কবি শতাব্দী রায়ের কবিতা
*
বাংলাদেশ
কবি শতাব্দী রায়

আমার চিত্কার
.        দরজা খোলার
.        উন্মুক্ত মনের
.        লুপ্তপ্রায় ভাষার

আমার অধিকার
.        সুজলা সুফলা শস্যক্ষেত্র
.        ধানসিঁড়ির বহমান স্রোত
.        ভালোবাসার বর্ণমালা

আমার চাওয়া
.        স্বাধীন বাংলা
.        সতেজতাময় নদী গ্রাম
.        ধানমণ্ডির ভিন্নতা

আমার পাওয়া
.        সোনার বাংলা
.        সংশয়হীন মনবিকতা
আর আর ১৬ই ডিসেম্বর।

.       *************************  

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
প্রিয়
কবি শতাব্দী রায়

জানি না মৃত্যুকে
আমার এত প্রিয় লাগে কেন

.        সবচেয়ে সুন্দর সে
নিশ্চুপ, নিরুত্তর ভালোবাসা
কাছ থেকে পাই না বলে

.        বোধ হয় ও এত প্রিয়
তবে এটা যদি কারণ হয়
তাহলে তুমি কেন
.        প্রিয় হলে না ?

.       *************************  

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
পয়লা
কবি শতাব্দী রায়

১লা মানে প্রথম কিছু
.        পয়লা মানে বেশ
১লা মানে হিসেব কষা
.        ১লা নয় তো শেষ,

.                                ১লা নিয়ে লাফালাফি
.                                        ১লা নাড়ির টান
.                                ১লা নিয়ে রেশারেশি
.                                        ১লা হওয়া মান

১লা মানে প্রথম বৈশাখ
.        ১লা আলিঙ্গন
১লা সে তো অনুভূতি
.        ১লা নয় আজীবন

.                                ১লা প্রপোজ বড় হওয়া
.                                        ১লা শাড়ি পড়া
.                                ১লা বিভোর দিবারাত্রী
.                                        ১লা নজর কাড়া

১লা সন্তান মাতৃস্বাদ
.        ১লা স্পর্শ স্মৃতি
১লা প্রেমিক বিভীষিকা
.        ১লা যখন ইতি

.                                ১লা প্রেম উন্মাদনা
.                                        ১লা চুম্বন ভয়ের
.                                ১লা মন নাড়াঘাটা
.                                        ১লা আনন্দ জয়ের

১লা চিঠি ভীষণ প্রিয়
.        ১লা কবিতার মতন
১লা তুমি পয়লা থেকো
.        হ’য়ো নাকো পুরনো

.           *************************  

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
প্রতিবাদী
কবি শতাব্দী রায়

রাস্তার একটা কুকুরকে কিছু ছেলে
ইঁট ছুঁড়ে মারছিল।
ল্যাজ ধরে ঘোরাচ্ছিল॥
আমি প্রতিবাদ করে বলেছিলাম
‘এই নপুংশকের দল-আমায় মার দেখি,
হিম্মত বুঝবো।’
এ বেশ কিছুদিন আগের ঘটনা---
এখন ওদের হিম্মত বুঝি
কারণ এরাই তো বিস্ফোরণের মারে---
লাখ-লাখ মানুষ।
শব্দহীন রাতে কুপিয়ে খুন করে---
কুড়ি বছরের যুবককে।
তাদের কাছে আমি তো সামান্য
প্রতিবাদী এক নারী॥

.     *************************  

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
দিনের নামতা
কবি শতাব্দী রায়

প্রথম দিনে বলেছিলে, ভালোবাসি
দ্বিতীয় দিনের প্রথমবার কাছে আসি
তৃতীয় দিনে দ্বিতীয়বার চুম্বনের ছোঁওয়া
মিলনের নামে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া॥

.       *************************  

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
বিদেহী
কবি শতাব্দী রায়

১মেয়েটি চিত্কার করছিল,
.                সাহায্যের জন্যে।
প্রচুর সোক থাকলেও,
.                কেউ এগোলো না।
তারা ভাবলো,
এ তো আমার মা-বাবা-বোন নয়।
কিছু কাপুরুষের হাত ছিল
পকেটে।
সিগারেটে বন্দী ছিল,
কিছু পুরুষের আঙুলগুলো।
মেয়েটি যখন, সম্মান বাঁচানোর
শেষ শক্তি হারিয়ে ফেললো---
তখনই উত্সাহী জনতার ভিড় ঠেলে,
এগিয়ে এল যেন
বিদেহী।
সম্মান বাঁচাতে।
মনে মনে বললাম---
‘তুমিই এই পৃথিবার শেষ মানুষ॥’

.       *************************  

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
ডাকাতি
কবি শতাব্দী রায়

মিখ্যে পাহাড়া দিচ্ছ
সদর দরজা।
অহেতুক শক্ত করছ---
কপাট-কবজা।
কিছুক্ষণ আগে দিলে যা স্বচ্ছন্দে
মন ভরে আছে, আবেশে আনন্দে।
নিজের অজান্তে
দিয়েছো ভালোবেসে
চুরি হলো,
সব তোমার বিশ্বাসে।
অজানায় নিলে, চোর চোর বলে মাতি,
তুমি কি বলবে একে, চুরি নয়-ডাকাতি ?

.       *************************  

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
ছন্দ ২
কবি শতাব্দী রায়

বসে                  পাশাপাশি
করে,                 হাসাহাসি
বললে,                যে কথা
সবই,                 তো বৃথা
ভালো,                বাসাবাসি
কাছে,                আসাআসি
এ তো,                অভিনয়
আজ,                 মনে হয়।
যত,                  রেষারেষি
লোক,                 ঠাসাঠাসি
এই,                   দুনিয়ায়
মানুষ,                পাওয়া দায়॥

.       *************************  

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
চারটে কম
কবি শতাব্দী রায়

নিঃসংকোচে জানাই আজ
একলক্ষ মিথ্যে বলেছিলাম
হিসেব করে দেখেছি আমি
তোমার চেয়ে তাও চারটে কম॥

.     ************************  

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
ফ্ল্যাশব্যাক
কবি শতাব্দী রায়

‘একদমই আমি বিশ্বাসী নই
বহুপুরুষকে ভালোলাগায়---
মানুষের মন তো একটাই
সেখানে কত জনের জায়গা হবে।’
যতবার এ কথাগুলো বলি
ততবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে
সপ্তপর্ণার দাদার কথা---
স্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র---অভীকের চিঠি---
বৌদির ভাই সৌম্যর, পায়ের ওপর পা রাখা,
আর নীলের বাহুলগ্না হয়ে, প্যারিস ভ্রমণ।
এ সবই ছবির মতন দেখতে পাই।
এক নিমেষে দেখি, সমস্ত ঘটনা---
যাকে বলে স্মৃতি।
ফিল্মের ভাষায় যাকে বলা হয়
ফ্ল্যাশব্যাক॥

.     ************************  

.                                                                                       
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর