কবি তানিয়া চক্রবর্তীর কবিতা
*
ভ্রান্ত
কবি তানিয়া চক্রবর্তী

আজ যা সহ্য করতে পারছিনা তা পরমায়ু
তাই কাল থেকে আমাদের বাতচিতে
.                         আপোষহীন অ্যাজেন্ডা
শ্লথ রাতে লজ্জায় ঢুলে পড়েছে কিছু আলো
ঘুমহীন চোখে তোমার পাদদেশে
সুখ ফুটো করে কাঠঠোকরা
কালকের না তোলা কাপড়ে প্যাঁচিয়েছে রোদ্দুর
বনসাইগুলো শিখছে বিস্তৃতিহীনে বিস্তার
আটকে দিলে প্রতিরোধরা হারিয়ে যায়
এখনও বাকি নিলামির মতো শেষ আহ্বান
চতুর কফির আবেশে কফিনের ফাটল থেকে
পালিয়ে যাচ্ছে জুডাস প্রিস্ট

.           *****************

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
চেটে অথবা গিলে
কবি তানিয়া চক্রবর্তী

এসো... পথ চেয়ে থাকব
আসলে বোঝাব রহস্য ও শব্দের বন্ধুতা
বোঝাব শিকড় আর গাছ
মাটির তলায় নরকঙ্কাল
চামড়ায় গুড-ফরচুন সাইন
বিদেশী আংটা জুড়ে ঝোলানো রুচি
ওতে প্রোফাইল ধরা পড়ে
কিছু খাবার পাওয়া যায় স্থিতিস্থাপক
পথ চেয়ে থাকলে সব খাওয়া যায়
কোনোটা চেটে কোনোটা গিলে

.          *****************

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
কেউ নেই
কবি তানিয়া চক্রবর্তী

ঘরে তোমার কেউ নেই
অপেক্ষা তোমার নিরাভরণ
শূন্য শব্দে ঘুরে যায় আমারই পূর্বতন

শব্দ মধ্যে ঝড় এসেছে এলোপাথাড়ি
পাতায় পাতায় ঠেলাঠেলি... ভালবাসা আর ভালবাসি

ছুটতে ছুটতে সীমাহীনের দন্ডাদেশে
শূন্য ধরে বসে আছি পথের শেষে!

.          *****************

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
নিদ্রাহীন
তানিয়া চক্রবর্তী

ডুবছি, ডুবে যাচ্ছি বলেই
প্রাত্যহিক চাহিদায় অনন্য স্বাদ পাচ্ছি
যদি মৃত্যুর বুক থেকে আরো কিছু দূরে
সান্নিধ্য কাকে বলে শেখাতে, তাহলে
পাহাড়ী ভুল বেহায়া বলতে পারত!

প্রাইমেট সময় আশ্চর্য রীতি শেখায়
প্রতিদিন বাষ্পকে বোঝাই মিলনের কুণ্ঠা ও সূত্র
ঘুরে তাকায় উঁচু চরিত্রের ফুটপাত
পিরামিডের মতো ধারা
শরীরে হাতড়ায় পীড়া---আবসহিষ্ণুতা

তাই ডুবে যাব অজুহাতে নিদ্রাহীন রাস্তার
.                                সতর্ক ধারে

.          *****************

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
সিগারেটে চুমুর ফ্লেভার
তানিয়া চক্রবর্তী

এখান থেকে হাঁটলে পরে
তোমার-আমার খেলা শুরু
মায়াপাশা ধরে নিয়ে কৃত্তিম এক নীতিক্ষয়
বোধ থেকে নামছে পাখি, উড়তে গিয়ে প্লবতাহীন
দরজাখানা শুকিয়ে গেছে---
আলিঙ্গনের সন্ধি হতে  বাতাস এখন কান্না জমায়
তোমার এমন রূপ দেখব বলে সাধ করিনি
তোমার এমন যাপন দেখব বলে হাত ধরিনি
বেসেছি ভালো শুকনো কাঠ
ঘরের আমার চাবি নেই, ছুঁতে তোমায় দাবি নেই
                   ইতি, তোমার হারিয়ে যাওয়া
সিগারেটে চুমুর ফ্লেভার

.          *****************

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
প্রবণতা

রেললাইনের পাশে পড়ে আছে  ইঁটের শরীর
আর লাশঘরে ইতস্তত আগুন নাড়িচাড়ি
কাছাকাছি দুর্দান্ত মৃত্যুর গল্প শুনেছি
শুনেছি কীভাবে আধঘু্মন্ত যুবকের স্বপ্ন হয়
                   আদুরে যুবতীর কান্না,
নিপুণভাবে তোমার চেতনায় পুষ্ট হয়েছে
                 কবিতার বিশেষ শব্দ
চৌকো ঘরে মাটি পুড়ে পাকা হচ্ছে
নারকীয় থেকে স্বর্গীয় হচ্ছে রূপান্তর
বরফের ওপর তোমার বিন্যাস ধারালো
হাত ধরি এসো, মৃত্যুর শপথ নিয়ে
গায়ে মাখি রাতের নিঝুম আশ্বাস
চারপাশে জাতীয় সঙ্গীত বাজছে
মরা ইঁটের গন্ধে খনিগর্ভ থেকে
তুলে এনেছি ক্রিম ও লিপস্টিক
যাতে তুমি নিষ্ক্রিয় হও!
মৃতদেহে ফুল চড়ানোর আগে
শিখে নিও তীব্র শালীন শব্দ
তারপর হাত জোড় করে গলা খুলো
লাইন ধরে তুলে আনবো জাতীয় প্রবণতা

.          *****************

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
সতর্ক পাহারা
তানিয়া চক্রবর্তী

পাথরের মতো শক্ত অভিমান করে
ক্ষয়ে  যাওয়া দিনের দিকে তাকাই
এক-একটা বার্তা মোবাইলের পেট থেকে
.         জন্ম দেয় দ্বিধার ;

রাস্তার ভিখারীর দৃষ্টি ও পুরোনো প্রেম
একমাত্রিক ভাবে উদাসীন হতে থাকে
স্থবিরতা থেকে শিখে নিই আণবিক সম্পর্ক
ভিজে যায় জলের দেহ রাখার জায়গা
কাকনিদ্রায় পৃষ্ঠা সঙ্গম বিরতি নেয়
তরুণ চোখ সীমা মাপে
অক্ষাংশে মেপে রাখে যাতায়াত
আমার অঙ্গীকারে তার সতর্ক পাহারা জাগে

.            *****************

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
অববাহিকার
তানিয়া চক্রবর্তী

অশ্বক্ষুর খুঁজি...
ঘুরন্ত লাট্টুর সুখে নাভিতে রেখেছি ঘূর্ণি
মাটির তালিমে তালেবর তুমি
আমার হাড়ের রং দেখে নাও চিনে

তব অববাহিকার মধ্যিখান জুড়ে আমি

আগামী জন্ম, বীজক্ত ইতিহাস
নমনীয় গেটের বাহুতে রেখেছি মুড়ে
এসে খুলে দিও নিমগ্ন চাবি---

তব ব-দ্বীপের চারিধার জুড়ে আমি,
পাঁচ মাথা ধরে, বিছানার কান ধরে
আমি চুঁইয়ে নেমেছি ধস...

.          *****************

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
শৌর্যবরণ

বাগবাগিচার নতুন দেশ
কেশ বোঝাই আদেখলা পিঠ
সুড়সুড়ি ও মারামারির দন্দবনিবেশ
ও মন তুই বুঝতে পারিস
ঢালতে পারিস সিদ্ধিমাখা আচমন
এ দেশ তোমার কফিমগ প্রিন্টেড এক হাতবাক্স
তাতে বোঝাই দাড়ি রাখি
তুমি এখন বাড়ি নেই, ফুটপাতকে করছ আলো
উন্মুখ সেই ভোরবেলাতে সোফায় বসে মারছ মাছি
দিনান্তে এক ব্যাথার পেতে অ্যান্টিটপিক বিমোক্ষণ
আমায় তুমি সময় দিলে নাকোচ করে ব্যাপ্তি মেখে
পুরনো বছর রাত কাঁদালও
মেঘ ওড়ালও ফানুস তাতে
হারিয়ে গেছো...
লিখতে গিয়ে মুছতে হল
কারণ স্পিরিট আমার নখের রঙে
.              ঘেন্না করে অতীতকাল
ঝাউয়ের বনে পলক নড়ে
ফেরৎ চাওয়া বাঘনখেরা যুদ্ধকালীন রাস্তা মাপে
এবার আমার মুখের গড়ন পাল্টে যাবে শিরার মতো

.          *****************

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর
*
ছেঁড়া কবিতা
তানিয়া চক্রবর্তী

ওরা কেউ নয় ওরা সৎকারহীন
ওরা ভবঘুরের বাচাল ভাষার স্ফীতি
ওরা তেমন কেউ...
যে তোমার ঘরে ঘুমের মধ্যে খুন
পিছলে যাও, মাছের গায়ে আঁশ
তুমি শতাব্দী পরে ঊরুভেদে তীব্র নারী
কাকতালীয় কেউ আসেনি
জয় হয়নি জিহ্বাছেদে
শক্ত সুন্দর দেয়াল চেপে বাঁক নিয়েছে উইপোকা,
ওরা কেউ নয়, ওরা রক্তজন্মে রক্ত খায়
ছেঁড়া পৃষ্ঠায় অক্ষরহীন বাক্যের মতো
ওরা রাত্রিকালীন সময়হীনে অনর্থকের শিকড়
মাথায় ঘটের জল পড়েছে
ওরা এখন যৌগব্যাপী বীজানুমাফিক দল...

.          *****************

.                                                                                          
সূচিতে . . .   


মিলনসাগর