‘একটি জটিল আয়ুরেখা’ চিরকাল হাত খুলে দেখায় হারিয়ে যাওয়া; না-যাওয়া ; সেও এক চিন্তানুভবফুল যেহেতু তুমিও আত্নকাহিনিতে লেগে আছো ; বাদবাকি স্বার্থরক্ষার ভয়ে জড়িয়ে রাখছো আঁকাদৃশ্য ; অস্থিসার চুপিচুপি ফিরিয়ে দাও স্মৃতি-সম্পর্ক, চিহ্ন ও সুতায়
প্রথম-প্রথম কোন কথা বললে, দ্বিতীয় কথার ভেতর বদলে ফেলা যায়; শুধু কিঞ্চিৎ মিথ্যা বলার ফর্মূলা . -জানা দরকার জানার ভেতর যে রহস্য ; তা কোত্থেকে আসে? তাকে কি খাবো? মনে পরাবো? না বুকে রেখে ঠোকরাবো? কারণ— ধ্বংস হবার পূর্বে আমাদের হৃদপিণ্ডের বিষফল কাটছে করাত ; আলজিভও কাটছে দ্বিধা ও ধার তোকে জড়িয়ে ধরার শখ যেন স্মৃতি, সেই ছোট্টবেলাকার
কিসে যেন রেগে গেলে... তার মানে হারানো কান্নাও হতে পারে গোপনে আরো তিন-তিনটি বছর পর... সবই বুঝি মৃদু ত্রুটি কাঁচা মাংশের ঘ্রাণে ওই মুখ! ‘বর্ণিত হবার লোভে’ লাজুক বাগানে . মনে ও বনে
এসব ঘটনাপ্রবাহ কুড়ি বছর পর কবিকে চেনে শেষ দিবসে আমি যখন কিছু কথা জমিয়ে রাখি . কাঁধেপিঠে ধূলির নগরে কাঁপা হাতের আড়াল থেকে সর্বস্ব দাও . অতি-গোপনে
আয়না নিজের সৌন্দর্য যাচাই করতে শিখায় আয়না নিজেকে জানতে, জানাতে শুদ্ধির পথ দেখায় এ-বিশ্বাসে সংকোচ ছাড়াই আলোড়িত! বিলোড়িত কল্পনা মর্মগ্রহণতা তোমার চোখে... চোখ রেখে যদি বলি— . চোখ মনের আয়না
লুকোচুরিতে হারাতে চাই না বলে এতটা নৈর্কট্য এতটা সৌহার্দ্য ছুঁতে পারা গেল; কিন্তু প্রতিসত্য প্রতিদিন আয়নার মুখ দেখার কথা মনেই থাকে না এরূপ কথা বা রচনা অন্য একটি হাওয়ায় উড়ে গেল তুমি কারো এসেন্সটুকু ভুলে খুলে নিলে
সারাদিনের পাপগুলো যখন মনের আয়নায় খুলে খুলে দেখি পাপে-তাপে আয়না আর নিজের ছবির কাছে দূর্বল হতে থাকি
স্মৃতির করাঘাতে অসংখ্য মুখ দেখে চাপা ক্রোধে নিজেই পুড়ি, কিছুই জানলে না . পাঁজরের নিধি শেষ অংশে পরাজিত করে বললে— এভাবে চলতে পারে না; তারচে’ বসো একশ্বাসে দীর্ঘশ্বাস শুনি
সে দিনের পর বলছি লঘু-শোকে অনেক দূরে দাঁড়ালেও নেই নিষ্কৃতি সব নিষেধ ভেঙে সঙ্গ দাও দিনশেষে বিষদাঁত নাড়াও আজ তবে পাঠ হউক, অন্য কিছু . অন্যান্য কথা উত্তরে খুলছো অসহায়, দক্ষিণের বাতাসে আমি তত ভাল নয়
আজ তবে কিছু রোদ ঝরুক ছদ্মবেসে জড়িয়ে থাক্ সদাসর্তক সূর্য্য ওঠার আগে
একত্রে হেঁটে ‘যত পারো চুমো খেয়ো’ এই শীতের দেশে ভিন্নরূপ আর্দ্রঠোঁটে পুর্নবার অর্ধেক দ্বিমত তোমার লোকচক্ষু সম্মানে বিগত দিনের মতো অশ্রুপতন চকিতভ্রমে অবশ্য নাও হতে পারে সঘন সঙ্গমে
পুনরায় ফেরার আগে কি এমন ছোট্ট-ছোট্ট কথা বলার থাকে যে তোমাকে বারবার বলতে ইচ্ছে করে . অর্ধেক হৃদয়! হিয়ার ভেতর আমাকেও জাগাও কান্নায় হারানো দিনে পুরনো কথাও সন্দেহ জাগায়
পথে ঘুরিফিরি সহস্র মুখ ভালো লাগে ছায়ায় পুনরায় ফেরার আগে তুমি বলো—
বন্ধু যারা দুঃখ পেয়েছো রূপাদের কথায় দুঃখকে করুণা কর না, হাড়ের ভাষায় মিশে যাচ্ছো সম্পর্কে তৎক্ষণাত... . অল্পই তফাৎ এই যা পান করা তামাকপাতা; শুশ্রুষা আহা! সুখের ভেতর দুঃখকে শেখানো হচ্ছে চোখের প্রণয়
মন কেটে কেটে মুখস্থ করছি লঘুশোক তাকে মনে রেখে উড়তে দিয়েছি . আকাশের ওপারে কতটা ওজন ওই আর্ত-বাতাসের! জানা হলো না হিমালয় পাড়ে বলছি সম্ভাবনা-দ্বিধা-ক্ষুধা আঁকার ভেতর নিজের জন্য গোপন রাখছি কিছু . ঘূর্ণন, ঘর্ষণ কাঁটা মনে কল্পনা, ঠিক সন্ধ্যায় আমার জন্য ঝুলিয়ে রাখুন ভাবনায়
আমি কি জানি? শেষরাত্রি ছুঁলে কীভাবে বুকপাথর থেকে খুলে পড়ে মর্মভেদী যত . কথা ও ভয় শক্ত পাথর আকুল হয়ে উঠে; নরম ছোঁয়া পেতে পেতে যে কথা বলা হলো না; তার জন্য জমছে কি বেদনা? দোহাই তোমাদের; আমাকে জড়াতে বলো না রাত্রিকথা আমার হাঁটার ফাঁকে জমছে হাওয়াপাগলা; মৌনধুলা
সব কিছুর ভেতর পরস্পর চোখাচোখি, আমি কেবল দেখি; দেখার ভেতরও হয় কান্নাকাটি না-দেখাও ভাল... একটি স্বাভাবিকতা থাকে যেমন বৃষ্টিদিনে, কালোমেঘ, মদমাংসের ঘ্রাণ আমার নীরবতা বাগানবাড়ি খেলা করে মাঝরাতে . স্বভাবদোষে আপাত আমি সাইপ্রাসে দাঁড়িয়েছি স্পেনিসশাকে সবজি ক্ষেতে অসহায় ডাঁটাশাক মাটি-গর্জন-শোকে
ইচ্ছাকে লালন করে পুড়েছো একা আমাকে আর কতটুকু দূরে রেখে বহন করা যাবে; নিয়ম ভাঙা যাবে . স্বার্থপর! হতে পারে জলে ও জালে গোপনইচ্ছা সুযোগময় স্বার্থপরকথা বুঝে না সময় নিয়মফল দীর্ঘ হলে সবর্ত্রই খুলে রাখি . দরকারি আশা ও উচ্চারণ ক্লান্তিঘাম; একটানা জড়িয়ে ধরো বিশ্রাম
এ-রকমও ঘটে যায়; গোপনইচ্ছা ও ভয় এই বুঝি ফুরিয়ে গেল; ভয় জাগা সময়
তাকে পেলাম; শূন্যে জড়ো-করা ছায়ায় প্রকাশ এটুকু... সুকীর্তি অন্য কিছু নয় . দু-চারটি অনুনয়, বিনুনয় আমাকে চিনে রাখে বনবাড়ি থেকে হেঁটে আসা রূপবতী নিমপাতা, মেথিশাক-ডাঁটা এই ধরো— তালু হাতে আমাকে ক্ষুদ্রাকৃতি করো দেখো, তিন দিনের সবুরে ফুটে কয় দিনের মেওয়া
নিজ দখল যে উইড়্যা যায়, পিঞ্জিরায় কাছের আত্নায়
নিজের ভেতর অজস্র বিস্মরণ; সে-ও অধরা বেঁচে থাকার শোক, আশাকৃতি সবই সামাজিক
গত শীতে আমারও প্রস্তুতি ছিল ঘনায়মান সন্ধ্যাভাব ঝাঁক রোদ টেনে সন্ধ্যাকে হত্যা করতে পারেনি বলে দুঃখ পেল চোখ ও নোখ সূর্যাস্তের পূর্বক্ষণে আমার বে-ভোলা স্মৃতিরা যেন রক্তাক্ত ছায়া মোড়ানো কফিন
তাকে পেলাম; রহস্য-বনের ধারে উল্টানো পাতায় জন্ম-মৃত্যু এমন নিয়মে বাঁধা; ছুঁতে মন চায়... প্রাণ খুইল্যা দিলেই বাঁচি জীবিতদের আত্নায়
পর্দার আড়ালে মুখ লুকাতে নেই পাই-পাই করে চোখের সৌন্দর্য কমে জানালার পাশে কক্ষনো যাবে না হোক সে চেনা কিংবা অচেনা অচেনা থেকে গেলে পরিচয় পাবে . মুখঢাকা যদি পর্দা সরে গিয়ে বাতাস ঢুকে আড়ালে চোখ ফাঁকি দিতে পারবে না কেউ ছোঁয়ালে
আমাকে করুণা করো না; ক্ষমা করো এই দীর্ঘ সুতোরেখায় আমি... আমিও তানপুরা সেতারের সুরে ভেসে যাব তোমাদের কাছে যতদূরে থাকি; তোমাদের স্মৃতি নিয়ে জেগে র’বো আরো অনেক দিন- আমি তো তোমাদের একজন শাদা-কালো চামড়ার ভীড়ে মনে পড়ে, খুব মনে পড়ে, তোমরাই ছিলে প্রকৃত স্বজন