মন
সবুজে রাঙানো জল ছল ছল
দিঘির ধারে
মনকে আমার আজ যেন কেউ ধরিস নারে
আমরা ছুটব দিক বিদিক
আকাশ বাতাস তোলপাড় কোরে
তাথই নাচে  -  মন সমুদ্রে ডুব দিয়ে
যাবো তাদের কাছে
যারা আর আসবেনা ফিরে
তবু জানে মন
ফিরে পাব ঠিক যদি যাই ফিরে আরও ...
যখন আমরা সবাই ছিলাম বারো

.           ****************  
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
ফুল-কুমারী
কবি সান্ত্বনা চট্টোপাধ্যায়

শান্ত নদীর পারে ছিল ফুল-কুমারীর বাসা
ফুলের মত হৃদয় ছিল হরিণ চোখের ভাষা
তার সে চোখে ডুব দিয়েছে যত ছিল কুমার
সবাই লড়ে সবাই বলে ফুলকুমারি আমার

তারপরে কি হলও বলও তার পরে কি হলও
ফুল-কুমারীর  মনে এলো  দিব্য  প্রণয় আলো,
বকুল কথার মালা গেঁথে ভাসিয়ে দিল মেঘে
মেঘ চলেছে  ভেসে সাথে সুবাস ওঠে জেগে

তারপরে কি হলো বলো
কোথায় গেল শেষে
সে ভারি এক অচিন-পুরী
সে এক মহান দেশে,

নন্দন কানন ছিলো - নীলকণ্ঠ পাখি,
মেঘ দিল সেই বকুল কথা পারিজাত কে ডাকি;
বকুল মালায় সুবাসিত আকাশ বাতাস জল
ফুল-কুমারীর সকল শরীর সুখেতে উজ্জ্বল

পারিজাতের সৌরভে যে  ভরলো মেয়ের প্রাণ,
যাও গো যতো কুমার  -
তোমাদের নেই এখানে স্থান
আপন-গন্ধে পাগল মেয়ের
সুবাস ভুবন ভরা
অঙ্কুরিত মধুর প্রেমে
জগত পরে ধরা।

.           ****************  
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর