কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তর কবিতা
|
ঐরাবতের বৈরী হ’য়ে, কৃষ্ণমৃগের সঙ্গে ছুটে,
স্তব্ধ বিজন যোজন জুড়ে ঝঞ্ঝা ঝড়ের শব্দ ক’রে,
অসাড় প্রাচীন জড় পাহাড়ের কানে মোহন মন্ত্র প’ড়ে,
পরাণ ভ’রে নৃত্য ক’রে মত্ত ছিলাম স্বাধীন সুখে,
ছন্দ ছাড়া আজকে আমি যাচ্চি ম’রে মনের দুখে ;
যাচ্চি ম’রে মনের দুখে পূর্ব সুখে স্মরণ ক’রে ;
ঝারির মুখে ঝরার মতন শীর্ণ ধারায় পড়ছি ঝ’রে।
চক্রী মানুষ চক্র ধ’রে ছিন্ন ক’রে আমার দেহ
ছড়িয়ে দিলে দিগ্বিদিকে, নাইক’ দয়া নাইক’ স্নেহ!
আমি ছিলাম আমার মতন, --- পাহাড়-কোলে নির্বিবাদে,
মানুষ ছিল কোন্ সুদূরে---সাধিনি বাধ তাদের সাধে ;
তবুও শিকল পড়িয়ে দিলে, রাখলে আমায় বন্দীবেশে,
ক্ষুদ্র মানুষ স্বল্প-আয়ু, আমায় কিনা বাঁধলে শেষে!
কৌশলে সে ফাঁদ পেতেছে, পারিনে তায় ছিঁড়তে বলে,
শীর্ণ হ’য়ে যাচ্ছি, ক্রমে, পড়ছি গ’লে অশ্রুজলে।
আগে আমায় চিনতো যারা বলছে শোনো,---‘যায় না চেনা!’
বাজবে কবে প্রলয়-বিষাণ ? ---মুখে আমার উড়ছে ফেনা!
বিকল পায়ের শিকলগুলো কতদন সে থাকবে আরো ?
রুদ্রতালে নাচ্ ব কবে ? তোমরা কেহ বলতে পারো ?
. *************************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
. বুঁদ হ’য়ে ফেরে রোঁদ দিয়ে ;
. ফল্ সা-বনের জল্ সা ফুরুলো,
. মৌমাছি এলো রোল তুলি’!
ওই নিজুম নিথর রোদ খাঁ খাঁ
. শিরীষ-ফুলের ফাগ-মাখা,
. ঢুল্ ঢুলে কার চোখ দুটি কালো
. রাঙা দুটি হাতে লাল রুলি!
আজ ঝড়ে-হানা ডাঁটো ফজ্লী সে,
. মেশে কাঁচা-মিঠে মজ্লিসে ;
. ‘রং-চোরা ফলে রস কি জোগালো’---
. কুহু কুহু পুছে কার বুলি!
ওগো কে চলেছে ঢেলা-বন ঠেলে
. বুলবুলি-খোঁজা চোখ মেলে
. জামরুলি-মিঠে ঠোঁট দুটি কাঁপে,
. তাপে কাঁপে তনু জুঁইফুলী!
মরি, ভোম্ রা ছুটেছে তার পাকে,---
. হাওয়া ক’রে দুটো পাখ্নাকে
. ফলের মধুর মর্ সুম যাপে
. ফুলের মধুর দিন ভুলি’!
. *************************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
গর্ভগৃহতে শুভ্র আলোক
. জ্বলিছে সূর্য্য-পারা।
বিশ্ববীজের বিপুল বিকাশ
. আকাশ-পাতাল জুড়ি’
অনাদি কালের অক্ষয়-বটে
. কত ফুল কত কুঁড়ি,
ঊর্দ্ধে উঠেছে লাখ লাখ শাখা
. নিম্নে নেমেছে ঝুরি।
বিশ্ববীণায় শত তার তবু
. একটি রাগিণী বাজে,
একটি প্রেরণা করিছে যোজনা
. শত বিচিত্র কাজে,
বিশ্বরূপের মন্দির ঘিরি’
. মূর্ত্তি-মেখলা রাজে।
. *********************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
. শান্ত-জন-শঙ্কা-হরা
. অভয়-করা খড়্গ-ধরা
আবির্ভূতা সিংহ-রথে মাভৈঃ বাণী ঘোষিছে!
দমন হয় শমন নামে শমিত যম-যন্ত্রণা!
ইন্দ্র বায়ু চন্দ্র রবি চরণ করে বন্দনা!
. ইঙ্গিতে যে সৃষ্টি করে,
. গগনে তারা বৃষ্টি করে,
প্রলয়-মাঝে মন্দ্র-রূপা! মৃত্যুজয়ী মন্ত্রণা!
শকতিহীনে শক্তিরূপা সিদ্ধিরূপা সাধনে!
ঋদ্ধিরূপা বিত্তহীন-হৃদয়-উন্ মাদনে!
. আদ্যা! আদি-রাত্রি-রূপা!
. অমর-নর-ধাত্র-রূপা!
অশেষরূপা! বিরাজো আজি সিংহবর-বাহনে!
. *********************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
. হাল্ কা জলে ঝামর হাওয়া চামর ঢুলাবে,
(আর) গহন ছায়া মোহন মায়া প্রহর ভুলাবে।
. এস তুমি যুথীর বনে দুকূল বুলাবে ;
. কোল দিয়ে ঐ কেলি-কদম-মুকুল খুলাবে।
. বাইরে আজি মলিন ছায়া
. মলিদা-রং মেঘের মায়া,
. অন্তরে আজ রসের ধারা রঙীন্ গুলাবে!
. এস তুমি মোহের হাওয়া মিহিন্ বুলাবে।
(ওগো) এমন দিনে ঘরের কোণে শয়ন কি লাভে ?
. কিসের দুখে নয়ন-জলে নয়ন ফুলাবে ?
. আয় গো নিয়ে সাহস বুকে
. পিছল পথে সহাস মুখে,
. নূতন শাখে নূতন সুখে ঝুলন ঝুলাবে ;
(এস) উজল চোখে কোমল চেয়ে ভূবন ভুলাবে।
. *********************
. সূচিতে . . .
মিলনসাগর
পাগলা ঝোরা
কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
তোমরা কি কেউ শুনবে না গো পাগলা ঝোরার দুঃখ-গাথা ?
বর্ষা-নিমন্ত্রণ
কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
. এস তুমি বাদল বায়ে ঝুলন ঝুলাবে ;