কবি সৈয়দ মুজতবা আলী - জন্মগ্রহণ করেন অবিভক্ত বাংলার সিলেট জেলার করীমগঞ্জ শহরে,
১৪ই সেপ্টেম্বর ১৯০৪ সালে জন্মাষ্টমীর দিন। পিতা খান বাহাদুর সৈয়দ সিকান্দার আলী এবং মাতা আয়তুল
মান্নান খাতুন, বাহাদুরপুর পরগণার “রাগ প্রচণ্ড খাঁ” গ্রামের জমিদার মোহসেন চৌধুরীর কন্যা।

১৯০৮ সালে তিনি সুনামগঞ্জ শহরের পাঠশালাতে ভর্তি হন। ১৯১৫ সালে ভর্তি হন মৌলবীবাজার সরকারী
হাইস্কুলে। ১৯১৮ সালে ভর্তি হন সিলেট হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীতে। ১৯২১ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত তিনি
অধ্যয়ন করেন বিশ্বভারতীতে। ১৯২৭ সালে ভর্তি হন আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এরপর তিনি ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত কাবুলে অধ্যাপনা করেন। ১৯২৯ থেকে ১৯৩২ পর্যন্ত তিনি
ইউরোপের বার্লিন ও বন বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্যারিসে এবং লণ্ডনে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ১৯৩৪ থেক এক
বছরের জন্য অধ্যায়ন করেন কায়রোর আল-আজাহার বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর ১৯৩৬ থেকে ১৯৪৪ পর্যন্ত
তিনি বরোদায় অধ্যাপনা করেন।

এরপর তিনি কলকাতায় চলে আসেন এবং বন্ধুবর আবু সায়ীদ আয়ুবের কাছে বসবাস করেন। তাঁদের
দক্ষিণ ভারতে ভ্রমণকালে তিনি তাঁর বিখ্যাত রচনা “দেশে-বিদেশে” লেখা শুরু করেন। লেখাটি “দেশ”
পত্রিকার ১৯৪৮ সালের মার্চ সংখ্যা থেকে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হওয়া শুরু হয়।

এরপর তিনি বগুড়া কলেজের অধ্যক্ষ হন ১৯৪৯ সালে এবং ১৯৫০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক
পদে যোগদান করেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি দিল্লীতে ইণ্ডিয়ান কাউনসিল ফর কালচারাল
রিলেশানস এর সেক্রেটারীর পদ অলঙ্কৃত করেন। এই সময় তিনি সাকায়ত-উল-হিন্দ (ভারতীয় সংস্কৃতি)
নামক একটি আরবী পত্রিকা সম্পাদনা করেন।

১৯৫২ সালে তিনি দিল্লীর আকাশবাণীতে যোগ দেন। এর পর ১৯৫৬ সালের মধ্যে তিনি কটক এবং পাটনা
আকাশবাণীর স্টেশন ডাইরেক্টরের পদে কাজ করেন।

১৯৬৪ সাল পর্যন্ত তিনি বিশ্বভারতীতে প্রথমে জার্মান ও পরে ইসলামী সংস্কৃতির অধ্যাপকের কাজ করেন।
১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় যান বহুকাল পরে। ১৯৭৪ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারী তে
সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।    

এই বহুভাষাবিদ, পণ্ডিত, জনপ্রিয় লেখক ও গদ্যশিল্পীর বিশাল রচনা সম্ভারের মধ্যে রয়েছে “দেশে বিদেশে”
(১৯৪৯), “পঞ্চতন্ত্র” (১৯৫২), “চাচা কাহিনী” (১৯৫২), “ময়ূরকণ্ঠী” (১৯৫২), “অবিশ্বাস্য”
 (১৯৫৪), “পূর্ব-
পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা” (১৯৫৬),  “জলে ডাঙ্গায়” (১৯৫৬), “ধূপছায়া” (১৯৫৭), “দ্বন্দ্ব-মধুর” (১৯৫৮), “চতুরঙ্গ”
(১৯৬০), “শবনম” (১৯৬০), “শ্রেষ্ঠ গল্প” (গল্প সংকলন ১৯৬১), “ভবঘুরে ও অন্যান্য” (১৯৬২), “বহু বিচিত্র”
(সংকলন গ্রন্থ ১৯৬২), “শ্রেষ্ঠ রম্যরচনা” (সংকলন গ্রন্থ ১৯৬২), “টুনি মেম” (১৯৬৪), “প্রেম” (অনুবাদ ১৯৬৫),
“বড়বাবু” (১৯৬৬), “দু-হারা” (১৯৬৬), “পঞ্চতন্ত্র (২য় পর্ব ১৯৬৬)”, “হাস্য-মধুর” (সংকলন গ্রন্থ ১৯৬৬),
“পছন্দসই” (সংকলন গ্রন্থ ১৯৬৭), “রাজা উজির” (সংকলন গ্রন্থ ১৯৬৯), “শহর-ইয়ার” (১৯৬৯), “হিটলার”
(১৯৭০), “কত না অশ্রুজল” (১৯৭১), “মুসাফির” (১৯৭১), “তুলনাহীনা” (১৯৭৪), “পরিবর্তনে অপরিবর্তনীয়”
(১৯৭৬) প্রভৃতি।  শেষোক্ত দুটি গ্রন্থ তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়ে।

আমরা এই মহান কথা-সাহিত্যিকের কয়েকটি কবিতা পেয়েছি, মিত্র ও ঘোষ প্রকাশনীর “সৈয়দ মুজতবা
আলী রচনাবলী, দশম খণ্ড, অগ্রহায়ণ ১৩৮৫” থেকে। আমরা
মিলনসাগরে  কবি সৈয়দ মুজতবা আলীর
কবিতা তুলে, তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করলাম।


উত্স - মিত্র ও ঘোষ প্রকাশনীর “সৈয়দ মুজতবা আলী রচনাবলী, দশম খণ্ড, অগ্রহায়ণ ১৩৮৫”।     


কবি সৈয়দ মুজতবা আলীর মূল পাতায় যেতে এখানে ক্লিক করুন।  


আমাদের ই-মেল -
srimilansengupta@yahoo.co.in     


এই পাতার প্রথম প্রকাশ - ০৬.০৮.২০১৩
...