কবি সৈয়দ আফসার-এর কবিতা
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।
*
একগোছা নদী ও স্মৃতিকথা

একগোছা জ্যোৎস্নাকে যদি নারী বলা যেত
একগোছা জল যদি নারী কিংবা নদী হয়ে
বলত : সময়ের বুকে সকল প্রস্তুতি কী রকম
যেন ছড়াচ্ছে একাকীত্ব...

শোকে-দুঃখে  বহু বিবরণ অইখানে মরে গেছে
মরেনি কেবল জ্যোৎস্না, নদী ও নারী...
একগোছা নদী, বাজাও জলের ভুড়ভুড়ি শব্দ
একসাথে বাজাও দূরত্ব... গেল বছরের স্মৃতি

বছর ঘুরে এলেই তুমি একগোছা স্মৃতি ধরে
বন্ধ চোখে কেবল রাত ছুঁয়ে যাও! আমিও
কী পুর্নবার স্পর্শ নেব মর্মাহত চোখের?

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
আরশি-লিপ্সা

‘একটি জটিল আয়ুরেখা’ চিরকাল হাত খুলে দেখায়
হারিয়ে যাওয়া; না-যাওয়া ; সেও এক চিন্তানুভবফুল
যেহেতু তুমিও আত্নকাহিনিতে লেগে আছো ; বাদবাকি
স্বার্থরক্ষার ভয়ে জড়িয়ে রাখছো আঁকাদৃশ্য ; অস্থিসার
চুপিচুপি ফিরিয়ে দাও স্মৃতি-সম্পর্ক, চিহ্ন ও সুতায়

প্রথম-প্রথম কোন কথা বললে, দ্বিতীয় কথার ভেতর
বদলে ফেলা যায়; শুধু কিঞ্চিৎ মিথ্যা বলার ফর্মূলা
.                     -জানা দরকার
জানার ভেতর যে রহস্য ; তা কোত্থেকে আসে? তাকে
কি খাবো? মনে পরাবো? না বুকে রেখে ঠোকরাবো?
কারণ— ধ্বংস হবার পূর্বে আমাদের হৃদপিণ্ডের
বিষফল কাটছে করাত ; আলজিভও কাটছে দ্বিধা ও ধার
তোকে জড়িয়ে ধরার শখ যেন স্মৃতি, সেই ছোট্টবেলাকার

.                   ****************                                                            
সূচি  


মিলনসাগর
*
কুড়ি বছর পর

কিসে যেন রেগে গেলে... তার মানে
হারানো কান্নাও হতে পারে গোপনে
আরো তিন-তিনটি বছর পর...
সবই বুঝি মৃদু ত্রুটি কাঁচা মাংশের ঘ্রাণে
ওই মুখ! ‘বর্ণিত হবার লোভে’ লাজুক বাগানে
.                 মনে ও বনে

এসব ঘটনাপ্রবাহ কুড়ি বছর পর কবিকে চেনে
শেষ দিবসে আমি যখন কিছু কথা জমিয়ে রাখি
.                কাঁধেপিঠে ধূলির নগরে
কাঁপা হাতের আড়াল থেকে সর্বস্ব দাও
.                অতি-গোপনে

.                   ****************                                                            
সূচি  


মিলনসাগর
*
বাসমতি ঘ্রাণ

কপাল বলে কথা! যা ভোলা যায় না
কখনো স্থির অথবা অভিশপ্ত অস্থির
ভাগ্য সেও পথিপার্শ্বে একার—
পথভোলা... অভিযুক্ত যাযাবর
যদি তিরস্কার করো, তাতেও অহংকার
ইর্ষা যথারীতি সদয়, হৃদয় পুড়াবার
কারণ—
তোমার অঙ্গুরীর স্পর্শ তাজ্জব ব্যাপার!
ভেজা হাতে চাল ধোঁয়ার তরতাজা ঘ্রাণ
পাচ্ছি-
ধোঁয়া ওঠা বাসমতি ভাতের উপর

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
আয়না

আয়না নিজের সৌন্দর্য যাচাই করতে শিখায়
আয়না নিজেকে জানতে, জানাতে শুদ্ধির পথ দেখায়
এ-বিশ্বাসে সংকোচ ছাড়াই আলোড়িত! বিলোড়িত কল্পনা
মর্মগ্রহণতা তোমার চোখে... চোখ রেখে যদি বলি—
.                 চোখ মনের আয়না

লুকোচুরিতে হারাতে চাই না বলে এতটা নৈর্কট্য
এতটা সৌহার্দ্য ছুঁতে  পারা গেল;  কিন্তু প্রতিসত্য
প্রতিদিন আয়নার মুখ দেখার কথা মনেই থাকে না
এরূপ  কথা বা রচনা অন্য একটি হাওয়ায় উড়ে গেল
তুমি কারো এসেন্সটুকু ভুলে খুলে নিলে

সারাদিনের পাপগুলো যখন মনের আয়নায় খুলে খুলে দেখি
পাপে-তাপে আয়না আর নিজের ছবির কাছে দূর্বল হতে থাকি

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
একশ্বাসে দীর্ঘশ্বাস

স্মৃতির করাঘাতে অসংখ্য মুখ দেখে
চাপা ক্রোধে নিজেই পুড়ি, কিছুই জানলে না
.                  পাঁজরের নিধি
শেষ অংশে পরাজিত করে বললে— এভাবে
চলতে পারে না;  তারচে’ বসো একশ্বাসে
দীর্ঘশ্বাস শুনি

আমাকে ব্যবহার করো চঁওকি; দিবস রজনী

.                   ****************                                                           
সূচি   


মিলনসাগর
*
অশ্রুকথা

নিজের ভেতর হরদম ওঠা-নামা ফ্রকের ছায়া
তাকে চিনতে পারিনি, তুমি রক্ত নিয়ে এসো খামাখা
দেখো আমি ক্রমাগত গুটিয়ে নিচ্ছি নিজেকে
সারারাত জেগে থাকল ঘুম... দেখে যাও
.                   সঙ্গ দাও
ওহো তিরিশের সুপ্তকাঙ্খা শোকার্ত!
.                  বলছি মমতাবশত
দৃষ্টি মেললেই দেখি বুকপকেটে কম্পন কুড়াচ্ছো
কথা বলার আগে অধীর বুকে জমিয়ে রাখছো
.                   কী কথা! কার কথা
.                 গোপনে যত আনন্দ-ব্যর্থতা
আসক্তি একই রকম প্রায় ; দেহসুদ্ধ অশ্রুকথা

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
স্বস্তি

শীত রাতে তোমার খোটা খেতে খেতে
স্বস্তি এমন সর্বভূক হলো
যত ভাবছি ততই ভাল লাগছে, কলঙ্ক!

ভাবছি নামমাত্র চোখ বন্ধ করে, পার্কে

প্রকাশ্যে আমার জিজ্ঞাসা শ্বাসরূদ্ধ হলে
বলার অপেক্ষা, কিছুই  থাকে না...
কথকতা তাও অকার্যকারিতা

শীতরাতে তোমার খোটা খেতে খেতে
শীতের তীব্রতা সেও চায় দেওয়ালে শোতে

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
পাপড়ি

মিশে যাচ্ছো  অনেক দূরে,  স্তব্ধতায়-গোপনে
স্পর্শ-লোভে-প্রাপ্তি কিছুই পাইনি  কুশলচক্রে
তিনটি পাপড়ি সাবলীল ভঙিমায় নাড়ালে একাকী
স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারে না  অনুভূতি... এতদিনে
তারাও জেনে গেছে—
একই বৃন্তে ঘুরে নিজগৃহকোণে মৃত প্রায় আমি

বলছি পরাগ রেণু,  কোথায় পাবে এতো এতো
.                   মৌমাছি?
সে কথা শুনলে তুমি  হাসো
হাসতে হাসতে কিছু একটা বলো
কাঁধে রেখে হাত,  বাকিটুকু  থামাও

নিজের তাগিদে বীথি ছড়ালে আশে-পাশে চিরদিন
আমাকে কোন দোষে জড়াতে  চাও? ফেলে আসা দিন

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
বিষদাঁত

সে দিনের পর বলছি লঘু-শোকে
অনেক  দূরে দাঁড়ালেও নেই নিষ্কৃতি
সব নিষেধ ভেঙে সঙ্গ দাও
দিনশেষে বিষদাঁত নাড়াও
আজ তবে পাঠ হউক,  অন্য কিছু
.             অন্যান্য কথা
উত্তরে খুলছো  অসহায়, দক্ষিণের
বাতাসে আমি তত ভাল নয়

আজ তবে কিছু রোদ ঝরুক ছদ্মবেসে
জড়িয়ে থাক্ সদাসর্তক সূর্য্য ওঠার আগে

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
অভিযোগ পত্র

একত্রে হেঁটে ‘যত পারো চুমো খেয়ো’
এই শীতের দেশে ভিন্নরূপ  আর্দ্রঠোঁটে  
পুর্নবার অর্ধেক দ্বিমত তোমার লোকচক্ষু সম্মানে
বিগত দিনের মতো  অশ্রুপতন চকিতভ্রমে
অবশ্য নাও হতে পারে সঘন সঙ্গমে

স্পর্শে কোন অভিযোগ  নেই,  সে-ও বলছে
কাঙ্খা যত তাও বুঝো; খুঁজো পুরো দশ আঙুলে
নিজ দেহে চেপে ধরি  শোক আশ্রয় দেওয়ালে
সন্দেহ সাড়া পেতে পেতে শেষরাত্রি নিকটে রাখছি
.          শুন্যডিগ্রি  উত্তাপে ঘুম-বড়ি খেয়ে

চকিতভ্রমে একাগ্রতা আমাদের সঙ্গমতৃপ্তি
জোড়া চোখে  ইচ্ছে মরে গেলে চাই না সম্মতি

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
ছায়াস্বপ্ন

পুনরায় ফেরার আগে কি এমন
ছোট্ট-ছোট্ট কথা বলার থাকে যে
তোমাকে বারবার বলতে ইচ্ছে করে
.               অর্ধেক হৃদয়!
হিয়ার ভেতর আমাকেও জাগাও কান্নায়
হারানো দিনে পুরনো কথাও সন্দেহ জাগায়

পথে ঘুরিফিরি সহস্র মুখ ভালো লাগে ছায়ায়
পুনরায় ফেরার আগে তুমি  বলো—

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
আর্তনাদ

বন্ধু যারা  দুঃখ পেয়েছো রূপাদের কথায়
দুঃখকে করুণা কর না,  হাড়ের ভাষায়
মিশে যাচ্ছো সম্পর্কে তৎক্ষণাত...
.              অল্পই তফাৎ
এই যা পান করা তামাকপাতা;  শুশ্রুষা আহা!
সুখের ভেতর দুঃখকে শেখানো হচ্ছে চোখের প্রণয়

ওভাবে আমরা ভাবলে দেখতো  কেমন হয়?
গাছের ছায়াগুলো হাসে পাখির ডানায়
রূপাদের ছায়া মিশে যাচ্ছে ঘাসের  পাতায়

বন্ধু যারা দুঃখ পেয়েছো সমবেদনা তোমাদের
পোড়াবাড়ির,  রূপাদের  চক্ষুর, তারপর...

আর্তনাদ কেঁদো না আর!

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
মন

মন কেটে কেটে মুখস্থ করছি লঘুশোক
তাকে মনে রেখে উড়তে দিয়েছি
.              আকাশের ওপারে
কতটা ওজন ওই  আর্ত-বাতাসের!
জানা হলো না হিমালয় পাড়ে
বলছি সম্ভাবনা-দ্বিধা-ক্ষুধা আঁকার  ভেতর
নিজের জন্য গোপন রাখছি কিছু
.              ঘূর্ণন, ঘর্ষণ
কাঁটা মনে কল্পনা, ঠিক সন্ধ্যায়
আমার জন্য ঝুলিয়ে রাখুন ভাবনায়

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
শিরোনাম হীন

আমি কি জানি? শেষরাত্রি ছুঁলে কীভাবে
বুকপাথর থেকে খুলে পড়ে মর্মভেদী যত
.                   কথা ও ভয়
শক্ত পাথর আকুল হয়ে উঠে; নরম ছোঁয়া পেতে পেতে
যে কথা বলা হলো না; তার জন্য জমছে কি বেদনা?
দোহাই তোমাদের; আমাকে জড়াতে বলো না রাত্রিকথা
আমার হাঁটার ফাঁকে জমছে হাওয়াপাগলা; মৌনধুলা

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
অস্থি

সব কিছুর ভেতর পরস্পর চোখাচোখি,  আমি
কেবল দেখি;  দেখার ভেতরও হয় কান্নাকাটি
না-দেখাও ভাল... একটি স্বাভাবিকতা থাকে
যেমন বৃষ্টিদিনে,  কালোমেঘ,  মদমাংসের ঘ্রাণ
আমার নীরবতা বাগানবাড়ি খেলা করে মাঝরাতে
.                        স্বভাবদোষে
আপাত আমি সাইপ্রাসে দাঁড়িয়েছি স্পেনিসশাকে
সবজি ক্ষেতে অসহায় ডাঁটাশাক মাটি-গর্জন-শোকে

তুমি কখন দাঁড়িয়েছো জানতে পারিনি, দেখেছি শীতে
তোমার স্বাভাবিকতা দেখে ব্যথা জেগেছে অস্থি-প্রীতে

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
লালসা

অবসর সেও হতে পারে কাতরধ্বনি
পূর্ণকরা আর্শীবিষে প্রিয়তমার মন-মতিফুল
হৃদয়থলি স্নেহাতিবশে এতটা পৃথক যে
.     শঙ্কা নিরলে বিবশ-করা
আমার নিঃসঙ্গ দেহমিনার টেনে পক্ষপাত!
দুর্বলতা শূন্য-বিশ্রামাগার ...
প্রেরণা আমাকে তাড়া দিচ্ছে ধূম্রজালে বোনা
জলশামুকসহ বর্ষাযাপনের দিনকাল—
আমাকে তাড়া করছে ঝরাপাতা; কৃষ্ণচূড়া
আমার অবসর পূর্ণমাঘমাস, আর
যা পেলাম লুকিয়ে রাখছি সংশয়াকুল নিঃশ্বাস
সম্ভাব্যতালিকায় চোখ-বুক-চুলসহ পাশাপাশি বসা
ইচ্ছের জলে ভিজে আমারই ভাগের পোড়া লালসা

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
পোষমানা

ইচ্ছাকে লালন করে পুড়েছো একা
আমাকে আর কতটুকু দূরে রেখে
বহন করা যাবে; নিয়ম ভাঙা যাবে
.                 স্বার্থপর!
হতে পারে জলে ও জালে গোপনইচ্ছা
সুযোগময় স্বার্থপরকথা বুঝে না সময়
নিয়মফল দীর্ঘ হলে সবর্ত্রই খুলে রাখি
.       দরকারি আশা ও উচ্চারণ
ক্লান্তিঘাম; একটানা জড়িয়ে ধরো বিশ্রাম

এ-রকমও ঘটে যায়; গোপনইচ্ছা ও ভয়
এই বুঝি ফুরিয়ে গেল; ভয় জাগা সময়

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
দণ্ডায়মান

সেও জানে কার জন্য তাড়া প্রতিদিন
কার ইশারায় বাঁক পেরুলেই বন
          শব্দের গর্জন
সারাদিন আমাকে জড়িয়ে  রাখে স্বপ্ন ও মন
কার তাড়া আমার জন্য একা দণ্ডায়মান!

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
বিবৃতিগুচ্ছ  ৩

তাকে পেলাম; শূন্যে জড়ো-করা  ছায়ায়
প্রকাশ এটুকু... সুকীর্তি অন্য কিছু নয়
.           দু-চারটি অনুনয়, বিনুনয়
আমাকে চিনে রাখে বনবাড়ি থেকে হেঁটে আসা
রূপবতী নিমপাতা, মেথিশাক-ডাঁটা
এই ধরো— তালু হাতে আমাকে ক্ষুদ্রাকৃতি করো
দেখো, তিন দিনের  সবুরে ফুটে কয় দিনের মেওয়া

নিজ দখল যে উইড়্যা যায়,  পিঞ্জিরায় কাছের আত্নায়

নিজের ভেতর অজস্র বিস্মরণ; সে-ও অধরা
বেঁচে থাকার শোক,  আশাকৃতি সবই সামাজিক

গত শীতে আমারও প্রস্তুতি ছিল ঘনায়মান সন্ধ্যাভাব
ঝাঁক রোদ  টেনে সন্ধ্যাকে হত্যা করতে পারেনি বলে
দুঃখ পেল চোখ ও নোখ
সূর্যাস্তের পূর্বক্ষণে আমার বে-ভোলা স্মৃতিরা যেন
রক্তাক্ত ছায়া মোড়ানো কফিন

তাকে পেলাম; রহস্য-বনের ধারে উল্টানো পাতায়
জন্ম-মৃত্যু এমন নিয়মে বাঁধা; ছুঁতে মন  চায়...
প্রাণ খুইল্যা দিলেই বাঁচি জীবিতদের আত্নায়‌

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
পর্দা

পর্দার আড়ালে মুখ লুকাতে নেই
পাই-পাই করে চোখের সৌন্দর্য কমে
জানালার পাশে কক্ষনো যাবে না
হোক সে চেনা কিংবা অচেনা
অচেনা থেকে গেলে পরিচয় পাবে
.                মুখঢাকা
যদি পর্দা সরে গিয়ে বাতাস ঢুকে আড়ালে
চোখ ফাঁকি দিতে পারবে না কেউ ছোঁয়ালে

.                   ****************                                                            
সূচি       


মিলনসাগর
*
বৃষ্টিপাত

তুমি নীল আকাশে চেয়ে থাকো অবিরত
আমি মেঘের গর্জন কান পেতে বসি
বরষা এলো তবু... এখনো বৃষ্টিপাত হয়নি
তাই দরজার পাশে দাঁড়ানো পূর্ণিমার চাঁদ
.                   পেখম মেলে
যদি ঘুম ভেঙে যায় তারা গুনে রেখো হাতে
দেখবে তারায় তারায় উড়ে যাবে মেঘমন
রোদের আড়ালে; আবার বৃষ্টিপাত হলে

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
স্বপ্নাহত

গতরাতে যে নারী স্বপ্নমোহে শরীরের
প্রতিটি অঙ্গ খুলে রেখে ছিল প্রদীপের সামনে
বলেছিল যৌবনের ফুল ফোটাতে পারো
.                হাতের আঁচে
সবকিছু ছিঁড়ে খুঁড়ে খাবে বাঁধা দেব না শুধু—
শুধু বুকের গিঁট খুলতে মানা, যদি পারো
হাৎড়ে ওঠো শরীর, দেখবে কার জন্য অধরার বুকে
অসংখ্য বেদনা জমা; সে রাতে ধৈর্যচূত হইনি-
স্বপ্ন ভেঙে থতোমতো দেহ, মুখটি ছিনতে পারিনি
ভয়ে সে রাত তোমাকে ছাড়া ঘুমাতে পারিনি

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
ক্ষমা করো

আমাকে করুণা করো না; ক্ষমা করো
এই দীর্ঘ সুতোরেখায় আমি... আমিও তানপুরা
সেতারের সুরে ভেসে যাব তোমাদের কাছে
যতদূরে থাকি; তোমাদের স্মৃতি নিয়ে জেগে র’বো
আরো অনেক দিন- আমি তো তোমাদের একজন
শাদা-কালো চামড়ার ভীড়ে মনে পড়ে, খুব মনে
পড়ে, তোমরাই ছিলে প্রকৃত স্বজন

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর
*
কণ্টকফুল

হাততালি দিয়ে দেখো  খেয়াল-খুশির
অন্য-নাম কি হতে পারে না? আলাপ
চোখের ভেতর যে রকম চর্চা  হয়
.               গোপন-পরিচয়

আমার তাড়া দেখে সেও বলছে 'নিজস্বঝগড়া'য়
খুলে দেখো; জোড়া চোখের ভেতর তিনটানে
লটকানো স্মৃতি পুরো অন্দরমহল...

খেয়াল-খুশির ভেতর কাকে তাড়া দিচ্ছো
সাত-সতের সেন্টিগ্রেটে কাঁপছে সুতো ও জাল

তাকে তাড়া শেখাতে এসে আন্তরিকফুলগুলো
দোটানায় বড় হতে হতে আমাকে শেখাচ্ছে কৌশল
কারিকুলাম: যেমন কণ্টকফুল

.                   ****************                                                            
সূচি   


মিলনসাগর