কবি তারাপ্রসন্ন তর্কতীর্থ (ব্যাসদেব) এর কবিতা
যে কোন কবিতার উপর ক্লিক করলেই সেই কবিতাটি আপনার সামনে চলে আসবে।  www.milansagar.com
*
মূলঘরের দশা
তারাপ্রসন্ন তর্কতীর্থ (ব্যাসদেব, বেদব্যাস)

মুলঘর গ্রামের আর নাই রে সেদিন,
গদ্ খালির প্রায় হায় হল দিন দিন |
দেল্ খোলায় গেলে দেল্ খোলে নারে আর,
ট্যাঙ্ক ব্যাঙ্ক যেথা যাই সব অন্ধকার |
"বীণাপাণি" বিনা প্রাণী রুদ্ধদ্বার এবে
পাঠক পাঠিকা নাই রয়েছে নীরবে |
হাইস্কুলে মাস্টারেরা ছাড়ে শুধু হাই
গার্লস্কুল আছে সেথা গার্ল ফার্ল নাই |
কালীবাড়ী মা কালীর মুখে দেছে কালী
ঘটের ঘটনাগুলি জানো তো সকলি |
শ্বস্তিকায় স্বস্তি হায় কেমনে সম্ভবে
অশ্বস্তি দেখিতে পাই সুতার অভাবে |
নূতন হাটের কাছে নামটা নূতন
বড়ক আগেও ছিল কেউ দিয়েছে খতম্ |
নূতন সেনেরা সব গিয়েছে কোথায়
মাঠের নূতন সেন এসেছে সেথায় |
রজনী সেনের বাড়ী দিনেও রজনী
ভূত পেত্নী সম আছে সূদন সূদনী |
বড় বাড়ী প্রকৃতই বড় হয়ে গেছে,
ছোট সীমা উঠে গিয়া বৃহৎ হয়েছে |
বেড়া দিয়ে ছোট করে রাখিত যাহারা
তারা সব চলে গেছে রয়ে গেছে সাহার |
বড় বাড়ীটার পূবে জ্যোতিষির জ্যোতি
নিভিবার সাথে এল ঘন-কুহু-রাতি |
এখনও রয়েছেন লক্ষ্মী নারায়ণ
কি জানি কে তাঁর সেবা করিবে এখন |
বুড়াদের ফেলিয়াছি খরচের ঘরে
ভাবি চিত্র আঁকিতেছি ব্যথিত অন্তরে |
অনুকূল রায় চকে পাহারায় আছে
যোগে বেহারার বউ কালো কুচকুচে |
চক্ মাঝে ভাল সাজে শোভাময়ী নারী
হায়রে তথায় আজ আবলুস্ সুন্দরী |
পাড়ায় পাড়ায় আছে বুড়া আর বুড়ী
তরুণ তরুণী নাই আছে ছোড়া ছুড়ী |
ধোপা নাই, নাই নাই, গেছে দেশ ছাড়ি
কে কাচে কাপড় কেবা কাটে চুলদাড়ি |
পণ্ডিত ফুরায়ে গেল কেবা দেয় পা'তে
সৈদমল্লায় যেতে হবে পঞ্জিকা দেখাতে |
চিকিত্সক একে একে চলি গেল সব
চিকিত্সা বিহনে মরি হবে সব শব |
খুড়াও বাঁচিয়া নাই কে বা দেখে নাড়ী
কেবা দেয় রামবাণ কেবা ভাজা বড়ি |
লোক নাই শবদেহ করিতে দাহন,
শ্মশানে বহিয়া নিতে কে আছে বাহন |
মরাগুলা ভূত হবে প্রতি ঘরে ঘর
তাই বলি গদ্ খালি হ'ল মূলঘর |

উপসংহার---
সবারে ডাকিয়া নিয়া শুন দিয়া মন
অবসর কালে এই "ব্যাসের বচন" |

১৬.৯.৪৮ তারিখে লিখিত শচীন্দ্রনাথ সেনকে লেখা ব্যাসদেবের চিঠি |
বীরেশ্বর আর্য বিদ্যাপীঠ, যশোহর |
.               *************************                                               উপরে    


মিলনসাগর
*
শেয়ালের ডাক
তারাপ্রসন্ন তর্কতীর্থ (ব্যাসদেব, বেদব্যাস)

৭ই ভাদ্র ১৩৫৬
(অন্ধকার রাত্রিতে একাকী বাড়ীতে বসিয়া পার্শ্ববর্ত্তী যতীন রায়ের
পরিত্যাক্ত বাটিতে শিবাদলের কোলাহল শ্রবণে লিখিত |)

একটা বলে স্ফুর্তি করে
.                "হুঁয়া হুঁয়া হুঁয়া"
আর একটা জিজ্ঞাসে তায়
.                ক্যা হুয়া ক্যা হুয়া ?
হুক্কা হুয়া হুক্কা হুয়া
.                জবাব করে তার
হুক্কা ক্যা, হুক্কা ক্যা ?
.                জিজ্ঞাসে আর বার
"ক্যা ক্যা ক্যা" বলে তাহার
.                অজ্ঞতারে রোখে
হিন্দী ভাষার সৃষ্টি বোধ হয়
.                শেয়ালের ডাক থেকে |

.                --ব্যাসদেব |
.               *************************                                               
উপরে    


মিলনসাগর
*