সুরমাসুন্দরী দেবীর কবিতা সম্বন্ধে যোগেন্দ্রনাথ গুপ্তর উদ্ধৃতি - পাতার উপরে . . .
সুরমাসুন্দরী দেবীর কবিতা সম্বন্ধে কবি যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত তাঁর ১৯৩০ সালে প্রকাশিত “বঙ্গের মহিলা কবি”
গ্রন্থে লিখেছেন . . .
“সুরমাসুন্দরীর প্রথম কবিতাপুস্তক “সঙ্গিনী" ১৩০৭ সালে প্রকাশিত হয়। “সঙ্গিনী” প্রকাশের পূর্ব্বে তাঁহার
রচিত অনেক গীতি কবিতা “প্রদীপ”, “উৎসাহ”, “প্রভাত” ইত্যাদি মাসিক পত্রে প্রকাশিত হইয়াছিল। ইঁহার
রচিত দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ “রঞ্জিনী”' ১৩০৯সালে প্রকাশিত হইয়াছিল। বহি দু'খানি কুন্তলীন প্রেস হইতে মুদ্রিত ও
প্রকাশিত হইয়াছিল। উহার ছাপা, কাগজ ও বাঁধাইর বিশেষত্বও সেকালের পাঠক সমাজের মনোরঞ্জন
করিয়াছিল।
সুরমার কাব্যগ্রন্থ দু’খানি সে সময়ের সংবাদপত্র সম্পাদকগণ এবং প্রসিদ্ধ লেখকগণ সাদরে অভিনিন্দিত
করিয়াছিলেন। কবিতার মিষ্ট সুর, শব্দসম্পদ এবং গীতি কবিতার সরল মাধুর্য্য তাঁহার কবিতায় অতি
সুন্দর ভাবে ফুটিয়া উঠিয়াছিল। এ কথা না বলিলেও চলে যে, ত্রিশ বত্সর আগের কোনও কবির পক্ষেই
রবীন্দ্রনাথের প্রভাবের হাত এড়াইয়া চলিবার শক্তি ছিল না। সুরমার কবিতায়ও রবীন্দ্রনাথের প্রভাব
পূর্ণরূপে পরিস্ফুট। শুধু ছন্দে নয়, শব্দে নয়, ভাব ও বাক্য-বিন্যাসের মধ্য দিয়াও তাহা দেদীপ্যমান।
অধিকাংশ কবিতাই ব্যক্তিগত সংকীর্ণতার ঊর্দ্ধে বিশ্ব-মানবতায় অনুপ্রাণিত নহে। ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখ আশা
ও কল্পনা লইয়া আপনার মধ্যে আপনার জগৎ সৃষ্টি করিয়াই তাঁহার কবিতা বধূ সলজ্জ চরণপথে চলিয়াছে।”
মিলনসাগরে আমরা, ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে, তাঁর মাত্র তিনটে খণ্ড কবিতা নিয়ে সুরমাসুন্দরী দেবীর
কবিতার পাতা প্রকাশিত করি। কিছুকাল পর আমাদের হাতে আসে কবির দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ “রঞ্জিনী”।
পরবর্তিতে কবি দিলীপকুমার বসুর আগ্রহে আমরা এই কবির রঞ্জিনী কাব্যগ্রন্থ থেকে আরও ২৫টি কবিতা
এবং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা থেকে তাঁর আরও ৫টি কবিতা সংগ্রহ করে এখানে তুলতে সক্ষম হই।
আমরা মিলনসাগরে কবি সুরমাসুন্দরী ঘোষের কবিতা তুলতে পেরে আনন্দিত এবং তাঁর কবিতা আগামী
প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারলেই আমাদের এই প্রয়াস সার্থক হবে।
কবি সুরমাসুন্দরী ঘোষের মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।
উত্স -
- যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত, বঙ্গের মহিলা কবি, ১৯৩০।
- সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান ১ম খণ্ড, ২০১০।
- হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য্য বিদ্যাবিনোদ, কাব্য-ব্যাকরণ-পুরাণ-কৃততীর্থ সম্পাদিত "মাতৃবন্দনা, দেশাত্মবোধক
সঙ্গীত ও কবিতার সংকলন (১৭৪১-১৯৪৭)", ১৯৬০।
আমাদের ই-মেল - srimilansengupta@yahoo.co.in
এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ডিসেম্বর ২০১১।
কবি দিলীপ কুমার বসুর আগ্রহে টি নতুন কবিতা নিয়ে এই পাতার পরিবর্ধিত সংস্করণ - ৩১.৭.২০২০।
...
কবি সুরমাসুন্দরী ঘোষ - অবিভক্ত
বাংলার ঢাকা জেলার মালখাঁনগর গ্রামে
জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা উমেশচন্দ্র বসু
পেশায় উকীল ছিলেন। কিন্তু তাঁদের গ্রামের
বাড়ীতেই একটি বালিকা বিদ্যালয় ছিল। এই বিদ্যালয় থেকেই সুরমাসুন্দরী দেবী উচ্চ প্রাইমারি পরীক্ষায়
পাশ করে বৃত্তি পেয়েছিলেন, মাত্র ১৩ বছর বয়সে। তিনি কিছুদিন ঢাকার ইডেন বালিকা বিদ্যালয়েও
পড়াশুনা করেছিলেন।
মাত্র বার বছর বয়সে, ১৯ অগ্রহায়ণ ১২৯৩ (৩ ডিসেম্বর ১৮৮৬) তারিখে, কবির বিয়ে হয় ঢাকা জেলার
বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামের খ্যাতনামা উকীল চন্দ্রকান্ত ঘোষের বড় ছেলে নিশিকান্ত ঘোষের সঙ্গে।
নিশিকান্ত তখন কলেজে পাঠরত। পরবর্তিতে তিনি ময়মনসিংহে ওকালতি শুরু করেন এবং একসময়
ব্রিটিশ সরকার দ্বারা রায়বাহাদুর উপাধীতে ভূষিত হন। নিশিকান্ত, স্ত্রীর শিক্ষার প্রসারের বিষয়ে বিশেষ
যত্নবান ছিলেন। তাঁরই উদ্দোগে ও আগ্রহে সুরমাসুন্দরী দেবী কলকাতার “পূর্ব্ববঙ্গ স্ত্রীশিক্ষা কমিটির” বাংলা
সাহিত্যের এক বিশেষ পরীক্ষায় সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করে স্বর্ণগদকে ভূষিত হন।
সুরমাসুন্দরী দেবীর কবিতা - পাতার উপরে . . .
বিবাহের পর থেকেই সুরমাসুন্দরী দেবী কবিতা লেখা শুরু করেন। ১২৯৬ বঙ্গাব্দে তাঁর স্বামীর প্রণীত “অশ্রু”
কাব্যগ্রন্থে তাঁরও কয়েকটি কবিতা প্রকাশিত হয়। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে “সঙ্গিনী” (১৩০৭ব
১৯০০খৃ), “রঞ্জিনী” (১৩০৯ব ১৯০২খৃ) প্রভৃতি।
মিলনসাগরে আমরা, ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে, তাঁর মাত্র চারটি খণ্ড কবিতা নিয়ে আমরা সুরমাসুন্দরী
দেবীর কবিতার পাতা প্রকাশিত করি। কিছুকাল পর আমাদের হাতে আসে কবির দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ
“রঞ্জিনী”। পরবর্তিতে কবি দিলীপকুমার বসুর আগ্রহে আমরা এই কবির রঞ্জিনী কাব্যগ্রন্থ থেকে আরও
৩০টি কবিতা ও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা থেকে তাঁর ৭টি কবিতা সংগ্রহ করে এখানে তুলতে সক্ষম হই।