বস্তি
কবি শঙ্খ ঘোষ
বল্ তো দেখি কেমন হতো থেকে নেওয়া

আমরা যেখানে থাকি তার ঠিক পাশেই মস্ত বস্তি
সকালে দুপুরে রাত্রে সেখানে কেবলই ধস্তাধস্তি
চিলচিত্কারে পাড়া ফেটে যায়, ওড়ে শব্দের ফুলকি
এক্ষুনি কোনো রক্তারক্তি হবে তাতে আর ভুল কী !
মা বলে যে ‘আর পারি না তো বাপু, এই-যে আঠারো ঘন্টা
খেটেখুটে শেষে নিরিবিলি এসে বিশ্রাম চায় মনটা
তখনও এসব ভালো লাগে বলো ? এত অবিরাম উত্পাত
বুঝি না কেন যে পুলিশ ডাকিয়ে করে না এদের উত্খাত |’

কিন্তু সেদিন পাড়ায় যখন আগুন লাগল রাত্রে
বাবারা সবাই এ ওকে দুষছে,  মায়েরা মরছে কাৎরে
গোটা বাবুপাড়া ভয়ে দিশেহারা কী-জানি-কী ভবিতব্য
ঠিক তক্ষুনি ছুটে এল ওরা –যাদের বলি ‘অসভ্য’---
এসেই ঝাঁপাল এদিকে-ওদিকে, মুহূর্ত নেই চিন্তা
বাবারা জানে না কীভাবে এদের কেটেছিল আজ দিনটা
শব্দ না করে নিজে জ্বলেপুড়ে নেভাল অকালবহ্নি
ফেরার সময়ে বলে গেল শুধু ‘ধন্যি বাবুরা ধন্যি !’

মিছে কলরব মিটে গেল সব, মিলল অগাধ স্বস্তি---
মা এসে বলে যে ‘ভাগ্যে পাশেই ছিল এ অবোধ বস্তি |’

.                         ******************     
.                                                                               
সূচিতে . . .   



মিলনসাগর
কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতা
setstats
*
ঘর
কবি শঙ্খ ঘোষ
বল্ তো দেখি কেমন হতো থেকে নেওয়া

সমস্ত দিন কাটাই আমি দরজাখোলা ঘরে
যা বলেছ মানছি সেটা অক্ষরে অক্ষরে |
.                     বাতাসভরা গান
.        আমার     জুড়িয়ে দেন কান
বাইরে থেকে হাজারো পথ জাপ্ টে এসে ধরে
.        এই          দরজাখোলা ঘরে |

দুঃখ যত জমছিল তা নেই কিছু আর মনে
ভালোবাসতে ইচ্ছে করে সবাইকে সব ক্ষণে |
.                       তোমার কথার রেশ
.             মনে     থাকছে আমার বেশ
কষ্ট দিল কারা,  কারা ফিস্ ফিসাল কোণে
.            এখন     নেই কিছু আর মনে |

ঘরের মধ্যে পথ পেয়েছি, পথের মধ্যে ঘর
সবাই এখন আপন আমার, কেউ নয় আর পর |
.                       তোমার কথার গুণে
.            এমন     আশ্বিনে-ফাল্গুনে
মনে হয়ে যায় মনের মতো ব্যাপ্ত চরাচর ---
.            আমার    পথের মধ্যে ঘর |

.                 ******************     
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
কোবালম বীচ
কবি শঙ্খ ঘোষ
“দেশ” পত্রিকার ৭৫ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত “দেশ এর কবিতা ১৯৮৩ - ২০০৭” (২০১০)
সংকলন থেকে নেওয়া |


বয়স তিরিশ | কিন্তু সেটা খুব বড় কথা নয়
কিছু বেশি কিছু কম অনেকেই এ-রকম করে
দেশে বা বিদেশে এই দু’শো বছরের ইতিহাসে
অনেকেই এ-রকম শূন্য থেকে শূন্যে মিশে যায়
ভাঙা ডানা পড়ে থাকে রাজপথে, গুহামুখে, চরে |
এইখানে বাঁক নিয়ে বাঁয়ে উঠে গেছে বড় টিলা
ডাইনে আরবজল স্থির হয়ে আছে একেবারে
নারকেলপাতার থেকে কিছুদূরে ভেসে আছে চাঁদ
আমাদের চোখে আছে লঘু পালকের ছায়া, আর
মুখে জাল, শুনি সব অপঘাত উত্তরে দক্ষিণে |
সেই এক, একই কথা, লবণে ভরেছে ফুসফুস
সেই যবনিকা তুলে আরো আরো আরো যবনিকা
খুলে দেখা বীজ যার কোথাও কিছুরই মানে নেই
অনেকেই এ-রকম শূন্য থেকে শূন্যে মিশে গেছে |

বেশ কিছুদিন হল দেশ-বিদেশের মেলা শেষ
ঘরের চৌকাঠে ফিরে আপাতত নেই নোনা হাওয়া
আয়নায় দাঁড়িয়ে তবু এখনো হঠাৎ তাকে ভাবি
বন্ধুর গল্পের শেষে যেন তার আত্মা তুলে নিয়ে
না-তাকিয়ে নিচু স্বরে বালির উপরে হাত রেখে
কর্ণাটকি যে-ছেলেটি বলেছিল কোবালম বীচে ;
.  ‘কিছু একটা করতে চাই, মরব না এভাবে বসে থেকে !’

.                 ******************     
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
সম্বল
কবি শঙ্খ ঘোষ
“দেশ” পত্রিকার ৭৫ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত “দেশ এর কবিতা ১৯৮৩ - ২০০৭” (২০১০)
সংকলন থেকে নেওয়া |


একটি কথারই শুধু সম্বল রয়েছে পড়ে হাতে |
হাওয়ায় উড়িয়ে দিই, মুখ দেখি, ব্রহ্মপুত্রজলে
বৈঠাহীন নৌকা তার অলস ভাসানে ভেসে চলে
ঘূর্ণিটান রাত্রি শেষ একটি কথাই শুধু বলে |
ভাঙাপাড় থেকে জলে শিকড় নামিয়ে আনে ঠোঁট
তার দিকে চেয়ে বুঝি, ভুল, সবই ভুল হয়ে গেছে
কেন এত দেখে চোখ কেন সবই দেখে এত চোখ ?
কেন-বা আমাকে খায় তার চিরহরিতের খিদে ?
বুকের বাঁ-পাশে এসে বিমূঢ়তা নিয়ে বসে আছে
একটি কথাই, তাকে সাজাই বাজাই, আর বলি :
কেন এত দেখেছিলে, কেন বারে বারে ফিরে গিয়ে
আবার এসেছ পাশে শিকড় নামিয়ে দিয়ে বুকে ?
মধ্যজল থেকে এই স্থবিরের দিকে চেয়ে দেখো
পাথরও চাঁদের মতো চরের উপরে আছে ঝুঁকে |

.                 ******************     
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
ছেলে ধরা বুড়ো  
কবি শঙ্খ ঘোষ
“দেশ” পত্রিকার ৭৫ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত “দেশ এর কবিতা ১৯৮৩ - ২০০৭” (২০১০)
সংকলন থেকে নেওয়া |


কলেজ স্ট্রিটের পাশে বসে আছে ছেলেধরা বুড়ো |
পুরোন অভ্যাসবশে দু’ চোখ এখনো খুঁজে ফেরে
যেসব ধমনী ছিল এ-পথের সহজ তুলনা
ঈশান নৈর্ঋত বায়ু কখনো-বা অগ্নিকোণ থেকে
যেসব ধমনী ছুঁয়ে পৃথিবীও পেত উথ্বান
রূপের ঝলক লেগে সে কি এত মিথ্যে হয়ে গেল ?
উপমার মৃত্যু হল এই নবদূর্বাদল দেশে ?
বুড়ো তাই গান গায়, থেকে থেকে বলে ‘আয় আয়’
লোকেরা পাগল ভাবে লোকেরা মাতাল ভাবে তাকে
ঢিল ছুঁড়ে দেখে তার গায়ে কোনো সাড় আছে কি না
সে তবু গলায় আনে নাটুকে আবেগ, হাঁকে ‘এই
শিশুঘাতী নারীঘাতী কুৎসিত বীভৎসা পরে যেন----’
আর সেই মুহূর্তেই বৃষ্টি নেমে আসে তার স্বরে
চোখের কুয়াশা ঠেলে দেখেছে সে চারপাশে তার
যে-যার নিজের মতো ঝাঁপ ফেলে চলে গেছে ঘরে
পুরোন অভ্যাসে শুধু বুড়োর পাঁজরে লাগে টান
যদিও বধির, তবু ধ্বনিরও তো ছিল কিছু দেনা
সবই কি মিটিয়ে দিয়ে গেল তবে রণবীর সেনা ?

.                 ******************     
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
অপমান
কবি শঙ্খ ঘোষ
“দেশ” পত্রিকার ৭৫ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত “দেশ এর কবিতা ১৯৮৩ - ২০০৭” (২০১০)
সংকলন থেকে নেওয়া |


গান মুহূর্তে ধুলোয় লুটিয়ে পড়ে
চারদিকে এত জম্পেশ খেলাধুলো—
এরই মাঝখানে বয়ে যেতে হবে বলে
কানে তুলো আর পিঠেও বেঁধেছি কুলো |

তুমি ভেবেছিলে অপমান ছুড়ে যাবে
দু’কথা শুনিয়ে সুখ পাবে ভেবেছিলে
চোখের আড়ালে অশ্বথ্বের ডালে
ভেবেছ দু’ পাখি মরে যাবে এক ঢিলে |

মরেওছে বটে | তবে সে আমার নয় |
আমার পাখি তো লুকোন নৌকোজলে |
অবশ্য জানি, যা-কিছু লুকোন আজ
সবই পেতে চাও ছলেবলেকৌশলে |

‘লজ্জাও নেই নিজের ও-মুখ দেখে ?’
বলে ফোন রেখে দিয়েছে ঝনাত করে |
এ-বিষয়ে আর বেশি-কিছু বলব না
যা-বলার শেষ বলেছি একাক্ষরে |

খুবই দেখেশুনে বৈঠা বাইতে হবে
ওত পেতে আছে ঘাটে ঘাটে ঘড়িয়াল ---
কবিতায় যদি গল্প লুকোন থাকে
টপ করে তাকে গিলে নেবে সিরিয়াল !

.                 ******************     
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
সবুজ ছড়া
কবি শঙ্খ ঘোষ
“দেশ” পত্রিকার ৭৫ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত “দেশ এর কবিতা ১৯৮৩ - ২০০৭” (২০১০)
সংকলন থেকে নেওয়া |


উথ্বান ---তার শেষ নেই কোনো, শেষ নেই দস্যুতার
ভোরের বেলায় শূন্যে উঠেছে পরশুরামের কুঠার |
ত্রিসীমায় কোনো সঞ্চার কেউ রাখবে না কোনোভাবে
যেখানেই যত সবুজ রক্ত সবটুকু শুষে খাবে
নিঃসাড় করে দিয়ে যাবে সব সেগুন শিমুল শাল
আজ যাকে বলো বনভূমি তাকে জনভূমি বলো কাল
নান্দীমুখর দশদিগন্ত হারিয়ে ফেলেছে খেই
মনে হয় এই জীবনে কোথাও কোনো প্রতিরোধ নেই
সেই মুহূর্তে কোথা থেকে এসে দিশাহীন প্রাঙ্গনে
পঁচিশটি মেয়ে পঁচিশটি গাছ বেঁধেছে আলিঙ্গনে |

পঁচিশটি মেয়ে পঁচিশটি শিখা জড়াল আলিঙ্গনে
পরাদৃশ্যের মাধখানে ওরা আশ্বাসে দিন গোনে
বাকলে বাকলে জড়িয়ে গিয়েছে পঁচিশ মেয়ের প্রাণ
শরীরে শরীরে জেগে ওঠে য়েন বড়ে-গোলামের গান—
সামনে কেবল স্থির থেকে যায় রোদ্দুরে ঝকঝকে
উদ্যতফলা পঁচিশ কুড়াল --- দূর থেকে দেখে লোকে
.                দূর থেকে দেখে লোকে ;
ও-মেয়েরা আর মেয়ে নয় ওরা টুনটুনি বুলবুলি
মেয়ে হয়ে আজ দাঁড়িয়ে রয়েছে সমস্ত গাছগুলি |

.                 ******************     
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
সে অনেক শতাব্দীর কাজ
কবি শঙ্খ ঘোষ
“দেশ” পত্রিকার ৭৫ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত “দেশ এর কবিতা ১৯৮৩ - ২০০৭” (২০১০)
সংকলন থেকে নেওয়া |


শিখর থেকে একে একে খসে পড়েছে তারা |
গহ্বরের দিকে গড়িয়ে যেতে যেতে জিজ্ঞেস করছে, ‘বলো, কেন
কেন অসময়ে আমাদের এই বিনাশ ?’
জানতে চাইছে শিলায় শিলায় ঝল্ সে-ওঠা স্বর :
‘আমরা কি তবে সত্য ছিলাম না আমাদের শব্দে ?
আমরা কি স্থির ছিলাম না আমাদের স্পন্দে ?
আমরা কি অনুগত ছিলাম না আমাদের স্বপ্নে ?
তবে কেন, কেন আমাদের এই--- ’

পায়ে পায়ে তিনি এসে দাঁড়ালেন পাহাড়ের কিনারে |  বললেন, ‘শোনো
ছোট ছোট সফলতায় অন্ধ
তোমরা সকলেই ছিলে নিজের ভিতরে রুদ্ধ |’
সকলের দিকে একে একে আঙুল তুলে তিনি বললেন, ‘তুমি ভেবেছিলে
তুমি যতটুকু জানো তার চেয়ে বেশি কোনও জ্ঞান নেই আর
তুমিই পরম আর সমস্ত পূর্ণতা এসে তোমাতেই মেশে ভেবেছিলে
ভেবেছিলে নিমেষেই জিতে নেবে ধনধান্যে অবোধ পৃথিবী
কখন্ও-বা ভুলে গেছ গ্রাসে ভুলেছ সংসারসীমা
আর তুমি
যদিও তোমাকে আমরা আমাদের সকলেরই জানি
লালন করেছ তবু গোপন গোপন অতিগোপন তত-কিছু-গোপনও-না লোল পক্ষপাত
আর আমি, তোমাকে বাঁচাব বলে অতর্কিতে মিথ্যাচারী, বুঝি
তোমরা কেউ জানোনি যে বহুদিন আগে তোমরা মৃত !’

গহ্বরে মিলিয়ে যায় স্বর | স্তব্ধ শ্বাস | তার পর
তিনি ফিরে তাকালেন আমাদের দিকে | বললেন, ‘এবার
আসুন এক শতাব্দী আমরা নীরব হয়ে দাঁড়াই |’

.                 ******************     
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
যাবার সময় বলেছিলেন
কবি শঙ্খ ঘোষ
“দেশ” পত্রিকার ৭৫ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত “দেশ এর কবিতা ১৯৮৩ - ২০০৭” (২০১০)
সংকলন থেকে নেওয়া |


অন্ত নিয়ে এতটা ভেবো না |
মৃত্যুপথে যেতে দাও
.                    মানুষের মতো মর্যাদায় ----শুধু
তোমরা সকলে ভাল থেকো |
কিন্তু কাকে বলে ভাল থাকা ? জানো ?
.           কতদিন তোমাকে বলেছি স্বর উঁচু করে
.               কথা বলো আবেগে ভাসিয়ে দাও দেশ
ভিখারি মনের এই দেশ
পাহাড়ের চুড়ো থেকে সাগরের কিনারা অবধি
ফেটে যাওয়া ক্ষেত যত অগম জঙ্গল আর
.                                মজে যাওয়া নদী
ভেসে যাক সেই স্বরে | অবসাদে ঘেরা
নষ্ট হয়ে আছে সবুজেরা
কে তাকে ফেরাবে আর তোমরা যদি কিছু
.                                      না-ই বলো ?
যেদিকেই যাও শুধু প্রাচীনের ভস্ম ঝরে পড়ে
মাথার উপরে
বন্ধ হয়ে আসে সব চোখ
ভুলে গেছি কে দেয় কে দিতে পারে
.                             কেই-বা প্রাপক
এই মহা ক্রান্তিকালে |
ক্রান্তিকাল ? তোমরাও কি ভাবো ক্রান্তিকাল ?
তোমাদের জীবনমুদ্রায় কোন চিহ্ন নেই তার |
কেন ? কেন নেই ?
এসো এই মুমূর্ষুর বুকে রাখো হাত
এর ক্ষীণ রক্ত থেকে তোমার রক্তের দিকে
.                                  বয়ে যাক দাহ
ঘটুক সংঘাত
দেখো তার মধ্য থেকে ভিন্ন কিছু জেগে ওঠে
.                                        কি না |
অন্ত নিয়ে এতটা ভেবো না
রাখো এ প্রবাহ
শেষ বিশ্বাসের সামনে কথা দাও তুমি দেশ
.                              তুমিই এ প্রসারিত দেশ
তোমারই স্নায়ুর মধ্যে বহমান কাল—
যাবার মুহূর্তে আমি আজ শুধু নিয়ে যাব এইটুকু
.                                     রক্তিম প্রবাল !

.                 ******************     
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*
শান্তিজল
কবি শঙ্খ ঘোষ
“দেশ” পত্রিকার ৭৫ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত “দেশ এর কবিতা ১৯৮৩ - ২০০৭” (২০১০)
সংকলন থেকে নেওয়া |


আজ এই সন্ধিকালে কাড়া-নাকাড়ার শেষযামে
বহুদিন পরে মন শান্ত হল | কত খরতোয়া
কতই বাঁকানো জলে ভেসে যাওয়া ডুবে যাওয়া, আর
বারে বারে শব হয়ে ফিরে আসা | গুল্মে ঢাকা
শরীর শরীরমাত্র, মাটিজলে ভরা করোটির
কঠোর আধারমাত্র | ভেজাকাঠে ভরে থাকা শ্বাস
নদীর কিনার জুড়ে | এবং তুমিও ঠিক তত
উদাসীন | তবু এই সন্ধিকালে বহুদিন পর
মনে হল : কে বলেছে পারিনি কিছুই ? কে বলেছে
মিথ্যে হল সব ? কে বলেছে ধু ধু করা অবকাশে
যতদূর দেখা যায় কোনওখানে দিশা নেই কোনও---
তুমি যদি না-ও চাও, আমি তো চেয়েছি ! সে-চাওয়াই
আরেক জন্মের দিকে বয়ে নিয়ে চলে যেতে পারে
কেননা তুমি যে আছ সেই সত্য ভাঙে না কখনও |

.                 ******************     
.                                                                               
সূচিতে . . .    



মিলনসাগর
*